My_Mafia_Boss_Husband Part:44

0
4106

My_Mafia_Boss_Husband Part:44

Mafia_Boss_Season2

Writer:Tabassum Riana

,,,,,,,,,,,,রুহী চোখের আড়াল হতেই রোয়েন পিছনে ফিরে।চোখ জোড়া রাতের তারার মতো জ্বলজ্বল করছে।অশ্রু গুলো ঠেলে বের হতে চাচ্ছে।কিন্তু রোয়েন এতোটা নরম না এবং হতে ও চায়না।রুহী কে চায় ও অনেক বেশি চায়।ওকে পাওয়ার জন্য যা করতে হবে ও করবে।কথা গুলো ভাবতে ভাবতে ঘুমন্ত আরাবীর পাশে এসে বসলো রোয়েন।কি মায়াবী লাগছে ওর মেয়েটাকে।চাঁদের স্নিগ্ধ আলোয় ঠিক রুহীর মতোই লাগে।আরাবীর পাশে শুয়ে বুকে জড়িয়ে নিলো মেয়েকে রোয়েন।ছোট্ট বাচ্চাটা ও বাবার বুকের সাথে মিশে যেতে চাইছে।সারারাত আরাবীকে দেখেই কাঁটালো রোয়েন।

,,,,,,,,,,,,,,,,,রুহীর সাথে অনেক কথা বলার চেষ্টা করতো রোয়েন কিন্তু রুহী কোন কথা বলতো না বলার সুযোগ ও দিতোনা।সবসময় দূরত্ব বজিয়ে রাখতো রোয়য়েন থেকে।আগে যেমন ঘরে হাঁটা হাঁটি করতো আরাবীকে নিয়ে নাচতো খেলা করতো।এখন আর তেমন করেনা।এমনকি রাতে আরাবীকে রোয়েনের রুমে রেখে চলে যায়।এভাবেই কেঁটে যায় ৯দিন। রোয়েনের আর সহ্য হচ্ছেনা।কাল ওদের ফার্স্ট এ্যানিভার্সারি আর রুহী কাল চলে যাবে।নাহ আর ভাবতপ পারছেনা রোয়েন।এভাবে যেতে দিতে পারেনা রুহীকে।ওর বুকের মাঝে যে প্রতিনিয়ত রুহীর বিচরন।কি করে বুঝবে এই পাগলী বৌটা?

,,,,,,,,,,,,,,,,,সকালে ঘুম থেকে উঠলো রোয়েন।আরাবী ওর পাশে শুয়ে হাত পা নেড়ে খেলছে।পাশে আরাবীর ফিডার বানানো।মেয়েকে চুমু দিয়ে কোলে নিয়ে নিচে নেমে আসে রোয়েন।কাজের লোক একজন রোয়েনকে আসতে দেখে ওর কাছে গিয়ে দাঁড়ালো।

,,,,,,,,,,,,স্যার ম্যাডাম বলছে আরাবী মামনি রে আরো দুই ঘন্টা পর খওয়ানোর লাইগা।ম্যাডাম খাওয়ায় গেছে।বলে উঠলো কাজের লোকটা।

,,,,,,,,,,,,,,,,খাওয়ায় গেছে মানে কই গেছে?ভ্রু কুঁচকালো রোয়েন।

,,,,,,,,,,,,,,,,,,,কই গেছে কয় নাই।কইছে আইতে দেরি অইবো।কাজের লোকটা বলে উঠলো।

,,,,,,,,,,,,,,,,নিশ্চুপ রোয়েন।চুপচাপ সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেলো।আরাবীকে দোলনায় শুইয়ে ওয়াশরুমে ফ্রেশ হতে গেলো।শাহরিনা রহমানের সামনে বসে আছে রুহী।কেমন আছো মামনি?মায়া ভরা কন্ঠে বলে উঠলেন শাহরিনা রহমান।এইতো খালামনি ভালো।আপনি কেমন আছেন?রুহী জিজ্ঞেস করে উঠে ।ভালো।তো শুনলাম বিয়ে করেছো?মুচকি হেসে প্রশ্ন করলেন শাহরিনা।মাথা নিচু করে ঝাঁকালো রুহী।নাতনি কেমন আছে রুহী?জিজ্ঞেস করলেন ওনি।ভালো।বলে উঠলো রুহী।জামাই বাবু কই?দেখছিনা যে?শাহরিনা রহমান বাহিরে তাকিয়ে বললেন।ওনির কাছে মেয়েকে রেখে এসেছি।বলে উঠলো রুহী।ওহ, বুঝলাম চশমা চোখে লাগিয়ে বললেন শাহরিনা।তা লাভ ম্যারেজ না এ্যারেঞ্জ?মুচকি হেসে বললেন শাহরিনা।লাভ ম্যারেজ খালামনি।লজ্জাভরা মুখে বলল রুহী।তোমার তো মনে হয় আঠারো হয়নি। এতো জলদি বিয়ে করলে যে?কলম টাকে নাড়াতে নাড়াতে বললেন শাহরিনা রহমান।বাবার কারনে প্রবলেম হচ্ছিলো তাই।মাথা নিচু করে বলল রুহী।

,,,,,,,,,,,,,,,ওকে। তো আর কথা না বাড়াই?খালামনি কে বলো হঠাৎ এখানে কেন এসেছো?সব ঠিক আছে তো?ভ্রু কুঁচকালো শাহরিনা রহমান।জি খালামনি ঠিক আছে।চিন্তার কারন নেই।তবে একটা জরুরী দলিল বানাতে এসেছি।আজই লাগবে ওটা।একনাগাড়ে বলল রুহী।আজই লাগবে?বাট মামনি এতো জলদি কি করে?কিছুটা অবাক হয়ে বললেন শাহরিনা রহমান।খালামনি যতো লাগে আমাকে বলেন।কিন্তু আজই লাগবে।রুহী শাহরিনার হাত ধরে বলল।আরে মা টাকার কথা না।কথা হচ্ছে সময় লাগে।বললেন শাহরিনা রহমান।কিন্তু আজই লাগতো, মন খারাপ করে বলল রুহী।আরে মন খারাপ করোনা আজই দেখছি।রুহীর মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন শাহরিনা রহমান।ভাগনী কিছু চেয়েছে সেটাকি না দিতে পারি?বললেন শাহরিনা রহমান।তবে একটু টাইম লাগবে রুহী।১০টা বাজতে পারে।বলে উঠলেন ওনি।সমস্যা নেই আমি আছি।বলে উঠলো রুহী।যতো সময় লাগে নিন।কিন্তু আজই লাগবে আমার।বলে উঠলো রুহী।

,,,,,,,,,,,,,,,,আরাবীকে নিয়ে কাজে এলো রোয়েন।রফিক শামীম আরাবীকে নিয়ে মেতে আছে।আরাবী ও চাচ্চুদের মন যেন মুহূর্তের মাঝেই জয় করে নিয়েছে।ফোকলা দাঁতে খিলখিলিয়ে হাসছে।আরাবীর দিকে তাকালে যে কেউ ওকে আদর করতে বাধ্য হবেই।যার তার দিকে তাকিয়ে মেয়েটা হাসে।রোয়েন যখন ওকে নিয়ে আসছিলো।রাস্তায় সবার দিকেই হাত নেড়ে মুখ দিয়ে শব্দ করছিলো আর হাসছিলো।কাজ শেষে আরাবীকে নিয়ে বাসায় চলে আসে রোয়েন।রুহী এখনো আসেনি।কি হলো মেয়েটার?ফোনটাও বন্ধ করে রেখেছে।এমন কেয়ারলেস কেন মেয়েটা?আজিব।কথা গুলো ভাবতেই রোয়েনের কপালের রগ খাড়া হয়ে গেলো।রফিক কে কল দিয়ে রুম ডেকোরেশনের জন্য বেশ কিছু জিনিস যেমন ফুল,কালার ফুল মোমবাতি আর ও অনেক কিছু আনালো রোয়েন।একটা চকোলেট কেকের ও অর্ডার করলো।সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হয়ে এলো।রুহী এখনো আসেনি।আরাবীকে কাজের লোকের কাছে দিয়ে নিজের রুমটাকে খুব সুন্দর করে সাজালো রোয়েন।অক্ষর ওয়ালা বেলুন গুলো দিয়ে আই লাভ ইউ লিখে দেয়ালে টানিয়ে দিলো।হ্যাপি এ্যানিভার্সারির প্রত্যেকটি অক্ষরের বেলুন টানালো।ঘর সাজিয়ে ঘড়ি চেক করলো রোয়েন ১১টা বাজে।মোমবাতি জ্বালিয়ে রুমের বাতি বন্ধ করে সিড়ির দিকে এগোতেই রুহীর রুম থেকে মিষ্টি সুরে গান ভেসে এলো।দরজার দিকে উঁকি দিলো রোয়েন।আরাবীকে বুকে জড়িয়ে চোখ বুঁজে গান করছে রুহী।

,,,,,,,,,,কলিজা তুই আমার, তুই যে নয়নের আলো,
,,,,,,,,,,লাগেনা তুই ছাড়া, লাগেনা তো যে ভালো।
,,,,,,,,,,,,রূপকথা তুই তো আমারই,
,,,,,,,,,,,,,,জীবনের চেয়ে আরো দামি।
,,,,,,,,,,,,,,রূপকথা তুই তো আমারই,
,,,,,,,,,,,,,,জীবনের চেয়ে আরো দামি।
,,,,,,,,,,,,,,তুই আমার জীবন,
,,,,,,,,,,,,,,তুই ছাড়া মরণ,
,,,,,,,,,,,,,,তুই যে আমারই
,,,,,,,,,,,,,,,,সাত রাজারও ধন।

বন্ধ চোখ জোড়া বেয়ে অনবরত অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে রুহীর।হয়ত মেয়েকে কাল ছেড়ে যাবে সেটার কষ্ট।আরাবী ঘুমিয়ে গেছে দেখে রুমু ঢুকলো রোয়েন।রুহীর হাত চেপে ধরলো রোয়েন।কই ছিলা এতক্ষন?দাঁতে দাঁত চেপে বলল রোয়েন।আস্তে কথা বলুন।দেখছেন না মেয়েটা ঘুমুচ্ছে?রাগী গলায় ফিসফিস করে বলল রুহী।মা!!!! মা!!!! ডাকতে লাগলো রোয়েন।রুহী বিরক্ত হয়ে আলতো হাতে আরাবীর কান চেপে ধরলো।লোকটার আক্কেল জ্ঞান কখনো হবেনা?বাচ্চা টা ঘুমোচ্ছে আর ওনি মা মা লাগিয়ে রেখেছেন।রোয়েনের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে ভাবতে লাগলো রুহী।আনিলা বেগম রুমে এলো।রুহীর কোল থেকে আরাবীকে নিয়ে চলে গেলো।রুহীর হাত টেনে উঠায়ে দাঁড় করালো রোয়েন।চলো আমার সাথে রুহীর হাত টানতে লাগলো।কই নিচ্ছেন আমাকে?পুজো করতে নিচ্ছি ধমক দিয়ে বলল রোয়েন।খাটে বসিয়ে পুজা করবো তোমার চেহারার।চিৎকার করে বলল রোয়েন।রুহীকে টানতে টানতে নিজের রুমের সামনে আনলো রোয়েন।রুহীর চোখ একহাতে ঢেকে দিলো রোয়েন।দরজা খুলে রুমে ঢুকে আস্তে করে রুহীর চোখ থেকে হাত সরালো রোয়েন।
রুম দেখে রুহীর চোখ জোড়া ভিজে এলো।

,,,,,,,,,,,,রুহীকে কেকের সামনে এনে দাঁড় করালো রোয়েন।হ্যাপি এ্যানিভার্সারি বৌ।কাঁপা গলায় বলল রোয়েন।চোখ জোড়া অশ্রু দিয়ে ভরে গেছে রোয়েনের।আপনার কাছে কিছু চাই আমি।গম্ভীর গলায় বলল রুহী।রোয়েন রুহীর দিকে তাকালো। কি চাও?জিজ্ঞেস করলো রোয়েন।আপনার সকল সম্পত্তি চাই আমার।বলে উঠলো রুহী।রোয়েনের সামনে দলিল রাখলো রুহী।sign it.রুহী বলে উঠলো।এখন থেকে আপনার সকল সম্পদ আমার।বেশ অবাক হলো রোয়েন।এ কেমন কথা রুহী?প্রশ্ন করে উঠে রোয়েন।ভালবাসেন আমায় সবসময় বলেন আর কিছু সম্পত্তি আমার নামে করবেননা?কেমন ভালোবাসা আপনার?সাইন করলে একসাথে থাকবো আমরা নাহলে চলে যাবো কাল।বলে উঠে রুহী।না না প্লিজ যেওনা।জ্বলজ্বল চোখে বলল রোয়েন।কোথায় সাইন করতে হবে?দলিল হাতে নিয়ে বলল রোয়েন।রুহী দেখিয়ে দিলো হাত দিয়ে।রোয়েন সাইন করতে লাগলো।রুহী ভিজা চোখে রোয়েনের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে।সাইন করে রোয়েন মাথা উঠালো।রুহী গম্ভীর মুখ করে বলল পড়ুন।রোয়েন দলিল পড়তে লাগলো।

‘আমার আসল সম্পত্তি আপনি।আপনি এখানে স্বাক্ষর করে সম্পূ্র্ন ভাবে আমার কাছে নিজেকে অর্পিত করছেন।আপনার ওপর আমি রুহী আর আমাদের মেয়ে আরাবী ছাড়া আর কারো কোন অধিকার নেই।কখনো কোন কিছু লুকোবেন না আমার থেকে।ছোটবড় সকল বিষয় শেয়ার করবেন।সুন্দরী কোন মেয়ে দেখলে নিচে তাকিয়ে সরে যাবেন।আর কোন সুন্দরী মেয়ে কথা বলতে আসলে বোন বলে।স্বীকৃতি দিবেন।আমি আর কিছু চাইনা।আমার সব আপনি।আমার দুনিয়া আমার পরিচয় আপনি।আমার সকালের স্নিগ্ধ আলো আপনি।আমার হৃদয়ের প্রত্যেকটা কম্পনের কারন আপনি।প্লিজ ডোন্ট লিভ মি রোয়েন।আপনাকে ছাড়া কি করে বাঁচবো বলুন।আমি আপনার নেশায় আসক্ত।আপনার নেশায় আমাকে আবার আগের মতো জড়িয়ে নিন।প্রত্যেক দিন রাত সকাল ভালবাসায় ভরিয়ে দিন।Cause you are my addiction.I love you”

,,,,,,,,,,,,,,,,,রোয়েন রুহীর দিকে তাকিয়ে হাসে।রুহী কিছু না বলে রোয়েনের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে।রুহী কে ও শক্ত করে বুকে জড়িয়ে নিয়েছে রোয়েন।ফুঁপিয়ে কাঁদছে রুহী।রোয়েন রুহীর চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।কলিজার টুকরা আমি রাজি।দিয়ে দিলাম নিজেকে সম্পূ্র্ন ভাবে তোর কাছে।আর কখনো কাঁদতে দিবোনা তোকে।অনেক ভালবাসি রে বৌটা।রুহী সরে এলো।রুহীর কপালে চুমো খেলো রোয়েন।

,,,,,,,,,,,,,চলুন কেক কাঁটি।রোয়েনের হাত ধরে বলল রুহী।হুম চলো।বলে উঠলো রোয়েন।দুজন মিলে কেক কেঁটে একে অপরকে কেক খাইয়ে দিলো।রুহী আর রোয়েন পাশাপাশি শুয়ে আছে।রুহী রোয়েনের দিকে তাকিয়ে হাসছে।পাগল করার ধান্দায় আছো?রুহীর গালে আলতো ভাবে হাত রেখে বলল রোয়েন।রুহী রোয়েনের আরেকটু কাছে এগুলো।রোয়েন রুহীকে টেনে আরো কাছে নিয়ে এলো।শাড়ী ভেদ করে রুহীর কোমড় জড়িয়ে ধরলো।একে অপরে নিশ্বাস অনুভব করতে পারছে ওরা।রুহীর দু চোখের পাতায় চুমু খেলো রোয়েন।রুহী কিছুটা কেঁপে উঠলো।রুহীর নাকে ঠোঁট বুলিয়ে ওর ঠোঁটে আলতো করে বেশ কিছু চুমু খেয়ে রুহীর রসালো ঠোঁট জোড়ায় ঠোঁট ডুবিয়ে দিয়ে রুহীর ওপর উঠে নিজের শরীরের ভর ছেড়ে দিলো।রোয়েনের ঠোঁট জোড়া রুহীর ঠোঁটের মাঝে সফ্টলি প্রবেশ করছে।রুহী রোয়েনের শার্ট খুলে দিয়ে ওর পিঠ খামচে ধরলো।রোয়েন রুহীর ঠোঁট থেকে সরে এসে রুহীর পেটে ঠোঁট বুলাচ্ছে।রুহীর পুরো শরীরে ঝড় বইছে।রোয়েন এবার উঠে রুহীর ঠোঁটে ঠোঁট বুলিয়ে উঠে বসলো।রুহীর শাড়ীর আচল খুলে দিলো।রুহী পিটপিট করে রোয়েনের দিকে তাকালো।
Ilove you Ruhi.নেশা যুক্ত কন্ঠে বলল রোয়েন।
রুুহী রোয়েনকে টেনে নিজের ওপর নিয়ে এলো।কেউ কিছু বলছেনা।নিস্তব্ধতাই সব বলে দিচ্ছে রুহীর গলায় মুখ ডুবালো রোয়েন।

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে