স্বামীর ভালোবাসা part : 11

0
4366

স্বামীর ভালোবাসা part : 11

লেখিকা সুরিয়া মিম

!
তয় ওহন বইসে বইসে কল্পনা কর কি কি পাবে?
হা হা হা,
!
তুমি বলতে পারো ইশারর আম্মু কোন পাপের জন্যে আল্লাহ আমাদের এমন করে শাস্তি দিচ্ছে?
যে আমাদের ছেলেমেয়ে দুটো এভাবে নষ্ট হয়ে গেল?
বাড়ি গাড়ি টাকা পয়সা কোনো কিছুর অভাব নেই,
অভাব শুধু একটাই আর সেটা হলো ছেলেমেয়ে দুটো কে মানুষের মতো পারিনি,
!
পারবো কি করে?
একজন কে জন্মের পরেই সে কালো বলে তাকে উনিশ বছর আগে অনাথ আশ্রমে ফেলে এসেছিলাম তার নিষ্পাপ মুখ দেখার ও প্রয়োজন করিনি,
কেন সে কালো ও আমাদের জন্যে একটা কন্যাসন্তান যথেষ্ট ছিল তাই?
আজ আমাদের সাথে এসব কেন হচ্ছে জানো?
!
বাচ্চা টাকে যে কষ্ট আমাদের জন্যে ফেস করতে হয়েছে আল্লাহ তারি জন্যে আমাদের সাথে এগুলো করছে,
!
এই উনিশ বছরে আমাদের মেয়েটা বোধ হয় অনেক বড় হয়ে গেছে তাই না?
একবার চোখের দেখা ও দেখতে যাওয়া হয়নি তাকে অনাথ আশ্রমে,
!
একবার নিয়ে যাবে সেখানে আমাদের মেয়েটার কাছে?
!
ওকি এখনো ওই অনাথ আশ্রমে আছে?
যদি থাকে তাহলে কেমন দেখতে হয়েছে আমাদের মেয়ে টা?
যাবো আমি সেখান যাবো ইশার আম্মু,
আর আমাদের মেয়ে কে বলবো,
মা তোর অভিশাপ টা ফিরিয়ে নে মা এই বয়সে এতো কিছু সহ্যকরার ক্ষমতা
নেই রে মা,
!
তুমি জানো আব্বু তুমি আবারো দাদুভাই হতে চলেছ,
তোমার ছেলে তো বাবা হওয়ার খুশি তে পাগল হয়ে যাচ্ছে,
আজই তার সাথে দেখা হলো আমার, আর তার চোখমুখ ঠিকরে বাবা হওয়ার খুশি উপচে পরছে,
!
ওই বাচ্চা এ দুনিয়ার মুখ দেখবে না মা,
!
মা উনি তোমার ছেলে তুমি ওনা কে অভিশাপ দিচ্ছ?
!
অভিশাপ নয় এটাই হবে দেখেনিস তুই,
আর ও আমার ছেলে না ও আমার কেউ না,
ইশা কে নিয়ে আজ যে আদিক্ষেতা গুলো ও করছে,
সে গুলো ওর তোকে নিয়ে করা করা উচিত ছিল,
!
আজ ও ফুটফুটে দুটো বাচ্চার বাবা হয়ে ও নিজের পিতৃত্ব থেকে অজানা,
এমন একটা মানুষ ও জানেই না যে ও আজ এই মুহূর্তে দু-দুটো সন্তানের বাবা,
!
মা একটু শান্ত হও তোমার বি.পি হাই হয়ে যাবে,
!
যাবেনা মা চল আমি তোকে খাইয়ে দেই,
তুই না খেলে ওরা খাবে কি?
!
কেন তোমাদের আদর খাবে,
তোমাদের মতো শশুড়-শাশুড়ি যে আমার কপালে ছিল এটা আমি স্বপ্নে ও ভাবিনি মা,
!
ফারদার যদি শশুড়-শাশুড়ি তোর মুখ থেকে শুনেছি?
আমার চেয়ে খারাপ কেউ হবে না,
!
তোমার চেয়ে খারাপ আর কেউ হতে ও পারবেনা আম্মু,
!
ফাজিল মেয়ে যেন কোথাকার,
এতকিছুর পরে ও এত হাসিখুশি থাকিস কি করে মা?
!
তোমাদের জন্যে মা,
মা আই লাভ ইউ,
!
আই লাভ ইউ টু আমার সোনা মা,
!
বাড়ির বৌ টাকে ও বাড়ির মেয়ে বানিয়ে রেখেছ,
আর আমি তো মনে হয় বানের জলে ভেসে এসেছি,
!
নাতো কি?
হিংসুটে যেন কোথাকার?
!
আম্মু তোমার বৌ মা বলে কি?
!
তোর মাথা চল আমার সাথে চল,
বলে আম্মু ইমা কে তার সাথে করে নিয়ে যায়,
!
তারপর আমি আমার ফেসবুক ওর্নামেন্টস গ্রুপে ঢুকি,
সেখানে ঢুকে অনেকের ওয়ার্ডার কালেক্ট করার পর,
!
হঠাৎ করেই মিস্টার ইমান খানের কমেন্ট দেখতে পাই,
কমেন্টে লেখা ছিল,
!
তোমার ক্রিয়েশন গুলো জাস্ট ওয়াও আমি আমার ওয়াইফের জন্যে তোমার থেকে ম্যাজেন্ডার কালারের রেশমি সুতের ব্লাইডাল ওর্নামেন্টস নিতে চাই,
সো আমি এগুলো কি ভাবে কালেক্ট করবো?
!
তার প্রশ্নের উওরে আমি বলি,
আপনি হয় তো গ্রুপের পিন পোষ্ট টি পরে দেখেননি,
ওখানে আমার গ্রুপের রুলস ও ডেলিভারি সিস্টেম এক্সপ্লেইন করা আছে,
!
সেটা আমি পরেছি আমি বলতে চেয়েছি এই ওর্নামেন্টস গুলো আমি কবে আমার হাতে পাবো?
!
তিনদিন পরে পেয়ে যাবেন স্যরর,
!
ওকে,
কুরিয়ার করতে হবে না আমি পিক আপ পয়েন্ট থেকে নিয়ে যাবো,
!
ওকে স্যার,
!
তারপর আমি ফেসবুক থেকে লগ আউট করে কিছুক্ষণ পড়ালেখা করে,
মিস্টার ইমান খানের ওয়াইফের জন্যে ওর্নামেন্টস বানাতে বসি,
!
তখন মা এসে আমার হাত থেকে ও গুলো কেরে নিয়ে বলে,
!
তুই ইমান কে মানা করে দে,
তুই ইশার জন্যে কিছু বানাবি না কেমন?
!
মা তুমি এমন কর কেন হুমম এটা তো আমার কাজ তাই না?
তাহলে তুমি এটা বলছ কেন বল?
!
তোর কষ্ট হয় না মা?
!
আগে হতো এখন আর হয়না কোনো ফিলিংস নেই তোমার ছেলের প্রতি আমার,
!
পাগলী মেয়ে আমার,
তখন মা আমাকে নিজের হাতে খাইয়ে দেয়,
!
তারপর আমার কলিজার টুকরো দুটো উঠে কান্না জুড়ে দেয়,
তখন আমি ওদের কোলে তুলে আদর করে খাইয়ে দেই,
এবং ওদের বুকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে যাই,
!
পরেরদিন সকালে নিজের হাতে অনেক সুন্দর করে ক্রিম কেক বানাই কারন আজ আমার রুহানের বার্থডে,
!
আর দুপুরে রুহানের বার্থডে সেলিব্রেট করতে আমি আমার বানানো কেক নিয়ে হোটেল স্কাই সিটি তে যাই এবং অনেক সুন্দর করে স্টাফদের দিয়ে একটা টেবিল বেলুন দিয়ে ডেকোরেশন করাই,
!
তখন হঠাৎ সামনের টেবিলে নজর যেতেই দেখি,
মিস্টার খান তার ওয়াইফ কে নিজের হাতে খাইয়ে দিচ্ছেন,
!
হঠাৎ করে ওনার নজর আমার ওপরে পরতেই উনি ওনার ওয়াইফের সাথে লুতুপুতু মার্কা আলোচনা শুরু করে দেয়,
!
তখন হোটেল ম্যানেজার এসে আমাকে বলে,
!
ম্যাম আপনি আপনার গেস্টের জন্যে যে স্পেশাল খাবার গুলো ওয়ার্ডার করেছেন ও গুলো তৈরি হয়ে গেছে,
আপনি একটু টেস্ট করে দেখে নিন প্লিজ,
!
ওকে সার্ফ করার ব্যবস্থা করুন,
!
অ্যাজ ইউওর উইশ ম্যাম,
!
তারপর আমি খাবার গুলো টেস্ট করে নেই,
আর অন্যান্য ফ্রেন্ডস ও বার্থডে বয় রুহানের জন্যে অপেক্ষা করতে থাকি,
!
জানিনা মিশকা কারন জন্যে এতো আগ্রহ নিয়ে এখানে বসে আছে,
সে যেই হোক কোনো ছেলে হবে না হয়ত,
তবে ও এমন কেন?
চুপটি করে বসে আসে,
একবারো এদিকে তাকিয়ে দেখছে না,
!
কি হলো বাবু?
আবার কি ভাবতে বসেছ হুমম?
!
কিছুনা বেবি,
ভাবছি আমাদের বেবি টা হয়ে গেলে আমরা আবারো বিয়ে করে গ্রিসে যাবো হানিমুনে,
!
গ্রিসে গিয়েছি কয়েকবার এবার থাইল্যান্ড যাবো,
!
ওকে বেবি,
!
বিয়ে করবি একটা ক্যান দশ টা কর অসভ্য বেটা জানি কোথাকার,
!
তখন হঠাৎ কেউ মিশকার ভাবনায় ছেদ ঘটিয়ে ওর গালে চুমু খেয়ে বলে,
!
আমরা এসে গেছি বেবি,
!
সাথে সাথে মিশকা তাকিয়ে দেখে জিসা, জাহাদ আর বার্থডে বয় ফোনে কথা বলতে বলতে এদিকে আসছে,
!
রুহান ফোনে কথা বলতে বলতে এসে মিশকা কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ওকে খুবি শক্ত করে নিজের বুকে জড়িয়ে ধরে,
!
সাথে সাথে এদৃশ্য দেখে আমার্র চোখ থেকে কয়েক ফোটা জল গড়িয়ে পরে,
!
কারন আমার মনে হলো,
কেউ আমার আত্নাকে আমার থেকে কেড়ে নিতে চাইছে?
আমার কেন এতো কষ্ট হচ্ছে ওকে অন্য কারো বুকে জড়িয়ে থাকতে দেখে?
!
আমরা এই নয় মাস একে অপরের ধরা ছোয়ার বাহিরে,
না আমাদের মাঝে ভালোলাগা আছে না আছে ভালোবাসা, তাহলে কেন আমি ওকে রুহানের বুকে মেনে নিতে পারছিনা?
কেন আমার এতো কষ্ট হচ্ছে?
!
তখন আরিয়ান ওকে গুঁতো মেরে বলে,
!
ভাই ওই রুহান কে দেখ,
ও তো পাকা খেলোয়াড়,
একটু আগে মিশকা কে জারিয়ে ছিল এখন ওর হাত কেক খাচ্ছে?
!
ওটা কে কেক খাওয়া বলে না কেকের মেকআপ করা বলে,
দেখো ওই মিশকা রুহান ও ওর বন্ধুূদের কেক মাখিয়ে ভূত করে দিচ্ছে,
!
শুধু কি তাই?
ভূতেরা আবার দৌড়াদৌড়ি ও করছে,
!
আমার তো ডাউট হচ্ছে এটা হোটেল না খেলার মাঠ যে ওরা একে অপর কে কেক লাগাতে ছুটোছুটি করছে?
!
তখন ইমান অতীতের কথা মনে করে হাসতে হাসতে বলে,
!
ও তো এমনি আমাকে ও কেক লাগিয়ে ভূত বানিয়ে রাখত আর আমি লাগাতে গেলেই আমাকে বাহানা দিয়ে পালিয়ে যেত,
!
ইমানের কথা শুনে আয়ান ইশা হা হা করে হেসে দেয়
.চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে