অভিনয় হলেও ভালোবাসি পার্ট-০৮
#jannatul_ferdous
চিৎকার দিতেই রোদ জেগে উঠে রাগিনীকে জড়িয়ে ধরলো।রাগিনী কেঁদে দিলো।কান্না করতে করতে রোদকে জড়িয়ে ধরলো।
রোদ-কি হলো রাগিনী.
রাগিনী-আমি তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাবো না।ওরা আমাকে নিয়ে যাবে।
রোদ-কেউ নিয়ে যাবে না।আমি তো আছি।কোনো বাজে স্বপ্ন দেখেছো?
রাগিনী মাথা নাড়লো।রোদ জড়িয়ে ধরলো রাগিনীকে।রোদের বুকেই ঘুমের দেশে তলিয়ে গেলো রাগিনী।কপালে একটা চুমু দিয়ে রোদও ঘুমিয়ে পরলো।
সকালে রাগিনীর ঘুম ভাঙ্গতেই রোদের বুকে দেখলো নিজেকে।মুচকি হেসে উঠে যেতে নিলেই রোদ হাত ধরে টান দেই।
রোদ-বউ কই যাও?
রাগিনী-ফ্রেশ হতে।
রোদ-আরেকটু থাকো প্লিজ।
রাগিনী-কেনো?
রোদ-মিষ্টি বউ টাকে আরেকটু দেখি।
রাগিনী-দিন রাত সব সময়ই তো দেখেন।
রোদ-আমি ভাবতেও পারিনি তুমি আমাকে এত তাড়াতাড়ি মেনে নিবে।যাই হোক বউ টা আমার খুব মিষ্টি।
রাগিনী-এবার যেতে দেন।
রোদ-দিবো তো।আগে আজ থেকে আমাকে তুমি করে বলা অভ্যাস করবা।
রাগিনী-ওকে।
রোদ-হুম,যাও।
প্রায় অনেকটাই সুস্থ হয়ে গেলো রাগিনী।নাস্তা বানিয়ে পরীকে ডাকলো রাগিনী।
পরী-বলো আম্মু।
রাগিনী-খাওয়া দাওয়া কিছু লাগবে না?
পরী-আম্মু তুমি খাইয়ে দাও।
রাগিনী-আচ্ছা দিবো।
পরী-গল্প বলতে হবে।
রাগিনী-আচ্ছা বলবো।
রাগিনী পরীকে গল্প বলছে আর খাইয়ে দিচ্ছে।পিছনে রোদ এসে দাড়ালো।
পরী-বাবাই লুকিয়ে লুকিয়ে গল্প শুনতাছে।
রাগিনী-শুনো।
রোদ-কী?
রাগিনী-নিশুপাখি কে দেখতে যাবো আজকে।
রোদ-আচ্ছা যাবো।
পরী-নিশুপাখি কে?
রোদ-তোমার খালামনি।
পরী-আমার খালামনিও আছে?
রোদ-হুম নানুও আছে।
পরী-আমিও যাবো।
রাগিনী-আচ্ছা আগে খেয়ে নাও।
পরী-হুম।
বিকেলেই নিশাতকে দেখতে গেলো রাগিনী,রোদ আর পরী।নিশাত প্রায় সুস্থ হয়ে গেছে।আর কয়েকটা দিন হাসপাতালে থাকবে।
নিশাত-এই পিচ্চিটা কে আপু?
পরী-আনাকে চিনো না আমি আম্মুর মিষ্টি পরী।
নিশাত-পাকা বুড়ি একটা।
পরী-বাবাই সব সময় বলে আমি নাকি পাকা বুড়ি।
রোদ-এই যে বুড়িটা বাড়িতে যেতে হবে তো।
পরী-না আমি খালামনির কাছে থাকবো।
রাগিনী-খালামনি তো অসুস্থ।
পরী-আমি একদম জ্বালাবো না।
রাগিনীর আম্মু-থাকুক বুড়িটা এখানে।
রাগিনী-আমিও থাকবো।
রোদ-থাকো।
রাগিনী-আচ্ছা আম্মু তুমি বাড়িতে চলে যাও আমি আজকে থাকবো।
নিশাত-আমি কিন্তু রেগে আছি।
রোদ-কেনো?
নিশাত-আমাকে না জানিয়ে বিয়ে করে পেললো আপু।
রোদ-তোমার আপু চেয়েছিলো তুমি সুস্থ হলেই করবে কিন্তু…..
রাগিনী-তোর জিজুর আবার দেরি সহ্য হয় না।
রোদ-এখন শালিকার কী চাই শুনি।
নিশাত-কিছু চাই না আমার আপুটা ভালো থাকলেই হবে।
রোদ-হুম বুজলাম।
নুহান-জিজু আমার কিন্তু চাই।
রোদ-এটা আবার কে?
রাগিনী-নুহান,নিশাতের ফ্রেন্ড।
রোদ-আমার তাহলে অনেক শালিকা।
নুহান-হুম।
রোদ-এত শালিকা থাকলে বউ এর কী দরকার। কী বলো শালিকারা?
নুহান-না আপুর জামাইর ভাগ নিতে পারবো না।শুধু জিজু হয়ে আব্দার পূরন করলেই হবে।
রোদ-আরে ভাগ নিয়েই দেখো,কত কী আব্দার পূরণ করবো।
নুহান-আপু তোমার জামাই এইসব কী বলে?
রোদ-ভুল কিছু বলছি শালিকা?
নুহান-হুম ভুল।
রোদ-আচ্ছা শালিকারা পরে আবার দেখা হবে।আমার যেতে হবে।
নিশাত-আচ্ছা জিজু যাও।
রোদ-পরী দুষ্টমি করবা না একদম।লক্ষী মেয়ে হয়ে থাকবা।
পরী-হুম থাকবো।
;
রোদ চলে গেলো রাগিনীর আম্মুকে নিয়ে।বাড়িতে আসতেই রোদের ফোনে একটা মেসেজ আসলো,মেসেজ দেখে তাড়াতাড়ি বের হয়ে যায় সে।পার্কে সামনা সামনি দাঁড়িয়ে আছে রোদ আর প্রিয়ু।প্রায় ৬বছরের বন্ধুত্ব প্রিয়ুর সাথে রোদের।
প্রিয়ু-কেমন আছিস?
রোদ-ভালো তুই?
প্রিয়ু-ভালো থাকাটা তো কেড়ে নিয়েছিস।
রোদ-কেনো ডেকেছিস তা বল।
প্রিয়ু-আমার মাঝে কী এমন কম ছিলো যে তুই রাগিনীকে বিয়ে করলি।
রোদ-ওকে আমি ভালোবাসি।
প্রিয়ু-আমি তোকে ভালোবাসি।
রোদ-এই সব ভুলে যা।
প্রিয়ু-প্লিজ আমার হয়ে যা।
রোদ-তুই ভুলে গেছিস আমি রাগিনীকে বিয়ে করছি।
হঠাৎ করেই রোদকে জড়িয়ে ধরলো প্রিয়ু।প্রিয়ুকে ছাড়িয়ে থাপ্পড় মেরে চলে গেলো রোদ।নিজের উপর খুব রাগ হচ্ছিলো রোদের।কেনো যে প্রিয়ুর জন্য এখানে আসতে গেলো রোদ।
রোদ বুজতেও পারলো না কি ঝড় আসতে চলছে রোদ-রাগিনীর জীবনে।
চলবে……..