seeing with you part-25+26

0
1666

#seeing_with_you
Episode – 25 #সে
Writer – Zaira Insaan

শেফালী নিজের ফোনটা কানের কাছ থেকে সরালো তারপর আস্তে করে মুরাক না দেখার মত তার মোবাইলটা নিয়ে মোমোর নাম্বারটা নিজের মোবাইলে সেভ করে কল করল। বাসায় মোমো রান্নাঘরে দাঁড়িয়ে গাজর কাটছিল অপরিচিত নাম্বার দেখে সরে কল রিসিভ করল অপাশ থেকে শেফালী দ্রুত বলল,, মোমো তাড়াতাড়ি চলে আসো মুরাকের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ বেচারা কাঁশতে কাঁশতে বুক ব্যথা করে ফেলল প্লিজ তাড়াতাড়ি আসো!” বলে ফোন কেটে দেয় মুরাক চমকে লাফ মেরে উঠে বসে এমন কিছু হবে ভাবতে পারিনি সে ডাক্তারকে কল না করে মোমো কে কল করে দিল আশ্চর্য ভাবে, মুরাক রেগে বলে,, ওকে কল কেন করছ? শেফালী মোবাইল অফ করে বলল,, আসার জন্য আজব!’ মুরাক ব্রু কুঁচকে বলল,, আর আমি কাশঁলাম কবে যে তুমি বললা কাঁশতে কাঁশতে বুক ব্যথা করে ফেলছি জানো নিজেকে এখন বুইড়া হাবলা লাগতেছে!”
শেফালী জোরে হেসে দেয় তারপর বলল,, একটু বাড়তি বলতে হয় নাহলে সে বিশ্বাস করবে কেমনে?
মুরাক মনমরা হয়ে আবার কম্বল গায়ে দিয়ে বলে,, আমার মনে হয় না মোমো আসবে।” শেফালী আস্তা দিয়ে বলল,, আসবে সে আসবে না আসলে টেনে নিয়ে আসব।’ ওইদিকে মোমো থ মেরে দাঁড়িয়ে আছে যেন সবকিছু মাথা উপর দিয়ে গেল তার চেহারাটা মুচরে বলে,, আমি কেন যাব? যাব না আমি হুহহ!
।।।।।
।।।।।
১০ মিনিট হতে চলল মোমোর আসার নাম নেই দুজনেই অপেক্ষা করতে করতে বিরক্ত হয়ে পড়ছে যেন সময় গড়াচ্ছে না প্রতিটা মিনিট তাদের অসহ্য করে তুলছে ইতির মধ্যে মুরাক সর্দির জ্বালায় বারবার নাক টানছে। শেফালী বিরক্ত হয়ে চেঁচিয়ে উঠলো,, আরে ভাই নাক টানা বন্ধ কর এমনিতেই বিরক্ত লাগছে মোমো আসছে না দেখে! মুরাক হা হয়ে গেল তার ব্যবহারে তুই তোকারি করে বলল সে প্রচন্ড রেগে যায় চোখ গরম করে বলে,, কি বললা এখন? শেফালী মনে পড়ে সে রেগে তুই করে বলে ফেলল সে আমতা আমতা করে বলে,, সরি রেগে বলে ফেললাম আর তোমার থেকে সাচ্ছা আশিক হতে কে বলল বৃষ্টিতে ভিজে? মুরাক আবার নাক টেনে গলা ঝেড়ে অন্য দিকে তাকিয়ে বলল,, Shut up!”
