My_Mafia_Boss_Husband Part:45/শেষ

0
5435

My_Mafia_Boss_Husband Part:45/শেষ
Mafia_Boss_Season2
Part:45/শেষ
Writer:Tabassum Riana

,,,,,,,,,,,,,গভীর রাত প্রায় ২টোর দিকে রুহী বারান্দায় এসে দাঁড়ায়।হাতের কাছে কাপড় না পাওয়ায় রোয়েনের কালো শার্ট গায়ে জড়িয়ে নিলো।বাহিরের ঠান্ডা বাতাস রুহীর শরীরকে ছুঁয়ে দিচ্ছে।গ্রিল ধরে বাহিরে তাকিয়ে আছে রুহী।চাঁদটা যেন আজ পুর্ন আলোয় জ্বলছে।ঘুমের মাঝেই পাশে হাতড়াতে থাকে রোয়েন।বিছানা খালি পেয়ে আধো চোখ খুলে রোয়েন।রুহীকে না পেয়ে এবার ঘুম ভেঙ্গে গেলো রোয়েনের।উঠে বসলো।বারান্দা দিয়ে আসা চাঁদের আলো রুমটাকে স্নিগ্ধ আলোয় ভরিয়ে দিয়েছে।বারান্দায় ভালোমতো তাকাতেই রুহীকে দেখতে পেলো রোয়েন।কালো শার্টটা রুহীর হাঁটুর একটু ওপর পর্যন্ত এসে থেমে গেছে।রুহীকে দেখতে পরীর মতো লাগছে একদম।খাট ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো রোয়েন।রুহীর দিকে একটু একটু করে এগোতে লাগলো রোয়েন।হঠাৎ কারোর নিশ্বাস রুহী নিজের কাঁধে অনুভব করতে লাগলো।রুহী চোখ বুজে মিষ্টি হেসে নিশ্বাসের উষ্ঞতা উপভোগ করছে।আমাকে গায়ে জড়িয়ে আমাকেই পাগল করা হচ্ছে?
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,রোয়েনের এমন কথায় ঘোর কাঁটলো রুহীর।সামনে ফিরে দাঁড়ালো রুহী।ঘুম থেকে উঠে এলেন যে?প্রশ্ন করে উঠলো রুহী।তুমি ঘুমাও নি কেন?পাল্টা প্রশ্ন করে বসলো রোয়েন।না আসলে ঘুম আসছিলো না তাই।এখানে ভালো লাগছিলো।কথা গুলো বলে রোয়েনের দিকে একনজর তাকালো রুহী।আজ এই সুন্দর রাতটা শুধু তোমার আর আমার জন্য।So we should not waste it.বলেই রুহীকে কোলে তুলে নিলো রোয়েন।মানে কি? না না প্লিজ।চিৎকার করে উঠলো রুহী।সাট আপ। রাত কম হয়নি রুহী।চেঁচাচ্ছো কেন?ধমক দিয়ে উঠলো রোয়েন। you know I don’t like disturbance in romance বলেই বাঁকা হেসে রুহীকে নিয়ে খাটের দিকে এগোলো রোয়েন।দুহাতে রোয়েনের গলায় জড়িয়ে আছে রুহী।রুহীকে খাটে শুইয়ে দিয়ে ওর পাশে শুয়ে পড়লো রোয়েন।আবার ভালোবাসার সমুদ্রে গাঁ ভাসালো ওরা।
পরদিন সকাল
,,,,,,,,,,,,,,,,,রুহী আরাবীকে কোলে নিয়ে রুমে এলো।ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এলো রোয়েন।আজকের সকাল টা ওদের দুজনেরই নতুন নতুন লাগছে।যেন ওদের জীবন নতুন ভাবে শুরু হলো।রুহী আজ একটা কাজিনের বিয়ে আছে।সন্ধ্যার মধ্যে তোমায় যেন রেডি পাই।দাঁতে দাঁত চেপে বলল রোয়েন।
মাথা ঝাঁকালো রুহী।দুপুরে খেতে আসবেননা?প্রশ্ন করে উঠলো রুহী।হুম বেঁচে থাকলে।বলেই বেরিয়ে গেলো রোয়েন।রুহীর কলিজা মোচড় দিয়ে উঠলো।কি বলে গেলো এই লোক মাত্র?আরাবীকে নিয়ে সিড়ি দিয়ে রোয়েনের পিছু পিছু চলে এলো রুহী।রোয়েন দরজা খুলতেই ওর কালো কোটে টান পড়লো।পিছনে তাকালো রোয়েন।আরাবী তার ছোট্ট হাত দিয়ে রোয়েনের কোট টা টেনে ধরে আছে।রোয়েনের হাত ধরলো রুহী।কই যাচ্ছেন আপনি?ভয়ার্ত কন্ঠে ডাকলো রুহী।রুহীর হাত ছাঁড়িয়ে নিলো রোয়েন।ওকে নিয়ে নিচে নামলে কেন?কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলল রোয়েন।কিন্তু রুহীর দিকে না তাকিয়ে অন্যদিকে ফিরে কথাটি বলল রোয়েন।আপনি তখন কি বলে এলেন রুম থেকে?জ্বলজ্বলে চোখে বলল রুহী।রোয়েন কিছু না বলে আরাবীর গালে চুমু খেয়ে রুহীর কপালে চুমো দিয়ে দরজা খুলে চলে গেলো।পিছনে ফিরে চোখ মুছার দৃশ্যটি রুহীর চোখ এড়ালো না।রুহীর চোখ জোড়া ভিজে গেছে।আল্লাহ যেখানেই যায় ওনি রক্ষা করার মালিক আপনি।বিড় বিড় করে বলল রুহী।সারাটাদিন রুহীর কেমন কেঁটেছে সেটা হয়ত ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।অস্থিরতার মধ্যেই রুহীর পুরোটা সময় কেঁটেছে।কখনো নামাজ পড়ে কিংবা বারবার নিচে নেমে রোয়েনের অপেক্ষা করে কিংবা রোয়েনের ছবি বুকে চেঁপে ধরে।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,রফিক আর শামীমের সামনে দাঁড়িয়ে আছে রোয়েন।সামনে কালো গাড়িটা।ডার্ক গ্রুপের কে যেন টাইম বোম ফিট করে রেখেছে গাড়িতে।স্যার প্লিজ আপনি যাবেননা।কাঁদতে কাঁদতে বলল শামীম আর রফিক।কিছু হবেনা আমার।I will be fine.বাসায় ফোন দিবিনা কেউ।ধমক দিয়ে বলল রোয়েন।স্যার প্লিজ ভাবি আর আরাবী মামনির কথা ও চিন্তা করেন।রফিক বলে উঠলো।আজ না গেলে অনেক মানুষ মারা যাবে।আর ওদের দেখা শোনার জন্য সবাই আছে।বলেই গাড়ির দরজা খুলে রোয়েন বসে পড়লো।স্যার প্লিজ যাইয়েননা।আর বিশ মিনিট বাকি আছে মাত্র।প্লিজ স্যার।শামীম রফিক বলতে লাগলো।রোয়েন কিছু না বলে গাড়ি স্টার্ট দিলো।রুহী আরাবী মিস ইউ।তোমরাই আমার সব। ভাবতে থাকে রোয়েন।গাড়িটা ফুল স্পিডে চালাচ্ছে রোয়েন।অনেক গুলো গাড়িকে পাস করে চলে যাচ্ছে রোয়েন।পাশে তাকিয়ে দেখলো মাত্র ১০মিনিট বাকি।আরো স্পিড বাঁড়ালো গাড়িতে রোয়েন।সামনেই বড় একটি লেক দেখা যাচ্ছে।আর মাত্র ৩মিনিট বাকি লেকটির দিকে গাড়ি নিয়ে গেলো রোয়েন।গাড়ি নিয়ে লেকের পানিতে পড়ে গেলো।তার কিছুক্ষন পর বিস্ফোরনের শব্দ আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে দিলো।রুহী খাটের মাঝে চুপচাপ বসে আছে।পাশে আরাবী মায়ের চুল নিয়ে খেলছে।রুহীর সেদিকে খেয়াল নেই।এভাবে বেশ খানিকটা সময় কেঁটে গেলো।বিকেলে আরাবীকে ঘুম পাড়িয়ে উঠে দাঁড়াতেই কারোর বুকে ধাক্কা খেলো রুহী।পিছনে রোয়েন দাঁড়িয়ে আছে।রুহী কিছুনা ভেবেই রোয়েনকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরলো।রোয়েন ও নিজের মায়াবতীকে জড়িয়ে ধরে আছে।

ফ্লাশ ব্যাক
,,,,,,,,,,,,,,,পানিতে পড়ে যেতেই রোয়েন খেলা করলো গাড়ির জানালা জাম হয়ে গেছে।কোন মতে গ্লাস ভেঙ্গে বেরিয়ে এলো রোয়েন।দ্রুত সাঁতার কেঁটে একটু দূরে আসতেই গাড়িটি বিস্ফোরিত হলো।রুহীকে সামনে আনলো রোয়েন।বলেছিলাম না রেডি হতে?বলে উঠলো রোয়েন।আপনি কই গেছিলেন?জিজ্ঞেস করলো রুহী।এতো কথা না বলে যাও ফ্রেশ হয়ে নাও দাঁতে দাঁত চেপে বলল রোয়েন।রুহী শাড়ী নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়লো।রোয়েন আরাবীর পাশে এসে বসলো।একটা মুহূর্তের জন্য ভীষন ভয় পেয়ে গেছিলো রোয়েন।রুহী আর আরাবীকে হারানোর ভয়।বোমটা ছিলো ওদের বাসার বাগানে একটা ফুলের টবে।
আশে পাশে আরো বাড়ি ছিলো।আজ অনেক গুলো জান বেঁচে গেছে।আরাবীকে কোলে তুলে বুকের সাথে জড়িয়ে নিলো রোয়েন।কিছুক্ষন পর রুহী একটি কালো শাড়ী পরে বেরিয়ে এলো।রোয়েন মুগ্ধ চোখে বৌটাকে দেখছে।আজ এ সুন্দর চেহারাটকে যদি হারিয়ে ফেলতো?আরাবীকে বিছানায় শুইয়ে রুহীর দিকে এগিয়ে এলো রোয়েন।রুহীর চুলে মুখ ডুবিয়ে দিয়ে ওর কোমড়ে হাত রাখলো রোয়েন।রুহীর চুলের ঘ্রান মাতাল করছে রোয়েনকে।রুহীর মাথায় চুমো দিয়ে রুহীকে আরো কাছে টেনে নিলো রোয়েন।রুহীর কোমড়ে রোয়েনের হাত স্লাইড করছে।আই লাভ ইউ কাঁপা কাঁপা গলায় বলল রোয়েন।মুচকি হাসলো রুহী।আই লাভ ইউ টু।বলে উঠলো রুহী।দেরি হচ্ছে, ছাড়ুন রোয়েন থেকে নিজেকে ছাড়াতে ছাড়াতে বলল রুহী।রোয়েন সরে এলো।আজ আমার ডার্ক কুইন কে আমার মতো সাজাবো আমি।বলে রুহীর হাত ধরে ড্রেসিংটেবিলের টুলে বসিয়ে দিলো।রুহীকে নিজের পছন্দ অনুযায়ী সাজিয়েছে রোয়েন।রুহী তো ওর রাজ্যের রানী,ওর সব।আরাবীকে রেডি করিয়ে বেরিয়ে পড়লো ওরা।বিয়েতে এসে পৌছোলো রোয়েন আর রুহী।রুহীর হাত ধরে রোয়েন বলল আগে বৌ দেখবে চলো।মুচকি হাসলো রুহী।বৌয়ের সামনে এসে টাস্কি খেলো রোয়েন।রোয়েন যাকে এক্স গার্লফ্রেন্ড বলছিলো সেই নিশিতা বৌয়ের বেশে স্টেজে বসে আছে আর ঐ ছেলেটা যার সাথে রুহী নিশিতাকে দেখেছিলো।রোয়েনের দিকে অবাক চোখে তাকালো রুহী।এসব?আসলে ও আমার চাচাতো বোন।অভিনয়টা করেছিলাম যেন তুমি নিজেই আমার সামনে আসো জবার বেশ ছেড়ে।বলে উঠলো রোয়েন।রুহী মাথা নিচু করে হাসছে।নিশিতা রোয়েন আর রুহীকে স্টেজে আসতে বলল।রোয়েন আর রুহী আরাবীকে নিয়ে স্টেজে এসে বসলো।ভাবি সরি।বলে উঠলো নিশিতা।আমি ও সরি আপু আসলে তখন না বুঝেই অনেক কিছু করেছিলাম।বলে উঠলো রুহী।তারপর ছবি তুলে নিচে নেমে এলো রোয়েনআর রুহী।এভাবেই বেশ কিছুদিন চলে গেলো।রুমুর সময় ঘনিয়ে এসেছে।ছোট্টজান টাকে কোলে নেবার আশায় দিন গুনছে আনাম আর রুমু।অবশেষে বহুল প্রতীক্ষিত দিনটি চলে এলো।রুমুর কোল জুড়ে এলো ছোট্ট একটি ছেলে বাবু।রুহী রুমুর বেডের পাশে দাঁড়িয়ে আছে।আনাম ছেলেকে কোলে নিয়ে দেখছে।আমি যাই
তোরা কথা বল বলে উঠলো রুহী।মাথা ঝাঁকালো রুমু।রুহী আনামের কোলেই বাবুটাকে আদর করে বেরিয়ে গেলো।রুমুর কাছে আসলো আনাম।থ্যাংকস রুমু ফর দা মোস্ট বিউটিফুল গিফট।রুমুর কপালে চুমু খেয়ে বলল আনাম।রুমু কিছু না বলে আনামের বুকে মাথা রাখলো।রোয়েন দুষ্ট আরাবীকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।বাচ্চাটার এক বছর চারমাস হলো সবে।রোয়েনের হাত ধরলো রুহী।রোয়েন মুচকি হেসে রুহীকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো।
চারবছর পর
,,,,,,,,,,,রুহী আর রোয়েনের আজ নতুন করে গায়ে হলুদ।দুদিন পর ওদের বিয়ের ৬বছর পূর্ন হবে তাই।এ দিনটাকে স্পেশাল করতেই রোয়েন রুহীকে নিয়ে আবার ও নতুন করে শুরু করতে চায় নতুন জীবনটাকে।হলুদ জামদানী পরেছে রুহী।লম্বা চুল গুলো হলুদ ফুলের মালায় সাজিয়ে নিয়েছে।রোয়েন ও আজ সাদা পাঞ্জাবী তে সাজিয়ে তুলেছে নিজেকে।রোয়পন আর রুহীকে আনাম আর রুমু মিলে স্টেজে এনে বসালো।ছোট্ট আরমান কে সামলাচ্ছে আনিলা বেগম।আরাবী মা বাবার আশেপাশে ঘুরঘুর করছে।হলুদের ডালা গুলো স্টেজে রাখতেই আরাবী দৌড়ে স্টেজে উঠলো।সবাই আরাবীর কান্ড কারখানা দেখছে।রোয়েন আর রুহী মেয়েকে দেখছে।কি করতে চাইছে এই মেয়ে?আমি ইনায়াত আহমেদ আরাবী প্রথম হলুদ লাগাতে চলেছি আমার মাম্মা আর পাপাকে।বলে দুহাতে হলুদ নিয়ে রুহী আর রোয়েনের গালে ইচ্ছে মতো ডলতে লাগলো।সবাই হেসে উঠলো আরাবীর কাজে।রোয়েন একঝটকায় মেয়েকে কোলে তুলে নিলো।রুহী আর রোয়েন দুজনেই তাদের রাজকুমারীর গালে চুমো দিলো আর ঠিক সেই মিষ্টি মুহূর্তটার ছবি উঠে গেলো ক্যামেরার ফ্লাশে।

সমাপ্তি

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে