#Revenge_of_love
#Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_8
দু দিন পেরিয়ে গেছে নন্দিতার কোনো খোঁজ খবর নেই। রাফি যত বার ফোন দিয়েছে তত বারই ফোন অফ আসে। আর ফোন যদি অনও থাকে তাহলেও কল ধরে না। সুহার কাছেও কোনো খবর নেই নন্দিতার। সুহার কলও মেয়েটা ধরে না। এমন কি সুহা নন্দিতার গ্রামের বাড়ির নামটাও জানে না। তার জন্য রাফি আচ্ছা করে সুহাকে কথা শুনিয়ে দিয়েছে। বান্ধবী হয়ে বান্ধবীর গ্রামের নাম কেন জানে না তার জন্য? রাফি নন্দিতার বাসায় অনেক বার গিয়েছে কিন্তু সদর দরজায় মস্ত বড় একটা তালা ঝুলানো। কাউকে জিঙ্গেস করে নন্দিতার খবর নিবে এটারও সাহস পাচ্ছে না রাফি যদি কেউ কিছু মনে করে তার জন্য রাফি সুহার কাছে এসে বলে।
“সুহা চলো।”
সুহা ভ্রু কুঁচকে বলে, “কোথায়?”
“নন্দিতার বাসায়।”
“কিন্তু ভাইয়া আপনিই তো বললেন নন্দিতা বাসায় নাকি তালা মারা।”
“তুমি ওদের প্রতিবেশীদের কাছ থেকে না হলে ওদের বাড়িওয়ালার কাছ খবর নিবে ওরা কোথায় গেছে?”
সুহা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে, “ঠিক আছে চলুন।”
সুহা রাফির বাইকের পেছনে উঠে বসতেই রাফি বাইক স্টার্ট দেয়। রাফির পেছন পেছন সিয়ামও যায়। এই সবটা দূর থেকে দিয়া রাগী চোখে তাকিয়ে দেখেছে। এর মাঝে রাফি দিয়াকে বড়সড় একটা থ্রেট দিয়েছে “যদি নন্দিতার কিছু হয় তাহলে দিয়ার জন্য ভয়াবহ কিছু অপেক্ষা করছে।” এটার জন্য দিয়া রেগে ফায়ার হয়ে আছে আরো নন্দিতার উপরে।
______
রাফির বাইক এসে থামে নন্দিতার বাসার সামনে। সুহা বাইক থেকে নামতেই রাফি বলে।
“আমরা এখানে অপেক্ষা করছি তুমি জেনে আসো।”
সুহা কিছু না বলে ভেতরে চলে যায়। কিন্তু রাফির ভেতরে ঝড় বইতে শুরু করেছে যদি তারা কিছু না জানে তাহলে। রাফি বাইক থেকে নেমে পায়চারি করা শুরু করে দেয়। রাফির অস্থিরতা বুঝতে পেরে সিয়াম বলে।
“ভাই তুই একটু শান্ত হয়ে বস।”
রাফি ক্রমাগত শ্বাস ফেলে বলে, “পারছি না শান্ত হয়ে বসে থাকতে সিয়াম। নন্দিতার চিন্তায় মাথা ফেটে যাচ্ছে আমার। মেয়েটা এভাবে কিছু না বলে চলে গেছে বুঝতে পারছিস কতটা কষ্ট পেলে এমনটা করে।”
সিয়াম রাফির কথার পক্ষান্তরে কিছু বলে না। কয়েক মুহূর্ত পরেই সুহা বেরিয়ে আসে। সুহাকে দেখেই রাফি সুহার কাছে এসে বলে।
“কোনো তথ্য পেয়েছো?”
“হুম!”
“কোথায় গেছে?”
“কিছু দিনের জন্য নাকি গ্রামের বাড়ি গিয়েছে।”
রাফি ভ্রু কুচকে বলে, “গ্রামের বাড়ি কোথায়?”
“অহিদপুর!” (কাল্পনিক নাম)
রাফি অস্পষ্ট স্বরে বলে, “অহিদপুর।”
সিয়াম রাফির মুখের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলে, “রাফি! তোর চোখ মুখ কিন্তু অন্য কথা বলছে।”
রাফি বাইকে বসে হেলমেট মাথায় পরতে পরতে বলে বলে, “চল।”
সিয়াম কপাল ভাঁজ করে বলে, “চল মানে! কোথায় যাবো?”
রাফি ঠান্ডা গলায় বলে, “অহিদপুর।”
“তোর কি মাথাটা খারাপ হয়ে গেছে রাফি। অহিদপুর যাবি তুই এখন।”
“হুম যাবো।”
কথাটা বলে সুহার দিকে তাকিয়ে বলে, “সরি সুহা তোমাকে পৌঁছে দিতে পারলাম না তার জন্য সরি।”
সুহা মুচকি হেসে বলে, “না ভাইয়া ঠিক আছে। আমি রিক্সা করে চলে যেতে পারবো।”
সিয়াম দ্রুত গলায় বলে, “রাফি পাগলামি করিস না। নন্দিতা আসলে তখন না হয় কথা বলে নিস।”
রাফি কপালে দুশ্চিন্তার বলিরেখা রেখে বলে, “আমি পারবো না আর ওয়েট করতে।”
সিয়াম বোঝানোর স্বরে বলে, “দেখ পাগলামি করিস না রাফি।”
রাফি নিঃশব্দে হেসে বলে, “যাকে মন থেকে ভালোবেসেছি তার জন্য না হয় একটু পাগলামি করলাম আমি।”
“দেখ রাফি গ্রামে গেলেই যে তুই নন্দিতার দেখে পেয়ে যাবি এমনটা কিন্তু নয়। আর যেতে যেতে বিকেল হয়ে যেতে পারে।”
রাফি মুচকি হেসে বলে, “খুজে নিবো। পারলে সারা গ্রাম তোলপাড় করে ফেলবো ওকে খুঁজতে কিন্তু তারপরও ওর সাথে আমি আজেই দেখা করবো।”
সিয়াম বিরক্ত হয়ে মুখ দিয়ে “চ” জাতীয় শব্দ উচ্চারণ করে।
রাফি বাইকে চাবি ঢুকিয়ে বলে, “আসি।”
কথাটা বলেই এক টান মারে বাইক। সিয়ামের আর কি করার? বন্ধুকে তো আর একা ছেড়ে দিতে পারে না। তাই বাধ্য হয়েও নিজেও চলল বন্ধুর পেছন পেছন।
_______
এদিকে গ্রামে এসেও মুখ গোমরা করে বসে আছে নন্দিতা। ঘর বন্দি করে রেখেছে নিজেকে। যে মেয়ে গোধূলি বেলায় গ্রামের আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়াতো সে মেয়ে আজ দুই দিন হলো বাড়ির বাইরে বের হচ্ছে না বের হলেও শুধু উঠোন পর্যন্ত। নন্দিতার বাবা মাও বুঝতে পারছে না মেয়েটার হঠাৎ হলোটা কি? জমেলা বেগম রান্না করে রান্না করছেন রাতের জন্য। মজনু আহমেদ ক্ষেতে পানি দিয়ে বাড়িতে এসে হাত মুখ ধুয়ে স্ত্রীর পাশে বসে চিন্তিত হয়ে বলেন।
“মেয়েটার হঠাৎ করে কি হলো গো?”
জমেলা বেগম দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলেন, “জানি না গো। হঠাৎ করে মেয়েটার কি যে হলো? আমি শিফা আর রুমাকে খবর দিয়েছি আসার জন্য।”
“ভালো করেছো।”
এমন সময় উঠোন থেকে চিৎকার চেঁচামেচির আওয়াজ ভেসে আসছে। জমেলা বেগম মুচকি হেসে বলেন।
“ওই তো ওরা চলে এসেছে মনে হয়।”
জমেলা বেগম রান্না ঘর থেকে বের হয়ে বলেন, “এসেছিস তোরা।”
শিফা চিৎকার করে বলে, “কোথায় সেই মহারাণী? এসেছে থেকে তো একবারও দেখা করলো না। তাই আমাদেরকেই আসতে হলো তার মুখখানা দেখতে।”
রুমা বলে, “আরে বুঝিস না ও তো এখন শহরে পড়াশোনা করে। আমাদের কি এখন মনে রাখবে নাকি।”
এমন অনেক কথাবার্তাই রুমা আর শিফা ইচ্ছে করে নন্দিতা শুনিয়ে শুনিয়ে বলছে। নন্দিতা শুয়ে ছিলো যখনেই শিফা আর রুমার এসব কথাবার্তা শুনলো তখনেই শুয়া থেকে উঠে বাইরে বেরিয়ে আসে। নন্দিতাকে দেখে সিফা বলে।
“এই তো আমাদের মহারাণীর দেখা মিললো।”
নন্দিতা মুচকি হেসে বলে, “কখন এসেছিস?”
“মাত্রই আসলাম।”
রুমা নন্দিতার হাত ধরে বলে, “চল আজ তিন বান্ধবী মিলে সারা গ্রাম ঘুরে বেড়াবো। অনেক দিন হয়ে গেছে তিন বান্ধবী এক সাথে হয় নি। আজ হয়েছি তাই আগের মতো সারা গ্রাম ঘুরবো।”
নন্দিতা মুখ শুকনো করে বলে, “আমি যাবো নারে। আমার ভালো লাগছে না।”
শিফা রেগে বলে, “একদম ভাব ধরবি না। শহরের হাওয়া গায়ে লাগতে না লাগতেই ভাব এসে গেছে না আপনার অঙ্গে। একদম ভাব ছুটিয়ে দেবো।”
জমেলা বেগম মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন, “ঘুরে আয় ভালো লাগবে।”
রুমা নন্দিতার হাত টেনে ধরে বলে, “চল তো এতো ভাব না ধরে।”
রুমা, শিফা আর নন্দিতা বেরিয়ে পড়লো ঘুরতে।
______
এদিকে রাফি আর সিয়াম মাত্র এসে পৌঁছেছে অহিদপুরে। সূর্য পশ্চিম আকাশে তখন হেলে পড়েছে। চারিদিকে সূর্যের সোনালি আভা ছড়িয়ে পড়েছে। গ্রামের ব্যস্ত মানুষরা তখন ঘরে ফিরতে ব্যস্ত। কেউ হাট থেকে সদাই করে ফিরছে, কেউ বা মাঠ থেকে গরু নিয়ে নিজ নিজ গৃহে ফিরে যাচ্ছে।
মাটির রাস্তার দুপাশে সবুজ ধান ক্ষেত। সবুজ রঙের ধান গাছ গুলা শীতল বাতাসের সাথে নিজ মনে ধুলছে। এর মাঝ দিয়ে দুই মানব বাইক চালিয়ে চলছে নিজেদের গন্তব্যস্থলে। কিন্তু সেই গন্তব্যস্থলে কি আজও পৌঁছাতে পারবে। রাফি বাইক থামিয়ে একজন মধ্য বয়স্ক লোককে বলে।
“চাচা আপনি নন্দিতা নামে কাউকে চিনেন?”
লোকটা কিছুক্ষণ ভেবে বলেন, “না বাবা এমন নামে তো কাউকে চিনি না।”
“ও আচ্ছা।”
রাফির পাশে সিয়াম বাইক থামিয়ে বলে, “আরেকটু ভেতরে যেতে হবে হয়তো।”
________
এদিকে নন্দিতা চুপচাপ হেঁটে যাচ্ছে গ্রামের মেঠোপথ ধরে। নন্দিতাকে এমন গুমড়ে থাকতে দেখে রুমা শিফাকে ইশারা করে নন্দিতাকে কিছু জিজ্ঞেস করতে। শিফা মাথা নাড়িয়ে নন্দিতাকে বলে।
“কিরে নন্দিতা? তোর ব্যাপারটা কি বলতো? প্রেম করে ছ্যাঁকা টেকা খেয়েছিস নাকি হুম যে এমন শোক মেরে আছিস।”
মুহূর্তের মাঝে নন্দিতার পা দুটো থমকে যায়। কিছু একটা ভেবে কন্ঠে রূঢ়তা এনে বলে।
“কি যা তা বলছিস?”
“তাহলে এমন গুমড়ে আছিস কেন? কিছু তো একটা হয়েছে নিশ্চয়ই। বলনা কি হয়েছে আমাদের?”
নন্দিতা কর্কশ কন্ঠে বলে, “কিছু হয়নি আমার। আমি বাড়ি গেলাম।”
কথাটা বলেই বাড়ির পথে হাঁটা ধরে। রুমা নন্দিতার যাওয়ার পানে তাকিয়ে বলে।
“ওর কিছু একটা তো হয়েছে আমি নিশ্চিত।”
“কিন্তু ও তো কিছু বলছে না।”
“কি আর করার না বললে। চল বাড়ি যাই এখন।”
গ্রামের মেঠোপথ ছেড়ে এখন বড় সড়কে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে নন্দিতা, রুমা আর শিফা। হঠাৎ করেই দুটো বাইক ক্রস করে যেতেই নন্দিতার পা জোড়া থেমে যায়। এই দুটো বাইক তার বড্ড চেনা।
অন্যদিকে রাফিও নন্দিতাকে দেখে কিছুটা দূরে যেতেই তৎক্ষণাৎ বাইক থামিয়ে ফেলে। নন্দিতাকে যে এভাবে পেয়ে যাবে রাফি কল্পনাও করতে পারে নি। নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হচ্ছে। তার কষ্টটা তাহলে বৃথা যায় নি।
নন্দিতা পেছন ফিরে তাকাতেই চমকে যায় রাফিকে আর সিয়ামকে। রাফি বাইকের উপরে হেলমেটটা রেখে নন্দিতার দিকে এগিয়ে আসছে। নন্দিতা অস্বস্তিতে পড়ে যায় রাফিকে নিজের দিকে এগিয়ে আসতে দেখে। হঠাৎ করে রাফি আর সিয়াম গ্রামে এসেছে কেন নন্দিতা ঠিক বুঝতে পারছে না? নন্দিতা কি এখন রাফিকে ইগনোর করে চলে যাবে নাকি রাফি কেন এসেছে সেটা জানবে? নন্দিতা রাফির এগিয়ে আসা দেখে উল্টো ঘুরে চলে যেতে নিবে তখনই রাফি উচ্চ স্বরে বলে।
“নন্দিতা প্লিজ দাঁড়াও আমার কথাটা তো একটু শোনে যাও।”
রাফি দৌঁড়ে এসে নন্দিতার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলে, “নন্দিতা প্লিজ আমার কথাটা একটি বার শোনো।”
নন্দিতা রাফির দিকে না তাকিয়ে বলে, “আপনার সাথে আমার কোনো কথা নেই।”
রাফি ঠান্ডা গলায় বলে, “কিন্তু আমার আছে।”
“দেখুন এখানে সিনক্রিয়েট করবেন না এটা গ্রাম ঢাকা শহর নয়।”
রাফি অনুনয় হয়ে বলে, “প্লিজ নন্দিতা আমি জাস্ট কয়েকটা কথা বলবো।”
রুমা আর শিফা হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে। কি হচ্ছে ঠিক বুঝতে পারছে না? সড়ক দিয়ে যারা হেঁটে যাচ্ছে তারাও তাদের দিকে তাকিয়ে আছে অদ্ভুত চোখে। শিফা মানুষ জনের দৃষ্টি বুঝতে পেরে নন্দিতার কাছে এসে বলে।
“ছেলে দুটো কে নন্দিতা?”
এর মাঝে রাফি বলে, “প্লিজ নন্দিতা জাস্ট পাঁচ মিনিট সময় দাও আমাকে। আমি শুধু মাত্র তোমার সাথে দেখা করার জন্য এতটা রাস্তা বাইক চালিয়ে এসেছি।”
নন্দিতার বুকটা কেন যেন ধ্বক করে উঠে কথাটা শুনে। রাস্তায় যদি লোকটার কিছু হয়ে যেত তখন কি হতো? এতটা পাগলামি করার কি কোনো মানে আছে! এসব ভেবে নন্দিতা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে, “ঠিক আছে বলুন কি বলবেন।”
রাফি মিহি স্বরে বলে, “তুমি এভাবে হঠাৎ করে গ্রামে চলে আসলে কেন?”
“আমি কখন গ্রামে আসবো না আসবো সেটা কি আপনাকে বলে আসতে হবে নাকি।”
“সরি! আমি জানি ওই দিন যা কিছু হয়েছে সবটা আমার জন্যই হয়েছে। তা বলে তুমি এভাবে চলে আসবে।”
নন্দিতা এবার গলার স্বরে কঠিন করে বলে, “আশ্চর্য আমি কখন বললাম আমি আপনার জন্য চলে এসেছি। আমার বাড়িতে আসতে ইচ্ছে হয়েছে তাই এসেছি এটার জন্য আপনি কেন নিজেকে দোষী মনে করছেন আমি ঠিক বুঝতে পারছি না?”
রাফি নিঃশব্দে হেসে কোমল গলায় বলে, “তোমার প্রত্যেকটা কথার মাঝে অভিমান লুকিয়ে আছে সেটা কি তুমি জানো নন্দিতা।”
নন্দিতা রাফির কথা শুনে ঢোক গিলে। রাফির মুখে এই নন্দিতা ডাকটা বড্ড অদ্ভুত লাগে নন্দিতার কাছে। কিন্তু রাফি যে তাকে কথার জালে ফাঁসাতে চাইছে সেটা ভালো করে বুঝতে পারছে। সন্ধ্যা হয়ে আসছে তাই নন্দিতা আর কিছু না বলে রাফির পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে রাফি বলে উঠে।
“তুমি কি সত্যি আমাকে ভালোবাসো না নন্দিতা। যদি উত্তরটা না দিয়ে যাও তাহলে বুঝে নিবো তুমি আমাকে ভালোবাসো।”
নন্দিতার না চাওয়া সত্বেও থেমে যায় রাফির কথা শুনে। নন্দিতার বোঝে আসছে না একটা লোক এতগুলা মানুষের সামনে রিজেক্ট হওয়ার পরেও আবার কি করে এই কথাটা বলছে। নন্দিতা রাফির দিকে ফিরে বলে।
“আপনার কি লজ্জাশরম বলতে কিচ্ছু নেই। ওই দিন এত গুলা মানুষের সামনে রিজেক্ট হয়েছেন তারপর আবারো রিজেক্ট হতে চলে এসেছেন এত দূরে।”
রাফি দাঁত কেলিয়ে হেসে বলে, “ভালোবাসায় লজ্জাশরম নামক বস্তু থাকতে নেই বুঝলে প্রিয়।”
রাফির মুখে প্রিয় ডাকটা শুনে অদ্ভুত এক ভালো লাগা কাজ করছে নন্দিতার মনের মাঝে কিন্তু রাফির দাঁত কেলানো দেখে নন্দিতার মেজাজ খারাপ হয়ে যাচ্ছে। একে তো সন্ধ্যা হয়ে গেছে তার উপর রাফির এসব অসহ্য মার্কা কথাবার্তা। নন্দিতা সিরিয়াস মুডে বলে।
“শুনুন মিস্টার রাফি তাজওয়ার আমি আপনাকে ভালোবাসি না আর কোনো দিন বাসবোও না।”
কথাটা বলেই নন্দিতা দ্রুত পায়ে হেঁটে চইে যায়। রাফি নন্দিতার যাওয়ার পানে তাকিয়ে উচ্চ স্বরে বলে।
“বাসবে না কি ওলরেডি ভালোবেসে ফেলেছ। তোমার চোখে মুখে আমার জন্য ভালোবাসা ফুটে উঠেছে। কিন্তু সেটা মুখে প্রকাশ করতে চাইছো না কিন্ত একদিন ঠিকই প্রকাশ করবে আর সেটা খুব জলদি।”
সিয়াম রাফির কাছে এসে বলে, “ভাই তুই চুপ কর। আশেপাশে লোক আছে সেটা অন্তত দেখ। আর যদি কিছু হয় সেটা নন্দিতার উপরে গিয়ে পড়বে তোর উপরে না।”
রাফি কিছু না বলে বাইকের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে বলে, “চল।”
রাফি হাফ ছেড়ে বলে, “আমি আর বাইক চালাতে পারবো না রাফি।”
“চালাতে হবে না। তুই বরং আমার হবু বউয়ের বাড়িতে গিয়ে উঠে পড়।”
“ফাজলামি করিস না রাফি। মেজাজ খুব গরম আছে আমার। আর কি লাভ হলো এখানে এসে তোর? লাভের লাভ তো কিছুই হলো না মাঝখান দিয়ে শুধু বাইকের তেল খরচ হলো।”
রাফি বাইকে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে আনমনে বলে, “লাভ হলো নাকি লোকসান হলো সেটা নিয়ে তোর না ভাবলেও চলবে। এখন তাড়াতাড়ি বাইক স্টার্ট দে নয়টা কিংবা দশটার ভেতরে পৌঁছে যেতে পারবো ঢাকাতে।”
সিয়াম বেচারা পড়েছে এক মাইনকার চিপায়। মনে মনে দোয়া করে যাচ্ছে এমন বন্ধু যেন কারো কপালে না জুটে। এমন একটা বন্ধু জীবনে থাকলে জীবন একে বারে ত্যানাত্যানা করে তারপরেই ছাড়বে। সে বলেই এসব অ’ত্যা’চার সহ্য করছে অন্য কেউ হলে উষ্টা মেরে চলে যেতো।
#চলবে________