স্বামীর ভালোবাসা part : 25
লেখিকা সুরিয়া মিম
!
কারন আমি তোমাকে ঘৃণা বই আর কিছু করিনা,
!
তারপর পরাণ দুটো কে শুইয়ে ওদের মাঝে শুয়ে পরি আমি,
!
পরেরদিন ভোর বেলা ঘুমঘুম চোখে চেয়ে দেখি,
……
যে উনি এখনো ফ্লোরে শুয়ে মটকা মেরে পরেপরে ঘুমোচ্ছে,
………….
দাড়াঁও ব্যাটা বিটকেল খুব ঘুম পেয়েছে তাই না?
……
ঘুম তোমাকে পরাচ্ছি ঘুমো তুমি,
…….
তারপর আমি তাড়াতাড়ি উঠে শাওয়ার নিয়ে নামাজ পরে,
এক বালতি পানি এনে সোজা ওনার গায়ে ছুড়ে মারি,
….
আর উনি সাথে সাথে শোয়া থেকে উঠে দাঁড়িয়ে,
…
চোখ পিটপিট করে মুচকি হাসি দিয়ে টাওয়াল টা দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে রুমের বাহিরে চলে যায়,
!
বেটা অসভ্য টার হলো টাকি?
…..
যে উনি কিছু না বলেন মুচকি হাসি দিয়ে এখান থেকে চলে গেল,
……… কি চলছে কি ওনার মাথায়?
… ….. ….
নিশ্চিত কোনো দুষ্টু বুদ্ধি তার মাথায় ঘর করেছে,
….
তাই সে আমাকে মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেল?
…..
তবে সে যাই করুক না কেন?
আমার জানা প্রয়োজন, যেসে কি করতে চাইছে?
!
তখনি আমার পরাণ দুটো কান্না করে ওঠে,
!
আর আমি ওদের কোলে নিয়ে আদর করে খাইয়ে শুইয়ে দিয়ে গায়ের জামা গুলো চেইঞ্জ করে দেই,
………..
পরে ময়না কে ওদের কাছে বসিয়ে রেখে,
আমি পাখি কে সাথে করে ব্রেকফাস্ট বানাতে কিচেনে চলে যাই,
!
ব্রেকফাস্ট বানানো হয়ে এলে দোতলায় তাকিয়ে দেখি,
……..
উনি রয়্যাল ব্লু কালারের কোর্ট, প্যান্ট, টাই , সাদা শার্ট ও টাইটান ব্রান্ডের রিস্ট ওয়াচ পরে এসেছেন,
……..
এতো ক্ষণে বুঝালাম ওনার মিস্তি হাসির কারণ,
…..
বাহহ উনি তো আমাকে ইম্প্রেস করতে আমার ফেভারিট কালারের কমপ্লিট সুট পরে এসেছেন,
…….
কিন্তু এখন আর আমি ইম্প্রেস হই না,
…….
কারন আপনি আমাকে, আমার ভালোবাসা কে অপমান করে অসম্মান করে দুমড়ে মুচড়ে দিয়েছিলেন তাও আবার অন্য কাও কে নিজের করে পওয়ার জন্যে,
…….
ছিঃ সেই আপনি এখন আমার বিপদের সুযোগ নিয়ে,
আমার সাথে থাকার চেষ্টা করছেন?
…….
আপনি একটা বহুরূপী মানুষ,
হয়তো এই বিপদে না পরলে আপনার আসল চেহারা টাই কখনো দেখতে পেতাম না আমি,
……
কি ভাবছ?
কেমন লাগছে আমায়?
!
আপনাকে না মুখোস ধারি মানুষ বলে মনে হচ্ছে আমার,
যার আছে বহুরূপ এবং সেই রুপের কোনো ব্যাখ্যা হয় না,
আই মিন তুলনা হয় না,
!
তুমি কেন?
আমাকে অলওয়েজ কষ্ট দিয়ে কথা বলো?
!
আপনাকে তো দেখে মনে হচ্ছেনা,
যে আপনি আমার কথায় কোনো কষ্ট পেয়েছেন?
!
সবসময় কি কষ্ট টাকে প্রদর্শন করে বেড়াতে হবে?
!
আপনার কষ্ট প্রদর্শনের টাইম নেই আমার,
……..
আপনি আপনার চরকায় তেল দিলে ভালো হয় প্লিজ,
……
এভাবে অবাক হয়ে কি দেখছেন আপনি?
……
অফিসে তো যেতে হবে খেতে বসুন প্লিজ?
!
খিদে নেই আমার,
!
খেলে খাবেন না খেলে দরকার নেই,
পাখি?
!
জ্বি বৌ রানী?
!
আমার খাবার টা ঘরে নিয়ে এসো প্লিজ,
!
হ্যা আপনি যান আমি আসছি,
!
তুমি কেন এভাবে বদলে গেলে?
…
আগে তো তুমি আমি না খেলে পাগল হয়ে যেতে,
খাবার না খেলে নিজের হাতে খাইয়ে দিতে,
……..
অফিসে গিয়ে নিজের রান্নাকরা খাবার খাইয়ে দিতে,
…….
তুমি ভালো করেই জানো আমি বাহিরের খাবার খেতে পারিনা,
….
খেলেই অসুস্থ হয়ে পরি,
….
সেই তুমি আমার আমার মুখের ওপরে বলে দিলে,
“খেলে খাবেন না খেলে দরকার নেই ”
. . .
আমি মানছি সব আমার দোষ আমার অপকর্মের ফল,
তা বলে তুমি আমাকে তোমার থেকে এতো টা দূরে ঠেলে দিবে?
!
কি হলো কি এতো ভাবছেন ?
অফিসে যাওয়া কি ক্যান্সেল নাকি হুমম?
…….
দেখুন আপনাকে আমার খুবি বোরিং লাগে,
……
তাই এই মুখ টা আমাকে চব্বিশঘণ্টা দেখাবেন না প্লিজ,
!
আচ্ছা দেখাবো না,
তবে,
কালকের বিশেষ দিনের কথা মনে আছে তোমার?
!
কালকে কি বিশেষ দিন মিস্টার খান?
!
তুমি মজা করছ তাই না?
!
নাহহহহ কালকে কি কোন বিশেষ দিন কিছুই মনে নেই আমার?
বুঝলেন মিস্টার খান,
!
তাহলে সময় মতো আমি তোমাকে মনে করিয়ে দিবো কেমন?
!
না দরকার নেই,
!
তারপর উনি অফিসে চলে যায়,
!
রাতে বাসায় ফিরতেই ওনার চেহারা বদলে যায়,
কেমন যেন হাসি হাসি মুখ?
কি যেন বলতে চাইছে?
তবু ও বিষয় টা এড়িয়ে যাচ্ছেন,
……..
তার ওপরে হঠাৎ করে ময়না পাখি কে দুদিনের ছুটি দিয়ে দিয়েছে,
……
কি জানি?
কি চলছে কি ওনার মাথায় আল্লাহ মালুম,
!
ধুররররর,
বাবা ভাল্লাগেনা ,
আজকে এই লোক টার সাথে খেতে বসতে হবে আমার?
!
কিছুই ভালো লাগছে না আমার,
!
তাই আমি ওনার জন্যে খাবার সার্ফ করে রেখে আমার খাবার খেয়ে বাবুদের কাছে রুমে চলে যাই,
!
তারপর ওদের খাইয়ে দিয়ে মেয়ে কে ঘুম পারিয়ে ছেলে কে ঘুম পরাতে ওকে কোলে নিয়ে রুমের মধ্যে পাইচারি করতে থাকি,
!
হঠাৎ করে দরজার দিকে নজর যেতেই আমাদের চোখাচোখি হয়ে যায়,
………
তখন উনি আমাকে আবারো রহস্যময় মুচকি হাসি দিয়ে চল যায়,
!
ঠিক যেমন চোর চুড়ি করার আগে রেস সিগনাল দিয়ে যায় তেমন,
!
উফফফ,
আমার এই লোক টাকে অনেক অসহ্য লাগছে,
কি জানি কি আছে আমার কপালে?
!
তারপর আমি দরজা লাগিয়ে বেবি কে নিয়ে শুয়ে পরি,
!
কিন্তু কেন যেন খুব অসহ্য লাগছে আমার?
!
তাই আমি আমার পরাণের পরাণ দুটোর কপালে চুমু খেয়ে,
!
দরজা চাপিয়ে দিয়ে ছাদে চলে যাই,
!
কিছুক্ষণ ছাদে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার পর,
কারো উপস্থিতি টের পেয়ে পেছনে ফিরে দেখি,
!
উনি আমার সামনে কত গুলো গোলাপ ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে,
!
আমি ওনার পাশ কাটিয়ে যেতে শুরু করতেই উনি,
!
আমার হাত ধরে আমাকে খুব শক্ত করে ওনার বুকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে বলে,
!
হ্যাপি ম্যারেজ অ্যানিভার্সরি সোনা,
!
ওনার এ কথা শুনে আমার ওনার ওপরে মেজাজ খারাপ হয়ে যায়,
।।।।।
কারন আমার নিজের ওপরে ঘৃণা আসছে খুব,
তাই আমি ওনা কে ধাক্কা মেরে নিচে ফেলে দেই,
!
আজকে আমাদের বিয়ের দু বছর পূর্ণ হলো,
আর তুমি এমন করছ?
!
দেখুন আমি ইশা নই যে যখনতখন যারতার প্রয়োজনে নিজের শরীর কে বিলিয়ে দিবো,
!
সোজা কথায় আমি কোনো সস্তার জিনিস নই যাকে আপনি আপনার ইচ্ছে মতে ব্যবহার করবেন,
!
তুমি ভুল ভাবছ?
!
না আমি ভাবিনি এখন এই মুহূর্তে ইশার সত্যি টা না জানলে আপনি ওকে নিয়েই আপনার সংসার করতেন,
ওকেই ভালো বাসতেন,
…..
তাহলে আপনি আর আমাকে নিয়ে এতো টা নাটক করতেন না,
!
আমি?
!
কি আমি?
আমি আপনার সাথে থাকতে চাই না কিছু তেই না সেটা কি আপনি বোঝেন না?
!
আপনি আমাকে ছুঁইলে আমার ঘৃণা করে মিস্টার খান,
!
আমি কখনওই তোমাকে কষ্ট দিবো না,
!
যা দেওয়ার আপনি দিয়ে ফেলেছেন,
আর দেওয়ার কিছু নেই মিস্টার খান,
!
পারলে এখন আপনি আমাকে ডিভোর্স দিয়ে মুক্তি দিন আমি এতেই খুশি মিস্টার খান,
!
না আমি কখনওই তোমাকে ছেড়ে যাবো না,
কখনওই যাবো না,
একবার বোকামো করেছি আর না,
!
আপনার কুমিরের কান্না আমাকে দেখাবেন না প্লিজ,
!
তখন উনি আমাকে আবারো ওনার বাহুডোরে জড়িয়ে ধরে বলে,
!
আমরা সবকিছু নতুন করে শুরু করবো,
!
আমার আপনাকে ঘৃণা করে করে আপনি আপনার নোংরামো করা বন্ধ করুন প্লিজ,
!
আপনি আপনার ওই নোংরা হাত দিয়ে আমাকে ছোঁবেন না প্লিজ,
!
আমি তোমাকে ভালোবাসি, সবসময় ভালোবাসি,
কখনো তোমাকে ভুলতে পারিনি,
!
আমি নোংরা নই আমি তোমাকে ভালোবাসি,
!
আমি আপনাকে ভালোবাসি না আমি শুধু আমার বাচ্চা দুটোর সাথে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়ে বাচতেঁ চাই,
!
আমি তো তোমাদের নিয়ে বাচঁতে চাই সোনা,
!
তারপর আমি ওনাকে কোনো মতে ছাড়িয়ে আমার রুমে চলে যাই,
….
আর বাচ্চাদের জড়িয়ে ঘুমিয়ে পরি,
!
পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে কিচেনে গিয়ে দেখি,
……
উনি রান্নাবান্না করছেন,
……
তাতে আমার কি?
…….
ভালোই হলো,
এখন থেকে নিজের খাবার নিজে বানিয়ে খাবেন
চলবে