My_Mafia_Boss_Husband Part:38
Mafia_Boss_Season2
Writer:Tabassum Riana
,,,,,,,,,,,,,,,,,সিড়ি বেয়ে নিচে নামছিলো রুমু।রুহীকে সকাল থেকেই পাচ্ছেনা।মেয়েটা এমনিই অসুস্থ।এখন আবার কই চলে গেলো?ভাবতে ভাবতে পাকঘরের সামনে এসে দাঁড়ালো রুমু।হঠাৎ সার্ভেন্ট রুমের দিকে চোখ পড়তেই রুমুর চোখ আটকে গেলো।রুহী সোফায় হেলান দিয়ে কাউকে জড়িয়ে ধরে রাখার মতো হাত করে ঘুমিয়ে আছে।রুমুর ভীষন ভয় লাগতে শুরু করলো।একপা একপা করে রুহীর দিকে এগোতে লাগলো রুমু।রুহীর কাছে এসে বসে পড়লো রুমু।মেয়েটার মুখ শুকিয়ে গেছে।শরীরটাও ভীষন শুকিয়ে গেছে।রুহীর গালে হাত রাখলো রুমু।চোখ জোড়া ভিজে গেছে ওর।রুহী কে আস্তে আস্তে ঝাঁকাতে লাগলো রুমু।রুহী!!!!রুহী কাঁপা গলায় ডাকতে লাগলো রুমু।আস্তে আস্তে চোখ খুলল রুহী।মুখে মুচকি হাসি ফুটে উঠলো রুহীর।রুহীর দিকে কান্না জড়িত চোখে তাকিয়ে আছে রুমু।কি হয়েছে কাঁদছিস কেন?
হাসিমুখেই প্রশ্ন করলো রুহী।তুই এখানে ছিলি সারারাত?প্রশ্ন করলো রুমু।রুহী কিছু না বলেই রুমুর কাঁধে ঢলে পড়লো।ওনি ফিরে এসেছেন।দূর্বল কন্ঠে বলল রুহী।কে?ভয়ার্ত কন্ঠে প্রশ্ন করলো রুমু।
রোয়েন ঘুমঘুম গলায় বলল রুহী।ভুল দেখেছিস রুহী। বলে উঠলো রুমু।না ওনি এখানেই ছিলেন।ওনাকে জড়িয়েই ঘুমিয়েছিলাম।বলে উঠলো রুহী।
,,,,,,,,,,,, রুহী চল আমার সাথে রুহীকে উঠাতে উঠাতে বলল রুমু।রুহী পাশে তাকালো।রোয়েন তো নেই।রুমু ওনিকে দেখেছিস?জিজ্ঞেস করলো রুহী।না দেখিনি।চল।বলে উঠলো রুমু।এখানেই তো ছিলেন কই গেলেন?বলতে লাগলো রুহী।রুমু রুহীকে নিয়ে উপরে উঠে গেলো।রুহী কে হাত মুখ ধুইয়ে খাটে বসালো রুমু।তোর জন্য নাস্তা করে আনছি।বলে উঠলো রুমু।রুমু বের হতেই আনাম এসে ঢুকলো রুহীর রুমে।বেশ কিছু টক ফল নিয়ে এসেছে।কিন্তু আগের মতো হাসেনি রুহী।চোখ জোড়া সবসময়কার মতো ভিজে আছে ওর।আনামের দেখতে খুব কষ্ট হয়।বোনকে এভাবে দেখতে পাচ্ছেনা আনাম আর।আনামকে দেখে রুহী নিজের কাছে বসতে বলল।ভাইয়া!!!বলে উঠলো রুহী।কি রে?কিছু বলবি?জিজ্ঞেস করলো আনাম।কাল কিক কিছু দেখেছিলাম।বলে উঠলো রুহী।কি?অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো আনাম।কালকের ঘটা সব একে একে বলল রুহী।আনাম মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে।নির্দোষ ছিলো রোয়েন ভাই।চোখের কোনা বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে আনামের।রুহী বাচ্চাদের মতো কাঁদছে।আনাম বোনকে ঝটপট বুকে জড়িয়ে নিলো।ভাইয়া কি করে ফেললাম আমি?কেন এতো অবিশ্বাস করলাম?কেন ওনার কথা শুনলাম না?কাঁদতে বলছিলো রুহী।আনাম বোনের মাথা মুছে দিচ্ছিলো।কিছুক্ষন পর রুমু এসে রুহীকে অনেক খাওয়ানোর চেষ্টা করলো।কিন্তু খেতেই পারলোনা রুহী।বুয়া রুহীকে দুটো রুটি খাইয়ে দিলো।খাওয়ানোর পর পরই রুহী বমি করে গা ভাসিয়ে দিলো।
ডাক্তার বলেছিলো রুহীর প্রেগন্যান্সিতে অনেক কমপ্লিকেশনস আছে।রুহী খুব বেশি শুকিয়ে গেছে।ঠিক মতো না খাওয়ার কারনে বাবুটা ও খুব দূর্বল হয়ে গেছে।
,,,,,,,,,,,,,এভাবে বাকি ৪মাস কেঁটে গেলো।রুহী কোনভাবেই নরমাল হতে পারছেনা।সারাক্ষণই কান্না কাটি করতো।খেতে ও চাইতোনা।ঘুমের মাঝেই রোয়েন রোয়েন বলে চিৎকার করে উঠা,রোয়েনকে দেখা, কথা বলা সকল ধরনের ভ্রম নিয়ে কেঁটে যাচ্ছিলো রুহীর কষ্টের দিন গুলি।ওকে যতোই বুঝানো হতো রোয়েন নেই ও বুঝতোইনা।খুব কান্না কাটি করতো।রাহিন ও খুব মিসবিহেভ করতো,ওকে ছোঁয়ার চেষ্টা করতো।রুমু কিংবা বুয়া ওকে বাঁচাতো রাহিনের হাত থেকে।আমি আজ রুহীকে নিয়ে যাবো আজমল খানের কাছে এসে রাহিন বলতে লাগলো।দুদিন পর রুহীর ডেলিভারি।বাবু হয়ে গেলে নিয়ে যাও।আজমল খান বলে উঠলেন।আমি আর একটা কথা ও শুনতে চাইনা আজমল খান।ওকে আমার এক্ষুনি চাই।রাইট নাও।বলে উঠলো। রাহিন।দেখো ওর শরীরে একটু শক্তি ও নেই মরে যাবে।বললেন আজমল খান।আপনার কোন কথা শুনবোনা।এখন যদি না নিতে দেন তাহলে আপনাকে পুরো ধ্বংস করে দিবো।দাঁতে দাঁত চেপে বলল রাহিন।ধ্বংসের কথা শুনে কিছুটা ঘাবড়ে গেলো আজমল।ওকে নিয়ে যাও।মরে গেলে ও জানাবানা আমাকে।রাগী গলায় বলল আজমল খান।রাহিন সিড়ি বেয়ে রুহীর রুমে চলে এলো।রুমু বুয়া রাহিনকে অনেক আটকাতে চেষ্টা করলো।কিন্তু রাহিন রুহীর হাত জোরে টানতে টানতে সিড়ি দিয়ে নিচে নামতে লাগলো।ছাড়ুন আমাকে!!!ছাড়ুন।রাহিনের হাত ছাড়াতে চেষ্টা করছিলো রুহী।পেটে ব্যাথা পাচ্ছে রুহী।আজমল খান রুসমী হেসে রুহীকে নিয়ে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।রোয়েন!!!! রোয়েন!!!বাঁচান।প্লিজ বাঁচান।কাঁদতে কাঁদতে বলছিলো রুহী।জীবিতরাই বাঁচাচ্ছেনা,মরা মানুষ কি করে বাঁচাবে?বলে হেসে উঠলো রাহিন।
,,,,,,,,,,,,, রুহীকে টানতে টানতে বেরিয়ে আসলো রাহিন।গাড়ির কাছে আসতেই কোথা থেকে যেন একটা বুলেট এসে রাহিনের কপাল ভেদ করে চলে গেলো।রুহী রাহিনের দিকে চোখ বের করে চেয়ে আছে।রাহিন রুহীর হাত ছেড়ে নিচে পড়ে গেলো।রুহী তখনই সামনে তাকালো।সেই কালো কোট,কালো ডেনিম প্যান্ট,সানগ্লাস, সেই হেয়ার স্টাইল নিয়ে সেই পরিচিত প্রিয় একান্ত আপন মানুষ টা রুহীর দিকে এলো।রুহীর চোখ জোড়া ঝাপসা হয়ে আসছে।রুহীর কাছে এসে রুহীর নিজের কাছে টেনে নিলো রোয়েন।রুহীর সারা মুখে চুমু দিয়ে বুকে জড়িয়ে নিলো।আপনি এসেছেন?এতো দেরি কেন করলেন?রোয়েন কিছু বলছেনা।রুহীকে শক্ত করে জড়িয়ে নিয়েছে নিজের সাথে।রুহী রোয়েনকে ও আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে আছে।রুহীর চোখের পানি রোয়েনের কোটটাকে ভিজিয়ে দিচ্ছে।রুহীকে সরিয়ে আরো বেশ কয়েকটা চুমু খেলো রুহীর ঠোঁটে।রোয়েন এবার রাগী চোখে তাকালো বাসার দিকে।রুহীর হাত ধরে ভিতরে নিয়ে এলো।কপালের রগ শক্ত হয়ে এসেছে।রুমু অবাক চোখে রোয়েনকে দেখছে।এটা কি সত্যিই রোয়েন?রুসমীকে সুট করে আজমল খানকে সুট করতে নিতেই পিছন থেকে কেউ যেন আজমল খানকে শুট করলো।আজমল খান পড়ে গেলেন।সবাই পিছনে তাকালো।আনিলা বেগম মাথা থেকে কাপড় সরিয়ে দিলেন।কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন।রুহী কে নিয়ে রোয়েন আনিলা বেগমের দিকে পা বাঁড়ালো। মেয়েকে পেয়ে আনিলা বেগম বুকে জড়িয়ে নিলেন।সবাই খুশি তার থেকে বেশি রুহী।এতো দিনে বেশ দূর্বল হয়ে পড়েছে রুহী।আনিলা বেগম থেকে সরে আসতেই মাথা ঘুরে গেলো রুহীর।রোয়েন রুহীকে কোলে তুলে নিলো।মা আপনি রেস্ট করুন।আমি ওকে দেখছি।ভাইয়া আপনি?রুহীর কথাই সত্যি হয়েছে তাহলে।কাঁদতে কাঁদতে বলল রুমু।রোয়েন মুচকি হেসে মাথা নেড়ে সিড়ির দিকে পা বাঁড়ালো।
রুহীকে খাটে এনে শুইয়ে দিলো রোয়েন।রুহীর পাশে বসে ওর চুলে হাত বুলাচ্ছে রোয়েন।
চলবে