অভিনয় হলেও ভালোবাসি পার্ট ০৫
#jannatul_ferdous
হাসপাতালে যেতেই রাগিনী নিশাতের কাছে গেলো।বেডে শুয়ে আছে নিশাত।জীবন প্রদীপটা যে কোনো সময়-ই হয়তো নিভে যাবে।
রোদ-ডাক্তার ওর চিকিৎসা শুরু করেন।
ডাক্তার-ওর জন্য নতুন কিডনী দরকার।কিডনী পুরো ড্যামেজ হয়ে গেছে।আর অপারেশনের জন্যও টাকা দরকার,কিন্তু ওরা তা দিতেই পারবে না।
রোদ-ওরা দিতে পারবে না আমি তো পারবো।আপনার কাজ আপনি করেন।ওর জন্য যা টাকা লাগে সব আমি দিবো।
ডাক্তার-ঠিক আছে।
রোদের আব্বু-দাঁড়াও ডাক্তার।
ডাক্তার-জ্বি বলেন।
রোদের আব্বু-রাগিনী তোমার সাথে আমার কিছু কথা ছিলো।
রাগিনী-বলেন স্যার।
রোদের আব্বু-দেখো আমরা তোমাকে সব রকম ভাবে সাহায্য করবো।নিশাতের সব খরচ,তোমার পরিবারের খরচ সব নিবো।কিন্তু আমার একটা শর্ত আছে।
রাগিনী-বলেন স্যার।আমি সব শর্তে রাজি আছি।
রোদের আব্বু-আগামী ২দিনের মধ্যেই রোদকে বিয়ে করতে হবে।
রোদ-কী বলছো এসব আব্বু।
রোদের আব্বু-তোমরা কাল রাতে একসাথে ছিলে।
রোদ-কালকে রাগিনী অসুস্থ ছিলো তাই…..
রোদের আব্বু-একবারও ভেবেছো সমাজ কী বলবে?ভেবেছো রাগিনী সমাজে মুখ দেখাবে কীভাবে।তাই আমি ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিয়েছি বিয়েটা হবেই।
রাগিনী-স্যার প্লিজ…..
রোদের আব্বু-কোনো কথা না আমি শুধু আমার শর্তের কথা বলছি।চলো রোদ।
রাগিনী-আমি রাজি স্যার।
রোদের আব্বু-ডাক্তার চিকিৎসা শুরু করেন।আর কালকেই বিয়ে তোমাদের।রোদ আর রাগিনী তোমাদের যা যা দরকার শপিং করো।বাইরে রিত্ত বসে আছে।
রাগিনী-আমার নিশুপাখিটা আগে সুস্থ হোক।
রোদের আব্বু-নিশাতের কাছে আমি আর তোমার আম্মু আছি তো।
রাগিনীর আম্মু-হুম যা মা,আমি আছি তো।
রোদ-চলো।
রাগিনী-ঠিক আছে।
শপিং-এ গেলেও রাগিনীর মন হাসপাতালেই আছে।রোদ রিত্ত শপিং করছে আর রাগিনী চুপচাপ দেখছিলো।
রোদ-রাগিনী দেখো তো এটা কেমন লাগবে আমাকে?
রাগিনী-হুমম ভালো।
রোদ-রাগিনী তোমার সবচেয়ে অপছন্দের কালারটা এখন ভালো?
রাগিনী-সরি আমি দেখতাছি।
রোদ-হুমম।
শপিং শেষ করে বের হতেই বাইরে একটা ৫ বছরের বাচ্চা মেয়ে কান্না করছিলো।সাথে বাচ্চাটার মাও ছিলো।রোদের এটা দেখে খুব খারাপ লাগলো।এগিয়ে গিয়ে পাশে বসলো রোদ।
বাচ্চাটার মা-স্যার অনেক ক্ষিধা লাগছে।কিছু খেতে দেন।আমার মেয়েটা না খেয়ে আছে।
রোদ-আচ্ছা চল পেট ভরে খাওয়াবো দুইজনকে।
রাগিনী- দেখো কী কিউট পিচ্চিটা।ওর নাম কী?
মেয়েটার মা-ওর বাবা আদর করে নাম দিয়েছিলো পরী।কিন্তু ওর বাবা এক বছর আগে মরে গেছে।
হঠাৎ করেই পরীর আম্মু মাথা ঘুরে পড়ে গেলো।
রাগিনী-কি হলো আপনার?
রোদ-চলো হাসপাতালে নিয়ে যায়।রিত্ত তুই এই সব ড্রেস নিয়ে বাড়ি যা।
রিত্ত চলে যেতেই পরীর আম্মুকে নিয়ে হাসপাতালে গেলো রোদ আর রাগিনী।কিন্তু ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করে। ডাক্তার বললো উনার নাকি ক্যান্সার ছিলো তাই মারা গেছে।
ছোট্ট পরীটা কান্না করছিলো।মায়ের আদরে রাগিনী গিয়ে কোলে তুলে নিলো পরীকে।ওর মাকে কবরে শুইয়ে নিয়ে আসলো পরীকে।রাগিনীকেই মা ডাকা শুরু করে দিলো মিষ্টি মেয়েরা।একদিনেই সবার সাথে মিশে গেলো,সারাটা বাড়ি মাতিয়ে রাখলো।ছোট ছোট পা নহয়প দৌড়া দৌড়ি করে,হাসে,খেলে পিচ্চিটা।
পরের দিন সকালে—-
এইদিকে নিশাতের অপারেশন হচ্ছে ওইদিকে লাল শাড়িতে সাজছিলো রাগিনী।পরী এসেই হেসে উঠলো।
রাগিনী-পরীটা দেখি হাসছে।
পরী-আম্মু তুমি সাজছো কেন?
রাগিনী-তোমার বাবাই-এর জন্য।
পরী-কেনো?
রাগিনী-তোমার বাবাই-কে বিয়ে করবো।
পরী-তাইলে বাবাই কে দেখে আসি?
রাগিনী-আর আম্মুর পাপ্পিটা কই গেলো।
পাপ্পি দিয়ে দৌড়ে রোদের কাছে গেলো।
রোদ-আসে আমার আম্মুটা।
পরী-বাবাই মানুষ বিয়ে করে কেনো?
রোদ-ভালোবাসার মানুষটাকে কাছে পেতে।
পরী-তাহলে আম্মুকে বিয়ে করো কেনো?
রোদ-তোমার আম্মুকে ভালোবাসি তাই।
পরী-হিহি আম্মুকে বলে দিবো।
রোদ-কী বলবা শুনি?
পরী-আগে পাপ্পি দাও।
রোদ কোলে তুলে নিলো পরীকে।তারপর পাপ্পি দিতেই পরীও পাপ্পি দিয়ে জড়িয়ে ধরলো রোদকে।
চলবে………