অভিনয় হলেও ভালোবাসি পার্ট ০২
#jannatul_ferdous
রোদের কথা শুনে রাগিনী পুরো থ হয়ে গেলো।অভিনয় করতে এসে কী বিপদেই না ফেসে গেলো সে।
রোদ-তুমি আমার সাথে অভিনয় করতে চাইছিলে কেন?
রাগিনী-স্যার বিশ্বাস করেন আমার কোনো দোষ নেই।আমাকে ছেড়ে দেন আমি বিয়ে করবো না।আমি যা করেছি সব আপনার আব্বুর কথায় করেছি।
রোদ-তাহলে সেদিনের কথা টার জন্য।
রাগিনী-স্যার আমি তো কিছু জানি না।
রোদ-আব্বু আমি কাউকে ভালোবাসি এটা খুজে নেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছিলো।আর এখন কাউকে না পেয়ে তোমাকে অভিনয় করতে বলেছে।আর অভিনয়ে তুমি অনেক ভালো করেছো।আম্মুর চোখকে ফাকি দিয়ে পেললে।তবে অভিনয় করেও তো ভালোবাসি বলছো।
রাগিনী-আমি ভালোবাসি না।
রোদ-অভিনয় হলেও ভালোবাসো।
রাগিনী-না,আমি অভিনয়েও ভালোবাসি না।
রোদ-কিন্তু আমি তোমাকে বাস্তবেও ভালোবাসতে চাই।
রাগিনী-আমি বাড়ি যাবো।
রোদ-তুমি জানো আমি অফিস জয়েন করছি ৬মাস হলো।প্রথম যেদিন তোমাকে দেখি তোমার চোখের মায়ায় জড়িয়ে গেছিলাম।তারপর থেকে অন্য কোনো ছেলের সাথে তোমাকে দেখলে আমার মেজাজ খারাপ হয়ে যেতো।তাই কিছুদিন আগেও তোমার সাথে খারাপ বিহেভ করছি আর থাপ্পড় মেরেছিলাম।
এসবের জন্য আমি সরি।তুমি না হয় আমাকে অভিনয়ে একটু ভালোবাসবে,তবে আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
রাগিনী-স্যার আপনি এগুলা বলছেন?
রোদ-আমি আম্মুকে সব বলবো।আমি জানি আম্মুর তোমাকে পছন্দ হইছে।আমাদের বাড়িতে আসাটা যে তোমার অভিনয় ছিলো তা বলে দিবো।আর বিয়ে আজকেই করবো।
রাগিনী-আমি করবো না।
রোদ-ওই আরেকটু আগে কী করছি ভুলে গেলে?অনেক ভালো ভাবে বুজিয়েছি তাই পাত্তা দিচ্ছো না।চলো আমি তোমার আম্মুর সাথেই কথা বলবো।আর এই সব কিছু বলবো। তাতেও যদি না হয় তোমাকে তুলে নিয়ে এসে বিয়ে করবো।
রাগিনী-আমি যাবো না।
রোদ-চুপ চাপ চলো আমার সাথে।বিয়েটা আমাকেই করবে তুমি।
রাগিনী-স্যার আমি আপনার পিএ।এসব কী বলছেন।
রোদ-তুমি জানো আমার রাগ সম্পর্কে।আমি কী বলছি আমাকে ভালোবাসতে।তুমি যে অভিনয়টা করছো সেটাই কইরো।তারপরেও প্লিজ ছেড়ে যেয়ো না।
রাগিনী-আচ্ছা আমার সময় লাগবে।আপনাকে আমি কাল বা পরশু সব জানাবো।
রোদ-ঠিক আছে।
রোদ রাগিনীকে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে রাগিনীর বাসার সামনে নিয়ে নামিয়ে দিলো।
রাগিনীর আম্মু-কি রে এসেই জামা কাপড় গুছাচ্ছিস।কোথাও যাচ্ছিস নাকি?
রাগিনী-পালাতে।
রাগিনীর আম্মু-কেন?
রাগিনী-এখানে থাকা যাবে না তাই পালাবো।
রাগিনীর আম্মু-কেনো থাকবি না?
রাগিনী-ওই স্যারের ফ্যামিলি পুরাটাই পাগল।আমি ওই বদমেজাজি স্যারকে কিছুতেই বিয়ে করবো না।শেষে আমিই পাগল হয়ে পাবনা চলে যেতে হবে।
হঠাৎ করেই রোদের আব্বু রাগিনীর বাসায় আসে।
রোদের আব্বু-মা রে তোকে আমার বউ মা রূপে দেখার জন্যই তোকে অভিনয় করতে বলেছিলাম।আমি বুজি নি তুই শুধু অভিনয়েই ভালোবাসার কথা বলেছিস,বাস্তবে না।আমার ছেলেটা সত্যিই তোকে খুব ভালোবাসে।আমি জানি সব কিছু।
রোদ জানতো তুই এটাই করবি তাই আমাকে পাঠিয়েছে বলেছে তোকে বিয়ে করতে হবে না।তবুও তুই যেনো এখান থেকে না যাস।
রাগিনী-সত্যি স্যার বিয়ে করতে হবে না।
রোদের আব্বু-হুম কাল থেকে অফিস জয়েন করিস।
রাগিনী-ঠিক আছে স্যার।
রোদের আব্বু চলে যেতেই নিশাত,নিশাত বলে চিৎকার জুড়ে দিলো।
নিশাত-কি হইছে আপু.
রাগিনী-আমার নিশুপাখিটা আজকে খেয়েছে?
নিশাত-তুই না খেলে আমিও খাই না তুই জানিস না।
রাগিনী-চল খাবার খাবি।
রাগিনীর আম্মু-ছেলেটা কিন্তু ভালো ছিলো।
রাগিনী-চুপ চাপ খাও তো।
নিশাত-তুই আমার জন্য বিয়ে করছিস না তাই না?
রাগিনী-বাদ দে তো এসব।আগে আমার মিষ্টি বোনটা সুস্থ হোক তার পর বিয়ের কথা ভাববো।
নিশাত-তুই কেনো এত কিছু করছিস আমার জন্য।
রাগিনী-কারণ তুই আমার মিষ্টি ছোট্ট বোন।
নিশাত-আপু আই লাভ ইউ।
রাগিনী-লাভ ইউ টু বোন।
চোখের কোনে পানি আসতেই রাগিনী মুছে হাত দিয়ে মুছে পেললো।তার পর নিশাতকে রুমে দিয়ে কফি হাতে বারান্দায় গেলো।
বিকেল গড়িয়ে রাতের আধারের নিঃস্তব্ধতা নেমে আসলো সারা শহরে।ঘুম নেই রোদের চোখে।বিছানায় শুয়ে রাগিনীর কথা ভাবছে।হঠাৎ করে চোখে পানি অনুভব করলো রোদ,তারপরেই চোখের পানিটা মুছে পেললো।
পরেরদিন…….
রোদের কেবিনে ডুকার জন্য নোক দিতে গিয়েই যা দেখলো তার জন্য রাগিনী কখনোই প্রস্তুত ছিলো না।এক পা, দুই পা করে পিছনে সরতে থাকে সে।
চলবে……