My_Mafia_Boss_Husband Part:34
Mafia_Boss_Season2
Writer:Tabassum Riana
,,,,,,,,,,,,,,,কাঁদতে কাঁদতে রুহী ঘুমিয়ে পড়লো রোয়েনের বুকে মাথা রেখেই।সারারাত রুহীকে জড়িয়ে রেখে ওকে দেখেই কাঁটিয়ে দিয়েছে রোয়েন।আনাম খাটে চুপচাপ বসে আছে।চোখজোড়া পানিতে ভরে আছে। মা হঠাৎ কই গায়েব হয়ে গেলো।আনামের কাঁধে হাত রেখে আনামের পাশে গিয়ে বসে পড়লো রুমু।কেঁদোনা প্লিজ।মাকে তো খুঁজা হচ্ছে।মা চলে আসবে।মন খারাপ করে বলতে লাগলো রুমু।মাকে না পেলে বাবাকে আমি মেরেই ফেলবো রুমু।আনাম দাঁতে দাঁত চেপে বলতে লাগলো।
,,,,,,,,,,তুমি কি সিওর বাবা মাকে গায়েব করেছে?অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো রুমু।এ লোক ছাড়া এমন কাজ আর কেউ করতে পারেনা।একরাশ ঘৃনা নিয়ে বলল আনাম।রুমু আনামকে জড়িয়ে ওর কাঁধে মাথা রাখলো।সকালে ঘুমভেঙ্গে পাশে পেলোনা রুহী তার রোয়েনকে।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,পেটে আলতো করে হাত বুলিয়ে মুচকি হাসলো রুহী।তুই আছিস বাবা?বিড়বিড় করে বলল রুহী।
,,,,,,,,,,শোয়া থেকে উঠে বসলো রুহী।শোয়া থেকে উঠার পর রোয়েন সবসময় পাশেই থাকে।কিন্তু আজ কেন নেই?ভাবতে ভাবতে ওয়াশরুমে চলে যায় রুহী।ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আসে রুহী।মুখ মুছে রুম থেকে বেরিয়ে আসে রুহী।সিড়ির দিকে এগিয়ে আসতেই দেখে রোয়েন নাস্তা নিয়ে রুমের দিকে আসছে।কি হলো রুম থেকে বেরিয়েছো কেন?ধমক দিয়ে বলে উঠে রোয়েন।মনটা ভীষন খারাপ হয়ে যায় রুহীর।রুহীর হাত জোরে ধরে রুমে নিয়ে এসে খাটে বসিয়ে দেয় রোয়েন।রুহীর সামনে বসে পড়ে রোয়েন।রুহী অবাক হয়ে রোয়েনকে দেখছে।এভাবে ধমকানোর কি হলো?ভাবতে থাকে রুহী।রোয়েন রুটি ছিড়ে রুহীর মুখের সামনে ধরে।রুহী খাচ্ছে না দেখে রোয়েনের ভীষন রাগ উঠে যায়।প্রতিদিন এমন নাটক ভালো লাগেনা।খেয়ে নাও বলছি।ধমক দিয়ে বলে রোয়েন।রুহী ছলছল চোখে খেয়ে নেয়।রুহীকে খাইয়ে দিয়ে রোয়েন উঠে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।রুহী বুঝতে পারেনা কি হচ্ছে এসব?রোয়েনের এমন ব্যাবহারের কারন কি?রোয়েন দুইদিন ধরে বেশ বাজে ব্যাবহার করছিলো রুহীর সাথে।রোয়েনের কালো গাড়িটা ও পাওয়া যাচ্ছেনা।দুইদিন পর রুহীর নম্বরে আজমল খানের ফোন আসলো।এতোদিনে মার খবর না পেয়ে রুহীর অবস্থা বেশ খারাপ হয়ে গেছিলো।আজমল খানের ফোন পেয়ে তড়িঘড়ি করে ফোন রিসিভ করে কানের সামনে ধরলো রুহী।হ্যালো বাবা।মার কোন খবর পেয়েছো?কাঁপা গলায় বলে উঠে রুহী।
রুহী বুঝতে পারছিনা তোকে কি বলা ঠিক হবে কিনা?কিন্তু তুই তো আমাদের মেয়ে।আনিলা তোকে অনেক ভালোবাসতো।তোকে নিজের সম্পত্তির ভাগ দিতে ও চেয়েছিলো।একদমে বললেন আজমল খান।
,,,,বাবা মা কই?বলে উঠে রুহী।
,,,,,,,,তোর মা আর নেই।আমাদের ছেড়ে চলে গেছে।মন খারাপ করে বললেন আজমল খান।
,,,,,,,,,রুহীর চোখ জোড়ায় অশ্রু বাঁধা মানছেনা।কি শুনছে ও এসব?হুহু করে কেঁদে উঠলো রুহী।বাবা কি বলছো এসব?কাঁদতে কাঁদতে বলল রুহী।
,,,,,,,আর জানিস তোর মাকে কে মেরেছে?
