অভিনয় হলেও ভালোবাসি পার্ট ০৩
#Jannatul_ferdous
পরেরদিন…….
রোদের কেবিনে ডুকার জন্য নোক দিতে গিয়েই যা দেখলো তার জন্য রাগিনী কখনোই প্রস্তুত ছিলো না।এক পা, দুই পা করে পিছনে সরতে থাকে সে। পিছনে নামতে নামতে তুহিনের সাথে ধাক্কা খেলো।
তুহিন-আপু তোকে তো স্যার খুজছিলো।এত দেরি করলি তুই।
রাগিনী চোখ মুছে সেখান থেকে বের হয়ে গেলো।তুহিন কিছু বুজতে না পেরে স্যারের কেবিনে গেলো।
তুহিন-আসবো স্যার?
রোদ-হুম আসো।
তুহিন-স্যার আপুকে দেখলাম চোখ মুছে অফিস থেকে বের হয়ে যাচ্ছে।
রোদ-কখন?
তুহিন-এই তো আরেকটু আগে।
রোদ-আচ্ছা আমি আসতেছি।
পার্কের একটা বেঞ্জের এক কোনে বসে আছে রাগিনী।গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে তার মাঝেই রাগিনীর চোখ বেয়েও অশ্রু ধারা বইছে।
রোদ জানতো রাগিনীর মন খারাপ হলেই রাগিনী এখানে আসে।তাই রোদও এখানেই এসেছে।
রোদ-রাগিনী।
রাগিনী-……..
রোদ-কাঁদছো কেনো?
রাগিনী-চলে যান আপনি এখান থেকে।
রোদ-কী হয়েছে বলো।
রাগিনী-যান ওই মেয়েটার কাছে যান এখানে কেনো এসেছেন।
রোদ-মানে?
রাগিনী-কী ভাবছেন আমি কিছু দেখি নাই।ওই মেয়েটার সাথে…. যখন দেখলেন আমাকে পেলেন না তখন অন্য মেয়ে ছি!
রোদ-তুমি যা ভাবছো তা না।আমার কথাটা শুনো.
রাগিনী-আর কী শুনবো।
রোদ-আরে ওইটা রিত্ত ছিলো আমার বোন।আমার চোখে কী জানি পরছিলো তা দেখছিলো।আর তুমি পিছন থেকে এসে এরকম ভেবে নিয়েছো।আর রিত্ত এসেছিলো টাকা নিতে।আজকে রিত্ত,বাবা,মা ঘুরতে যাচ্ছে।
রাগিনী-সত্যি?কিন্তু আপনি গেলেন না কেন?
রোদ-এমনিই।তা ম্যাম এরকম করলেন কেনো।ভালো তো বাসেন না আর অন্য মেয়েকে দেখে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন কেন?
রাগিনী-দূর আমি বাড়ি যাবো।
রোদ-আমি জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো।
হঠাৎ করেই বৃষ্টি শুরু হলো।বৃষ্টি দেখেই রাগিনীর খুশি দেখে কে।রোদ অবাক হয়ে দেখছে বৃষ্টিবিলাসীকে।
কিছুক্ষন পর….
রোদ-রাগিনী অনেক ভিজেছো চলো এবার।আরেকটু ভিজলে ঠান্ডা লেগে জ্বর আসবে।
রাগিনী-না আমি যাবো না।
রোদ রাগিনীকে কোলে তুলে নিয়ে হাটা শুরু করলো।
রাগিনী-নামাও আমি যাবো না।
রোদ-না নামাবো না।
রাগিনী-আমি ভিজবো।
হঠাৎ জোরে বজ্রপাত হতেই রাগিনী রোদকে জড়িয়ে ধরে রোদের বুকে মুখ লুকালো।রোদ হেসে উঠলো।
গাড়িতে নিয়ে বসালো রাগিনীকে।দুইজনেই প্রায় ভিজে গেছে।
রোদ-ঠান্ডা লাগছে?
রাগিনী-হুম।
রোদ-কেনো যে ভিজতে গেলে।
রাগিনী-আমার ইচ্ছা হইছে।
রোদ-কেঁদেছো কেনো তখন?
রাগিনী-বলবো না।
রোদ-ভালোবাসো?
রাগিনী-বলবো না।
হঠাৎ করেই আবার বজ্রপাত হতেই রাগিনী রোদের বুকে গিয়ে মুখ লুকালো।রোদও জড়িয়ে বুকের কাছে আগলে রাখলো রাগিনীকে।
রোদ-সারা জীবন থাকবে তো।কথা দিচ্ছি এই ভাবেই আগলে রাখবো।কি হলো কথা বলো।
রাগিনী-আমার ভয় করে আমি বাড়ি যাবো।
রোদ-আচ্ছা তুমি সরে গিয়ে বসলে তো ড্রাইভ করতে পারবো।
রাগিনী-না আমার ভয় লাগে।
রোদ-তাহলে এভাবেই থাকো।
রাগিনী আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখলো রোদকে।হঠাৎ করেই রোদ রাগিনীর ঠোঁটের সাথে ঠোঁট মিশিয়ে দিলো।কিছুক্ষন পর রাগিনীকে ছাড়তেই দেখলো রাগিনী অজ্ঞান হয়ে গেছে।
রোদ-রাগিনী কথা বলো।প্লিজ উঠো।এভাবে ওকে ওর বাড়িতে দিয়ে আসলে নিশাত আর আন্টি চিন্তা করবে।তাহলে কী করবো।আমার বাড়িতেও তো কেউ নেই।মোবাইল বের করে রাগিনীর আম্মুকে কল দিলো রোদ।
রোদ-হ্যালো আন্টি কই তুমি?
রাগিনীর আম্মু-আমি নিশাতকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলাম।এখন বৃষ্টির জন্য আটকে গেছি।
রোদ মনে মনে ভাবলো–এখন রাগিনীর কথা বললে উল্টো চিন্তা করবে।
রাগিনীর আম্মু-কী ব্যাপার কি বলবে রোদ?
রোদ-রাগিনী আমার সাথে আছে আন্টি।আজকে বাড়ি ফিরবে না কোনো সমস্যা নেই তো?
রাগিনীর আম্মু-তোমার সাথে থাকলে আর কী সমস্যা।
রোদ-আচ্ছা বৃষ্টি কমলেই বাড়ি চলে যেয়ো।আর নিশাতের খেয়াল রেখো।
ফোন রেখে দিলো রোদ।তারপর রাগিনীকে নিজের বাড়িতেই নিয়ে আসলো।বেডে শুইয়ে দিতেই রাগিনী রোদের হাত চেপে ধরলো।
রাগিনী-আমাকে ছেড়ে যেয়ো না,অনেক ভালোবাসি গুমড়ামুখো।
রোদ-ঘুমের ঘোরেই বলো,মুখে তো স্বীকার যাবে না।দেখি ড্রেস চেঞ্জ করাতে হবে।কেউ তো নেই বাড়িতে, এটাও আমি করবো কীভাবে?
রিত্তের ড্রেস এনে উড়না দিয়ে চোখ বেঁধে নিলো রোদ।কম্বল দিয়ে রাগিনীর শরীর ডেকে দিলো।তার মাঝেই কাপছে রাগিনী।তারপর ড্রেস চেঞ্জ করালো রোদ।
রোদ-এই মেয়েটা আমাকে জ্বালানো ছাড়া কিছুই করতে পারে না।দেখি ডাক্তার আঙ্কেলকে পাই কিনা।
নিজের ড্রেস চেঞ্জ করে ফোন দিলো ডাক্তারকে।ফোন দিতেই রোদের কথায় ডাক্তার আসলো।
রোদ-আঙ্কেল অনেক ধন্যবাদ এই বৃষ্টির মধ্যেও আসলে।
ডাক্তার-আচ্ছা কই সে?
রোদ-আমার রুমে।
ডাক্তার-চলো।
রোদ-আচ্ছা সিরিয়াস কিছু না তো আঙ্কেল।
ডাক্তার-জ্বর টা বাড়তেছে।তবে রাতে জ্ঞান আসলে ঔষধ দিয়ো।
রোদ-হুম।
ডাক্তার-আর ওর খেয়াল রেখো।
রোদ-ঠিক আছে আঙ্কেল।
ডাক্তার-আসি তাহলে।
রোদ-ওকে আঙ্কেল।
ডাক্তার চলে যেতেই রোদ এসে রাগিনীর পাশে বসলো।
রোদ-পাগলী একটা।
কপালে ভালোবাসার পরশ একে দিয়ে রাগিনীর হাত ধরে পাশেই বসলো রোদ।
চলবে…..✌
বি.দ্র.ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন??
Nice