নষ্ট গলি পর্ব-৩০
লেখা-মিম
কিছুক্ষণ আগেই মায়ার হাত ব্যান্ডেজ করে দিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে গেছে স্বপন। বিছানায় হেলান দিয়ে বসে আছে মায়া। ওর মুখোমুখি বসে প্লেটে ভাত মাখাচ্ছে সোহান।
– হা করো।
ডানে বামে মাথা নাড়লো মায়া। সোহানের মুখে বিরক্তির স্পষ্ট ছাপ ভেসে উঠছে।
– খাবে না কেনো?
– মাফ করেছেন আমাকে?
– মাফ না করলে মুখে তুলে খাইয়ে দিতাম না।
– আপনার মুখ দেখে মনে হচ্ছে রেগে আছেন।
– হ্যাঁ রেগে আছি। চুপচাপ খাও। তাহলে আর রাগ করবো না।
– গলা দিয়ে খাবার ঢুকবে না।
– কেনো?
– কেমন মুখ করে বসে আছেন। আপনাকে এভাবে দেখতে আমার একদম ভালো লাগে না। অশান্তি লাগে।
মাথা নিচু করে চেহারা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে সোহান। কিন্তু পারছে না। আসলে ও রেগে নেই। চেহারায় এখন যা ভেসে উঠছে সেটা পুরোটাই হচ্ছে দুশ্চিন্তা। কিন্তু মায়া সেটাকে ধরে নিয়েছে রাগ৷
– এক্ষুনি চেহারা স্বাভাবিক করাটা কি খুব জরুরী?
– হুম।
– পারছি না।
– আমি কি আপনাকে খুব কষ্ট দিয়ে ফেলেছি?
ভাতের প্লেটটা বিছানার উপর রেখে মায়াকে এক হাতে টেনে নিজের বুকে জড়িয়ে ধরলো। সোহানের বুকে কান পেতে হৃদস্পন্দন শুনছে। আওয়াজটা ওর বড্ড আপন। এই আওয়াজটাতে নিজের অস্তিত্ব খুঁজে পায় মায়া।
– সত্যি কথা বলবো?
– হুম।
– কষ্টের চেয়ে ভয় পেয়েছি বেশি। তোমাকে কোনোভাবেই হারাতে চাই না। বলতে পারো তুমি আমার বেঁচে থাকার অবলম্বন হয়ে গিয়েছো। তুমি চলে গেলে আমি কাকে নিয়ে বাঁচবো বলো?
বুকের উপর থেকে মাথাটা সরিয়ে সোহানের চোখের দিকে তাকালো মায়া। সোহানের কন্ঠে অভিযোগ, ভয় দুটোই টের পাচ্ছে ও। সোহানের মুখে হাতাচ্ছে মায়া।
– আমি খুব বোকা। বোকা একটা মেয়েকে মন দিয়ে বসেছেন।
– হুম ভবিষ্যৎ অন্ধকার।
– যাক অবশেষে আপনার মুখে সামান্য হলেও হাসি দেখতে পেলাম। আমাকে ভাত খাওয়াবেন না?
সোহানের বুকে হেলান দিয়ে বসে আছে মায়া। ভাতের প্লেট একহাতে নিয়ে, অন্যহাতে মায়াকে খাইয়ে দিচ্ছে।
– মায়া….
– হুম?
– আর কখনো এমন করবে?
– মাথা খারাপ? আপনার হাতে মার খাওয়ার শখ নেই আমার। আপনি খুব জোরে চড় মারেন।
– সরি।
– সরি বলতে হবে না। আমি জানি আপনি আমাকে এমনি এমনি মারেননি। দোষটা আসলে আমার। পাগল ছাগলের মতো এমন একটা সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত হয়নি। আপনাকে একটাবার বলা উচিত ছিলো৷ জানেন আমি তো মরে যাবো সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম? ভেবেছিলাম রাতে বিষ খাবো।
– জ্বি। জানি আমি। আপনার হাতে বিষের বোতল দেখেছি। এজন্যই আপনাকে জুতাপেটা করেছি।
শব্দ করে হাসছে মায়া৷ মায়ার হাসিতে বেশ অবাক হচ্ছে সোহান।
– হাসছো কেনো?
– জুতার বাড়ি খেয়ে বুদ্ধি সুদ্ধি জায়গামতো এসে গেছে৷ আর জীবনেও এমন বোকামী করবো না।
– আমি বুঝিনা আমার রাগ এত সহজে কিভাবে হজম করো? তোমাকে এত মারলাম তবু একটু রাগ হওনি আমার উপর?
– আপনাকে ভালোবাসি৷ তাই হজম করতে অসুবিধা হয়না৷ আর সবচেয়ে বড় কথা আপনাকে আমি আমার মনের কোন জায়গায় বসিয়েছি তা আপনি জানেন না। কোনোদিন বুঝিয়ে বলতেও পারবো না। আপনার দশটা গুনের মাঝে একটা দোষ মেনে নেয়া কোনো ব্যাপার না।
– সবাই তো দোষটাই দেখে।
– সবাই তো ভাবে আমি পঁচে গেছি। কিন্তু আপনি তো আমাকে সুবাস ছড়ানো ফুল ভাবেন। যেই পুরুষ আমার মতো মেয়ের মাঝে ভালোবাসা খুঁজে পায়। বেঁচে থাকার অবলম্বন খুঁজে পায় তার দোষ কিভাবে দেখি বলেন তো?
মুখ বাঁকিয়ে হাসলো সোহান। প্লেট থেকে শেষ লোকমাটা নিয়ে মায়ার মুখে তুলে দিলো সে।
– আরো ভাত নিবো?
– উহুম। পেট ভরে গেছে।
– বসো। পানি নিয়ে আসছি।
পানির গ্লাস হাতে রুমে আসলো সোহান। মায়ার দিকে এগিয়ে দিলো গ্লাসটা। গ্লাস হাতে নিয়ে মায়া বললো
– আপনি খাবেন না?
– হ্যাঁ। এখন খাবো।
– ওহ৷ চলুন খাবেন।
– তুমি কোথায় যাচ্ছো?
– ওমা! আপনি খাবেন না! আপনার প্লেটে খাবার বেড়ে দিবো।
– চুপ করে শুয়ে থাকো৷
– পরে শুবো। আপনার খাওয়া শেষ হোক। এরপর।
– আমি তর্ক একদম পছন্দ করি না।
– জানি তো।
– তাহলে করছো কেনো?
– বউরা অহেতুক তর্ক করবে এটা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার।
হেসে ফেললো সোহান। মায়ার গাল টেনে বললো,
– ইশশ! বউ বউ ভাব চলে এসেছে।
– ওমা! বিয়ে হয়েছে না আমার! ভাব তো আসবেই। আরও কত কি আসবে।
– কত কি আসবে মানে?
– দারোগা ভাব আসবে আমার মাঝে৷ আপনাকে আমি প্রচুর শাসন করবো। আমার কথার বাহিরে গেলে ঘরে তুফান শুরু করে দিবো। রান্নাঘরের পাতিলগুলো ফ্লোরে আঁছাড় দিবো। আপনাকে ঘরের বাহিরে দাঁড় করিয়ে রাখবো। আপনাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দিবো।
– সবই ঠিকাছে৷ শেষের লাইনটা ছাড়া। এবার তো চুলের মুঠি ধরেছি। ফের ছেড়ে যাওয়ার কথা বললে চুল একদম গোঁড়া থেকে উপড়ে ফেলবো৷ একটা চুলও মাথায় থাকবে না।
সোহানের গলা পেঁচিয়ে ধরলো মায়া।
– চলে যাওয়ার হুমকি যদি না দেই তাহলে বউ হলাম কিসের?
– অন্যের দুর্বলতা নিয়ে মজা করতে খুব ভালো লাগে তাই না?
– উহুম মজা না৷ আপনার রাগের আড়ালে লুকিয়ে থাকা ভালোবাসাটা দেখতে ভালো লাগে।
(চলবে)
Amazing story! ? puro story ta ak boshay boshe shesh korechi… ?
dhonnobad
Awesome story….but nxt part ta pachi na…aktu help.krbe
website ache valo kore dekhon peye jaben ..
Darun golpo ta kintu nxt prt kothy? Khuje pelam na
Vai golpota just wow..
But 29 part er porer paitecina..
Sry 29 er jaygay 30 hobe
30 part to holo next 31 koi pache na to..plssss help koran..