#seeing_with_you
Episode – 29 #আমরা
Writer – Zaira Insaan
সন্ধ্যা নেমেছে সেই কখন,পশ্চিম দিক থেকে ভেসে আসা নরম ঠান্ডা হাওয়ায় নড়েচড়ে উঠছে মোমো। মাথায় এক রাশ টেনশন আজ ৩ দিন পূরণ হলো কিন্তু তার মামা চাচারা কোনো খবর নিয়ে আসিনি। অথচ মুরাক নিজের সম্পর্কে সব সত্যই বলেছে, কেন এতো দেরি হচ্ছে সব? অস্তির হয়ে পড়ছে বারবার সস্তির গন্ধ যেন তার নাকে লাগছে না। মুরাক কে যতবার কল করে ততবারই মুরাক শুধু একটা কথায় বলছে, শবর করো হয়তো ভালোভাবে খোজ নিচ্ছে তারা।’ নখ কামড়াতে কামড়াতে এক পর্যায়ে ভেঙ্গে ফেলল নখ, রক্ত চলে এসেছে ঠিক তখনি কর আসলো তার চোখ উঠিয়ে দেখতেই মুরাক লেখা। আঙুল মুখে দিয়ে কল রিসিভ করল সে অপাশ থেকে মুরাক স্মিত কন্ঠে বলে,, কি করছো তুমি সকাল থেকে কল ও করোনি?’
মোমো আঙুল চুষতে চুষতে বিমট কন্ঠে বলল,, মনে ছিলনা না।” আবার চুষতে লাগল, বিচিত্র আওয়াজে
মুরাক সন্দেহ কন্ঠে বলে,, কি চুষে খাচ্ছো ডাইনির মতো?’ মোমো আঙুল ঝাড়তে ঝাড়তে বলে,, আঙুল, ভেঙ্গে গেছে রক্তগুলো চুষে নিচ্ছি আরকি।”
মুরাক কিছুক্ষণ অবাক হলেও আবার হো হো করে হেসে দেয় তারপর মুখ থেকে হাসি সরিয়ে বলে,, আচ্ছা রাখি এখন পরে কথা হবে বাই!!”
মোমো ও বুঝতে পেরে মুচকি হেসে রেখে দেয়।
__________________________
এই বিশাল সীমাহীন আকাশে আলোক রশ্মির প্রবেশ ঘটেছে। রোদের আলো চোখে পড়তেই ঘুম ঘুম চোখটি মেলে আশেপাশে তাকায় মোমো। হাত ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঘুমের রেশ দূর করে সে। ঘড়ির দিকে তাকায় পৌনে নয়টা বেজেছে, হুট করে ঘরের কলিং বেল বাজতেই ভয়ে আতকে উঠে মোমো। এ সময় আবার কে আসতে পারে? ইভান তো অনেক আগেই ম্যাচ খেলতে চলে গিয়েছে তো এখন কে আসবে? উঠে দাঁড়িয়ে রুমের দরজা খুলে নিচে নামার জন্য অগ্ৰসর হতেই দেখতে পাই তার মামা চাচারাই এসেছে। পা আর নিচে না নামিয়ে সোজা দৌড়ে রুমে ঢুকে পড়ে সে। তার স্বভাব কিছুটা বাচ্চার মত বা তার চেয়েও বেশি বাচ্চামো করে সে। দরজা হালকা ফাঁক করে এক চোখ দিয়ে উঁকি মারে তার মা ও তারা গমগমে কন্ঠে কথা বলছে কিন্তু কি বলছে তা উপর থেকে একদমও শুনতে পারছে না সে। দরজার সেই ফাঁকটি রেখে কান পেতে শুনতে চাইলো তাও পারল না। শুনতে না পেরে বিরক্ত হয়ে জোরে বাড়ি দেয় দরজায় বিকট শব্দ হওয়াতে সবাই উপরে তাকায়। মোমো সাথে সাথে জিভ কামড় দিল সে এটা ভুলক্রমে করে ফেলল। এখন নিচে সবাই ভেবে নিবে সে লুকে লুকে কথা শুনতে চাইছে। সাথে সাথে নিচের থেকে ডাক পরলো তার মামা মাহবুবই ডাকছে।
‘মুনতাহা’। গম্ভীর গলায় ডাকে মামা মাহবুব। সাথে সাথে কেঁপে উঠলো সে এখন কি এটার জন্য কোন সাফাই দিতে হবে? দরজাটা বেশ ফাঁক করে নিচে তাকালো সে। তার মামা আবারো বলেন,,
‘নিচে নেমে আসো তোমার সাথে কথা বলার আছে’। বলেই সবাই সোফায় বসে পড়ে। মোমো এখনো চিন্তা করছে কি বলবে? মুরাকের ব্যাপারে কি না বলে দিবে না তো? মোমো হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসে। কাঁপা কাঁপা পায়ে নিচে নেমে তাদের সামনে খাড়া হয়ে দাঁড়ায়। রোকেয়ার দিকে তাকাতেই দেখে সে শান্ত মুখে স্মিত হাসি রেখে তাকিয়ে আছে তার দিকে। তার মাকে কিছুটা বিশ্বাসী হতে পারলো যাক উল্টাপাল্টা কিছু হবেই না। মোমো ও মুখে স্মিত হাসি রেখে তাদের দিকে তাকায় তারা গম্ভীর চেয়ে অতি গম্ভীর হয়ে আছেন। তাদের দেখে মোমোর মুখে থাকা হাসিটাও উধাও হয়ে যায়। চাচা আবুল বলেন,,
‘ আমি আমার এক বন্ধুকে বলেছি তার সম্পর্কে সে বলছে সে নাকি অনেক আগের থেকেই চিনে মুরাক কে, তাকে নিয়ে অনেক সুনাম দিচ্ছে আমার সামনে, আমি তাও তার কথা বিশ্বাস না করে আরেকজনের কাছ থেকে জেনে নিলাম তার বাবা নাকি অনেক বড় ব্যবসায়ী ছিলেন, শহরে অনেক মানুষেরই তাদেরকে চিনেন।’ বলেই থেমে যান তিনি। মোমো না বুঝার দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। সে আসলে কিছু বুঝেই নি এতটুকু কথা বলে থামলো কেন? এসব কথা তো সে জানেই, তবে?
তার মামা মাহবুব বলেন,,
‘ ঢাকার মধ্যে ও তো তার অনেক সুনাম রয়েছে দেখি, একে তুই পাইলি কেমনে?’ মজার ছলে বলেন তিনি। মোমো এখনো কিছু বুঝতে পারলো না। কিছু বুঝতে না পেরে চেহেরাকে বিচিত্র রকমের করে ফেলল সে। তারা বলতে কি চাইছে? অল্প স্বল্প কথা বলে বলে থেমে যাচ্ছে কেন তারা? মোমো এবার এক পলক মায়ের দিকে তাকায় তিনি মুচকি হাসছেন, এবারের হাসি দেখে কিছুটা আন্দাজ করতে পারলো তাও অত বিশ্বাসী না হয়ে সরাসরি প্রশ্ন করে বসল,,
‘ আসলে আমি আপনাদের কথা কিছু বুঝিনাই, কথাটি বিশ্লেষণ করে দিলে ভালো হতো।’ মিনমিন গলায় বলল সে। এবার তারা সবাই হেসে দেয়। তার মামা হাসতে হাসতে বললেন,,
‘ ভাগিনা ওকে বল যেন সে পুরো পরিবার নিয়ে এসে বিয়ের প্রস্তাব দেয় আমরা রাজি আছি।’ মোমোর চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়। খুশিতে মৃদু লাফ দিয়ে তার মাকে জড়িয়ে ধরে রোকেয়া ও তাকে জড়িয়ে ধরেন। সে খুশিতে কি বলতে লাগল সে নিজেও জানে না। সে যে মহান খুশি তাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
__________________________
দিন পেরিয়ে রাত নেমে আসল। এটা আজ তার খুশির রাত। এতো তাড়াতাড়ি তারা যে মেনে নিবে সে ভাবতে পারিনি। কল করলো মুরাক কে খুশিতে নাচতে নাচতে সব বলে দেয় মোমো। মুরাক ও ওখান থেকে খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়। পারছেনা দুজনেই এখন কি করে ফেলবে। মুরাক খুশিতে বলে,, আমার সাথে দেখা করো এখন, জড়িয়ে ধরবো তোমাকে।’ মোমো কিছুটা হতাশ হয়ে বলল,, সরি পারবো না আম্মু বের হতে দিবে তার উপর ইভান ড্রয়িং রুমে বসে আছে।’ মুরাক মিনতি করে বলল,, প্লিজ আসো না, নাহলে আমি আসবো?
মোমো চোখ বড়বড় করে বলল,, না আসিয়েন না, আসলে বাড়িতে এলাহী কান্ড ঘটে যাবে।” মুরাক বিরক্তিতে ‘তিক’ শব্দ করে উঠে বলল,, তোমার ফ্যামিলি এতো ঝামেলা করে কেন? শান্তিতে ঘুমাতে বলো তাদের, আমি আসি।” মোমো আবারো বলে,, না প্লিজ আসবেন না, নাহলে সবাই রেগে যাবে আমাদের উপর, আর আপনি তো আসবেন এই আপনার পরিবার নিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দিতে তখন নাহয় আমাকে দেখে নিবেন।” কিছুটা লজ্জা পেয়ে বলল সে। মুরাক তাকে আরো লজ্জা দিয়ে বলল,, ওই হই কি লজ্জা পাচ্ছে আমার ফিউচার বউটা।” মোমো আরো বেশি লজ্জায় রাঙিয়ে যায় সে দ্রুত বলে,, রাখি এখন বাইই!!” বলে চট করে ফোন কেটে দেয় মুরাক কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে। তার এহেন অবস্থা দেখে মুরাক হেঁসে দেয়।
।।।।।
।।।।।
আঁধার ছেঁয়ে গেল সব জায়গায়। ঘুটঘুটে অন্ধকার রাস্তাঘাট পুরো নির্জন। মোমোর ঘরে সবাই ঘুমিয়ে পড়ছে। গায়ে চাদর টেনে অপাশে ফিরে ঘুমের প্রস্তুতি নিতেই এক ভয়ংকর শব্দে তার ঘুম ভাঙ্গে। বারান্দা থেকে আসার শব্দ, কেউ একজন তার বারান্দায় প্রবেশ করছে সাথে সাথে বুক কেঁপে উঠলো তার। গায়ে চাদর খামচে ধরে আমতা আমতা করতে লাগল সাহস যুগিয়ে লাফ মেরে উঠে পিছে তাকালো। চাঁদের আলোতে ঘুটঘুটে অন্ধকারের রুমে সামনে থাকা ব্যক্তিটি পুরো অবয়বের মত লাগছে। মোমো ভয়ে আঁতকে উঠে ‘আয়তুল কুরসি’ পড়ে ফুঁ মারলো। তাকে এমন ছটফট করতে দেখে সাথে সাথে বাতি জ্বালালো ব্যক্তিটি। এ সময়ে পরিচিত চেহারা দেখে আরো ভয়ে চিৎকার দেওয়ার আগেই মুরাক এসে তার মুখ চেপে ধরল তারপর আস্তে করে শাসিয়ে বলল,, পাগল হয়ে গেছো এমন করছো কেন তুমি? মোমো রেগে তার হাতে কামড় বসিয়ে দিল মুরাক ব্যথায় ‘আউচ’ করে দূরে সরে যায় তারপর হাত ঝাড়তে ঝাড়তে বলল,, What the hell are you doing Momo!!”
মোমো রেগে উঠে দাঁড়িয়ে তার সামনে এসে বলে,, আপনি পাগল হয়ে গেছেন, এ সময়ে কেন আসলেন আপনাকে মানা করলাম না, তারপরেও কেন?
মুরাক মুখে হাসি টেনে বলে,, ওমা তোমাকে দেখতে আসছি, জানো কত কষ্ট হয়ছে ছাদের রেলিং ধরে তোমার বারান্দায় আসতে কোথায় আমার সেবা করবা তা না করে আমাকে বকছো।” মোমোর মুখ হা হয়ে যায় তারপর বলে,, আচ্ছা ঠিক আছে কিছু বলছি না, এখন যান।” মুরাক অবাক হয়ে বলে,, যান মানে? আসছি তো ২ মিনিট ও হলো না।” মোমো ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলে,, আচ্ছা ঠিক আছে ২ মিনিট অপেক্ষা করছি তারপর যায়েন কেমন? মুরাক তাকিয়ে আছে মোমো আড়চোখে তাকিয়ে বলে,, এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন? মুরাক উত্তর দিল না। কিছুক্ষণ সময় পেরুতেই মোমো বলে,, অনেকক্ষণ হয়েছে এখন যান।’ মুরাক মুচকি হাসি দিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরলো মোমো থমকালো তার বাহুডোরে আবদ্ধ হয়ে ভালো লাগছে তার মুরাক তার দুগালে গভীর ভাবে চুমু দিয়ে বারান্দা দিয়ে লাফ মেরে চলে যায় মোমো মুচকি হাসে।
(চলবে…)
#seeing_with_you
Episode – 30 #আমাদের_বিয়ে
Writer – Zaira Insaan
৫দিন কেটে গেল। এরই মধ্যে মুরাক নিজ পরিবারের সবাইকে মানিয়ে নিল। প্রথমে কেউ মানতে না চাইলেও মুরাকের জোরাজুরিতে সবাই রাজি হয়। মোমোর মামার কথামত সবাইকে নিয়ে মোমোর বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব দেয় তারা। মোমোর পরিবার আগের থেকেই রাজি ছিল তাই তারা এতো চিন্তা করলো না। মোমো খুশিতে রুমে বসে আছে সে যে কাউকে লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছে না। এদিকে তার সমস্ত কাজিনরা তাকে বিভিন্ন ভাবে লজ্জা দিয়ে যাচ্ছেই। আর এক সপ্তাহ পরেই বিয়ে। তাই পুরো বাড়ি সাজানো হচ্ছে। মোমো এটা বিশ্বাস করতে পারছেনা যে সে তার ভালোবাসার মানুষটির সাথে বিয়ে করবে যেন সে এক সপ্ন দেখছে।
ঐদিকে মুরাক অস্তির হয়ে পড়ছে কেননা তার বন্ধুরা তার কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে নিয়েছে যাতে করে সে বারবার মোমো কে কল করতে না পারে। সে এক পর্যায়ে অধৈর্য হয়ে তার বোনের মোবাইল থেকে কল করে কিন্তু মোবাইল বন্ধ। কেননা মোমোর মোবাইলও তার কাজিনরা নিয়ে নিয়েছে। মুরাকের বিরক্ত রাগ সব কিছুই ফুটে ওঠে। মুখ দিয়ে বিরক্তিতে শব্দ বের করে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।
___________________________
রিতু কিছু নোটস নিয়ে মোমোর বাড়িতে যেতেই অবাক হয়ে যায়। সবাই কাজ করছে কেউ ফুলের কাজ করছে কেউ উপরে উঠে প্লাস্টিকের ফুলের মালা ঝুলিয়ে দিচ্ছে। রিতু কিছু বুঝতে পারলো না উপরের দিকে তাকাতেই তাকাতেই সামনে হাঁটতে লাগলো হঠাৎ তার পা টেবিলের কোণার সাথে জোরে বাড়ি খায় ব্যথায় আউচ বলে উঠে কিন্তু কেউ তার দিকে তাকাচ্ছে না। যে যার মতোই কাজ করছে। যেন সে অদৃশ্য। রিতু ও আর কোন ভূক্ষেপ না করে মোমোর রুমের দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে। মোমো বরাবরের মত অবাক হয় রিতু সামনে এসে নোটস গুলো ধরিয়ে দিয়ে বলল,, সামনে পরীক্ষা আছে এই নোটস গুলো রাখ, আর হ্যা বিয়ে কার হচ্ছে? মোমো মুচকি হেসে বলে,, আমার।”
রিতু চোখ বড়বড় করে ফেলল বলল,, তোর বিয়ে? পাত্র কে? মুরাক নাকি অন্য কেউ?”
মোমো একটু লজ্জা পেয়ে বলল,, মুরাক।”
রিতু আরো অবাক হয়ে বলে,, সবাই মেনে নিয়েছে ওকে?”
মোমো হা সূচক মাথা নাড়ল। রিতু এবার খুশি হয়ে তাকে জড়িয়ে ধরলো বলল,, বাহ ভালো খবর দেখি যাক এসবের মধ্যে রিদান ভাই কষ্ট পাচ্ছে না, সত্যি অনেক খুশি হলাম আমি।”
মোমো মুচকি হেসে বলল,, হুমম, বস কথা বলি।’
রিতু একটু তাড়া নিয়ে বলল,, সরি দোস্ত এখন বসতে পারবো না, আমার যেতে হবে আমি আসব পরে বাই বাই।” বলে হুড়মুড় করে চলে যায়। মোমো লাজুক হেসে বারান্দায় চলে যায়।
____________________________
রিতু কেবিনে ঢুকতেই দেখে রিদান কেবিনে নেই। রিতু কোন এক নার্সকে জিজ্ঞেস করতেই জানতে পারে রিদান ৪ দিন ধরে এখানে আসছে না। রিতু চিন্তিত হয়ে পড়ে। কোথায় থাকতে পারে সে? রিতু গিয়ে চাচা চাচির বাসায় হাজির হয়। কিছুক্ষণ সবার সাথে গল্প করে জানতে পারে রিদান কে বেশ অস্তির দেখাচ্ছে আর সে ঘরে বেশিক্ষণ থাকে না ভোর বেলায় বেরিয়ে যায় আর অনেক রাত করে বাড়ি ফেরে। রিতু আর কিছু না বলে চলে আসে। নিজ বাড়ির রাস্তায় যেতে দেখে রিদান এক ক্যাফে বসে আছে মাথায় হাত দিয়ে। রিতু অবাক হয়ে ক্যাফে ঢুকে। নিজ কাঁধে কারোর হাতের স্পর্শ পেতেই চমকে উঠে রিদান পিছনে ফিরে তাকাতেই আরো বেশি চমকে যায় সে। রিতু হাত সরিয়ে বলে,, এখানে কি করছো তুমি? রিদান প্রতিউত্তর দিল না চুপ করে রইল। রিতু আবারো বলে,, ভাই কি হয়েছে কিছু বলছো না কেন? রিদান আবারো কিছু বলল না মাথা নুয়ে কপালে এক হাত দিয়ে বসে রইল। রিতু আবারো কিছু বলার জন্য আওয়াজ করতে গেলে রিদান ধমকের সুরে বলল,, কি হয়েছে তোর? কেন এখানে এসে মাথা খাচ্ছিস যা তো!!” রিতু তার ধমকে মৃদু লাফ দিয়ে উঠে। ক্যাফে বসে থাকা সব মানুষ তাদের দিকেই তাকিয়ে আছে রিতু হালকা ইতস্তত বোধ করলো। রিতু এবার আস্তে করে বলে,, রিদান ভাই তোমার সাথে…। পুরো কথা শেষ হওয়ার আগেই রিদান রেগে উঠে চলে যায়। সব মানুষ তাদের দিকে তাকিয়ে কথা কানাকানি করছে রিতু সবার দিকে রক্তু চোখে তাকাতেই সবাই আবার নিজেদের মধ্যে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। রিতু ও বের হয়ে রিদানের পিছু পিছু হাঁটছে। রিদান তা বুঝতে পারল যে রিতু কিছু বলতে চাইছে কিন্তু তার থেকে কোন কিছুই শুনতে ইচ্ছা করছে না ভালো কথাও এ মুহূর্তে তিতা মনে হবে। হাঁটতে হাঁটতে তারা এক পার্কে এসে থামে পুরো রাস্তায় রিতু কিছু বলতে চাইলেও কিছু বলে নি শুধু রিদান কে অব্জার্ভ করেছে। রিদান কে থামতে দেখে রিতু সামনে দাঁড়িয়ে বলে,, রিদান ভাই কি হয়েছে তোমার? এমন করছো? আমাকে বলো আমি না তোমার বেস্টফ্রেন্ডের মত তুমি তো আমাকে সব কিছুই বলো, তো প্লিজ বলনা কি হয়েছে তোমার এই হাল আমি সহ্য করতে পারছি না।”
রিদান বেশ হতাশ হয়ে এক সিটে বসে পড়ে বলে,, মোমো কখনো আমার হবে না তাই না?”
রিতু কিছু বলল না কারণ এক সপ্তাহ পর তো মোমো মুরাকের বিয়ে। রিদান আবারো বলে,, আমি সব জানি যে মোমো আমাকে পছন্দ করে না মুরাক কে ভালোবাসে, ওই রাতেই আমি সব জেনে গিয়েছিলাম যখন মুরাকের অসুস্থতা জানতে পেরে মোমো তার বাসায় গিয়ে ছিল, শেফালী যে দুইদিকে খেলছে নিজের স্বার্থের জন্য তাও আমি বুঝতে পারলাম, তাই তো আমি আর কিছু করছি না তাদের মধ্যে আর আসছি না কিন্তু আমি যে কষ্ট পাচ্ছি এটা কি কেউ দেখছে? না আমার বন্ধু মুরাক ও কোন খবর নিচ্ছে না, আমি আমার কাজে মনোযোগ দিতে পারছি না রিতু আমার যে মাথা ব্যথা করছে।” বলেই মাথা হাত দেয় রিদান। রিতু কাছে এসে দাঁড়িয়ে বলে,, ওমন করে বলছো কেন? নিজেকে ঠিক রাখো ভাই নাহলে চাচা চাচির কি হবে? আর আমি আছি তো তোমার ফ্রেন্ড।”
রিদান মাথা নেড়ে বলল,, তুই কি করতে পারবি রে?
রিতু আস্তে করে মুখ ফোঁস কে বলে দেয়,, ভালোবাসতে পারবো।”
রিদান ব্রু কুঁচকে তাকায়। রিতুর খেয়াল হয় সে কি বলে ফেলল তাড়াতাড়ি কথা মোড় বদলানো আগেই রিদান দাঁড়িয়ে বলে,, ভালোবাসতে পারবি মানে? ভালোবাসোস আমাকে? রিতু অন্য দিকে তাকিয়ে আমতা আমতা করতে লাগল। রিদান আবারো বলল,, কি বললাম তোকে উত্তর দে।” রিতু এবার বলে দেয়,, তোমাকে ছোট কাল থেকেই ভালোবাসতাম কিন্তু কখনো লজ্জায় বলেনি যদি তুমি আমাকে বকো? যখন জানতে পারলাম তুমি মোমো কে ভালোবাসো তখন অনেক হিংসা হয়েছিল আমার, কিন্তু তোমাকে অনেক ভালোবাসি সত্যি অনেক ভালোবাসি।”
রিদান কিছুক্ষণ হা করে তাকিয়ে ছিলো তারপর জড়িয়ে ধরে বলল,, তো সারাদিন রিদান ভাই রিদান ভাই বলে ডাকোস কেন? আমার হবি? আমাকে কি আগের মত করে দিবি? বিয়ে করবি আমাকে?”
রিতুর মুখে হাসি ফুটে উঠল ঝপ করে জড়িয়ে ধরে বলল,, করবো।”
রিদান তাকে আরো শক্ত করে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে।
(চলবে…)