#seeing_with_you
Episode – 15 #punishment
Writer – Zaira Insaan
বাসায় এসে শাওয়ার নিয়ে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমোতে যায় মোমো। শুয়ার সাথে সাথেই কল আসে মোমোর ফোন চেক করতেই দেখে “খোচ্চর” লিখা মানে এতো রাতে কল করলো কেন? ভাবতেই ব্রু জুরা কুঁচকে যায় তার উঠে বসে কল রিসিভ করে বলে,, হ্যালো..।
অপাশ থেকে মুরাক গম্ভীর কন্ঠে বলে,, তোমাকে যেন কাল ভোর ৫ টায় আমার বাসার সামনে দেখি।” লাফ মেরে উঠে দাঁড়ালো মোমো, একি ভোর পাঁচটায়? ঘড়ির দিকে তাকালো সে, রাত ১টা বাজে প্রায় আর তার ঘন্টা পর তার বাসার সামনে হাজির হবে! মোমো তেজি গলায় বলে,, পাগল হয়ে গেলেন নাকি, ভোর পাঁচটায় Seriously? আর আমি ছুটি নিয়েছি তো কাল আমি আসবো কেন? মুরাক রেগে বলে,, ভোর পাঁচটায় যেন তোমাকে আমার ঘরের সামনে দেখি And that’s Final! বলেই ফোন কেটে দেয়। মোমো বিছানায় বসে বিড়বিড় করে বলতে লাগল,, বললেই হলো নাকি, হাহ! যাবো না কিন্তু না গেলে খেয়ে ফেলবে আমাকে আহহহ্ ধূর!! বলেই চাদর মুখের উপর টেনে শুয়ে পড়ে।
।।।।।
।।।।।
ব্যাগ নিয়ে ভোর পাঁচটায় গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে মোমো। আশেপাশে নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে শুধু বাগানের ওই পাশ দিয়েই পাখিদের কিচিরমিচির আওয়াজ শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। মোমো ব্রু কুঁচকে চোখ গুলো ছোট ছোট করে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে মেইন দরজার দিকে তাকিয়ে আছে এ পর্যন্ত সে ১২ বার কল করছে মুরাক কে কিন্তু ফোন বন্ধ, অনেকবার বিরক্তিতে শব্দ বের করছে সে। আধাঘণ্টা হয়ে গেল মুরাকের আসার নাম নেই। বারান্দা কোণায় দাঁড়িয়ে মোমোর মতিগতি দেখছে মুরাক বেশ হাসি পাচ্ছে তার মোমো কে বিরক্ত করে। আর দাঁড়িয়ে না থেকে নিচে নেমে মেইন দরজা খুলে দিয়ে বাহিরে বেড়িয়ে আসে সে । মোমো তাকে দেখে রাগে গা জ্বলে উঠে মুরাক এসে গেট খুলে দেয় মোমো ঢুকে মুরাকের দিকে তাকিয়ে বলে,, মজা নিচ্ছিলেন আমার তাই না?” মুরাক তার কাছে এগিয়ে আসতে শুরু করল মোমো হকচকিয়ে যায় সে পিছাতে গিয়ে গেটের সাথে তার পিঠ ঠেকে মুরাক এসে গেটের দুপাশে হাত রেখে মোমোর দিকে ঝুঁকে দাঁড়ায় মোমো দু-তিন বার পলক ফেলে কাঁপা কন্ঠে বলে,, কি ক..করছেন আপনি? মুরাক আরও ঝুঁকে বলে,,” রাতে ছেলেদের সাথে ঘুরে বেড়াও আর আমাকে বলছ আমি মজা নিচ্ছি মজা তো তুমি নিচ্ছো।” মোমো পিলে চমকালো। মানে রাতে যে রিদানের সাথে ঘুরলো তা মুরাক দেখে নিল এটায় ভাবছে মোমো। মুরাক সরে দাঁড়ালো আর আদেশ স্বরে বলল,, আমার জন্য কফি নিয়ে আসো।” মোমো অবাক হয়ে তাকিয়ে বলল,, এতো সকাল সকাল কফি খাবেন? মুরাক গা ছেঁড়া ভাব নিয়ে বলে,, “না তোমাকে খাব।” মোমো চমকে উঠে আর সাথে সাথে ঘরে ঢুকে পড়ে।
মুরাক রুমে আলমারির উপর থেকে ভারী জিনিস নামিয়ে নিচে রাখে তখনই মোমো কফি নিয়ে ভেতরে ঢুকলো আর জিনিসটা কে চোখ দিয়ে ভালোভাবে দেখতে লাগল। মোমোকে এভাবে দেখতে দেখে মুরাক তার হাত থেকে কফি নিয়ে বলে,, এটা পরিষ্কার করে দাও তো!” মোমো ব্রু কুঁচকে তার দিকে তাকায় বলে,, আমি কেন পরিস্কার করবো? মুরাক রাগ নিয়ে আদেশের স্বরে বলল,, পরিস্কার করতে বলছি তোমাকে।” ধমকে বলতেই মোমো মৃদু লাফ দিয়ে উঠে আর মাথা নাড়ে। তারপর কাপড় নিয়ে ভারি জিনিসটা পরিস্কার করতে লাগল সে বুঝতে পারছে না এটা কি হতে পারে অনেক অদ্ভুত ভারী জিনিস। মুরাক তার হাতের দিকে তাকিয়ে আছে তারপর আস্তে করে তার গরম কফি মোমোর ডান হাতে ঢেলে দেয়। মোমো চিৎকার দিয়ে উঠে দাঁড়ায় আর হাতটাকে ঝাঁকা দিতে লাগল তেজি গলায় বলে,, আপনি এটা কি করলেন? মুরাকের মেজাজ গরম হয়ে মোমোর দুহাত দেওয়ালের সাথে শক্ত করে চেপে ধরে মোমো ব্যাথায় “আহহ্” করে উঠে মুরাক রেগে বলে,, অন্য কেউ তোমাকে স্পর্শ করবে এ অধিকার তুমি দিলা কেমনে, হাত ধরে অন্য একজনের সাথে ঘুরে বেড়াও তোমার লজ্জা করে না।”” বেশ জোরে ধমকে বলে কথাটি কিন্তু মোমো হাতের ব্যাথায় ঠোঁট চেপে ধরে কান্না আটকানোর চেষ্টা করছে তার চোখ ছলছল করতে দেখে মুরাকের হুশ ফিরে সে তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিয়ে সরে দাঁড়ায়। এবার মোমো ব্যাথায় হালকা শব্দ করে কান্না করে দেয়। মুরাক ঘাবড়ে গিয়ে তার দুবাহু ধরে চেয়ারে বসায় তারপর ড্রয়ার থেকে এন্টিসেপ্টিক ক্রিম বের করে মোমোর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে তার হাত টেনে ধীরে ধীরে ক্রিম লাগানো শুরু করে। মোমোর কান্না থেমে যায় অন্য হাত দিয়ে চোখ মুছে নেয় মুরাক গম্ভীর মুখে ক্রিম লাগাচ্ছে আর সেটা মোমো এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বিড়বিড় করে তাকে গালি দিচ্ছে। মুরাক তার দিকে না দেখে বলে,, গালি দেওয়া শেষ? মোমোর মুখ বন্ধ হয়ে যায় মুরাক দাঁড়িয়ে বলে,, I’m sorry!! মোমো অবাক হয়ে যায় তারপর না শুনার ভান করে বলে,, কি বললেন শুনে নিই!” মুরাক এক নিঃশ্বাস ফেলে বলে,, Get out!!” মোমো বিরক্তিতে তাকায় তারপর উঠে চলে আসে।
।।।।।
।।।।।
মোমো রুমে আসে এমন একটা ঘুম দেই একদম উঠে সাড়ে আটটায়। ঘুম ভাঙতেই মনে পড়ে দাদির ওষুধের কথা সে তড়িগড়ি করে উঠে ফ্রেশ হয়ে দাদির রুমে চলে যায় দেখে মাহিরা ওষুধ খাওয়াই দিছে মাহিরা মোমো কে ভূত দেখার মত ভয় পেয়ে যায় বলে,, তুমি কখন আসছো? ”এইতো সকালে” মুচকি হেসে বলল মোমো। মাহিরা হেসে বলে,, ওহহ আচ্ছা, চলো নাস্তা করতে!! বলে মোমো কে নিয়ে মাইনিং রুমে চলে আসে। সবাই নাস্তা করতে বসে পড়ে খাওয়ার মাঝেই মুরাকের বাবা মুরাক কে উদ্দেশ্য করে বলেন,, মুরাক আজ তুমি ওই ফ্লাটটা গিয়ে দেখে আসো।” মুরাক মোমোর দিকে তাকিয়ে একটু চিন্তা করে বলে,, আব্বু আজকে অফিসে জরুরি মিটিং আছে তো আমি যেতে পারব না তুমি আর আম্মু নাহয় গিয়ে দেখে আসো তোমরা তো যাওনি একবারও।” তিনি একটু চিন্তা করলেন তারপর বলেন,, আচ্ছা। ” মাহিরা তখন বলল,, আব্বু আজকে সব ফ্রেন্ডরা মিলে নাহিদার ঘরে যাবে বলে প্লেন করছে তাই আমার থেকে আধাঘণ্টার পর বেড়িয়ে যেতে হবে যাবো আমি? মুরাকের বাবা বলেন,, হ্যা যেতো পারো।” মুরাক তখন দাদাকে বলল,, দাদু তোমার না আজকে তোমার ফ্রেন্ডের সাথে দেখা করার কথা ছিল? তার দাদা মাথায় হাত দিয়ে বলে,, ওহ হ্যা আমি ভুলে গেছিলাম ভালো হয়ছে মনে করাই দিছো। দাদা মুরাকের বাবা কে বলেন,, ওই শফিক আছে যে ও হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ছে তো আমি আজকে দেখা করতে যাবো।” তিনি বলেন,, আচ্ছা ভালো ড্রাইবার পৌছায় দিবে।” তখন মুরাকের আম্মু বলে উঠেন,, তো পুরো ঘরে কি আম্মা আর মুনতাহা থাকবে নাকি? মুরাক তখন দ্রুত বলে উঠে,, দাদিকে তোমাদের সাথে নিয়ে যাও আর মোমো কে আজ নাহয় ছুটি দিলাম।” ছুটির কথা শুনে মোমোর মুখে হাসি ফুটে উঠলো মুরাক তাকে দেখে বাঁকা হেঁসে মনে মনে বলে,, তোমার সাথে কি করি দেখ!! তার কথাই সবাই রাজি হয় মোমো কে আজকে ছুটি দেওয়া হবে। খাওয়ার শেষে সবাই যে যার মতো কাজে যেতে লাগল। মুরাক অপেক্ষা করছে সবাই কখন ঘর থেকে বের হবে। সবাই চলে যায় মোমো ও ব্যাগ গুছিয়ে চলে যাবে তার আগেই মুরাক তার হাত ধরে নিলো মোমো ব্রু কুঁচকে তাকায় তার দিকে বলে,, কি? যেতে দেন আমায়। মুরাক বলল,, তোমার কোন ছুটি নাই আর আমি ও অফিস যাচ্ছি না। মোমো চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম কি বলে এই লোক সবাই চলে যাওয়ার পর কিনা বলে!! মোমো কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে,, মা..মানে? মুরাক ফোঁস করে এক নিঃশ্বাস ফেলে বলে,, কাজ করবা আমার সাথে।” বলে হাত ছেড়ে দেয় ইশারা করে আসতে বলে মোমোর এখন সত্যিই কান্না পাচ্ছে যাও বাধ্য হয়ে তার সাথে যেতে হলো। মুরাক লাইব্রেরী তে এসে মোমো কে বলল,, বই গুলো মুছে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখো।” বলে মোবাইলে কাউকে কল করতে চলে যায়। মোমো পুরো লাইব্রেরী ঘুরে দেখে বলে,, ওয়াও কি সুন্দর লাইব্রেরী!আর সে আমাকে কাজ করতে বলছে কেন শয়তান! করবো না আমি কিন্তু না করে যাবো কয় করতেই হবে।”
বলে টুলে উঠে পরিস্কার করতে লাগল।
।।।।।
।।।।।
২ঘন্টা যাবত পরিস্কার করে থামে মোমো। ক্লান্ত হয়ে পড়ছে সে তাই এ রুম থেকে বেরিয়ে নিজের রুমে দিকে অগ্ৰসর হয় কিন্তু পথে মুরাক তার সামনে এসে হাজির হয় বুকে দুহাত গুজে বলে,, সুইমিং পুল কে পরিস্কার করবে? মোমো বিরক্ত হয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় সুইমিং পুলের সামনে এসে দাঁড়ায় মোমো, মুরাক তার হাতে এক লম্বা লাঠি দিয়ে বলে,, এটা দিয়ে পরিস্কার করো।” মোমো এটা দিয়ে পুলের উপরের ময়লা গুলো টেনে আনল। মুরাক তার পিছনেই দাঁড়িয়ে এক বাঁকা হাঁসি দিয়ে মোমো কে হালকা ধাক্কা মারলো পুলের পানি বেশি থাকায় মোমো ডুবে গিয়ে ছটফট করতে লাগলো। মুরাক ভাবলো মোমো ফাজলামো করছে কিন্তু না মোমো সত্যি সত্যি উঠতে পারছে না। মুরাক তাড়াতাড়ি কাপড় খুলে পানিতে ডুব দেয়। মোমোর বাহু ধরে টেনে আনে মোমো ঝপ করে মুরাকের গলা জড়িয়ে ধরে হাপাতে লাগলো মুরাকো তাকে জড়িয়ে ধরে বলে,, রিল্যাক্স আমি আছি!! মোমো কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে,, আমার পা..পানি ফোবিয়া…। আর কিছু বলতে পারলো না শুধু হাপাতে লাগলো মুরাক ও নিজের ভুল বুঝতে পারলো তার উচিত হয়নি পানিতে ফেলার। মুরাক তাকে ছাড়িয়ে বলে,, উপরে উঠে আসো। বলে চলে যেতে নিলে মোমো আবার তাকে জড়িয়ে ধরে বলে,, আমার ভয় করছে।” মুরাক তাকে কোলে তুলে নেয় তারপর তাকে উপরে উঠিয়ে নিজেই উপরে উঠে মোমো তাকে এক পলক দেখে দ্রুত গতিতে চলে যায়।
রুমে এসে নিজেকে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখতে লাগল পরনে সাদা থ্রি পিস ভিজে গায়ে সাথে লেপ্টে গেছে। মুরাক তার রুমে ঢুকে পড়ে মুরাক কে দেখে সে চমকে যায় মুরাক তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। মোমো তার ওড়না সামনে টেনে আনে। মুরাক তার দিকে তাকিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে আসছে। মোমো হকচকিয়ে যায় বলে,, এভাবে এ.. এগুচ্ছেন কেন? মুরাক তার কাছে এসে দাঁড়ায়। মোমো কিছু বলতে যাবে তার আগে মুরাক তার ভেজা চুলে হাত ডুবিয়ে দেয় এমন স্পর্শে শিউরে উঠে মোমো। মুরাকের দৃষ্টি মোমোর ঠোঁটের দিকে মোমোর অন্য দিকে তাকিয়ে আছে তার দিকে তাকানোর সাহস নেয় তার। মুরাক তার আরেকহাত মোমোর কোমড়ে রেখে মুখ এগিয়ে আনে। মোমো চমকে বলে,, কি ক..করছেন?
মুরাক তার বেশ কাছে আসতেই মোমো চোখ খিচে বন্ধ করে নেয়…….
(চলবে…)
#seeing_with_you
স্পেশাল পর্ব #নেশালো_সে
লেখিকা – জায়রা ইনছান
৫ দিন হতে চলল মোমো মুরাকের সামনেই আসছে না ওই দিনের ঘটনার পর। লজ্জায় শুধু মুখ লুকিয়ে রাখছে। এদিকে মুরাক তার সাথে কথা বলতে চাইলেও মোমোর অবস্থা দেখে বলতে পারছে না। আজ শুক্রবার মুরাক বাসায় বসে আছে আর ভাবছে মোমোর রুমে গিয়ে সরাসরি কথা বলবে। যেমন ভাবনা তেমন কাজ! মুরাক গিয়ে মোমোর রুমে ঢুকে কিন্তু কোথাও মোমো নেই। তাই সে দরজা লক করে বিছানায় গা এলিয়ে বসে মোবাইলে গেম খেলছে। আর মোমোর অপেক্ষা করছে।
এদিকে মোমো গোসল শেষ করে গায়ে তোয়াল জরিয়ে গুনগুন করে গান গাইতে গাইতে বাহিরে বেড়িয়ে আসে।মোমো মুরাক কে দেখে ভয়ে জোরে চিৎকার দিয়ে উঠে। তার চিৎকার শুনে চমকে তাকায় মুরাক। বাহির থেকে মাহিরা দৌড়ে এসে দরজায় নক করে বলে,, কি হয়েছে চিৎকার দিচ্ছো কেন দরজা খোলো!!” মোমো কিছু বলতে যাবে তার আগে মুরাক লাফ মেরে উঠে মোমোর মুখ চেপে ধরে আস্তে করে বলে,, চিল্লাচ্ছো কেন? পাগল হয়ে গেছো, মাহিরা কে কিছু বলিও না প্লিজ!!” রিকুয়েস্ট করে বলে মুরাক মোমো মাথা নেড়ে সায় দেয় তারপর এক ঝটকায় হাত সরিয়ে জোরে বলে,, না না এক বড় ইঁদুর দেখে চিৎকার দিছিলাম কিছু হয়নি!!” মুরাক চেহেরা বিচিত্র রকমের করে আস্তে করে নিজেকে বলে,, ইঁদুর? মাহিরা বাহির থেকে হেসে চলে যায়। মোমো চোখ লাল করে বলে,, আপনার কোমন সেন্স নেই মেয়েদের রুমে এভাবে কেউ আসে?” মুরাক টিটকারি মেরে বলে,, তুমি মেয়ে? মোমো চোখ বড়বড় করে বলে,, তো আমাকে কি মনে হয় আপনার? মুরাক দাঁত কেলানি দিয়ে বলে,, খরগোশ!!” মোমো চিৎকার দিয়ে বলে,, কিহহ!! মুরাক তার কাছে এসে দেয়ালের দুপাশে হাত রেখে বলে,, আস্তে করে বলো!!” মোমো হকচকিয়ে যায় তারপর এদিক ওদিক তাকিয়ে বলে,, দূরে যান।” মুরাক তার দিকে সম্পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকায় মোমোর গলা ও ঠোঁটের দিকে দৃষ্টি যাচ্ছে বারবার মোহনীয় লাগছে তাকে। মোমো আবার বলে,, কানে শুনেন না দূরে সরেন বলছি!!” মোমোর কোন কথায় তার কানে যাচ্ছে না সে এক ঘোরে আছে মোমোর ভেজা শরীর তাকে আকৃষ্ট করছে বারবার। মুরাক তার দুই আঙুল দিয়ে মোমোর গলা থেকে চুল সরিয়ে কানের পিছনে গুজে দেয় কেঁপে উঠে মোমো অনেক চমকে উঠে এখন কি আবার ওই দিনের মতোই…। ভাবতেই গলা শুকিয়ে কাট কাট হয়ে যায় ঢোক গিলে বারবার মুরাক তার গলার কাছে আসতেই চোখ খিচে বন্ধ করে নেয় মোমো মুরাক কানের কাছে এসে নেশালো মৃদু স্বরে বলে,, “আমার স্পাইসি মোমো খেতে ইচ্ছে করছে!!” চোখ খুলে বড়বড় দৃষ্টিতে সামনের দিকে তাকায় মোমো লজ্জায় যেন লাল হয়ে উঠছে সে পারলে মাটি খুঁড়ে এখনিই জমিনের ভিতর ঢুকে পড়বে। মুরাক সরে দাঁড়ায় তার কাছ থেকে মোমো নিচের দিকে তাকিয়ে আছে বুকে তোলপাড় শুরু হয়েছে সে আড়চোখে তাকায় দেখে মুরাক তার দিকেই দুষ্টু হাসি দিয়ে ঠোঁট কামড়ে আছে। মোমো নিচে তাকিয়ে আমতা আমতা করে বলে,, আপনি এখান থেকে…। সম্পূর্ণ কথা শেষ হওয়ার আগেই মুরাক এসে তার গালে চুমু দিয়ে বলে,, তুমি অনেক কিউট!!” বলে আবার গালে চুমু দিয়ে মুচকি হেসে চলে যায়। মোমো হা হয়ে আছে তাড়াতাড়ি তার গাল মুছে দরজা লাগিয়ে কাপড় চেঞ্জ করে নেয়।
।।।।।
।।।।।
🌼
দুপুর ৩ টায় রুমে এসে বসে মোমো ইভানকে কল করবে ভাবছে সে। কল করার আগেই দরজায় টোকা পড়ে পিছনে ফিরে দেখে মাহিরা বুকে দুহাত গুজে দাঁড়িয়ে আছে। মোমো বলে,, আসো না দাঁড়িয়ে আছো কেন? মাহিরা ভেতর ঢুকে কোমড়ে দুহাত রেখে ছোট ছোট চোখে বলে,, এখনো রেডি হওনি? মোমো ব্রু কুঁচকে ফেলে জিজ্ঞেস করে,, কেন? মাহিরা ফোঁস করে এক নিঃশ্বাস ফেলে বলে,, আজকে পার্টি, ভাইয়াকে পাঠিয়েছি এটা বলার জন্য, কেন সে তোমাকে বলিনি? মোমো বিরক্ত হয়ে নিজে নিজে বিড়বিড় করতে লাগল তারপর বলে,, না বলিনি। মাহিরা ব্যস্ত স্বরে বলে,, চল তাহলে তোমাকে রেডি করিয়ে দি। মোমো না বুঝে জিজ্ঞেস করে ফেলল,, কিসের পার্টি? আর আমি পাটিতে গিয়ে কি করবো আমি যাব না!! মাহিরা মুচকি হেসে বলে,, ভাইয়া কালকে বড় ক্লাইন্ট এর সাথে ডিল ফাইন করছে তাই আজকে খুশিতে পার্টি রাখছে, আর তুমি পাটিতে গিয়ে মজা করবে তোমার আসতেই হবে বলে দিলাম আমি!! মোমো কিছু বলতে গেলেও মাহিরার জন্য কিছু বলতে পারল না মাহিরা এক জেদ মোমো কে পাটিতে আসতেই হবে। তাই মোমো না চাইলেও রাজি হয়, মাহিরা গিয়ে মোমোর আলমারিটা খুলে সব কাপড় বিছানায় রাখল আর দেখতে লাগল তারপর ছোট ছোট চোখে বলে,, তোমার কোন পার্টি ড্রেস নেই? মোমো কাপড় গুলো গোছাতে ব্যস্ত হয়ে বলে,, না!” মাহিরা হেসে বলে,, ওয়েট, আমি আসি!” বলে বাহিরে চলে যায়। মোমো কাপড় গুলো গুছিয়ে আবার আলমারিতে তুলে রাখল ইতিমধ্যে মাহিরা নতুন ড্রেস নিয়ে চলে আসল দরজা বন্ধ করে মোমোর সামনে এসে দাড়িয়ে বলে,, এই ড্রেসটা কেমন? মোমোর মুখ হা হয়ে যায় তারপর বলে,, কি আমি এই ড্রেস পরব? না না বাবা আমি এটা পরতে পারব না!! হাত নাড়িয়ে বিস্ময়কর কন্ঠে বলে মোমো। মাহিরা অবাক হয়ে বলে,, কেন, এটাতে কি খারাপ আছে? মোমো সুর নরম করে বলে,, কাপড়ের হাত গুলো কাধ থেকে নামানো আর এতো গুলো মানুষের সামনে এটা।” মাহিরা হেসে তাড়া দিয়ে বলে,, আরে কিছু হবে না সবাই ঘরের মানুষ, ভাইয়ার স্কুল, কলেজ, ভার্সিটির, সব ফ্রেন্ড আসবে কিছু হবে না বসো তোমাকে মেকআপ করিয়ে দিয়। তাকে জোর করে বসিয়ে সাজানো শুরু করল মাহিরা।
পাক্কা দুই ঘন্টা যাবত মোমো কে সাজিয়ে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলল মাহিরা, তারপর বলল,, কাপড় টা পড়ে আসো!”
মোমো পড়তে না চাইলেও জোর করে পড়িয়ে ছাড়ে মাহিরা। মোমো কাপড়টা নিয়ে বাথরুমে ঢুকে পড়ে, ১০ মিনিট পর বেড়িয়ে আসে সে মাহিরা বসে ছিল তাকে দেখে দাঁড়িয়ে বলে,, ওয়াও কি সুন্দর লাগছে! এই ব্লেক ড্রেসটা তোমাকে অনেক মানিয়েছে”। তাকে ধরে বসিয়ে গাঢ় লাল কালারের লিপস্টিক দিয়ে দেয় মাহিরা। তারপর তাকে আয়নার সামনে নিয়ে গিয়ে বলে,, কি হট লাগছে তোমাকে সব ছেলেরা তোমাকে দেখে ক্রাস খেয়ে যাবে।” তারপর মাহিরা মোমোর সব চুল হালকা কোঁকড়া করে এক সাইডে নিয়ে এসে বলে,, চুলগুলো এভাবেই রাখো আরো সুন্দর লাগছে, আমিও রেডি হয়ে আসি বাই!!” বলে চলে যায়। মোমো বসে নিজেকে দেখতে লাগল।
১ ঘন্টার পর মাহিরা আসতেই জোর করে ছাদে নিয়ে যায় মাহিরা মোমো কে। মোমো এ ড্রেস পরতেই লজ্জা করছে। ছাদে উঠে তারা সবই সুন্দর করে আয়োজন। মুরাকের ফ্রেন্ডরা তাদের দিকে তাকায় মোমো আরো বিব্রত বোধ করতে লাগল। এভাবে তাকিয়ে থাকার কি আছে আজব! মুরাক ছাদের এক কোনায় দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছিল পিছনে ফিরে হঠাৎ তার চোখ যায় মোমোর দিকে। হা হয়ে যায় পুরো তৎক্ষণাৎ মুরাক চোখ সরিয়ে নেয় মোমো আড়চোখে তাকাতেই দেখে মুরাক অন্য দিকে তাকিয়ে ফোনে কথা বলছে। মাহিরার কিছু মেয়ে ফ্রেন্ড আসাতেই তাদের সাথে কথা বলতে লাগল মোমো ও মাহিরা। মোমো বারবার মুরাকের দিকে আড়চোখে দেখছে কিন্তু মুরাক মোটেও তার দিকে তাকাচ্ছে না ফলে মোমো রাগ করে উঠে ছাদের এক কোনায় দাঁড়িয়ে মোবাইল দেখছে। কিছুক্ষণ পর এক ছেলে এসে মোমোর সামনে দাঁড়িয়ে বলে,, হাই!! মোমো রেগে আছে তাই সে উত্তর দেয় নি। ছেলেটি আবার বলে,, আমি রিফাত, তুমি? মোমো মোবাইল অফ করে বলে,, মুনতাহা। রিফাত মুচকি হেসে বলে,, Ohh nice name Muntaha. মোমো মুচকি হাসি দেয়। দূর থেকে মুরাক তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। কথা বলতে বলতে রিফাত বলল,, তোমার গলায় কি যেন লেগে আছে!!” হাত গলার কাছে বাড়াতেই মুরাক এসে তার হাত ধরে নেয় তারপর রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে,, তোর গার্লফ্রেন্ড থাকা সত্ত্বেও কোন সাহসে অন্য মেয়ের সাথে কথা বলছিস দূর হও এখান থেকে।” ছেলেটি শরম পেয়ে মোমোর দিকে এক বার তাকিয়ে চলে যায়। মুরাক ও তার দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে চলে যায়। মোমো অবাক হয় মুরাক এর এমন কান্ডে।
।।।।।
।।।।।
সাড়ে বারোটা বেজে যায় পার্টি শেষ হতে হতে। সবাই যে যার ঘরে চলে যায়। মোমো ক্লান্ত হয়ে রুমে চলে আসে। কাপড়ের পিছনে চেইন একটু খুলতেই দরজা লক করার শব্দ শুনতে পায় সে। পেছনে ফিরে তাকাবে তার আগেই কে যেন এসে তাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে চমকে সে আয়নার দিকে তাকায় দেখে মুরাক তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে। সে কিছু বলতে যাবে তার আগে মুরাক তার ঘাড়ে ঠোঁট ছোঁয়ায় পুরো কেঁপে উঠে মোমো। মুরাক নেশালো কন্ঠে বলে,, তোমাকে আজ একদম অন্যরকম সুন্দর লাগছে, একদম খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে”। তারপর সে কাঁধে ঠোঁট ছুঁয়ে দিয়ে ঘাড়ে মুখ গুজে দেয়। মোমোর গায়ে শিহরণ বয়ে যায় সে শক্ত করে মুরাকের দুহাত চেপে ধরে। মুরাক তাকে নিজের দিকে ফিরিয়ে আয়নার সাথে চেপে ধরে নেশাময় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে টুপ করে সে কপালে চুমু দেয় মোমো একটু করে তাকিয়ে তারপর তার বুকের দিকে তাকিয়ে আছে। তারপর গালে, চোখে, নাকে, থুতনিতে চুমু দিয়ে থামে মুরাক। মোমোর দৃষ্টি স্থির সে তার চোখের দিকে তাকাতে পারছে না, না পারছে তাকে সরাতে। মুরাক তার গলার দিকে তাকিয়ে গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয়। কেঁপে কেঁপে উঠছে মোমো চোখ খিচে বন্ধ করে ঠোঁট চেপে ধরে। গলার থেকে মুখ তুলে ঠোঁট জোরা দখল করে নেয় তার। মোমো ফট করে চোখ খুলে তাকায় দেখে মুরাক তার ঠোঁটের স্বাদ নিতে ব্যস্ত। ধীরে ধীরে সেও চোখ বন্ধ করে নেয়। মুরাক তার পিছনের চেইন খুলে দিয়ে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে কোমড় চেপে ধরে মোমো শিউরে উঠে তার কাঁধের শার্ট দুহাত দিয়ে খিচে চেপে ধরে। বেশ কিছুক্ষণ পরেই দুজনেই সরে দাঁড়ায় একে অপরের কাছ থেকে মোমো লজ্জায় আর তাকাতে পারছে না মাথা নুয়ে আছে সে। মুরাক এসে তার কপালে চুমু দিয়ে মুচকি হেসে রুম থেকে বেরিয়ে যায়…।
(চলবে…)