আবার সেই নিরবতা মনে হচ্ছে ধ্যান করতে বসল দুজনে মুরাক ও নাক টানা বন্ধ করলো শেফালী অসহ্য হয়ে বিরক্তিতে ‘তিক’ শব্দ করে উঠলো সাথে মুরাকও বলে,, দেখছো আসছে না ও।” শেফালী আরো বিরক্ত হয়ে তার দিকে তাকিয়ে বলল,, ওর বাসার থেকে এখানে আসার দুরুত্ব ২০ মিনিটের তো ও কি উড়ে উড়ে আসবে নাকি? হাত দিয়ে করে দেখাল সে। এমন পরিস্থিতি হবে কখনো আশা করিনি তারা দুজনেই আবার অপেক্ষা করতে লাগল। ৭ মিনিট পর বেলের আওয়াজ শুনতে পেল তারা দুজনেই একে অপরের দিকে চমকে তাকায় দুজনেরই মুখে লম্বা হাসি শেফালী ছুটে যায় নিচের দিকে দরজা খুলতেই অবাক হয় সে কারণ মোমোই দাঁড়িয়ে আছে তবে গম্ভীর মুখ নিয়ে শেফালী ভিতরে আসতে দিল মোমো ভিতরে ঢুকল। সে আসতে চাইনি তার মা রোকেয়া মুরাকের অসুস্থতা তার মুখ থেকে জানার পর জোর করে পাঠালো সে তো পুরো ঘটনা জানে না কেন মোমো মুরাকের থেকে দূরত্ব নিয়ে চলছে। রুমে আসার পর মোমো মুরাকের দিকে আড়চোখে তাকায় মুরাক তার দিকে তাকিয়ে আছে কম্বল মুড়ে তার এখনো গা কাঁপছে। কাঁপার কথাও গতকাল সে ৪ ঘন্টা বৃষ্টিতে ভিজেছিল ফলে জ্বর সর্দি গলা খুসখুস করা সবই হয়েছে। শেফালী তাদের দিকে তাকিয়ে বলে,, আমার জরুরি কাজ আছে আমি যাচ্ছি বাইই!” মোমো কিছু বলার আগেই শেফালী দ্রুত গতিতে চলে যায় তার এক মুহুর্ত ও এখানে থাকতে ইচ্ছা করছে না তাও আছে সে। মোমো এগিয়ে এসে মুরাকের কপালে হাত দেয় প্রচন্ড জ্বর মোমো কিছু খুঁজতে খুঁজতে বলল,, নাস্তা খেয়েছেন? মুরাক সোজাসাপ্টা করে বলে,, না।’ মোমোর ব্রু কুঁচকে এলো শেফালী এতোক্ষণ ছিল তাও নাস্তা করে দেয়নি তাকে আজব! মোমো বলে,, তাহলে আসেন নাস্তা করে নেন তারপর ওষুধ দিব!’ মুরাক নাক টেনে বলল,, উঠতে ইচ্ছে করছে না শরীর দূর্বল”। মোমো এবার না পেরে রেগে বলল,, আরো গরুর মত বৃষ্টিতে ভিজেন গাধা কোথাকার!!”
মুরাক মুচকি হাসে মোমো নিচে নেমে রান্নাঘরে ঢুকল কিছুক্ষণ পর রুমে আসল সাথে করে খাবার রুটি, আলু ভাজি ও ডিম করে আনল মুরাকের সামনে প্লেট এগিয়ে দিতেই মুরাক হতাশ হয়ে বলল,, ক্ষিদে নেয় খাব না।”
মোমো আরো রেগে যায় খাবে না মানে কি? রেগে মেখে চোখ মুখ লাল হয়ে যায় তার রাগি চোখে বলে,, খান, নাহলে আপনার অবস্থা ১২টা বাজাব!! মুরাক ক্লান্ত হয়ে বলে,, মানে? মোমোর মেজাজ গরম হয়ে যায় কেউ মানে মানে করলে তার মাথা খারাপ হয় এটা অংক নাকি যে তার সোজা কথা বুঝছে না। মোমো রুটি ছিড়ে ডিম ও ভাজি মিশিয়ে তার মুখে ঢুকিয়ে দিল মুরাক মুখ থেকে ফেলতে চাইলেও জোর করে খাওয়ায় দেয় সে। সম্পূর্ণ খাবার শেষ করিয়েয় দম নেয় মোমো যেন অসাধ্য কাজ সাধ্য করে নিল। তারপর ওষুধ খাওয়ায় দেয় মুরাক গা থেকে কম্বল সরিয়ে বলে,, গোসল করব!
মোমো তাকে বাঁধা দিয়ে বলল,, আপনার জ্বর গোসল করিয়েন না।” মুরাক চোখ বড়বড় করে ফেলল বলল,, গোসল না করলে নির্ঘাত মাথা ঘুরে পড়ে যাব সরো গোসল করতে দাও।” বলে তাড়াতাড়ি তোয়াল নিয়ে বাথরুমে ঢুকে পড়ে। মোমো বসে আছে আর ভাবছে কিছুক্ষণ পরেই মুরাক বেড়িয়ে আসে শর্ট ট্রাওজার পরে চুল থেকে টপ টপ পানি গায়ে পরছে মাথা মুছেনি সে মোমোর চোখ চুলে পড়তেই রেগে বলে,, মাথা মুছে নিন তাড়াতাড়ি।” মুরাক এসে তার পাশে বসে তোয়াল তার দিকে এগিয়ে বলে,, তুমি করে দাও!” মোমো হকচকিয়ে গেলেও তার অসুখের কথা চিন্তা করে তার সামনে দাঁড়িয়ে মাথা মুছে দিতে লাগল মুরাক এক দৃষ্টিতে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে তার দিকে হুট করে সে মোমোর পেটে মাথা রেখে কোমড় জড়িয়ে ধরে বলে,, I’m sorry!
মোমো থমকে দাঁড়ায় কিছুক্ষণ অতিবাহিত হতেই মোমো আলতো হাতে সরিয়ে দেয় তারপর বলে,, কাপড় পড়ে নেন নাহয় ঠান্ডা আবার ঘিড়ে ধরবে।” মুরাক মুচকি হেসে মাথা নাড়ল। মোমো বেড়িয়ে অন্য রুমে চলে যায় বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে সে।
দুপুরের খাবার ও ওষুধ দিয়ে আবার রুমে চলে আসে মোমো সে নিজেও খেয়ে নেয়। বিভিন্ন জিনিস তাকে ভাবাচ্ছে। বারান্দায় বসেই সে ঘুমিয়ে পড়ে।
সন্ধ্যা হতেই ঘুম ভাঙল তার নিজেকে বেডে শুয়ে থাকতে দেখে অবাক হয় কেননা সে বারান্দায় বসেই ঘুমিয়ে পড়ছিল তাহলে সে এখানে এভাবে কেমনে? মোমো বুঝতে পারলো মুরাক তাকে খুঁজতে এসেই বারান্দা থেকে উঠিয়ে এখানে শুয়ে দিল। উঠে দাঁড়ায় তারপর মুখ ধুয়ে মুরাকের রুমের দিকে যায় দেখে মুরাক উপুর শুয়ে আছে মোমো গিয়ে তার কপালে হাত দেয় জ্বর আগের থেকে কমছে ফোঁস করে মুখ থেকে নিঃশ্বাস ফেলল। রান্নাঘরে এসে চিন্তা করছে নাস্তা কি করবে সামনে নুডুলসের প্যাকেট দেখে খুশি হয়ে যায়। যাক কিছুতো আছে নাস্তা করার জন্য তারপর সে নুডুলসটি রান্না করে নিলো রুমে এসে দেখে মুরাক এখনো শুয়ে আছে মোমো গিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,, উঠেন নাস্তা খেয়ে নেন।” মুরাক পিটপিট করে চোখ খুলল মোমোর হাত নিজের মাথায় বুলিয়ে দিতে দেখে এক গাল মুচকি হাসল মোমো বুঝতে হাত সরিয়ে নিল মুরাক উঠে বসে নুডুলস দেখে হতাশ হয়ে বলল,, খেতে ইচ্ছে করছে আবার খেতে ইচ্ছে করছে না।” মোমো তার হাতে বাটি ধরিয়ে দিয়ে বলল,, খেয়ে নেন ওষুধ খেতে হবে!’ ওষুধের নাম শুনে মুরাক বিরক্তিতে ‘তিক’ শব্দ করে উঠলো মোমো চলে যেতে নিলে তার হাত ধরে নিলো তারপর বলল,, বসো এখানে!” মোমো বসে তার পাশে মুরাক এক চামচ নুডুলস তার মুখের সামনে ধরে বলে,, হা করো হা!” মোমো মাথা পিছিয়ে বলল,, আমি খাব না আপনি খান আপনার জন্য আনছি।” মুরাক বাটির দিকে তাকিয়ে বলল,, এতো গুলো আমি কেমনে খাব রাক্ষস নাকি তুমিও খাবা এখান থেকে নাও হা করো!” মোমো টিটকারি মেরে বলে,, না না আপনি তো গরু রাক্ষস কেমনে হবেন এই জন্য তো…। আর কিছু বলতে না দিয়ে মুখে খাবার ঢুকিয়ে দিল মুরাক। অর্ধেক নুডুলস মোমো কে জোর করে খায়ে দিয়ে বাকি গুলো সে খেয়ে নিল।
।।।।।
।।।।।
রাত🌸🌸
রাতের খাবার শেষ করে মুরাক কে ওষুধ দিয়ে রুমে চলে যেতে নিলে মুরাক তার হাত ধরে নেয় মোমো পেছনে ফিরে তাকায় মুরাক আদুরে গলায় বলে,, প্লিজ এখানে বসো আমার সাথে!” মোমো বলে,, রেষ্ট দরকার আপনার”। মুরাক আবার একই ভঙ্গিতে বলল,, পরে প্লিজ এখানে বসো।” মোমো বসল তার পাশে মুরাক পুরো রুমের লাইট অফ করে দিল মোমো অবাক হয়ে বলে,, আশ্চর্য লাইট অফ করলেন কেন? মুরাক উত্তর না দিয়ে বিছানা থেকে নেমে বারান্দার পর্দা সরিয়ে দিল।
চাঁদের আলোয় আবছা আলোকিত হয় পুরো রুম মুরাক ফিরে দেখে মোমোর দিকে মোমো ব্রু কুঁচকেই তারই দিকে তাকিয়ে আছে মুরাক বিছানায় উঠে মোমোর পা জোড়া হাত সোজা করে কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে। মোমো হচকচিয়ে যায় মুরাক তার হাত মাথায় রেখে বুলাতে ইঙ্গিত করে। মোমো করছে না দেখে হালকা বিরক্ত হয়ে তার হাত জোর করে টেনে মাথায় রাখে মোমো ধীরে ধীরে বুলাতে লাগল মুরাক চোখ বন্ধ করে
বলতে লাগল,, তোমাকে আগে আমার একদমই সহ্য হত না ইচ্ছা করত ঘর থেকে বের করে দেয় তবে জানিনা কবে থেকে তোমার প্রেমে পড়লাম তোমাকে যখন রিদানের সাথে দেখেছিলাম তখন অনেক অসহ্য লাগছিল বুঝতে পারলাম যে আমি ভালোবেসে ফেলেছি তোমাকে, সত্যি করে ভালোবাসা, কিন্তু প্রকাশ করতাম না, ভালো লাগত তোমাকে দেখতে, কিন্তু আমার একটা অতীত তোমাকে আমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিল এই ১৫টা দিন তোমাকে ছাড়া থাকতে আমার অনেক কষ্ট হয় সত্যি অনেক কষ্ট হয়, তোমাকে আমি আমার পুরো মন দিয়ে ভালোবেসেছি এবং সবসময় বাসব, আমি কোনসময় শেফালীর সাথে ফিজিক্যালে যায়নি সে যেতে চাইত বলে সে আমার মাতাল হওয়ার সুযোগ টা নিয়েছে কিন্তু পরে আমি তার সাথে রিলেশন ভেঙ্গেছি, প্লিজ মোমো আমাকে মাফ করে দাও তোমাকে ছাড়া যে আমার কোথাও মন বসে না প্লিজ মোমো আমাকে মাফ করে দাও I’m sorry, I’m really very sorry….। বাচ্চাদের মত কথা বলতে বলতে কোলের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়ে সে। মোমোর বুক কেঁপে উঠে তার কথা শুনে ভাবতে পারিনি যে সে তাকে এতোটা ভালোবাসবে, কথাগুলো বলার জন্য সে কতনা ছটফট করে ছিল এসব ভাবতে ভাবতে সেও ঘুমিয়ে পড়ে….।

(চলবে…)

#seeing_with_you
Episode – 26 #ভালোবাসি
Writer – Zaira Insaan

সকালে মোমোর আগেই মুরাকের ঘুম ভাঙল‌ আশেপাশে চোখ বুলাতেই দেখে সে মোমোর কোলের উপর মাথা রেখে শুয়ে আছে সে ধীরে ধীরে উঠে বসে পাশ ফিরে তাকায় মোমো ঘাড় বেঁকিয়ে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে আছে। নিঃশব্দে হাসে মুরাক গিয়ে তার কপালে চুমু দেয় মোমো নড়েচড়ে উঠতেই সে ঘাবড়ে যায় পিটপিট করে চোখ খুলে তাকালো মুরাকের দিকে দুজনেই একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে। মোমো উঠে বসতেই ঘাড় ব্যথা হয়ে যায় রাতভর এভাবেই ঘুমিয়ে ছিল তাই। ঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখে সাড়ে আটটা বেজে গেছে মোমো টুপ করে মুরাকের কপালে হাত দেয় জ্বর নেই আপাতত। মোমো মোবাইল হাতে নিয়ে বলে,, টাইম টু টাইম ওষুধ খেলে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবেন আপনি, নাস্তা করে ওষুধ খেয়ে নেন আমি ফ্রেস হয়ে আসি।’ মুরাক মাথা নাড়ে মোমো উঠে দাঁড়াতেই ধপাস করে নিচে পড়ে যায়। মুরাক চোখ বড়বড় করে ফেলল মোমো ব্যথাতুর আওয়াজ করতে থাকে মুরাক তাকে উঠাতে উঠাতে বলল,, তুমি পড়ে গেলা কেমনে? মোমো চেঁচিয়ে উঠলো,, আপনার কারণে, রাতভর আমার কোলের উপর মাথা রেখে পা অবশ করে দিয়েছেন তাই পড়ে গিয়েছি, আহহ্ আমার কোমড় ভাঙল!” সে উঠতেই পারছে না পা শক্তি নেই তার উপর কোমড় ও ভাঙল তার অবস্থা দেখে মুরাক খিলখিল করে হেসে কোলে তুলে নেয় মোমো হচকচিয়ে যায় লজ্জাও লাগছে তার। কোলে তুলে বিছানায় বসিয়ে বলল,, আমি আগে ফ্রেশ হয়ে আসি ততক্ষণে এখানে বসে থাকো।” মোমো মাথা নিচু করে রাখল মুরাক আবার ফিক করে হেসে দেয় তারপর চলে যায়। মোমো নিজেকে মনে মনে উদ্ধার করছে কত বড় শরম পেল এক ছেলের সামনে পড়ে গিয়ে।
কিছুক্ষণ পরেই বেরিয়ে আসে মুরাক মোমো আড়চোখে তাকায় তারপর বিছানায় ভর দিয়ে উঠে দাঁড়ায় তারপর কচ্ছপের মত হেঁটে তার দিকে না তাকিয়ে রুমে চলে যায়। মুরাক আবার হেঁসে দেয় বলল,, পুরো কিউট একটা!”
ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে ওষুধ দিয়ে দেয় মোমো, রুমে যেতে গেলে মুরাক দ্রুত গতিতে বলে,, শুনো!
পিছে ফিরে তাকায় মোমো মুরাক ঠোঁট ভিজিয়ে বলে,, বাহিরে যাবে বাসায় বসে বোর হয়ে যাচ্ছি!
মোমো একটু চিন্তা করে বলল,, যাওয়া যায় কিন্তু এখন না পরে আপনি আগে সুস্থ হন তবে।” বলে মুচকি হাসি দেয় মুরাক উঠে তার সামনে দাঁড়িয়ে বলে,, আপনি করে বলবা না!’ ব্রু কুঁচকে ফেলল মোমো সরু চোখে তাকিয়ে বলে,, তো? তার এমন লুক দেখে আবার হেঁসে দেয় মুরাক তাকে হাসতে দেখে কুঁচকানো ব্রু আরো কুঁচকে ফেলল মোমো মুরাক তার গাল দুহাত দিয়ে ধরে বলল,, এভাবে তাকাও কেন জানো কি কিউট লাগে তোমাকে!
চোখ বড়বড় করে ফেলল মোমো, কিউট? ভার্সিটি পড়ুয়া এক মেয়েকে সে কিউট বলছে? তার গালে অধর ছুঁয়ে দেয় মুরাক, এমন কান্ডে চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম মোমোর একটু দূরে গিয়ে গাল ঘষতে লাগলো।
মুরাকের মুখে এখনো হাসি বিরাজমান কিছু বলতে চেয়ে কল আসল তার বড়বড় করে লেখা ‘Shefali’
দুজনেরই চোখ যায় মোবাইলের দিকে তীক্ষ্ণ চোখে তাকায় মোমো মুরাক ফোন অফ করে দেয়, আবার কল আসে মুরাকের সেই আগের লেখা মুরাক আড়চোখে তাকায় মোমোর দিকে মোমো তার দিকে প্রশ্নাত্তুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, এত সকাল সকাল কল করার মানে কি তাও এত বার? শেফালীর মেসেজ আসতেই মোমো এসে টান মেরে মোবাইল টা নিয়ে ডাইরেক্ট অফ করে ড্রয়ারে ঢুকিয়ে দেয় তারপর চেঁচিয়ে বলে,, এতবার কল করছে কেন? তোমাকে যেন তার সাথে আর যোগাযোগ রাখতে না দেখি, খবরদার! বলেই গজগজ করে রুম থেকে বেরিয়ে যায় মুরাক হা করে তাকিয়ে আছে কিছুক্ষণ আগে সে এটা কি দেখল? মুরাক বাঁকা মুচকি হাসি দিয়ে বলল,, এতটা রাগ?
।।।।।
।।।।।
মুরাক রুমে আসতেই দেখে মোমো বারান্দার দিকে মুখ করে বুকে দুহাত গুজে বসে আছে। মুরাক সামনে আসতেই মোমো টের পেয়ে যায় পিছনে ফিরে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে,, কাছে আসবেন না দূরে যান নাহলে মেরে ফেলব! ব্রু কুঁচকে ফেলে মুরাক তারপর বলে,, শুনো শেফালী…। বলে এগিয়ে আসতেই মোমো বেডের উপর বালিশ নিয়ে দাঁড়িয়ে বলে,, বললাম না দূরে যান, গিয়ে ওই শেফালীর সাথে রং ঢং করেন যান।’
মুরাকের তার বাচ্চামো স্বভাবে হাসি আসে না হেসে কাছে আসতেই মোমো বালিশ নিয়ে তার গায়ে মেরে দেয় মুরাক তার এক বাহু ধরে বলে,, মোমো এটা কেমন ব্যবহার মারছো কেন? মোমো বালিশ দিয়ে আরো জোরে মারতে মারতে বলল,, আমাকে এনে শেফালীর সাথে কিসের কথা হ্যা? বলেন নাহলে আজকেই মেরে গেথে ফেলব।’ মুরাকের চুল সব এলোমেলো হয়ে কপালে আছড়ে পড়ে মোমো থামছে না দেখে বালিশ টান মারে নিয়ে নেয় মোমো দাঁড়িয়েই তাকে মারছিল এভাবে বালিশ টান দেওয়াতে সে ধপাশ করে বেডে বসে যায়। মুরাক বালিশ টা ছুড়ে মেরে মোমোর উপর উঠে তার দুহাত বেডের সাথে চেপে ধরে। দুজনেই একে অপরের দিকে তাকিয়ে হাপাচ্ছে মুরাক এবার সব সত্য বলে দিল প্রথম থেকে মোমো চোখ বড়বড় করে শুনছে। কথার শেষে বলল,, বুঝছেন এবার খামাখা শুধু আমাকে মারছো!’ মোমো এবার কান্না করে দিল মুরাক ভেবাচেকা খেয়ে যায়, সে কি এমন বলে দিল যে মোমো কেঁদে উঠলো? মুরাক তাকে ছেড়ে দেয় বলে,, কাঁদছো কেন? মোমো কাঁদতে কাঁদতে বলল,, আগে বলেন নি কেন? ড.রিদান ও শেফালীর কথা সবখানে শুধু আমি পিশে কষ্ট পাইছি, হুহ আপনি ভালো না অন্নেক খারাপ।’
মুরাক তাকে জড়িয়ে ধরে বলে,, হুম তোমাকে আগে জানানোর উচিত ছিল যে রিদান শেফালীর সাথে মিলে প্লেন করছে আর শেফালী নিজের সুবিধার জন্য দুই দিকে মিলে খেলছে।” মোমো মাথা উঠিয়ে বলল,, আমি রাগ করছি হুহহ।” বলে আবার জড়িয়ে ধরে। মুরাক হেঁসে তার গাল ধরে অধরে অধর ছুঁয়ে দেয় মৃদু কেঁপে উঠে মোমো। মুরাক তার গালে হাত রেখে বলে,, তোমাকে কখনো আমার কাছ থেকে দূর করব না, অনেক ভালোবাসি!” বলে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে,, তুমিও বলো’। মোমো হেঁসে বলে,, আমিও”। সেও তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।

(চলবে…)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে