অপ্রত্যাশিত বিয়ে  দ্বিতীয় পর্ব

0
4004

অপ্রত্যাশিত বিয়ে
দ্বিতীয় পর্ব


–তুমি কিভাবে বুঝলে তোমার হাত টা ধরতে চাই?

জুঁই একটু হেসে বলল,,,,

–তোমার নজর সেই তখন থেকে আমার হাত টার উপর ছিল,

–তোমার চোখ তো বন্ধ ছিল তাহলে দেখলে কিভাবে ??

–প্রতিটা মেয়েই তার স্বামীর মনের কথা বুঝতে পারে,,,

–উমমমম,,,

–লজ্জা পাচ্ছ,

–না লজ্জা পাব কেন ? নিজের বউয়ের হাত ধরতে কিসের লজ্জা,

আমি জুঁইয়ের ডান হাত টা আমার দু হাতের মধ্য নিলাম।জুঁইয়ের মুখে হাসি ফুটল,এই প্রথম ওকে নিজের স্ত্রী বলে সম্মোধোন করলাম।এই জন্যই হয়ত বেশী খুশি হয়েছে।

জুঁই আবার বলল,,,,

–তুমি চাইলে আমাকে একটা চুমুও খেতে পারো,,

–তুমি আগে সুস্থ হও,,,

–আমি সুস্থ,তুমি এসে গেছ আর কি অসুস্থ থাকা যায়।

আমি জুঁইয়ের কথা শুনে অবাক হলাম,এ মেয়েটা এত অপমান সত্তেও আমাকে কত ভালবাসে। নিজের উপর অভিমান হল,কিভাবে পারলাম এই মেয়েটাকে কষ্ট দিতে,,,

যেদিন জুঁই আমার জন্য কষ্ট করে রান্না করল সেদিন না খেয়েই উঠে গিয়েছিলাম,চিন্তাও করিনি মেয়েটা কষ্ট পাবে কি না ?রোজ রাত্রে ও ফোন করত,সেই ফোন গুলোও কেঁটে দিতাম।নিজেকে এখন খুব অপরাধী মনে হচ্ছে।

–তুমি আবার লজ্জা পাচ্ছ,,,

–পাচ্ছিনা,

–তাহলে চুমু খাও,

আমি জুঁইয়ের কপালে একটা চুমু খেলাম। চুমু শেষেই জুঁই হাসতে হাসতে বলল,,,,

–তুমি আসলেই লজ্জা পাচ্ছ,

–কেন ?আমি তো চুমু খেলাম,

–কপালে কেন ?ঠোঁটে খাও,,,,

–না,

–খাও,,,,এই যে আমি চোখ বন্ধ করছি,
.
জুই চোখ বন্ধ করল। আমি জুঁইয়ের ঠোঁট গুলোর দিকে তাকালাম ,গোলাপী ঠোঁট গুলো অল্প অল্প নড়ছিল। যেই আমি আমার ঠোঁট গুলো নিচে নিয়ে যাব তখনি মনে হল কেউ ঘরের দিকে আসছে। আমি সাথে সাথে ঠিক হয়ে বসলাম।

পিছন ঘুরে তাকিয়ে দেখি জুঁইয়ের ছোট বোন জেরিন এসেছে।আমাদের ইশারা করে বলল,,,

–খেতে আসো তোমরা

আমি কিছু বলতে যাব, তার আগে জুঁই বলে উঠল,,,,

–না আমরা এখন খাব না।

–কেন ?

–আজকে আমরা অন্য কিছু খাব,

–অন্য কিছু,,,কি খাবে আপু,,

–তোকে বলা যাবে না।

–তাহলে আমিও খাব তোমাদের সাথে,,,

–জেরিন,,,,,,,তুই গেলি এখান থেকে,,,

–জুঁইয়ের ধমক শুনে জেরিন পালিয়ে গেল,,,

–নাও,আমি চোখ বন্ধ করছি,

–এখানে না,বাসায় গিয়ে।কখন কে আসে এ ঘরে,

–আমাকে তোমার কাছে নিয়ে যাবে,,,,
জুঁই একটু উচ্ছাসিত গলায় বলে উঠল।

–হুম নিয়ে যাব।আগে তুমি সুস্থ হও তারপর,

–আমি সুস্থ,,,

জুঁই আর বিছানায় শুয়ে রইল না,ফ্রেশ হতে চলে গেল।ফ্রেশ হয়ে এসে ওর ব্যাগ গোছানো শুরু করল।আমি একটু অবাক হলাম ওর উচ্ছাস দেখে।তবে একটা প্রবলেম ও আছে।আমি যেখানে থাকি সেটাকে মুরগীর ঘর বললে ঠিক ভুল হবেনা,একজনের থাকার ঘর।জুঁই কিভাবে ওখানে থাকবে কে জানে ?ওখানে বালিশ ও একটা।অবশ্য জুঁই অনেক কবার আমার ওখানে গিয়েছিল,ও তো জানেই এসব,তবুও এত আগ্রহ।

জুঁইয়ের ব্যাগ গোছাতে গোছাতে সন্ধ্যা হয়ে গেল।ব্যাগ গোছানো শেষে ও সাজতে বসল।এমনিতেই ও সুন্দর সাজার কি দরকার।

আমি বললাম,,,,

–এ মেকাপ কি রাত পর্যন্ত থাকবে ?

–নাহ,

–এক কাজ করো,মেকাপ বক্স টা সাথে নিয়ে নাও।রাত্রে সাজিও,আমার ঘরে আয়না আছে,

–গুড আইডিয়া,,,

আমরা জুঁইদের বাসা থেকে যখন বের হলাম তখন বাজে সন্ধে সাড়ে সাতটা।জুঁইয়ের বাবা মা আমাদের খুশি মনেই বিদায় দিল। রিকশায় উঠে জুঁই কোন কথা বলল না।

আমি জিজ্ঞেস করলাম,,,

–রাতে কি খাবে,কাল থেকে তো কিছুই খাওনি,

–চুমু খাব,,,,

–শুধু চুমুতে কি পেট ভরবে ?

–ভালবাসা থাকলে ঠিক ভরবে,,,

–হা হা,ভাল বলেছ,
.
রিকশায় বসা যে এত আনন্দ দায়ক হতে পারে তা জানা ছিলনা।জুঁইয়ের একটা হাত ধরে বসে ছিলাম সারা রাস্তায়।হালকা বাতাস বইছিল,মনে হচ্ছিল বৃষ্টি হবে। কোন ভাবে বৃষ্টি হওয়ার আগে বাসায় পৌছালেই হয়।

জুঁই বলল,,,,

–মনে হয় বৃষ্টি হবে ?

–আকাশ তো তাই বলছে,

–আমাদের বিয়ের দিনেও খুব বৃষ্টি হচ্ছিল খুব,মনে আছে তোমার ?

–হুম,মনে আছে।

–সেদিন ইচ্ছা হচ্ছিল,তোমার সাথে ভেজার।

–আজ বৃষ্টি হলে,তোমার সে আশা পূরণ করে দেব।

জুঁই কোন জবাব দিল না,আস্তে করে ওর মাথা টা আমার কাধে রাখল।

তারপর ও বলল,,,, ??

চলিবে,,,,

#লেখকঃ Tuhin Ahamed

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে