ক্রাশেরসাথেবিয়ে পার্ট ০৫

0
3233

ক্রাশেরসাথেবিয়ে পার্ট ০৫
#jannatul_ferdous

দুপুরে রোদ রাগিনীকে নিজের হাতে শাড়ি পড়িয়ে দিচ্ছিলো।আর রাগিনীর মাঝে এক অজানা শিহরন হচ্ছিলো।শাড়ি পড়ানো হতেই রাগিনীর চুলের মধ্যে চুমু দিলো রোদ।আস্তে আস্তে ঘাড়ের চুল গুলো সরিয়ে চুমু দিতেই রাগিনী রোদকে সরিয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে চলে আসলো।

রাগিনী-আমাকে সাজিয়ে দেওয়ার নামে তুমি দুষ্টমি করছো।আমি আম্মুকে বলে দিবো।

রোদ-এই কথাও আম্মুকে গিয়ে বলবা।

রাগিনী-হুমম বলবো তো।

রোদ-আচ্ছা আর কী কী বলবা?

রাগিনী-দেখি আর কী কী বলা যায়।

রোদ-আজকে তো তোমারে আমি……

রাগিনী-চুপচাপ সাজিয়ে দাও,তা না হলে খুব খারাপ হবে।

রোদ-ঠিক আছে দিচ্ছি।

রোদ সাজিয়ে দিলো রাগিনীকে।তারপর জুয়েলারী গুলো নিতেই রাগিনী চিৎকার দিয়ে উঠলো।

রোদ-কী হলো?

রাগিনী-এগুলা আমি পরবো না।

রোদ-আজকের জন্য প্লিজ।না পরলে আম্মু রাগ করবে।

রাগিনী-আম্মুকে আমি চকলেট দিয়ে দিবো তারপরেই তো আর রাগ করবে না।

রোদ-তোমাকে আমি চকলেট এনে দিবো।

রাগিনী-আচ্ছা যাও আনো।

রোদ-আগে এগুলা পরতে হবে।

রাগিনী-সত্যি চকলেট এনে দিবা?

রোদ-হুম তিন সত্যি।

রাগিনী-আচ্ছা পরিয়ে দাও।

সাজানো কমপ্লিট হতেই রোদ রাগিনীকে কিছুক্ষন দেখলো তারপর জড়িয়ে ধরে একটা ফটো তুলে চলে গেলো।কিছুক্ষনের মধ্যেই রিত্ত এসে রুমে ডুকলো।

রিত্ত-তোকে তো নতুন বউ-এর মত লাগছে।

রাগিনী-ক্রাশ বর সাজিয়ে দিয়েছে।

রিত্ত-তোকে অনেক ভালোবাসে তোর ক্রাশ বর তাই না?

রাগিনী-হুমমম অনেক।তবে আগে ভালো বাসতো না রে।এখন ভালোবাসে।

রিত্ত-তোকে না ভালোবেসে উপায় আছে?

রাগিনী-হুমমম।

রিত্ত-আচ্ছা কীভাবে বিয়ে হলো বললি না তো।

রাগিনী সব খুলে বলতেছে।আর রিত্ত হাসছে।

রিত্ত-তুই পারিসও অনেক।

রাগিনী-হিহি।

নিশাত-ভাবি চলো নিছে চলো।সবাই চলে এসেছে।

রাগিনী-হুম চলো।

হঠাৎ করেই রোদ চলে আসলো।তোরা যা আমি আর রাগিনী একসাথে যাবো।

নিশাত-ঠিক আছে রিত্ত আপু চলো।

রিত্ত-ওকে।

নিশাত,রিত্ত বের হয়ে গেলো।রোদ ভিতরে ডুকলো।দরজা ভিতর থেকে আটকে দিলো।রাগিনী কিছুই বুজতে পারছিলো না।

রোদ-আমি তোমাকে কয়েকটা প্রশ্ন করবো।

রাগিনী-করো।

রোদ-কেনো আমাকে এত ভালোবাসার মায়ায় পেললে।আমার যে এখন শুধু তোমাকেই চাই।

রাগিনী-দূর আমি কী করে জানবো।

রোদ-তাহলে কে জানে।আমি যে তোমার মায়ায় ডুবে গেছি।

রাগিনী-আরে আম্মু ডাকছিলো তো।চলো সবাই ওয়েট করছে।

রোদ-যাবো তো।

রাগিনী-চলো।

রোদ-আজ যদি তোমার ক্রাশ বর তোমাকে বলে ভালোবাসি তাহলে কী বলবা?আজ যদি তোমার ক্রাশ বর তোমাকে কাছে পেতে চাই,তাহলে দিবে তো সেই সুযোগ।

বলেই হাটু গেঁড়ে বসে পরলো রোদ।তারপর হাতটা বাড়িয়ে দিলো রাগিনীর দিকে।রাগিনী হাত দিতেই হাতে একটা আংটি পড়িয়ে চুমু দিলো হাতে।রাগিনী রোদের কথা,কাজে অবাক হয়ে গেলো রাগিনী।রোদ উঠে দাঁড়ালো।

রোদ-কি হলো মিষ্টি বউ টা খুশি হয় নি?

রাগিনী-হুম আমি খুব খুশি ক্রাশ বর।

রোদ-আমার মিষ্টি বউ টাকে আজ আরো সুন্দর লাগছে।

রাগিনী-তোমাকেও।আজকে পিক আপলোড করলে সবাই ক্রাশ খাবে।

রোদ-অনলি তুমি তে করে নিছি।

রাগিনী-মানে?

রোদ-আমি শুধুই তোমার ক্রাশ বর।

রাগিনী-সত্যি?

রোদ-হুমম সত্যি।

রাগিনী-ওই যাবে না?

রোদ-কই?

রাগিনী-রিয়াকে আনতে।

রোদ-ওহ সময় তো হয়ে আসলো।

রাগিনী-সাবধানে যেয়ো।

রোদ-যাবো কিন্তু…..

রাগিনী-কী?

রোদ-দেখাচ্ছি

বলেই রাগিনীর ঠোঁটের সাথে ঠোঁট মিশিয়ে দিলো।বেশ কিছুক্ষন পর ছাড়তেই রাগিনী লজ্জায় লাল হয়ে গেলো।

রোদ-কী লজ্জা রে আমার বউ টার।

রাগিনী-তুমি যে কী।যাও তো এখন।

রোদ-তাড়িয়ে দিচ্ছো?

রাগিনী-না যেতে হবে তো তোমাকে।

রোদ-আচ্ছা যাচ্ছি।

রাগিনীর কপালে চুমু দিয়ে রোদ বের হয়ে গেলো।রাগিনী গিয়ে আয়নার সামনে বসলো।আনমনে রোদের কথা গুলো ভাবছে সে।রিত্তের ডাকে ঘোর কাটে রাগিনীর।

রিত্ত-কী এত ভাবছেন?

রাগিনী-অনেক কিছু।

রিত্ত-কী?

রাগিনী-আমার ক্রাশ বরকে ভাবছি।

রিত্ত-বর তো তোরেই।তাও এত ভাবছিস।

রাগিনী-হুমমম।।

রনি-আপু।

রাগিনী-রনি এসেছিস তুই।এত দেরি হলো কেনো?

রনি-কই দেরি।কেমন আছিস তুই?

রাগিনী-দেখতেই তো পারছিস।

রনি-তোকে আজকে বাড়িতে নিয়ে যাবো।তোকে ছাড়া একটুও ভালো লাগে না।

রাগিনী-আয় ভাই।

কাছে আসতেই জড়িয়ে ধরলো রাগিনী রনিকে।কিছুক্ষন পর নিশাত ডাকতে আসলো রাগিনীকে।তারপর রাগিনীকে নিয়ে নিছে নেমে আসলো সবাই।

ওইদিকে রিয়াকে নিয়ে গাড়িতে উঠলো রোদ।

রিয়া-আমি তোর অযোগ্য ছিলাম নাকি রোদ?

রোদ-এইসব এখন বাদ দে।

রিয়া-বাদ দেওয়া যায় না।তোকে আমি কতদিন ধরে ভালোবাসি তুই জানোছ তো।

রোদ-আমি রাগিনীকে ভালোবাসি।

রিয়া-ভালোই।

রোদ-হুমম।

(তোর থেকে রাগিনীকে আমি আলাদা করেই ছাড়বো রোদ)–মনে মনে ভাবছে রিয়া।

রোদ-তো পড়ালেখা কেমন চলে তোর?

রিয়া-হুম ভালোই।

রোদ-এখন কী আর বিদেশ যাবি না?

রিয়া-না এখানের আগের ভার্সিটিতে জয়েন করবো।

রোদ-ভালো।

কিছুক্ষনের মধ্যেই রোদ রিয়াকে নিয়ে বাড়ি ফিরলো।

রোদের আম্মু-আয় মা।কেমন আছিস?

রিয়া-জ্বি আন্টি ভালো,তুমি কেমন আছো?

রোদের আম্মু-ভালো।চল খাবার খেয়ে রেস্ট নিবি।

রিয়া-ঠিক আছে।

রোদ-কি ব্যাপার মন খারাপ কেনো?

রাগিনী-কিছু না।

রোদ-বলো।

রাগিনী-আমি বাড়িতে যাবো।

রোদ-তা তো যাবেই।

রাগিনী-তুমি যাবে না।

রোদ-যাবো তো।

রাগিনী-আমি যতদিন থাকি,থাকবে তুমি?

রোদ-হুম থাকবো তো।

রাগিনী-আচ্ছা ক্রাশ বর আমরা একসাথে ঘুরবো।

রোদ-হ্যা তা তো ঘুরবোই।

রাগিনী-এক সাথে আইসক্রিম খাবো।

রোদ-আইসক্রিম টা তোমার ঠোঁট থেকেও খেতে পারি।

রাগিনী-কি যে বলো তুমি।

রোদ-লজ্জা পেলে রাগিনীকে আরো সুন্দর লাগে।

রাগিনী-সবাই দেখছে ক্রাশ বর।

রোদ-তো দেখুক।আমার বউ অন্য কারো তো না।

রিত্ত-জিজু।

রোদ-হুম

রিত্ত-বউ ছেড়ে শালিকার দিকেও একটু তাকান।

রোদ-আচ্ছা দেখবো নাকি।আচ্ছা বলো কোথায় কীভাবে দেখবো।

রিত্ত-না থাক দেখা লাগবে না।যা বলছেন তা অনেক।

রাগিনী হেসে উঠলো।রোদ রুমে চলে গেলো।কিছুক্ষনের মধ্যেই ফ্রেশ হয়ে নিছে নামলো।

নিশাত-চলো কিছু খেলা করা যাক।

রোদ-কি খেলবি?

নিশাত-হুমমম পাইছি।

রনি-কী?

নিশাত-চলো ছাদে গিয়ে বসি।ছাদে খেলবো।

রিত্ত-ওকে।

সবাই মিলে ছাদে গেলো।বসে পরলো একসাথে।নিশাত কিছুক্ষনের মধ্যেই কফি নিয়ে আসলো।

রনি-কী খেলা হবে এবার?

নিশাত-হুমম এই যে আমার হাতে কতগুলো চিরকুট দেখতে পাচ্ছো।এইগুলা থেকে যে কোনো একজন একটা বাছাই করে তুলবে।

রনি-তারপর।

নিশাত-যার নাম আসবে তাকে আমরা যা করতে বলবো সে তা-ই করবে।

রিত্ত-ওকে আমি প্রথমে নিচ্ছি।

কাগজ খুলতেই পেইজটাই খালি দেখা গেলো।কোনো নামেই নেই।

নিশাত-তুমি নিজেই একটা বুদ্ধু,তাই তোমার কাউকে কোনো খেলা দেওয়া হলো না।

রনি-আবার দাও।

নিশাত-না এবার ভাবি তুমি নাও।

রাগিনী কাগজে রিত্তের নাম লেখা ছিলো।রিত্তের দিকে ইশারা করে দেখাতেই রিত্ত লাফিয়ে উঠলো।

রিত্ত-আমি কিছু পারি না।

নিশাত-পারতে হবে।

রিত্ত-আচ্ছা কী করতে হবে??

চলবে……

দয়া করে ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে