My_Mafia_Boss_Husband Part:42

0
3506

My_Mafia_Boss_Husband Part:42
Mafia_Boss_Season2

Writer:Tabassum Riana
ঐদিন বেঁচে ফিরলেন কেমন করে ভাই?রফিক বলছিলো আপনি নেই।কিন্তু বিশ্বাস করতে পারছিলামনা।এভাবে আপনাকে হারাতে হবে।আপনার সাথে এ কয়দিনে এতোটা ক্লোজ হয়ে যাবো ভাবতেই পারিনি।তা কি হয়েছিলো আসলে ঐদিন?কথা গুলো আনাম বলছিলো রোয়েনের সামনে বসে।

আসলে রুহী আমাকে শুট করার পর শামীম আর রফিক আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।ওদের আগেই এনে রেখেছিলাম।কারন সন্দেহ ছিলো হয়ত এমন কিছু হবে।তবে আমার দিক থেকে সিউরিটি ০%ছিলো।যেখানে সেটা সত্যি হয়ে যায়।কথা গুলো বলে বড় নিশ্বাস নিলো রোয়েন।ওরা আমাকে হসপিটালে নিয়ে যায়।সেখানে ও তোমার বাবার লোকেরা আমাকে ফলো করতে করতে আসে।তাই ডাক্তার কে বলি আমাকে মৃত ঘোষনা করতে।কারন বেঁচে আছি শুনলে ওরা হয়ত রুহীর ক্ষতি করতে পারতো।কথা গুলো বলার সময় রোয়েনের চোখের কোনা জ্বলজ্বল করে উঠে।

আসলে রুহী কেন এমনটা করলো? বুঝতেই পারছিনা।বাবার কথা শুনে আপনাকে শুট করলো।বাবা ওকে যতোই বলুক বন্দুক নকল তাও ও ভাবতে পারতো।
কথা গুলো বলে বড় নিশ্বাস ছাড়লো আনাম।

আসলে কি ও আমাকে যে অবস্থায় দেখেছে।সেটা যে কেউ করতো।আমার ওর ওপর কোন রাগ নেই আনাম।রোয়েন কে থামালো আনাম।

কজ ইউ লাভ হার।বলে উঠলো আনাম।

মুগ্ধময় হাসি ফুটে উঠলো রোয়েনের সারা মুখ জুড়ে।

রোয়েন ভাই অমন করে হেসোনা।তোমার প্রেমে পড়ে যাই বারবার।

হেসে উঠলো রোয়েন।শুনো রুহীর ওপর আমার রাগ নেই সেটা যেন রুহী না জানে।বুঝলে?গম্ভীর গলায় বলল রোয়েন।

জি।তো আমার উঠতে হবে। চেয়ার থেকে উঠতে উঠতে বলল আনাম।

ওকে।সি ইউ সুন আনাম।বলে উঠলো রোয়েন।আনাম বেরিয়ে গেলো।রোয়েন ল্যাপটপে রুহী আর আরাবী কে দেখছে।রুহী চুল খুলে আরাবীকে নিয়ে গান করছে। মেয়েটাও মায়ের সাথে খুব খুশি।কেমন ফোঁকলা দাতে হাসছে।পাঁচ মাস হয়ে এলো মেয়েটার।দেখতে দেখতে কতো বড় হয়ে গেলো আরাবী।মেয়ের মা তো দিনে দিনে আরো সুন্দরী হচ্ছে।একদম বাবু বাবু লাগে।এরাই তো আমার দুনিয়া।কথা গুলো ভাবছিলো রোয়েন। ওর ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠেছে।

মেয়েকে নিয়ে খেলতে খেলতে টায়ার্ড হয়ে গেলো রুহী।আরাবীকে নিয়ে সোফায় বসে পড়লো।মেয়েটা রুহীর গাল ধরছে আর মুখ দিয়ে শব্দ করছে।ক্লান্ত ভাবে আরাবীর দিকে তাকালো রুহী।মেয়েটার প্রতি অদ্ভুত মুগ্ধতা কাজ করে রুহীর যেমনটা রোয়েনের প্রতি।

হঠাৎ কলিংবেল বেজে উঠায় কোন দিকে না তাকিয়ে দৌড়ে পালালো রুহী।রোয়েন ঘরে ঢুকে রুহীর দৌড় দেখে কিছুটা থমকে গেলো।তারপর কি যেন ভেবে সিড়ির দিকে পা বাঁড়ালো।

বিকেলে কোন এক অচেনা ভয়েস শুনে সিড়ির কাছে এসে দাঁড়ালো রুহী।এক মেয়ে রোয়েনকে জড়িয়ে ধরে আছে।রুহীর বুকখানি ধক করে উঠলো।সাথে আরেকজন লোক ও আছে।লোকটা হাসছে।রুহী ওূ্দের দেখছে।মেয়েটা এখনো ছাড়েনি রোয়েনকে।চোখ জোড়া ভরে এলো রুহীর।

ভাইয়া কেমন আছিস?রোয়েন থেকে সরে এলো নিশাাত।

হুম ভালো।বলে উঠলো রোয়েন।

ও হচ্ছে রাফি আমার ফিয়্যান্সে।রাফি ও হচ্ছে আমার বড় জেঠীর ছেলে রোয়েন ভাই।বলল নিশাত।

ওহ।বসো তোমরা।বলে উঠলো রোয়েন।রাফি আর নিশাত কে নিয়ে সোফায় বসলো রোয়েন।

ভাইয়া ভাবির সাথে এমন মজা নিবি?বলে উঠলো নিশাত।

হুম।গম্ভীর কন্ঠে বলল রোয়েন।

ওকে।যা ভালো মনে করিস।বলে উঠলো নিশাত।

জবা!!!জবা!!!আরাবী কে নিয়ে এসো।চিৎকার করে উঠলো রোয়েন।

রুহী মাথার কাপড় টেনে আরাবী কে নিয়ে নিচে নেমে এলো।মেয়েটা রোয়েনের হাত ধরে টানাটানি করছে।আর হাসাহাসি করে কথা বলছে।রুহীর বুক ফেঁটে কান্না পাচ্ছে।

হঠাৎ জবার দিকে চোখ পড়তেই রোয়েন আারাবী কে কোলে নিলো।এখন যাও।জবার দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বলল রোয়েন।

রুহী মাথা নিচু করে চলে এলো।শালার বেশরম মাইয়া।আরেক জনের জামাইর সাথে ডলাডলি করে লজ্জা নাই?আর রোয়েন ছিহ কেমন করে জড়ায় রাখছে ঐ মেয়েকে।খাটে শুয়ে রাগে শাড়ী কামড়াতে লাগলো রুহী।হঠাৎ বাহির থেকে রোয়েন আর মেয়েটার কথা শুনতে পেলো রুহী।

দেখো নিশাত তুমি আমার এক্স জিএফ।তোমার জন্য আমার মনে কোন ফিলিং নেই।চিৎকার করে বলছিলো রোয়েন।

প্লিজ রোয়েন বেবি এমন করছো কেন?আই স্টিল লাভ ইউ।তোমার ওয়াইফ ও তো তোমার কাছে নেই।তুমি আমার কাছে ফিরে আসো।আরাবী ও তো ওর মা চায় তাইনা?

তোমার মতো মেয়ে কখনো আমার মেয়ের মা হতে পারবেনা।চাইলে আরেকটা বিয়ে করবো,তবে তোমাকে আমার জীবনে আর আনবোনা।চিৎকার করে বলছে রোয়েন।

রুহীর ভীষন কান্না পাচ্ছে।ও যে আর এসব শুনতে পারছেনা।তাই মাথায় ঘোমটা টেনে দরজা খুলে দিলো রুহী।সাথে সাথে নিশাত সরে এলো রোয়েন থেকে।

না করেছিলাম না?এখন দেখলে বাহিরের মানুষ আমাদের দেখে ফেলছে।বলে উঠলো রোয়েন।এবার রুহীর দিকে তাকালো রোয়েন।ঘুমোচ্ছিলে জবা?

রুহী মাথা নাড়লো না সূচক ভাবে।

ওহ।নিশাত চলো নিচে যাই।মেয়েটিকে বলে সামনে হাঁটা ধরলো রোয়েন।

এভাবে দুইদিন কেঁটে গেলো।নিশাত সুযোগ পেলে রোয়েনের সাথে ঘেঁষাঘেঁষি করতো।রুহী ও সুযোগ মতো কখনো পানি আর কখনো চা ঢেলে দিয়েছে নিশাতের গায়ে।সবসময় নিশাতের পিছনেই পড়ে থাকতো রুহী।কিভাবে এই মেয়েকে ঘর থেকে বের করা যায় সেই চিন্তা চলতো রুহীর মাথায়।একদিন বারান্দা দিয়ে আসার সময় নিশাত আর অচেনা লেকটিকে একসাথে দেখে ফেলল রুহী।তারা চুম্বনে লিপ্ত ছিলো।রুহী একটি ছবি তুলে নিলো ওদের।এখন রোয়েনকে দেখানোর পালা।

রোয়েনকে ওর দিকে আসতে দেখে রুহী রোয়েনকে পাস করে যেতে চাইলো।ইচ্ছাবশত রোয়েনের সাথে ধাক্কা খেয়ে ফোন নিচে ফেলে দিলো রুহী।

রোয়েন নিচে ঝুঁকে ফোনটা হাতে নিলো।জানতাম এ কাজ করবে তুমি রুহী।জবার দিকে রাগী চোখে তাকালো রোয়েন।What is this?এসব কি?রাগী গলায় বলল রোয়েন।

গলা পাল্টে নিলো রুহী।আমি ভাবসিলাম আপনি ঐ আফারে পছন্দ করেন।কিন্তু ঐ আফা ঐ বেডার লগে সম্পর্ক রাখছে।তাই আফনেরে জানাইলাম ধোঁকা খাওনের আগে।

রোয়েনের চিৎকার শুনে নিশাত আর রাফি বেরিয়ে এলো।নিশাতের দিকে রাগী চোখে তাকালো রোয়েন।এই তোর ভালবাসা?ছিঃ নিশাত।তুই না ভালবাসিস আমাকে?তাহলে এমনটা করলি কি করে?রোয়েন ধমক দিয়ে বলল।

কি করেছি আমি রোয়েন?আহ্লাদী গলায় বলল নিশাত।

দেখ।কি করেছিস?ছবিটি দেখিয়ে বলল রোয়েন।

রুহীর দিকে তাকিয়ে একটুখানি হাসলো নিশাত।তারপর বলল তুমি আমাকে এভাবে বলতে পারলে রোয়েন?এ বাসায় আর এক এমুহূর্ত ও থাকবোনা আমি।চলো রাফি।দরজার দিকে এগোতে এগোতে বলল নিশাত।রাফি ও নিশাতের পিছু পিছু চলে গেলো।

রোয়েন ভ্রু কু্ঁচকে রুহীর দিকে তাকিয়ে সিড়ির দিকে পা বাঁড়ালো।

রুহী এবার মেইন ডোরের দিকে তাকিয়ে রোয়েনের যাওয়ার দিকে তাকালো।স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো।হঠাৎ কান্না শুনে দৌড়ে রুমে চলে গেলো রুহী।

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে