অভিমান হাজারো পর্বঃ২৩

0
1964

অভিমান হাজারো পর্বঃ২৩
আফসানা মিমি

—“ইয়ে… সামির ভাইয়া…..”
কথার মাঝখানে থামিয়ে দিয়ে
—“এক্সকিউজমি! আমাকে ভাইয়া ডাকছেন কোন অধিকারে? আপনার মায়ের পেটের ভাই লাগি আমি?”

লাবণ্য ইতস্তত করতে লাগলো। এভাবে মুখের ওপর কেউ জবাব দেয়! শুধু সামির বলে সম্বোধন করতেও মুখে বাজছিল। এজন্যই তো সাথে ভাই ডাকটা যোগ করতে যাচ্ছিল। কিন্তু পুরোটা না শুনেই বেটা বোম। বেশ কিছুদিন যাবৎ সে ভাবছে যে সামিরের কাছে ক্ষমা চায়বে তার অতীতে করা ব্যবহারের জন্য। বড্ড অপরাধবোধে ভুগছে সে। সে এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে নিখাদ ভালবাসা কত দামী! যা সহজে পাওয়া যায় না। আর সে কিনা সামিরের নিঃস্বার্থ ভালবাসাকে ঐ লম্পটের প্রেমে অন্ধ হয়ে রিফিউজ করেছে! প্রতিনিয়ত অপমান করে গেছে। এমনকি গায়ে হাত তুলতেও দ্বিধাবোধ করেনি। কতটা অধঃপতন হয়েছে তার! কাচকে হীরা ভেবে যে ভুল সে করেছে তার মাশুল বোধহয় এভাবে সারাজীবনই গুনতে হবে। হীরাকে কাচ ভেবে প্রতিনিয়ত দু’পায়ে মারিয়ে গেছে সে। যা কিনা এখন বুঝতে পারছে সে। এতোদিন দ্বিধাদ্বন্দ্বে কাটিয়ে শেষ মুহূর্তে আজ সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সামিরের কাছে ক্ষমা চায়বে। তাইতো সেই কখন থেকে এখানে দাঁড়িয়ে আছে। তার ঘোর ভাঙলো সামিরের হাতের তুড়িতে।

—“ও হ্যালো! দুনিয়াতে আছেন নাকি….”
—“আমাকে তুমি করে বলা যায় না?”
ভ্রু কুঁচকে সামির জবাব দিল
—“কেন? আপনি আমার কী লাগেন যে আপনাকে আমি তুমি করে বলবো? আর তাছাড়া অপরিচিত কারো সাথে আমি কথা বলতে ইন্টারেস্টেড নই।”
বলেই সামির চলে যেতে নিল। তখনই পিছন থেকে লাবণ্য বলে উঠলো
—“আ’ম স্যরি।”
লাবণ্যর দিকে ঘুরলো সামির। দেখলো চোখ বন্ধ করে রেখেছে। সেদিকে তাকিয়েই বললো
—“ফর হোয়াই?”
—“ফর এভ্রিথিং।” বলেই চোখ খুলে সামিরের দিকে একবার তাকিয়ে চোখের দৃষ্টি অবনত করে ফেললো। ঐ ঘোলা চোখের দিকে তাকালে তার ভিতরে যেন কী হয় আজকাল। মনে হয় যেন অদৃশ্য ঝড়ের কবলে পড়ে সে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। ভিতরটাকে লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে যায়। পায়ের পাতা থেকে মাথা অবধি শিরশিরানি টের পায় প্রচণ্ডভাবে। এমন কেন লাগে সে জানে না। শুধু জানে সামিরের আশেপাশে থাকলে সুখ সুখ অনুভূতি হয়। এ অনুভূতির কী নাম দেয়া যায়!

সামির মনভরে দেখতে লাগলো লাবণ্যকে। কতদিন এমন করে দেখা হয়নি ওকে! অস্থিরতা বিরাজ করছিল ভিতর বাহির পুরোটা জুরে। আগে তো সামনে গেলেই রণচণ্ডী রূপ দেখতো। তখন এই রণচণ্ডী রূপ দেখতেও প্রচণ্ড ভালো লাগতো তার। আর আজ তাকে সম্পূর্ণ নতুন রূপে দেখছে। ওর চেঞ্জেস চোখে পড়ছে সামিরের। যেন সহস্র কাঁটাযুক্ত গাছে হঠাৎ করেই লক্ষাধিক পুষ্পবৃক্ষ কুঁড়ি মেলে গজিয়েছে। যার অদৃশ্য সুভাসে সে সম্মোহিত হয়ে যাচ্ছে এই মুহূর্তে। কিন্তু তার এমন হলে চলবে না। কঠোর হতে হবে তাকে। কাঠ কাঠ গলায় জবাব দিল

—“দেখুন মিস, আপনার এসব ফালতু কথা শুনার সময় আমার হাতে নেই। আর যার তার জন্য আমি আমার মূল্যবান সময় ওয়েস্ট করতে চাইছি না। তাই আপনি আপনার রাস্তা মাপুন। দয়া করে আমাকে বিরক্ত করবেন না। চারিত্রিক সার্টিফিকেট অনেক আগেই একবার আমার হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়বার স্বেচ্ছায় আবারো তা পাওয়ার কোন ইচ্ছে এবং সময় কোনটাই আমার অবশিষ্ট নেই।”
লাবণ্যর চোখ ভরে এলো নোনাপানিতে।
—“আমি জানি আমি ভুল করেছি। তাই ক্ষমাও চাইছি আপনার কাছে। ভুল তো মানুষেরই হয়, তাই না? ভুল না করলে তো আর সে মানুষ থাকতো না।”
—“আপনার কাছ থেকে নীতিকথা শুনার কোন আগ্রহ নেই আমার। জীবনে একটা ভুল করেছি কাউকে নিঃস্বার্থভাবে ভালবেসে। তবে ভালবাসা ভুল না। বরং ভুল মানুষকে ভালবাসাই হচ্ছে চরম ভুল। যে ভুলটা আমি করেছি। তবে ভুলটা করার আগে আমার ভাবা উচিৎ ছিল যে সে আদৌ আমার ভালবাসা ডিজার্ভ করে কিনা। এখানে ভুলটা যেহেতু আমার তাই তার মাশুল নাহয় সারাজীবন দিয়ে যাব। কিন্তু তবুও এক ভুল আমি আর দ্বিতীয়বার করবো না।”

কথাগুলো বলেই সামির পা বাড়ায় সামনে। হঠাৎই লাবণ্য একটা সাহসী কাজ করে বসলো। সে নিজেও জানে না সে এটা কেন করলো। সামির তার কাণ্ডে হতবাক হয়ে গেছে। আরো হতবাক হয়ে গেছে সামনে দাঁড়ানো মানুষটাকে দেখে। সে একবার সামিরের মুখের দিকে তাকাচ্ছে তো আবার লাবণ্যর মুখের দিকে তাকাচ্ছে। আবার দুইজনের হাতের দিকেও তাকাচ্ছে।

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share


—“স্পন্দন?”
—“……….”
—“শুনো না!”
—“……….”
—“এই…… কথা বলবা না আমার সাথে? তোমার এমন নির্লিপ্ততা আমায় কষ্ট দেয় স্পন্দন। কেন এমন করছো আমার সাথে?” কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে বললো অতশী।
স্পন্দন তবুও নিরুত্তর রইলো। তার কাছে এ সবকিছুই দুঃস্বপ্নের মতো লাগছে। যেন ঘুম ভাঙলেই সব আগের মতো হয়ে যাবে। আসলেই কী এমনটা হওয়ার ছিল! তার জীবনে প্রাপ্তির খাতাটা এক প্রকার শূন্যই বলা চলে। এই সর্বপ্রথম অতশীর নামটা প্রাপ্তির খাতায় লিপিবদ্ধ করেছিল। কিন্তু আস্তে আস্তে তা বোধহয় মুছে যাওয়ার পথে। অতশীর প্রতি তার কোন রাগ, অভিযোগ নেই। ভাগ্য তো আর তার হাতে লেখা নেই। শুধু একটু অভিমান আছে অতশীর প্রতি। সে তাকে কেন বললো না এ কথাটা! স্বার্থপরের মতো তার কথা চিন্তা করে দূরে সরে যেতে চেয়েছিল। ও কী জানে না যে ওকে ছাড়া স্পন্দনের চলবে না! তাহলে কিভাবে সে এমন একটি কাজ করলো! সে কী তবে অতশীর আপন হতে পারলো না পুরোপুরি! অতশীর কথার জবাব না দিয়ে নিজের মনের সাথে নীরব কথোপকথন করছিল স্পন্দন।
এবার অতশী কেঁদেই দিল। স্পন্দন কেন তার সাথে কথা বলছে না! তার যে কষ্ট হচ্ছে সেটা কী স্পন্দন বুঝছে না! স্পন্দনের একটা হাত ওর পেটের ওপর আলতোভাবে রেখে কান্নারত অবস্থায়ই বললো
—“বাবুর কষ্ট হচ্ছে তো তুমি আমার সাথে কথা না বলায়। এমন করে না লক্ষ্মীটি। প্লিজ কথা বলো না!”

অতশীর এমনভাবে কথা বলাতে স্পন্দন আর চুপ করে থাকতে পারলো না। অতশীকে বুক থেকে সরিয়ে উঠে গিয়ে তার পেটে মাথা রেখে বলতে লাগলো
—“জানিস, তোর মা আমাকে একটুও ভালবাসে না। কেমন যেন হয়ে গেছে। মনে হয় আমি তোর মায়ের মনের মতো হতে পারিনি। তুই তোর মা’কে বলে দিস ওর সাথে অনেক অভিমান করেছি আমি।” বলেই একটা চুমু দিয়ে উঠে যেতে নিল। পিছন থেকে অতশী তার হাতটা ধরে গাল ফুলিয়ে বললো
—“বাবু বলছে এখন ওর মায়ের এত্তোগুলা আদর লাগবে।”
এভাবে বলায় স্পন্দন মনে মনে হাসলো। মুখের ভাবভঙ্গিতে তা প্রকাশ না করে অন্যদিকে তাকিয়ে বললো
—“ডক্টর বলেছে এ সময়টা সাবধানে থাকতে। বেশি নড়চড় না করাই উচিৎ। অসাবধানতা বশত কিছু একটা হয়ে গেলে পরে পস্তাতে হবে।”
কথার উত্তরে অতশী টেনে টেনে বললো
—“হুম মনে আছে আমার। আর ডাক্তার এ-ও বলেছিল যে এ সময়টাতে হবু মা’কে বেশি বেশি আদর দিতে হবে। নয়তো বাবুর ওপর তার ইফেক্ট পড়বে। তুমি বুঝোই না আমি কী চাই।”

গত পরশু অতশীকে সিটিস্ক্যান করানোর পাশাপাশি স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞও দেখিয়ে এনেছে স্পন্দন। অতশীর শরীরের কন্ডিশন বেশি একটা ভালো না। বিপি একদম লো। বয়সের তুলনায় শরীরের ওজন একেবারেই কম। ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া করাতে হবে। প্রোপার যত্ন নিতে হবে। ভিটামিন, ক্যালসিয়াম ইত্যাদির ট্যাবলেট খেতে হবে। প্রেগনেন্সির এই সময়টায় মেয়েদের শরীরে বিভিন্ন হরমোনের কারণে বেশকিছু চেঞ্জেস হয়ে থাকে। বিশেষ করে মুড সুয়িং হয় যেকোন মুহূর্তে। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। যখন একা থাকে তখন দুশ্চিন্তা করে। তাই এ সময়টাতে একটু বেশিই আদর যত্ন দিতে হবে সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে। নয়তো রেগে গেলে উল্টো ফল খারাপ হবে। এজন্য তারা যা চায় তা-ই দেওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হয়। কারণ প্রেগনেন্সির সময়টাতে মেয়েদের এক্সপেক্টেশন আগের চেয়ে বেড়ে যায়। তাই সতর্কতা অবলম্বন করে তাদেরকে খুশি রাখার চেষ্টা করতে হয়। ডক্টরের কথাগুলো স্পন্দনের মাথায় গেঁথে গেছে। সেগুলোই ভাবছিল। অতশীকে মানানোর জন্য বললো
—“কেন শুধুশুধু জেদ করছো অতশী? এমন ছেলেমানুষি কোরো না প্লিজ! তোমাদের সেফটির কথা ভেবে আমি….”

স্পন্দনকে তার কথার মাঝেই বাধা দিয়ে অতশী কপট রাগ দেখিয়ে বলে
—“যাও যাও লাগবে না আমার আদর। তোমার আদরের দরকার নেই আমার। জানি তো এখন পুরাতন হয়ে গেছি না আমি! আমাকে আর ভালো লাগবে কেন! তোমার আদর তোমার কাছেই জমিয়ে রাখো নতুন বউয়ের জন্য। তাকে বেশি বেশি আদর দিও।”
স্পন্দনের মাথায় রক্ত চড়ে গেল অতশীর এমন কথা শুনে। হুঙ্কার দিয়ে বললো
—“অতশী! পাগলের মতো কিসব বলছো? মাথা ঠিক আছে তোমার? হাঁ? আর কোনদিন যদি শুনি এসব কথা তাহলে খুব খারাপ হয়ে যাবে এই বলে দিচ্ছি। দ্বিতীয়বার যেন এসব আর না শুনি তোমার মুখে।”
স্পন্দনের এমন হুঙ্কারে অতশী কেঁপে উঠলো কিছুটা। তারপর কান্নার অভিনয় করে বললো
—“এ্যাঁ…… বুঝে গেছি আমি, আমাকে তুমি ভালোই বাসো না। ভালবাসলে এভাবে ধমক দিয়ে কথা বলতে পারতা না।”
অতশীর সাথে এখন সে কথায় পারবে না। তাই হতাশ ভঙ্গিতে কঠোরভাবে বললো
—“এখন নতুন করে তোমাকে আমার ভালবাসার প্রমাণ দিতে হবে? আচ্ছা তাহলে ঠিক আছে। দেখি কতক্ষণ লোড নিতে পারো আমার আদরের। আজ আর ছাড়াছাড়ি নাই। দেখা যাক কেমন সহ্য করতে পারো আমার আনলিমিটেড আদর।”
স্পন্দনের এমন কথার পরে অতশী কিছু একটা বলতে নিচ্ছিল। কিন্তু তার আগেই সে থেমে যেতে বাধ্য হলো স্পন্দনের মধুর আলিঙ্গনে।

অরুনিমার চোখের দৃষ্টি অনুসরণ করে সামির সেদিকে তাকালো। দেখলো লাবণ্য এখনো তার হাত ধরে আছে। তাড়াহুড়ো করে হাতটা ছাড়িয়ে নিল। অপ্রস্ততভাবে অরুনিমার দিকে তাকিয়ে হালকা হেসে বললো
—“অরুনিমা! তুমি এখানে?”
তার জবাব না দিয়ে সে বললো
—“পাবলিক প্লেসে এসব তামাশা না করে নির্জন জায়গায় বসে করলে বরং ব্যাটার হয়। তাহলে আর কারো চোখে পড়বে না। লোকচক্ষুর আড়ালে গিয়ে হাত ধরাধরি করেন। সেখানে কেউ বাধা দিতে যাবে না। এভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাত ধরাধরি করলে যেমন লোকে মন্দ কথা বলবে তেমনি কারো অন্তর জ্বলে পুড়ে ছাইও হয়ে যেতে পারে। তাই পরবর্তীতে মাথায় রাখবেন আমার কথাগুলো।” বলেই উল্টো ঘুরে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়িয়েছিল। তখনই লাবণ্য বলে উঠলো
—“কিন্তু আপনি কে? আমাদের দুজনের মাঝখানে অনাহূতের মতো আপনি এসে ঢুকে পড়ছেন কেন? আমরা রাস্তায় হাত ধরাধরি করবো নাকি পার্কে বসে করবো তা কী আপনার কাছ থেকে পারমিট নিয়ে করতে হবে? হো আর য়্যু?”

লাবণ্যর এমন কথায় অরুনিমার শরীরে জ্বালা ধরে গেল। এখানে এসেই সে মেয়েটিকে চিনতে পারলো। এই মেয়েটিই ঐদিন সামিরকে সবার সামনে অপমান করে থাপ্পড় মেরেছিল। তার এই মুহূর্তে মন চাচ্ছে অসভ্য মেয়েটাকে দুই গালে গুনে গুনে চারটি থাপ্পড় মারতে। দাঁতে দাঁত চেপে চিবিয়ে চিবিয়ে বললো
—“আমি সামিরের গার্লফ্রেন্ড। হ্যাভ য়্যু এনি প্রবলেম?”
কথাটা শুনে সামির বেশ বিব্রতবোধ করতে লাগলো। অরুনিমাকে প্রত্যুত্তরে কিছু বলতে চায়ছে। কিন্তু জিহ্বাটা যেন ভারী হয়ে আসলো তার। অরুনিমা কথাটা বলার পর লাবণ্যর মুখটা হয়েছে দেখার মতো। অবাক বিস্ময়ে হতবাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তার মানে সামিরকে সে রিজেক্ট করার পর এ মেয়েটার সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছে সামির! তাকে আর কিছু ভাবতে না দিয়ে সামির বলে উঠলো
—“এসব কী বলছো তুমি অরুনিমা? তুমি আমার….”
হাত তুলে তাকে থামিয়ে দিয়ে বললো
—“আপনি চুপ থাকেন। আপনার মতো মেরুদণ্ডহীন পুরুষ আমি জীবনেও দেখিনি। আরে সেল্ফ-রেস্পেক্ট বলেও তো একটা জিনিস আছে, নাকি? আপনার মাঝে তার ছিটেফোঁটাও নেই। প্রতিনিয়ত অপমানিত হয়েও দিনের পর দিন একজনকে নিঃস্বার্থভাবে ভালবেসেই গেছেন বেসেই গেছেন। কিন্তু বিনিময়ে কী পেলেন? লাঞ্চনা, অপমান, অবহেলা, গালমন্দ, থাপ্পড় সাথে আবার রেপিস্টের উপাধিও পেয়েছেন ফ্রিতে। প্রাপ্তির খাতায় আর কী পাওয়ার বাকী আছে বলতে পারেন?”

রাগে, ক্ষোভে ভিতরের সবকিছু আজ উগরে দিল অরুনিমা। বিস্ফোরিত চোখে লাবণ্য কিছুক্ষণ অরুনিমার পানে তাকিয়ে গটগট করে সে জায়গা থেকে দ্রুত প্রস্থান করলো। আর সামির বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ হয়ে অরুনিমার দিকে তাকিয়ে আছে অপলক। এসব কিছু অরুনিমা জানলো কী করে!

চলবে……..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে