My_Mafia_Boss_Husband Part:40
Mafia_Boss_Season2
Writer:Tabassum Riana
,,,,,,,,,,,,,,,, রোয়েন চলে যেতেই আনিলা বেগম আনাম রুহীর কাছে চলে এলো।খাটে হেলান দিয়ে বসে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে রুহী।আনিলা বেগম রুহীর কাছে দৌড়ে এলেন।কি হলো রুহী?রোয়েন বাবুকে নিয়ে চলে গেলো কেন?আনিলা বেগম রুহীর মাথায় হাত রেখে প্রশ্ন করলেন।রুহী কিছুই বলতে পারলোনা। মাকে জড়িয়ে কাঁদতে লাগলো।আনাম রুহীর চুলে হাত বুলাতে লাগলো।রোয়েন ভাই এমনটা কেন করলো?এতোদিন তো সব ঠিকই ছিলো।তাহলে হঠাৎ কি হলো?ভাবতে থাকে আনাম।বোনের কান্না একেবারেই সহ্য হচ্ছে না আনামের।বাহিরে যেতে নিলে আনামের হাত ধরে ফেলল রুহী।মাথা নেড়ে না করছে রোয়েনের পিছন যেতে।আনাম আর যেতে পারলোনা।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,বাবুকে নিয়ে খাটে বসে আছে রোয়েন।রক্তবর্ন চোখ জোড়া অশ্রুতে ভরে এসেছে।বাবুটা চোখ বুজে আছে।ছোট্ট হাত জোড়া ধরে দেখছে রোয়েন।তার যে বুক ফেঁটে আসছে।কেউ যেন বুকে ছুড়ির আঘাত করছে।সে ও তো খুব ভালবাসে ওর মায়াবতীকে।মায়াবতী ছাড়া ওর খুব কষ্ট হয়।শুধুমাত্র রুহীর জন্য ফিরে এসেছিলো।বিশ্বাস করতে পারেনি রুহী ওকে।ভালোবাসার কমতি ছিলো?এতো ভালোবাসা এতো কিছু কোন কিছুরই মূল্য নেই রুহীর কাছে।বাবুকে নিজের কাছে নিয়ে গালে চুমু খেলো রোয়েন।
কিছুক্ষন পর বাবু কেঁদে উঠলো।রোয়েন তরল দুধের ব্যাবস্থা করেছিলো। সেগুলো হালকা গরম করে বাবুকে খাওয়াতে লাগলো।অল্প খেতেই বমি করে দিলো মেয়ে।আরো দু একবার খাওয়াতেই পেট খারাপ হয়ে গেলো বাবুর।রাতে বাবুর একটু ঘুম ও হয়নি।সারারাত কেঁদেছে।রোয়েন মেয়েকে নিয়ে ঘুরেছে সারারাত। জানালার পাশে বসে আছে রুহী।চোখের কোনা বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে।হুহু করে কেঁদে উঠলো রুহী।আনিলা বেগম রুহীর পাশেই শুয়েছিলো।মেয়ের কান্না শুনে উঠে বসলেন আনিলা বেগম।কি হলো মা?প্রশ্ন করে উঠলেন আনিলা বেগম।মা!!!বাচ্চাটা কি করছে কি খাচ্ছে?কেন নিয়ে গেলেন ওনি?দোষ তো আমার।মেয়েটাকে কেন শাস্তি দিচ্ছেন ওনি?কাঁদতে কাঁদতে বলছিলো রুহী।
,,,,,,,,,,,,,কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না আনিলা বেগম।রুহীকে বুকে জড়িয়ে নিলেন।বাবা কাঁদেনা!!পাপা তোমার খাবার রেডি করছি।প্লিজ মা কাঁদেনা।মেয়ের কান্না থামাতে কথা গুলো বলছিলো রোয়েন।বাবুর কান্না কোনভাবেই থামছিলোনা।চিৎকার করে কাঁদছিলো।রোয়েন বাবুকে খাটে শুইয়ে ওর পেট ধরে দেখলো।পেট হালকা গরম হয়ে আছে।পেটে ব্যাথা হচ্ছে মনে হয়।পরদিন সকাল ডাক্তার কে কল দিলো।হ্যালো মিঃ রোয়েন আহমেদ।ডাক্তার বলে উঠলেন।
ইয়েস। আসলে আমার মেয়েটা কিছু খেতে চাচ্ছেনা।কাল কয়েকবার লিকুইড মিল্ক দিয়েছিলাম।খেয়েছিলো ও।কিন্তু বমি পেট খারাপ হচ্ছে অনবরত।খুব কান্না ও করছে।একনাগাড়ে বলল রোয়েন।
স্যার আপনার মেয়ে মাত্রই হলো।ওর এখন বুকের দুধ প্রয়োজন। ওর মা কই?ডাক্তার প্রশ্ন করলেন।
আসলে ও একটু,,,,,থামিয়ে দিলেন ডাক্তার।আজকালকার মায়েরা নিজেদের শরীরের চিন্তা করে তাই বাচ্চাকে খাওয়াতে চায়না।কেমন ওয়াইফ আপনার?নবজাতক বাবুর জন্য এতো টুক,,,,,,হাউ ডেয়ার ইউ!আমার ওয়াইফ সম্পর্কে এতো কথা বলার অধিকার দেইনি আপনাকে।জাস্ট সে কি করতে পারি এখন?চিৎকার করে বলল রোয়েন।
সরি স্যার।বাট বাবু যেন বুকের দুধ পায় সেটার ব্যাবস্থা করুন।এমন একজন যে ইতোমধ্যে সন্তান জন্ম দিয়েছে।রোয়েন ফোন কেঁটে টেবিলের ওপর জোরে রাখলো।বাবু অনবর কান্না করেই যাচ্ছে।রোয়েন আবার ও ফোন হাতে নিলো।হ্যালো রফিক মাত্র ডেলিভারি হয়েছে এমন কাউকে ডেকে আন।রাগী গলায় বলল রোয়েন।
কেন স্যার?প্রশ্ন করলো রফিক।
যা বলেছি অতোটুকুই কর।এতো প্রশ্ন করবিনা।দাঁতে দাঁত চেপে কথাটা বলে ফোন কেঁটে দিলো রোয়েন।
রুহী ডাইনিং টেবিলে বসে আছে।সারারাত একটু ঘুম ও হয়নি।হৃদয়টা পুরো খালি খালি লাগছে।যেন ওর কলিজা টা কেউ টেনে ছিড়ে ফেলেছে।রোয়েনকে সত্যি অনেক ভালোবাসে।একটাবার বলার সুযোগ দিলে কি এমন হতো?তাহলে আর এমন হতোনা আজ।কথা গুলো ভাবতেই চোখ জোড়া ভিজে এলো রুহীর।হঠাৎ রিংটোনের শব্দ পেয়ে চোখ মুছে ফোন হাতে নিলো রুহী।রফিক ভাই কল করছে।
ফোন রিসিভ করলো রুহী।হ্যালো ভাবি।ওপাশ থেকে বলে উঠলো রফিক।
হ্যা ভাই।ভালো আছেন?
হুম।আপনি ভালো আছেন কিনা জিজ্ঞেস করা ঠিক হবেনা।জানি ভালো নেই আপনি।একটা সুখবর আছে।
একঘন্টা পর
রুহী সত্যিই যাবি?আনিলা বেগম জিজ্ঞেস করলো।
মাথা নাড়লো রুহী।আমার মেয়ে কতো বুদ্ধিমতি নিজের পরিচয় পাল্টে কিভাবে নিজের সন্তান কে রক্ষা করতে হয় সেটা আমার মেয়ে খুব ভালো জানে।রুহীর মাথায় হাত রেখে অত্যন্ত গর্বের সাথে বললেন আনিলা বেগম।মা তোমার থেকেই পেয়েছি।মাকে জড়িয়ে বলল রুহী।নিজের খেয়াল রাখবি।আমার নাতনীর ও খেয়াল রাখবি।বলে উঠলেন আনিলা বেগম।ঠিক আছে মা।বলে উঠলো রুহী।রুহী নিজেকে খুব সস্তা সাদা কাপড়ে জড়িয়ে নিলো। হাত থেকে বিয়ের আংটি খুলে নিলো।রোয়েনের দেয়া কানের দুলগুলো ও খুলে রাখলো।
আজ থেকে রুহী হয়ে গেলো জবা।বড় একটা নিশ্বাস নিয়ে বেরিয়ে পড়লো রুহী রুম থেকে।
আমি দিয়ে আসি।আনাম বলে উঠলো।না ভাইয়া তোকো দেখলে ওনার সন্দেহ হয়ে যাবে।বলে উঠলো রুহী।হুম।আস্তে করে বলল আনাম।আমাকে নিতে আসবে রফিক ভাই।বলে উঠলো রফিক।
বাবুকে নিয়ে বসে আছে রোয়েন।কোনভাবেই কান্না থামাতে ও পারছেনা মেয়ের।নাজেহাল অবস্থা রোয়েনের।হঠাৎ কাজের লোকের ডাকে উঠে দাঁড়ালো রোয়েন।বাবুকে নিয়ে নিচে নেমে এলো।
স্যার ডফিক ভাই আসছে।বলে উঠলো কাজের লোকটা।
ওকে।কাজে যাও।গম্ভীর গলায় বলল রোয়েন।রফিক সাদা শাড়ী পরা এক মহিলাকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।রোয়েন মহিলাকে ভালো মতো দেখে নিলো।কে ওনি?রফিকের দিকে ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করলো রোয়েন।
স্যার ওর নাম জবা।আমার চাচতো গ্রামে থাকে।জামাই চলে গেছে।বাচ্চা হইছিলো পরশু সে ও মইরা গেছে।এখন জবার আপন কেউ নাই।স্যার মেয়ে খুব লক্ষী।বিশ্বাস করতে পারেন।আমি আপনারে কইতাছি।বিশ্বাস করতে পারেন।বলে উঠলো রফিক।
হুম।জবা রাইট?এটা আমার মেয়ে ইনায়াত আহমেদ আরাবী।তোমাকে আনা হয়েছে ৬মাসের জন্য।সবসময় তোমার কাছে থাকবে ও।আমি বাহিরে থাকি।রাতে খাইয়ে আমার কাছে দিয়ে আসবে।কোন ক্ষতি করার ট্রাই করবানা।নাহলে বন্দুক বের করলো রোয়েন।সাবধান থেকো।আমার বাচ্চার কোন ক্ষতি হলে তোমাকে উপরে পাঠাবো।দাঁতে দাঁত চেপে বলল রোয়েন।মাথা ঝাঁকালো জবা।
রোয়েন কাজের লোক ডাকলো।ওকে রুম দেখাও।আমার পাশের রুম।
জি স্যার।চলো জবাকে বলল কাজের লোক।জবা কাজের লোকের সাথে যেতে যেতে আরাবীর দিকে এক নজর তাকিয়ে চলে গেলো।
কিছুক্ষন পর জবার রুমের সামনে দাঁড়ালো রোয়েন।দরজায় নক করলো।কেউ দরজা খুলছেনা।আবার ও নক দিতেই জবা দরজা খুলল।জবার দিকে আরাবীকে ধরলো রোয়েন।ওকে খাওয়াও।বলে আর দাঁড়ালো না রোয়েন।দরজার সামনে থেকে চলে গেলো রোয়েন।
চলবে
,
,