স্বামীর ভালোবাসা part : 34
লেখিকা সুরিয়া মিম
!
পাগল যেন কোথাকার?
!
হা হা হা,
!
তারপর আমি চুপটি করে ঘুমিয়ে পরি
……
মাঝরাতে হঠাৎ করে আমার ঘুম ভেঙে যায় কারো কান্নাকাটির শব্দে,
…….
তাই আমি শোয়া থেকে উঠে বসার চেষ্টা করি,
…..
তখন ভালো করে খেয়াল করে দেখি,
……..
উনি আমার কোলের মধ্যে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কাঁদছেন,
…….
আর কি যেন বিড়বিড় করছেন?
….
হঠাৎ করে খুব জোড়ে বলে ওঠেন,
.. ….
তুমি আমাকে ছেড়ে কোথাও যেতে পারবেনা,
…..
আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচতে পারবোনা,
…
মিশ তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যেতে পারো না কিছুতেই না,
!
মাম্মাম পাপাই এমন করছে কেন?
!
জানিনা মা,
!
মাম্মাম আমরা ভয় পেলে তুমি যেমন আমাদের তোমার বুকে জড়িয়ে আদর করে করে দাও…
……..
পাপাই কেও সেভাবে আদর করে দাও না মাম্মাম,
তাহলে পাপাই ভালো হয়ে যাবে,
মাম্মাম,
….
তোমার এমন মনে হয় মা?
!
হ্যা মাম্মাম তুমি পাপাই কে আদর করে দাও না প্লিজ,
…..
হ্যা দিচ্ছি,
. …..
মেয়ের কথা শুনে ওনাকে ভালো করে শুইয়ে ওনার মাথায় হাত বুলিয়ে দেই,
….
আর উনি কিছুক্ষণের মধ্যে শান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পরে,
….
তারপর ছেলের গায়ে কাঁথা টেনে দিয়ে,
মেয়ে কে আদর করে ঘুম পারিয়ে নিজে ও ঘুমিয়ে পরি,
.. …
পরেরদিন ভোরে উঠে দেখি,
….
আমার পাখি দুটো আমার কোলের মধ্যে ঘুমিয়ে আছে,
…..
আর উনি ফজরের সালাতে চোখেরজল ফেলছেন,
……
তাই আমি আস্তে করে বাবুদের শুইয়ে ফ্রেশ হয়ে এসে নামাজ পরে ছাদে চলে যাই,
.. ….
কিছুক্ষণ পরে হঠাৎ কেউ আমাকে পেছন থেকে শক্ত করে জড়িয়ে,
……
সাথে সাথে পেছনে ফিরে দেখি উনি,
..
উনি আমার গালে চুমু দেওয়ার চেষ্টা করতেই,
আমি শরে যাই,
…..
তখন উনি আমার হাত আলতো করে চেপে ধরে বলে,
….
আমি জানি,
ক্ষমার পরে ও তোমার সব টা জুড়ে আমার জন্যে ঘৃণার বসবাস,
….
আমি তোমাকে জোড় করবোনা আমাকে ভালোবাসার জন্যে,
..
তুমি যেদিন আমাকে মন থেকে মেনে নিতে পারবে,
সেদিন আমি আমার সমস্ত সখ আল্লাদ তোমাকে এসে বলবো,
……..
কারন আমি বুঝে গেছি,
…..
জোড় করে শরীর পাওয়া গেলে ও মন পওয়া যায়না,
….
তাই তোমার মন যেদিন পাবো,সেদিন আমি তোমাকে পেয়ে যাবো,
…..
তারপর উনি চুপটি করে আমার পাশে দাঁড়িয়ে থাকে,
….
পরে চোখেরজল মুছতে মুছতে নিচে চলে যায়,
…….
উনি যেতেই ম্যারি এসে বলে,
!
ম্যাম সাইকোথেরাপিস্ট বলেছেন,
…
স্যরের ওপরে কোনো প্রসার ক্রিয়েট করা যাবেনা,
…..
স্যরের সাইকোলজিক্যাল প্রবলেমের অনেক ক্ষতিকর দিক আছে,
………
যার জন্যে ভবিষ্যতে স্যরের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যেতে পারে,
……
ম্যাম স্যরের এখন আপনার ভালোবাসার খুবি প্রয়োজন,
……
ডক্টর বলেছে ছয় বছরে স্যরর কারো ভালোবাসা গভীর ভাবে অনুভব করেনি,
…..
তাই এখন স্যরের এই অবস্থা,
আপনার একটু ভালোবাসা স্যর কে সুস্থ করতে যথেষ্ট,
…..
তাই আপনি ওনা কে আর নিজের থেকে দূরে সরিয়ে রাখবেননা প্লিজ,
….
জানি স্যরর আপনার সাথে অন্যায় করেছে,
….
কিন্তু পরে মানুষ টা নিজেই ভালোবাসার অভাবে ভেঙে পরেছেন,
…
জানি আপনি যে গুলো ফেস করেছেন,
সে গুলো ফেস করা সবার পক্ষে সম্ভব নয়,
তবু ও ম্যাম আপনাকে অনুরোধ করছি প্লিজ আপনি…….
……
!
ম্যারি ম্যারি ম্যারি একটা কথা বলো তো?
তোমাদের স্যর ব্রেকফাস্টে কি খেতে পছন্দ করেন?
…
ম্যাম আপনি যেটা স্যর কে করে খাওয়াতেন ওই টা,
!
ওমা তাই?
!
জ্বি ম্যাম,
!
ম্যারি তুমি তোমার সাইকোথেরাপিস্ট প্রফেশনে কত বছর ধরে আছো?
!
আপনি বুঝলেন কি করে?
!
ফেমাস সাইকোথেরাপিস্ট কে কেনা চেনে বলো?
!
গত ছয় বছর ধরে আপনার হ্যাজবেন্ডের চিকিৎসা করতে করতে আমি তার প্রেমে পরে গেছি,
….
কিন্তু সে যে আপনার প্রেমে পরেছে,
সেখানেই পরে আছে,
….
ওঠার কোনো নাম নিচ্ছে না,
…………
কারন তার বিশ্বাস ছিল যে আপনি তার কাছে ফিরে আসবেন,
….
এখন যখন এসেই পরেছেন তাকে ভালোবেসে সুস্থ করার দায়িত্ব আপনার,
…..
তাহলে আপনি কোথায় যাবেন?
!
কোথায় আবার অন্যকারো প্রেমে পরতে,
…..
আসলে আপনার স্বামী কে ইম্প্রেস করার চেষ্টা করে ছিলাম,
…
তখন ভেবে ছিলাম রাজা দখল করে রানী হয়ে থাকবো,
….
পরে বুঝলাম রাজা তার রানীর দখলেই আছে,
শুধু তার রানী টা তার কাছে নেই,
…..
আপনি জানেন আপনার স্বামী কোনো মেয়ের দিকে চোখ তুলে তাকায় না,
….
কারন তার তাকাতাকি সবি আপনাকে ঘিরে সীমাবদ্ধ,
…..
কারন সে আপনাকে ভালোবাসে,
…
আর তাই তো কাল রাতে উনি কোনো পাগলামো করেননি,
….
না হলে প্রতি রাতে উনি পাগলামো করেন আর আমাকে তাকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পারিয়ে রাখতে হয়,
….
যদি ও সবসময় সম্ভব হয় না,
কারন উনি রুমের দরজা লাগিয়ে ঘুমোতে যান,
!
তাই যেদিন দরজা খোলা থাকে ওদিন ইনজেকশন লাগিয়ে দেই,
!
জানেন আপনার স্বামীর প্রেমে পরে,
আমি আপনার মতো হয়ে নিজেকে প্রেজেন্ট করে ছিলাম,
…..
আপনাদের বেড রুমে বসে ছিলাম
তখন আপনার স্বামী আমাকে কি বলেছে?
!
বলেছিল,
“কয়লা ধুলে ময়লা যায় না”
….
“নিজের হিরে টাকে কাঁচ মনে করে ফেলে দিয়ে ছিলাম,
….
আর এখন সেই হিরে আমি আমার সবকিছু দিয়ে ও খুজে পাচ্ছিনা,
…. .
ভালোবাসা অতি পবিত্র একটা জিনিস এটা কে শারীরিক চাহিদার সাথে গুলিয়ে ফলবেন না,
….
ভালোবাসা ও চাহিদার মাঝে আকাশপাতালের তফাৎ,
…..
আফসোস আপনি ও আমার মতো ভুল করে শারীরিক চাহিদা কে ভালোবাসা মনে করে,
……
আমার বৌয়ের সাড়ি চুড়ি পরে বসে আছেন,
!
আফসোস মানুষ দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বোঝেনা,
…..
আপনি ও তো বিবাহিত নিজের স্বামীর অগোচরে কেন ব্যভিচারিণী হতে চাইছেন?
!
আপনার স্বামীর এই প্রশ্ন শুনে বুঝে গেছিলাম সে বদলে গেছে,
আর সে শুধু আপনাকে ভালোবাসে,
!
ওদিনের পরে আমি ওনাকে আমার মুখ দেখাই নি,
শুধু ওনার সাইকোথেরাপি ও সমস্যা নিয়ে ফোনে কথা হয়,
!
আর আজ উনি আমাকে ইনভাইট করেছেন,
তোমার সাথে পরিচয় করাতে,
!
জানেন আমি আমার জীবনে নিজের ভুল বুঝতে পারা মানুষ খুবি কম দেখেছি হুমম,
!
ওই দিনের পরে আমি ও আমার স্বামীর কাছে গিয়ে ক্ষমা চেয়েছি,
সেও আমাকে আপন করে নিয়েছে,
!
তাই বলেছি ওনা কে আর পাগলামো করার সুযোগ দিও না,
……
পাগল হয়ে গেলে না তোমাকে চেপে ধরে ভালোবাসা আদায় করবে,
…..
যা করে করুক গিয়ে আমি কি ওনা কে ভয় পাই নাকি?
!
কি যে বলনা তুমি,
তাহলে কি করবে তুমি?
!
কি করবো?
ওনা কে এগরোল করে খাওয়াবো,
!
আচ্ছা মিশকা আমি এখন আসি,
!
কেন একটু থেকে যাও?
!
আরেকজন পেশেন্ট আছে তাকে দেখতে যাবো,
!
ম্যারি যেতেই আমি ওনার জন্যে এগরোল বানিয়ে রুমে নিয়ে যাই,
!
সেখানে গিয়ে দেখি,
…
উনি বেডে শুয়ে শুয়ে চোখেরজল জল মুছছেন,
!
আমি ওনার মাথার কাছে গিয়ে বসতেই উনি আমার দিকে তাকায়,
!
কি হলো?
!
খিদে লাগেনি তাই না?
আমি তো আপনার জন্যে এগরোল করে এনেছি,
!
তাই?
!
হ্যা উঠে বসুন আমি এখনি খাইয়ে দিচ্ছি,
!
তখন উনি মিষ্টি হাসি দিয়ে উঠে বসে আর আমি ওনাকে ও বাবুদের সাথে খাইয়ে দেই,
!
বাবুরা স্কুলে যেতেই আমি এসে শুয়ে পরি,
…..
কিছুক্ষণ পরে সে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুম মনে করে গালে চুমু খেয়ে বলে,
!
তুমি তোমরা আমার কাছে আছো আমি তাতেই খুশি,
……
আর কিছু চাইনা
চলবে