,,,,,,,,,,,রুহী নিঃশব্দে কাঁদছে।কিছু বলার শক্তি ওর মাঝে নেই।
,,,,,,,,জানি যা বলবো সেটা শোনার সাহস তোর নেই।আর হয়ত বিশ্বাস ও করবিনা।
,,,,,,,,,,,,কে মেরেছে বাবা?প্রশ্ন করে উঠে রুহী।
,,,,,,,,,,,,রোয়েন।বলে উঠে আজমল খান।
না।কি বলছো বাবা এসব?ওনি কেন মাকে মারবেন?তোমার ভুল হচ্ছে কোথাও।রোয়েন কখনোই এমন করবেননা।চিৎকার করে বলে উঠে রুহী।
জানি বিশ্বাস করবিনা।কাল বাসায় আয়।তোকে কিছু দেখাবো।আর রোয়েনের কালো গাড়িটা বলেছে না চুরি হয়ে গেছে?বললেন আজমল খান।
হুম।আস্তে করে শব্দ করলো রুহী।
কাল সেটার ও প্রমান পেয়ে যাবি।আর আজ ওর গাড়ি পেয়ে যাবে।অন্তত বাবার কথা তখন এতটুকু ও তোর বিশ্বাস হবে।বলে ফোন কেঁটে দিলেন আজমল খান।
রুহী ফোন সরিয়ে কাঁদতে লাগলো।কান্নার শব্দ শুনে রুমে দৌড়ে এলো রোয়েন।কি হলো কাঁদছো কেন?প্রশ্ন করলো রোয়েন।রোয়েনের বুকের ওপর নিজের ভর ছেড়ে কাঁদতে লাগলো রুহী।রুহী!!কাঁদছো কেন?ধমক দিয়ে উঠে রোয়েন।
ম মা!!(রুহী)
মা!! কি হয়েছে মার?বলে উঠে রোয়েন।
মা আর নেই।বলেই চিৎকার করে কেঁদে উঠে রুহী।
রোয়েন কিছু বলতে পারছেনা।এমন একটা খবর শুনার জন্য ও প্রস্তুত ছিলোনা।রুহী ক কি বলছো এসব?রাগী গলায় বলে উঠে রোয়েন।
রুহী নিঃশব্দে কাঁদছে।ফোন বাজতেই কানে ফোন ধরলো রোয়েন।হ্যালো রফিক।গাড়ি পাওয়া গেছে? ওকে আমি নিচে নামছি।রুহীকে সরিয়ে বালিশে শুইয়ে দিলো রোয়েন।আমি এক্ষুনি আসছি।গাড়ি নাকি পাওয়া গেছে।বলে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো রোয়েন।
,,,,গাড়ির কথা শুনে আজমলের কথা ভাবতে থাকে রুহী।
পরদিন বাবার বাসায় আসে রুহী।রোয়েন বাহিরে তাই আজমল খানের বাসায় চলে এসেছে রুহী।আনামকে দেখে দুইভাইবোন একে অপরকে জড়িয়ে কাঁদতে লাগলো।
কান্না শেষে আজমল খান মেয়েকে নিয়ে রুমে এলেন।তোকে বলেছিলাম না কিছু দেখাবো?বলে উঠে আজমল খান।
মাথা নাড়ে রুহী।আজমল খান ল্যাপটপে কালকে পুলিশের দেয়া সিসিটিভি ফুটেজ টা অন করে।দেখ রোয়েনের গাড়ি দেখতে পাচ্ছিস?রুহী ভিডিও টা দেখছে।রোয়েনের গাড়িটাই তো।সামনে আরেকটি গাড়ি
সেখানে নারীদেহী কাউকে দেখতে পেলো রুহী।দেখ তোর মায়ের গাড়ি।ভিতরে তোর মাকে সেন্সলেস করে রাখা হয়েছে।রুহী ভিডিও দেখছে। রোয়েনের গাড়িটা আনিলা বেগমের গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে পাহাড় থেকে ফেলে দিলো।তারপর কে যেন নেমে পাহাড়ের কাছে দাঁড়ালো।হাইট পিছন দিক হুবুহু রোয়েনের মতো।এখন কি বিশ্বাস হচ্ছেনা রোয়েন মেরেছে তোর মাকে?বলে উঠেন আজমল খান।বাবা গাড়ি কেউ চুরি করে মাকে মেরেছে।রোয়েন এমন করতে পারেনা।কাঁদতে কাঁদতে বলতে থাকে রুহী।জানি তুই এটাই বলবি চল আমার সাথে।রুহীর হাত ধরে টানতে টানতে গাড়িতে বসায় আজমল খান।রুহীকে নিয়ে একটা গ্যারেজের সামনে চলে আসে আজমল খান।গ্যারেজের ম্যানেজার ওদের সামনে এসে দাঁড়ালো। স্যার কি সাহায্য করতে পারি।ম্যানেজার বলে উঠলেন।
তিনদিন আগে রোয়েন আহমেদ এসেছিলো?বলে উঠেন আজমল খান।জে স্যার।বলে উঠেন ম্যানেজার।
কেন এসেছিলো জিজ্ঞেস করে উঠলেন আজমল খান।
স্যারে গাড়ি ঠিক করাইতে আনছিলো।পুরা গাড়ি ভাইঙ্গা আছিলো সামনে দিয়া।কাল পাঠাই দিলাম তো।কোন সমস্যা হইছেনি?
না।গাড়ি কালো ছিলো?গাড়ি নম্বর ০২৮৪৬৮৯ ছিলো না?প্রশ্ন করে উঠেন আজমল।
জে স্যার।চোখ বড় করে কথা গুলো শুনতে থাকে রুহী।না এগুলো মিথ্যা।রোয়েন কেন একাজ করবে?মাকে তো ওনি নিজে ও ভালবাসতেন।চোখ জোড়া ভরে আসে রুহীর।
কিরে বিশ্বাস হলো তো?রুহীকে বাহিরে এনে জিজ্ঞেস করলেন আজমল।
না।ওনি কেন করবেন?
তোর মা তোকে পুরো সম্পত্তি দেয়নি তাই।এতো কিছু শোনার পর ও বিশ্বাস হচ্ছেনা তোর?চেঁচিয়ে উঠেন আজমল খান।
ওনার সম্পত্তির অভাব নাই বাবা।বাহ এতো বিশ্বাস বরকে।যে মাকে মারছে তারপর ও বিশ্বাস হচ্ছেনা তোর?প্রশংসা করতে হয় তোর বিশ্বাসের।বাট আরেকটা কাজ কর।ঠিকই তোর বিশ্বাস হবে।বলে উঠেন আজমল খান।রেড মাউন্টেন পার্কের নাম শুনেছিস?বলে উঠেন আজমল খান।
মাথা নাড়ায় রুহী।না শুনিনি।
ঐখানেই তোর মাকে মারা হয়েছে।আজ রোয়েনকে বলবি ও কখনো রেড মাউন্টেন গেছে কিনা।ও যদি হ্যা বলে তাহলে ও নির্দোষ।আর না বললে মিথ্যা বলছে ও।বলে উঠেন আজমল খান।রুহী চুপচাপ ঘরে ফিরে এলো।রোয়েন মারতে পারেনা মাকে।বাবা আবোলতাবোল কি বলছে এসব?কাঁদতে থাকে রুহী।হঠাৎ কাঁধে কারোর ছোয়া পেয়ে চোখ মুছে সামনে তাকায় রুহী।কি হলো কাঁদছো কেন?বলে উঠে রোয়েন এমনি।আস্তে করে বলল রুহী।
একটু বাহির থেকে ঘুরে আসলে আমার ভালো লাগতো।জানালার দিকে তাকিয়ে বলল রুহী।কই যেতে চাও?প্রশ্ন করলো রোয়েন।
রেড মাউন্টেন পার্ক।শুনেছি খুব সুন্দর জায়গা।আমার না যেতে ইচ্ছে করছে।বলে উঠে রুহী।
হুম নিয়ে যাবো বলল রোয়েন।আপনি কখনো গিয়েছেন?বলে উঠে রুহী।
না যাইনি।অন্যদিকে মাথা ঘুরিয়ে বলল রোয়েন।
রুহী নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছেনা।বিশ্বাস হচ্ছেনা রুহীর।রোয়েন ওর সাথে মিথ্যা বলছে কেন?তারমানে?রোয়েনের দিকে অবাক হয়ে ভাবতে থাকে রুহী।
চলবে