My_Mafia_Boss_Husband Part:35
Mafia_Boss_Season2
Writer:Tabassum Riana
রুহীর বুক যেন বিস্ফোরিত হয়ে যাচ্ছে।কি হচ্ছে এসব।সব কিছু উল্টো হচ্ছে কেন?নাকি সব ঠিকই হচ্ছে আমি ভুল ভাবছি।কিন্তু ভিডিওতে যা দেখলাম যাকে দেখলাম ছিলো।সেই একই কালো কোট একই ঘড়ি,সব কিছু এক কি করে হতে প পারে?নাকি সবই আমার দেখার ভুল।ভাবছিলো রুহী।ইসস সব আগের মতো হয়ে যেতো।মা ফিরে আসতো,বাবার কথা মিথ্যা হতে পারতো।কিন্তু এতো গুলো প্রমান মিথ্যা কি করে হতে পারে।রোয়েনের দিকে এক নজর তাকিয়ে ভাবতে লাগলো রুহী।রুহীকে একনজর দেখলো রোয়েন।বৌটা কেমন যেন করছে?অদ্ভুত এক অস্থিরতা কাজ করছে ওর মাঝে,কি চলছে রুহীর মনে?হয়ত প্রেগন্যান্সিতে এমন হয় হরমোন বদলের কারনে।তখন একটা মায়ের মনে অনেক কিছুই চলে।তার অনাগত সন্তান নিয়ে,অনেক চিন্তা, অনেক স্বপ্ন বুনতে থাকে মা।কথা গুলো ভাবতে ভাবতে ফতুয়ার নিচে দিয়ে রুহীর তুলতুলে পেট স্পর্শ করলো রোয়েন।এক অদ্ভুত উষ্ণতায় রুহীর ঘোর ভাঙ্গলো।রোয়েনের হাতের ছোয়া রুহীর শিরা উপশিরায় একটা ঝড় শুরু হয়ে গেলো।রোয়েনের হাত রুহীর পেটে স্লাইড করছে।রুহীর নিশ্বাস দ্রুত উঠানামা করছে।ফতুয়ার ওপর দিয়েই রুহীর কাঁধে ঠোঁট ছোঁয়ালো রোয়েন।রুহী পিছন থেকে রোয়েনের কালো গেঞ্জি টেনে ধরলো।রুহীকে তৎখনাৎ নিজের দিকে ফিরিয়ে নিলো রোয়েন।রুহী রোয়েনের দিকে পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছে।চোখ জোড়া পানিতে ভরে আছে।কি হলো চোখে পানি কেন?প্রশ্ন করে উঠলো রোয়েন।রুহী শুধু রোয়েনকে দেখে যাচ্ছে।মনে হাজারো প্রশ্ন খেলে যাচ্ছে রুহীর।রোয়েন আচমকা রুহীর ঠোঁট জোড়া নিজের ঠোঁটের ভাজে নিয়ে নিলো।শুষে নিতে লাগলো সকল মিষ্টতা।কোন একটা সংকোচের কারনে রোয়েনের বুকের মাঝে হাত দিয়ে থামিয়ে দিলো রুহী।বাঁধা পাওয়ায় ভীষন রাগ হয় রোয়েনের।ভ্রু কুঁচকে তাকালো রুহীর দিকে।You know i don’t like,,,,,,,,,রোয়েনকে থামিয়ে দিলো রুহী ভালো লাগছে না।বিশ্রাম লাগবে।রোয়েনকে সরিয়ে রুহী খাটের ওপর এসে একসাইড হয়ে শুয়ে পড়লো।ভিতরের কষ্ট গুলো রুহীর ছোট্ট বুকখানিকে দুমড়ে মুচড়ে দিচ্ছে। কাঁচের মতো হাজার খানিক টুকরোয় পরিনত হচ্ছে বুক খানি।
,,,,,,,,,,,,,,চাদরে দিয়ে নিজেকে ভালো মতো ঢেকে নিলো রুহী।কষ্টগুলো নিজের মাঝেই থাকনা।সবাইকে দেখিয়ে কষ্টগুলো কমবে না।নিজের মাঝেই আবদ্ধ থাকাটাই ভালো।রুহী নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলো।মুখ চিপে হুহু করে কেঁদে উঠলো। রোয়েন রুহীকে মনযোগ সহকারে দেখছে।ঘুমিয়ে গেছে হয়ত।রুহীর পাশে গিয়ে শুয়ে পড়লো রোয়েন।খুব জোরে বুকের মাঝে জড়িয়ে নিলো দুষ্টুপুতুলটা।আগের মতো দুষ্টুমি করে পুতুলটা।চুপচাপ হয়ে গেছে ভীষন।বাবা বলছে রোয়েন ভাই নাকি মাকে মেরেছে।সিসিটিভি ফুটেজ ও রোয়েনের বিরুদ্ধে।কিন্তু লোকটার সাথে এতো টা মিশে গেছি যে বিশ্বাস করতে মন টানছে না যে সে মাকে মেরেছে।কথাগুলো রুমুকে বলছিলো আনাম।এসব মাফিয়া লোকগুলো এমনই হয়।কখন কাকে মেরে ফেলে তাদের মনে কি চলে বুঝাই যায়না।বলে উঠলো রুমু।সেটা রোয়েনের ক্ষেত্রে নয় রুমু।মানুষটা অনেক ভালো একেবারেই অন্যরকম।বলতে গিয়ে আনামের গলা ধরে এলো।রুমু আনামের দিকে একনজর তাকিয়ে আনামকে বুকে জড়িয়ে নিলো।
,,,,,,,,,,,এভাবে বেশ কিছুদিন চলে যেতে লাগলো।সেই সাথে বাড়তে লাগলো রুসমীর লাগালাগি রোয়েনের সাথে।রোয়েনকে দেখে মিটমিটিয়ে হাসা,রোয়েনের সাথে ইচ্ছা করে ধাক্কা খাওয়া সবই রুহীর হৃদয়কে কাঁটার মতো বিঁধছিলো।কিন্তু রোয়েন যেন বিষয় গুলো কে পাত্তই দিচ্ছেনা।রুসমীর নজরটা যেন রোয়েনের চোখেই পড়ছিলোনা।রোয়েন যেন দেখে ও যেন না দেখার ভান করছিলো রুসমীর ওর প্রতি আকর্ষণ।
৭দিন পর
বাথরুম থেকে বেরিয়ে এসেছে রোয়েন।ফোনটা টি টেবিলের ওপর বেশ কিছুক্ষন ধরে বেজেই চলছে। রোয়েন ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলো কলিম কল করেছে ওকে।ফোন রিসিভ করে কানের সামনে ধরলো রোয়েন।হ্যালো রোয়েন স্যার।অপর পাশ থেকে কলিম বলে উঠলো।
হুম কি খবর কলিম?বলে উঠলো রোয়েন।
জি স্যার ভালো।রাহিন স্যার আর আজমল স্যারে প্ল্যান করতেছে ভাবিরে দিয়া আপনারে গুলি করাইবো।একনাগাড়ে বলে উঠলো কলিম।
হুম।বাট রুহী আমাকে বিশ্বাস করে। ও কখনোই করবেনা।বলে উঠলো রোয়েন।আর তুমি রাহিনের লোক হয়ে আমাকে কেন হেল্প করছো?
স্যার আপনার কারনেই আমার মায়েরে ফিরে পাইছি।আপনারে স্যার খুব ভালো লাগে।বলে উঠলো কলিম।
হুম।শব্দ করে উঠলো রোয়েন।
তা স্যার একটু সাবধানে থাইকেন।বলে উঠলো কলিম।ফোন কেঁটে কান থেকে সরিয়ে নিলো রোয়েন।রুহী ঘুমোচ্ছে তাই আর জাগানোর প্রয়োজন মনে না করে বেরিয়ে পড়লো রোয়েন।বিকেলে ঘুম ভেঙ্গে উঠে বসে রুহী।হাত মুখ ধুয়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসে।রোয়েনকে দেখা যাচ্ছেনা সেই সাথে রুসমীকে ও।কাজের লোকটার সামনে এসে দাঁড়ালো রুহী।আপনাদের স্যার কই?প্রশ্ন করে উঠলো রুহী।
স্যারে তো কইলো ওনার কাজের জায়গায় গেছে।বলে উঠলো কাজের লোকটা।আর রুসমী?ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করলো রুহী।স্যার বাহির হওয়ার পরই বাহির হয়ে গেছে ওই ছেমড়ি।বলে উঠলো কাজের লোকটা।রুহী চুপচাপ রুমে এসে পড়লো।ফোনের ভাইব্রেশন শুনে ফোন হাতে নিলো রুহী।আজমল খানের কল এসেছে অনেক।ফোন রিসিভ করে কানের সামনে ধরলো রুহী।হ্যালো বাবা।বলে উঠলো রুহী।
রুহী!!!কই তুই?জিজ্ঞেস করে উঠলেন আজমল খান।
বাসায় কেন?কিছুটা অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো রুহী।
তোকে একটা ঠিকানা দিচ্ছি এক্ষুনি আয়।
বাবা ওনি বাসায় নেই।কি করে বাহির হবো?বলে উঠলো রুহী।সময় থাকতে সত্যিটা জেনে নেওয়ার দরকার তোর।এক্ষুনি আয়।কঠিন গলায় বলল আজমল খান।রুহী মাথায় কাপড় চাপিয়ে বেরিয়ে পড়লো।বাবার দেয়া
ঠিকানায় যেতে লাগলো রুহী।কোন সত্যি জানাতে চাইছে বাবা?বুক ধুকপুক করছে রুহীর।মনে যেন কু ডাকছে রুহীর।গাড়ি থেকে নেমে এলো রুহী।রোয়েনের আরেকটি বাড়ির সামনে এসেছে ও।চারপাশে মাথা ঘুরিয়ে বাবাকে খুঁজতে লাগলো।কয়েকবার কল ও করলো বাবা ফোন ধরেনি।শুধু একটা মেসেজ করলেন বাড়ির ভিতরে যাও।রুহী ধীর পায়ে বাড়ির দিকে রওনা হলো।বাসার ভিতর ঢুকে পড়লো রুহী।এগিয়ে যেতেই সামনের রুমটির দিকে চোখ পড়লো রুহীর।দরজাটা একটু খোলা রুমের।দরজার সামনে এগিয়ে এলো রুহী।দরজা হালকা ফাঁকা করে যা দেখলো মোটে ও প্রস্তুত ছিলোনা রুহী সেটা দেখার জন্য।মাথা ঘুরে আসতে চাইছে ওর।রোয়েন উলঙ্গ অবস্থায় শুয়ে আছে আর ওর বুকে রুসমী উলঙ্গ অবস্থায় শুয়ে আছে।রুহীর চোখ জোড়া থমকে গেছে।বুক ফেঁটে কান্না আসছে ওর।ভালোবাসার মানুষটাকে এভাবে দেখার পর কিভাবে নিজেকে ঠিক রাখা যায়? জানা ছিলোনা রুহীর।মুখে হাত চেপে কাঁদতে লাগলো রুহী।রুমটির সামনে আর দাঁড়াতে পারলোনা রুহী।দৌড়ে বেরিয়ে এলো।সামনে আজমল খান দাঁড়িয়ে আছেন। রুহীকে বাবাকে জড়িয়ে কাঁদতে লাগলো।চিৎকার করে কাঁদছে রুহী।রুহীকে সামলিয়ে নিলো আজমল খান।রুহীকে নিয়ে গাড়িতে বসে পড়লো আজমল খান।গাড়ি চলতে লাগলো অজানার পথে।
,,,,,,,,,,,, বুকের ওপর ভারি মনে হচ্ছে রোয়েনের।শোয়া থেকে উঠে বসতেই রুসমী কে দেখতে পেলো রোয়েন।চারপাশে তাকিয়ে রোয়েন অবাক হয়ে যায়।ওর বাসায় যাওয়ার কথা ছিলো কিন্তু এখানে এলো কি করে?মাথাটাও কেমন ভার হয়ে আছে রোয়েনের।নিজের শরীরে ও কোন কাপড় নেই রোয়েনের।রুসমী!!!!চিৎকার করে ডাকলো রোয়েন।খাট থেকে নেমে এলো রোয়েন।জামা কাপড় পরে সামনে এগুতেই দেখলো ল্যাপটপ অন করা।ল্যাপটপের সামনে বসে পড়লো রোয়েন।সিসিটিভি ফুটেজ অন করা।রুহীকে দেখে রোয়েনের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো।ফোন হাতে নিয়ে রুহীকে কল দিতে যাবে ঠিক তখনই রুহীর নম্বর থেকে কল এলো রোয়েনের ফোনে।কল ধরতেই অপরপাশ থেকে রুহী বলে উঠলো রেড মাউন্টেন পার্ক আসেন কথা আছে আপনার সাথে।বলেই কল কেঁটে গেলো।রোয়েন তড়িঘড়ি করে বেরিয়ে পড়লো।
রুহীর সামনে দাঁড়িয়ে আছে রোয়েন।আজ তোমার সাথে সব ক্লিয়ার করতে চাই রুহী।বলে উঠলো রোয়েন।
আজমল খান রুহীর পাশে এসে দাঁড়ালো।কি ক্লিয়ার করবেন?মাকে মারার কথা নাকি রুসমীর সাথে পরকীয়ার কথা?ছলছল চোখে বলে উঠলো রুহী।রুহী যা ভাবছো তেমন কিছুইনা।আমার সাথে ওর তেমন কিছুই নেই রুহী।মাকে মারিনি আমি রুহী বিলিভ মি।বলে উঠলো রোয়েন।আজমল খান রুহীর হাতে একটি বন্দুক ধরিয়ে দিয়ে রুহীর কানের সামনে মুখ নিয়ে বলল এটা নকল বন্দুক। ওকে ভয় দেখা যেন সত্যি বলে দেয়।রুহী বন্দুক নিয়ে রোয়েনের বুকের সামনে ধরলো।বলুন মাকে মারেন নি আপনি?রুহী এটা নামাও।আমার কথা শুনো মারিনি আমি মাক,,,,,,বলতে পারলো না রোয়েন।রুহী বন্দুকে চাপ দিতেই রোয়েনের বুকে এসে লাগলো। অনর্গল রক্ত গড়িয়ে পড়ছে রোয়েনের বুকখানি বেয়ে।রুহী বন্দুক নামিয়ে রোয়েনের দিকে দৌড়ে গেলো।নিচে পড়ে আছে রোয়েন।রক্তাক্ত হাত উঠিয়ে রুহীর গাল স্পর্শ করলো রোয়েন।রুহী রোয়েনের বুকে হাত রাখলো। আমি বুঝিনি এটা আসল ছিলো।আপনার কিছু হবেনা।কাঁদতে কাঁদতে বলছিলো রুহী। রুহী আস্তে করে ডেকে উঠলো রোয়েন।খুব কষ্ট হচ্ছে ওর।আজমল খান রুহীকে টেনে হিচড়ে নিয়ে যেতে লাগলো।রোয়েন রুহীকে ডাকতে গিয়ে ও পারলোনা।কিছুক্ষন পর হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে রোয়েন।চোখের কোনা বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে। এত ভালোবাসাকে অবিশ্বাস করলো রুহী।অনাগত সন্তান টাকে হয়ত আর দেখা হবেনা।রুহীকে আর বুকে নিয়ে ঘুমানো হবেনা।আর বলা হবে না ভালোবাসি মায়াবতী বড় ভালবাসি।রোয়েনের চোখ জোড়া বন্ধ হয়ে গেলো।কথা গুলি ভাবতে ভাবতে।ডাক্তার বেরিয়ে আসতেই রফিক শামীম দৌড়ে এলো।স্যারের কি খবর ডাক্তার?রফিক কাঁদতে কাঁদতে প্রশ্ন করলো।ডাক্তার চশমা খুলে চোখ জোড়া মুছে নিয়ে চশমা চোখে জড়ালো।আ’ম সরি।হি ইজ নো মোর।
চলবে