psycho_is_back? part_14

0
2566

psycho_is_back?
part_14
#apis_indica❤
কঁপালের উপর গভীর ভাবে কেউ তার ঠোঁট ধারা স্পর্শ করছে।।যা বুঝতে পারছি চোখ বুঝেই।।ধীরে ধীরে চোখ মেলে দেখি ইউসুফ আমার কঁপালে কিপ করছে।। তাও খুব গভীর ভাবে।।আমি একটু নড়ে উঠলাম।।

—-এখন কেমন লাগছে বাবুই পাখি?? আমাকে চোখ খুলতে দেখে প্রশ্ন করলো সে।।
—-আমি শুধু মাথা নাড়ালাম।। আর এদিক ওদিক পর্যবেক্ষণ করছি।।তখন আমি ফ্লোরে বসে কাঁদতে কাঁদতে কখন ঘুমিয়ে গেছিলাম।।
আমাকে এদিক ওদিক তাকাতে দেখে ইউসুফ বলে উঠে,,,
—-আমি তোমাকে এখানে এনেছি।।
আমি তখনো কিছু বলিনি….তখনি সে বলতে লাগে,,,
—–আমার উপর খুব রাগ করেছো তাই না।।বাবুই পাখি??
আমি এবার মুখ খুলাম আর বললাম,,,
—-আপনি কে যে আপনার উপর রাগ করবো??
ইউসুফ আমার গালে হাত দিয়ে বলতে লাগে,,
—–আমার বাবুই পাখি অনেক রাগ করেছে আমার উপর তাই না।।আচ্ছা বাবা এই যে কানে ধরে সরি!!!
উনার এমন কাজে খুব হাসি পাচ্ছে।।অনেক কষ্টে হাসি চেঁপে বসে আছি।।মুখে গম্ভীরতা রেখে।।
তখনি তিনি অসহায় চাহনীতে বলতে লাগে,,,
—-মাফ করবে না বাবুই পাখি??
আসি সাথে সাথে রাগ দেখিয়ে বললাম,,,
—-না আমি আপনাদের কাউকে ক্ষমা করবো না।।আপনি, রিয়ান সবাই খারাপ!!আমি আজ কিছুই করিনি তারপরও মার খেলাম।।
এখন সব হাসি উবে গেছে।।ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলাম।।তখনি ইউসুফ আমার দু গালে হাত রেখে বলে উঠে,,
—–বাবুই জানি তুই কিছু করিসনি।।কিন্তু বিশ্বাস কর তোকে রিয়ানের সাথে ওই অবস্থায় দেখে আমার মাথা ঠিক ছিল না।।
বলে আমার কঁপালের সাথে তার কঁপালে ঠেকিয়ে বলতে লাগে এবারের মতো মাফ করে দে বাবুই পাখি।।
আমি চুপ থাকলাম,,তারপর তার থেকে সরে এসে বললাম নানু মার কথা।।
—-দাদু ঘুমাচ্ছে।।পেশার লো হয়ে গেছিল।।
আমি এবার মুখ ধরে কাঁদতে লাগলাম,,
—-নানুমা আমাকে কখনো মাফ করবে না।।বিশ্বাস করুন আমি জানতাম না রিয়ান এমন কিছু করবে।।
ইউসুফ তাচ্ছিল্যের সুরে বলল,,,
—-যার সাথে প্রেম করতি তার সম্পর্কে জানিস না??
—-ভাইয়া আমি তার সাথে প্রেম করতাম,, ভালতো বাসতাম না!! ভালবাসলে হয়তো তাকে ভাল ভাবে জানার আগ্রহ বাড়তো।।
ইউসুফ যেন মনে মনে খুশি হলো।।আর বলতে লাগলো,,
—-আচ্ছা বাবুই ঘুরতে যাবি??
—-এতো রাতে??
—-রাত কই? ১২ টা বাজে।।টল রেডি হয়ে নে।।
—-আমি যাবো না।।অভীমানের সুরে বললাম।।
—-কেন বাবুই??
—–দেখ আমার চেহারাটা একবার কি করেছো তোমরা।।দাগ পড়ে আছে থাপ্পরের।।
ইউসুফের খারাপ লাগলো,,সে বলল,,
—-সরি বাবুই।।আচ্ছা তুই রেডি হয়ে তোর ফেস আমি ঠিক করে দিচ্ছি।।
—-তোমার দিতে হবে না, আমি করে নিচ্ছি, পরে আমাকে ভুত বানিয়ে দিবে।।
ইউসুফ হাসলো,,কিছুটা কুহুকে সে স্বাভাবিক করতে পরেছে।।তারপর রেডি হতে বলে বের হয়ে যায়।।
ইউসুফ যেতেই আমি বিছানে থেকে নেমে দেখে নিলাম নিচেকে আয়নায়।।ইসস!! ১২ টা বেজে গেছে আমার চেহারার।।তারপর রেডিতে চলে গেলাম।।

ইউসুফ বাইক নিয়ে দাড়ায়ে আছে।।
আমি বাইক দেখে খুশি হলাম।।আর সাথে সাথে চরে বসলাম তাতে।।কিন্তু সাইকো কে ধরে বসিনি।।আমার খুব শখ ছিল ঢাকা শহর রাতের বেলায় বাইক দিয়ে ঘুড়বো।।

—–আমাকে ধরে বসো বাবুই নয়তো পরে যাবা।।
আমার আকাশকুসুম চিন্তার মাঝে ইউসুফে কথা শুনে তার দিক তাকালাম।।সে আবার একি কথা বলল।।বাট আমার অস্বস্তি লাগছে।। তাও আমার দুহাত তার দু কাঁধে রাখলাম।। তিনি হাসলেন।।তার হাসির কারণ খুঁজে পেলাম না।। তিনি চালাতে লাগলেন,,তাও খুব স্পিডে।। আমি ভয়ে তার পেটে জড়িয়ে ধরি।।সাথে সাথে স্পিড কমে গেল।।হওতো ইউসুফ তাই চাইছিল।।
আমি আশাপাশে দেখতে লাগলাম,,
কি সুন্দর রাতের শহর।।
চারিদিকটা নানান রকমের আলোয় আলোকিত।।
আমরা বাইকে ১ ঘন্টা ঘুরলাম।।এর মাঝে ইউসুফের সাথে নানান কথা হলো।।সেই জিগাসা করেছে আমি শুধু হু হা উত্তর করছি।।ড্রাইভ করতে করতে হঠাৎ এক জায়গায় থামায় সে।।আমি তার দিকে তাকাতেই,,সে আমাকে সামনে তাকাতে ইশারা করলো।।সামনে তাকিয়ে আমি লাফাতে লাগলাম।।সামনে আইসক্রিম পার্লার।। তারপর ইউসুফ বাইক পার্ক করে আমাকে নিয়ে আইসক্রিম পার্লারে ঢুকলো।।আর আমাকে অনেক গুলো কোন আইসক্রিম খেলাম।। এটা আমার ফেবারেট।।

তারপর বের হয়ে আসছিলাম।।তখনি সামনের গর্তে পা পড়ে পা মচকে গেল আর আমি ব্যাথায় চিৎকার করে উঠলাম।। ইউসুফ একটু সামনে চলে গিয়েছিল,, আমার চিৎকার আবার ফিরে এসে, জিজ্ঞেস করল,,
—-বাবুই পাখি কি হয়েছে তোর??
আমি পা ধরে মাটিতে বসে আছি।।আর বললাম,,
—-পায় ব্যাথা পাইছি।।মিনমিন করে বললাম।।
ইউসুফ মুচকি হেসে আমাকে উঠায়।।আমি বলতে লাগি,,
—-আমি হাটতে পারবো না।।
—-তোর হাটতে হবে না।।আমি পিছনে ঘুড়ছি তুই আমার কাঁধে উঠ।।
—-না না আমি পরে যাবো।।
—-এখন কিন্তু আবার থাপ্পড় দিবো,, যা বলছি তা করো??
—-ওকে!!
আমি ইউসুফের কাঁধে উঠলাম।।ইউসুফ আমাকে সুন্দর করে আকড়ে ধরে আমাকে নিয়ে হাটতে লাগলো।।আমি পিছন থেকে তার গলায় জড়িয়ে ধরে আছি।।ইউসুফ এখন ভাবে হাটছে মনে হচ্ছে আমি তুলার বস্তা।।আমি তাকে জিগাসা করলাম,,
—–ভাইয়া,,আপনার কষ্ট হচ্ছে না??
ইউসুফ মুচকি হেসে বলে,,
—-নাহ্।।আমি তোর থেকে ভারী ভারী ডাম্বেল দিয়ে জিম করি।।আর তুইতো শুঁটকিমাছ।।
—–আমি মোটোও শুঁটকিমাছ নই।।
ইউসুফ হাসলো,,আর বললো,,
—-আচ্ছা বাবা তুই আমার গলুমলু।।
—-আপনি খুব পঁচা,,।।আপনার সাথে সাথে আর কথাই বলবো না।।
—-আচ্ছা বাবা সরি।।বলেই তিনি তার বাইকে আমাকে বসিয়ে দিলেন।।আর জুতা খুলে যে পায় ব্যথা পাইছি তিনি দখতে লাগলেন।।
—-কি করছেন ভাইয়া,,আমি আপনার ছোট প্লিজ পা ছাড়ুম।।
তিনি এবার বাজখাঁই ধমক দিয়ে বললেন,,
—–একদম চুপ!! বেশী কথা বলবি তো তোর ওই পাও মুচকিয়ে দেব।।
আমি সাথে সাথে চুপ।।
তখনি তিনি আবার বললেন,,
—-বাবুই দেখ পিছনে!!
—-কি পিছনে?? বলে পিছনে ফিরলাম।।আহহহহহহহ!!আমি পিছনে ফিরতেই ভাইয়া আমার পায় উল্টো মুচড় দেয়।।সাথে সাথে ব্যাথা চিৎকার করে উঠি। আর ইউসুফ ভাইর হাতে খামচি দিয়ে ধরি।।একটু পর ব্যাথা উধাও।।আমি নেমে লাফাতে লাগলাম।।বাহ্ ব্যথা চলে গেছে।।

আজ বাইকে অনেক ঘুড়লাম।।তারপর ইউসুফ আমাকে বাসায় নিয়ে আসে।।বাসায় আসতে আসতে তিনটা বেজে গেছে।।আমি রুমে এসেই গা এলিয়ে দিলাম।।আর ঘুমের রাজ্য ঢুব দিলাম।।

ইউসুফ তার রুমে এসে ফ্রেস হয়ে সেন্টার টেবিল থেকে পানি নিয়েখেতে থাকে।।তখনি তার ফোনে কল আসে।।
—-হ্যালো।।
—-স্যার রিয়ানকে দেশের বাহিরে পাঠাতে হবে।।ওর অবস্থা ভাল না।।মার খাওয়ার সময় মাথায় খুব ব্যাথা পাইছে।।
—-যা করার করো।।ও যেন আর আমার সামনে না আসে।।বলে কল কেঁটে দেয়।।
তারপর জালানার সামনে গিয়ে বলতে লাগে,,
—–বাবুই আমার আর তোমার মাঝে যে আসবে তাকে এভাবেই ঝড়ে যাবে।।বলে রহস্যময় বাঁকা হাসলো।।

তখন কুহুকে বাসায় নিয়ে আসার পর।।রিয়ানকে তার লোকেরা ধরে নিয়ে যায়।।পরে ইউসুফ গিয়ে অনেক মারে।।যে হাত দিয়ে কুহুর গালে থাপ্পড় মেরেছিল।।সে হাতে ইচ্ছা মতো মারে।।আর রিয়ান আর্তনাদ করতে করতে এক সময় জ্ঞান হারায়।। তখন তার লোকদের বলে হাসপালে ভর্তি করিয়ে আসে সে।।

চলবে,,
(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।।নেক্সট পার্ট পরশুদিন দিবো।।)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে