My_Mafia_Boss_Husband Part:32
Mafia_Boss_Season2
Writer:Tabassum Riana
রুহীর দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালো রোয়েন।চোখ জোড়া দিয়ে ইশারা করে রুহী জানতে চাইলো কি সমস্যা?মাথা নাড়লো রোয়েন।রুহীর ফোন বেজে উঠায় দুজনের ঘোর কাঁটলো। রুহী ফোন হাতে নিয়ে রোয়েনের দিকে তাকালো।কে?ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করলো রোয়েন।বাবা মুচকি হেসে বলল রুহী।রিসিভ করো।বলে উঠলো রোয়েন।মাথা ঝাঁকিয়ে ফোন রিসিভ করে কানের সামনে ধরলো রুহী।তুমি কথা বলো আমি নিচ থেকে আসছি। দরজার দিকে এগুতে এগুতে বলল রোয়েন।মাথা নেড়ে সম্মতি জানিয়ে কথা বলায় ব্যাস্ত হয়ে পড়লো রুহী।
হ্যালো রুহী!!!কেমন আছিস মা?বলে উঠলেন আজমল খান।
জি বাবা ভালো।তোমরা কেমন আছো?প্রশ্ন করে উঠলো রুহী।
হুম ভালো।আচ্ছা রুহী কাল তো তোর মা আর আমার ম্যারিজ ডে মনে আছে তোর?
জি বাবা আছে।মুচকি হাসলো রুহী।
কাল একটা পার্টির এ্যারেঞ্জ করেছি।রোয়েন আর তুই সন্ধ্যায় চলে আসবি।অবশ্যই আসতে হবে কিন্তু। আজমল খান বলে উঠলেন।
জি বাবা।ফোন কেঁটে ড্রেসিংটেবিলের ওপর রেখে দিলো রুহী।চেয়ার ছেড়ে উঠে রুম থেকে বেরিয়ে এলো রুহী।রোয়েনকে কালকের পার্টির কথা জানাতে হবে।ভাবতে ভাবতে সিড়ির কাছে চলে এসেছে রুহী।
সরি স্যার খেয়াল করিনি।রুসমী ভয় পেয়ে বলে উঠলো। রুহীর জন্য দুধ নিয়ে যাচ্ছিলো রোয়েন।রুসমীর সাথে ধাক্কা লেগে সব দুধ রোয়েনের শার্টে পরে গেলো।স্যার আমি ঠিক করে দিচ্ছি।বলে রোয়েনের সাথে ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ওর শার্ট মুছতে লাগলো রুসমী।আরে লাগবেনা রোয়েন রুসমী সরাতে চাইলো কিন্তু মেয়েটা না সরে আরো ঘেঁষছে রোয়েনের কাছে।সিড়ির কাছে আসতেই থমকে গেলো রুহী।মেয়েটা এতো কাছে ঘেঁষছে আর ওনি কিছু বলছেননা কেন?ভাবতে লাগলো রুহী।স্যার এই তো হয়ে গেছে।বলেই মুচকি হাসলো রুসমী।রোয়েন হালকা হেসে সিড়ির দিকে পা বাঁড়াতেই রুহীকে দেখতে পেলো।রুহী দ্রুত পদে রুমের দিকে চলে এলো।রুহী!!!কি হলো ওভাবে চলে এলে যে?রুমে এসে বলে উঠলো রোয়েন।না এমনিই।শরীর ভালো লাগছিলো না।বলে উঠলো রুহী।রুহীর কাছে এসে দাঁড়িয়ে রুহীকে কোলে নিয়ে বিছানায় খুব সতর্কতার সাথে শুইয়ে দিলো রোয়েন।কি হলো? বেশি খারাপ লাগছে?রুহী গালে হাত রেখে বলল রোয়েন।একটু আস্তে করে বলল রুহী।কাল মা বাবার ম্যারিজডে। বাবা পার্টির এ্যারেঞ্জ করেছে আমাদের ও যেতে বলেছে।বলে উঠলো রুহী।ভ্রু কুঁচকালো রোয়েন।আজমল খানের প্ল্যান সম্পর্কে যতোদ্রুত সম্পর্কে জানতে হবে।ভাবছে রোয়েন।কি হলো যাবেন না?রোয়েনের হাতের ওপর হাত রাখলো রুহী।রুহীর হাতের স্পর্শ পেয়ে ঘোর কাঁটলো রোয়েনের।হুম যাবো না কেন?অবশ্যই যাবো।বলে উঠলো রোয়েন।রুমুকে ও জানিয়ে দাও।বলে উঠলো রোয়েন।হুম জানাচ্ছি।ফোন বের করে রুমুর নম্বরে কল দিলো রুহী।রোয়েন খাট থেকে উঠতে যাবে তখনই রুহী খপ করে ধরে ফেলল রোয়েনের হাত।হাতে টান লাগায় পিছনে তাকায় রোয়েন।মাথা নেড়ে রোয়েনকে যেতে বারন করলো রুহী।রোয়েন রুহীর পাশে আধশোয়া হয়ে ওকে বুকে টেনে নিলো।
ফোন রিসিভ হতেই অপর পাশ থেকে রুমু কথা বলে উঠলো।হ্যালো রুহী।কেমন আছিস দোস্ত?
ভালো তোর কি খবর?বলে উঠলো রুহী।
ভালো।রোয়েন ভাই কেমন আছেন?
এই তো ভালোই আছে।শোন কাল মা বাবার ম্যারিজ ডে।সন্ধ্যায় বাবার বাসায় চলে যাবি।
আচ্ছা।যাবো নে।বলে উঠলো রুমু।ফোন কেঁটে বিছানার ওপর ফোন রেখে রোয়েনকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়লো রুহী।রুসমী কে যখনই দেখতো রোয়েনের সাথেই ঘেঁষাঘেঁষি করতো রুসমী।রোয়েন কিছু না বলে মুচকি হেসে সরে যেতো।একদিনেই অস্থির অবস্থা রুহীর।রোয়েন এমন কেন করছে?ভাবতেই বুকটা ফেঁটে যেন চৌচির হয়ে যাচ্ছে রুহীর।
,,,,,,,,,,,,পরদিন বিকেল
রুহী কালো একটি শাড়ী পরে নিয়েছে।সেই সাথে কালো স্টোনের কানের গলার সেট।আর মন মাতানো স্নিগ্ধ সাজ।রোয়েন তার সবসময়কার ডার্ক কিং লুক।ব্ল্যাক কমপ্লিট স্যুট।চুল গুলো কে সুন্দর করে সেট করে নিয়েছে রোয়েন।হাতে দামী কালো ঘড়ি।রোয়েন আর রুহী নিচে নামতেই রুসমী সেজে গুজে ওদের সামনে হাজির।রোয়েনের দিকে তাকালো রুহী।ও কেন আসবে?কিছুটা বিরক্ত হয়ে প্রশ্ন করলো রুহী।
আরে এতবড় পার্টি আমরা যাবো ও যাবেনা এটা কি হয় বলো?আর ও তো তোমার খেয়াল ও রাখতে পারবে রুহী।বলে উঠলো রোয়েন।ঐখানে অনেকেই আছে খেয়াল রাখার।রাগী গলায বলল রুহী।বেশি কথা বলছো রুহী।চলো।ধমক দিয়ে বলল রোয়েন।
চোখ জোড়া ভরে আসতে চায় রুহীর।তবু ও দমিয়ে নিলো নিজেকে।গাড়িতে উঠে পড়লো তিনজন।রুসমী পিছমে রুহী আর রোয়েন সামনে।আজমল খানের বাসা আলোয় ঝলমল করছে।গ্লাসে চিয়ার্সের আওয়াজ, কাঁটচামচ আর প্লেটের আওয়াজে চারদিক ভরে উঠেছে।রুহী রোয়েন আর রুসমী চলে এসেছে।জামাই বাবু তোমাকে দেখে ভীষন ভালো লেগেছে।বলে উঠলো আজমল খান।থ্যাংকস শ্বশুর বাবা।হ্যাপি এ্যানিভার্সারি মা। আজমলের থেকে চোখ সরিয়ে আনিলা বেগমের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো রোয়েন।থ্যাংক ইউ রোয়েন।ভিতরে আসো তোমরা।বলে উঠলেন আনিলা বেগম।রুহীকে ধরে ভিতরে চলে গেলেন ওনি। রোয়েন,আনাম আজমল খান, আর ফয়সাল চৌধুরীর সাথে গল্পে মেতে উঠেছে।
,,,,,,,,,,গল্পে ব্যাস্ত থাকা আনামের চোখ আটকে গেলো রুমুর দিকে।লাল টুকটুকে শাড়ীতে হেঁটে হেঁট আসছে রুমু।আনাম খানিকটা ভয় পেয়ে সরে এলো রোয়েনদের কাছ থেকে।রুহীর দিকে যাচ্ছিলো রুমু।হঠাৎ কে যেন ওর হাত টেনে বারান্দায় নিয়ে এলো।আরে আরে চিৎকার করে উঠতেই রুমুর মুখ চেপে ধরলো আনাম।তুমি এখানে?ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো আনাম।নিজের মুখের ওপর থেকে আনামের হাত সরালো রুমু।কেন আসতে পারবোনা?আমার শ্বশুর বাসায়?রাগী গলায় বলল রুমু।পারবা বাট আমাদের বিয়ের কথা কেউ জানেনা রোয়েন ভাই ছাড়া।বলে উঠলো আনাম।রিল্যাক্স আনাম।রুহীর বান্ধবী হিসেবে এসেছি।রুহী নিজেই কল করে আসতে বলল আমায়।বলতে লাগলো রুমু।ওহ। মাথা নিচু করলো আনাম।রুমুর দিকে তাকিয়ে ওর ঠোঁটে শব্দ করে চুমু খেলো অানাম।লাল পরী লাগছে তোমায়।রুমুর দিকে নেশা ধরানো হাসি দিয়ে বলল আনাম।থ্যাংকস, এখন যেতে দাও।কেউ চলে আসার আগে।আনামকে সরাতে সরাতে বলল রুমু।আনাম একটু সরতেই বেরিয়ে এলো রুমু।রুহীর কাছে আসতেই আনিলা বেগম রুমুর হাত টেনে আনলো।বাহ রুমু একে বারে বৌ বৌ লাগছে।রুমু খানিকটা লজ্জা পেয়ে নিচে তাকায়।তাহলে তো রুমু তোর জন্য ছেলে দেখতে হবে।মজার ছলেই বলল রুহী।আরে নাহ ছেলে ঠিক করা আছে।আনিলা বেগম বলে উঠলেন।আনিলা বেগমের কথা শুনে আজমল রোয়েন আনাম ফয়সাল চৌধুরী আনিলা বেগমের দিকে তাকালো।এতো দিন অনেক অপেক্ষা করেছি।তবে সেই বহুল প্রতীক্ষিত দিনটা চলেই এলো।আজ একটা Announcement করবো।মাইকের সামনে এসে দাঁড়ায় আনিলা বেগম।রুমু আনাম এদিকে আয়।আনিলা বেগম বলে উঠলেন।আনাম আর রুমু আনিলা বেগমের দিকে এগিয়ে এলো।রুমু আমি চাই আজ তোমার আর আমার ছেলে আনামের এ্যান্গেজমেন্ট টা হয়ে যাক।আজমল খান রক্তচক্ষু দিয়ে তাকালেন আনিলা বেগমের দিকে।রুমু আর আনামের হাতে আংটি ধরিয়ে দিলো আনিলা বেগম।নাও পরিয়ে দাও একে অপরকে।বলে উঠলেন আনিলা বেগম।আংটি বদল হতেই সবার হাততালি শোনা গেলো আজমল খানের ছাড়া।আজমল খান তার লোকদের দিয়ে রুমুর বাবা রাফসান হোসেন কে ডেকে পাঠালেন।রাফসান হোসেন নরমাল কাপড়েই আসলেন।কারন ওনি জানতেন না বাসায় পার্টি চলছে।আজমল খান রুমুর বাবাকে গরীব মনে করে যাতা বলে অপমান করলেন আজমল খান।ঠিক তখনই আনিলা বেগম এসে দাঁড়ায় আজমল খানের পাশে।এসব কি হচ্ছে আজমল দাঁতে দাঁত চেপে বললেন আনিলা বেগম।দেখছোনা ফকিরের বাচ্চাটা কি পরে আসছে?আজমল খান চেঁচিয়ে উঠলেন।একবার পিছনে তাকা ও আজমল।Don’t judge a book by ITS cover.দাঁতে দাঁত চাপলেন আনিলা বেগম।রাফসান হোসেনের পিছনে ফরেইনার বডিগার্ড পাঁচজন।ঢোক গিললেন আজমল খান।যাকে ফকিরের বাচ্চা বলছো সে আন্তর্জাতিক মাফিয়া আর আমার চাচাতো ভাই।রাগী গলায় বললেন আনিলা বেগম।সরি ভাই মাফ করে দে।রাফসান হোসেনকে বলে উঠলেন আনিলা বেগম।Its ok anila.কিছু কিছু প্রানী কখনোই চেঞ্জ হয়না।আজমল খানের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বললেন রাফসান হোসেন।আনিলা বেগম ভাইকে রোয়েনের কাছে আনলো।রোয়েন ওনি আমার চাচাতো ভাই।আই নো ইউ ইয়াং ম্যান।মোস্ট পাওয়ার ফুল মাফিয়া লিডার তুমি।রোয়েনের পিঠে হাত রাখলেন রাফসান হোসেন।থ্যাংকস বলে উঠলো রোয়েন।ভাইয়া শুধু মাফিয়াই না আমার রুহীর বর ও।হেসে বললেন আনিলা বেগম।আরে রুহী মামনি কই আমাদের?রাফসান বলে উঠলেন।রুহী এদিকে আয় মা।আনিলা বেগম ডাকলেন রুহীকে।রুহী রোয়েনের পাশে এসে দাঁড়ালো। তোর রাফসান মামা আনিলা বেগম বললেন।বাহ আমাদর রুহী মামনিকে তো পুতুলের মতো লাগছে।রুহী লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করলো।
রুহীকে সবাই গান গাইতে বলছে।কিন্তু মনটা যে একেবারেই টানছেনা।রোয়েন কাজের মেয়েটার জন্য ওকে ধমক দিলো?ভাবতেই কান্না পাচ্ছে।মা আর রুমুর জোরাজুরিতে গান গাইতে রাজি হলো রুহী।ঠিক হলো ক্রিমিনাল মুভির “তু মিলে দিল খিলে” গানটা।রোয়েন নিজের কাজেই ব্যাস্ত।রুহী রোয়েন এর দিকে তাকিয়ে মাইক হাতে নিলো।মাইকের শব্দে সবাই রুহীর দিকে তাকালো।চোখ জোড়া জলে ভরে গেছে রুহীর।
,,,,,,,,,,,,,,Darling, every breath you take
Every move you make, I will be there with you
What would I do without you?
I want to love you forever and ever and ever
Pyaar kabhi, ho marta nahin hum tum marte hain
Hote hai voh, ho log amar pyaar jo karte hain
Jitni adaa, utni vafa
Ek nazar pyaar se dekh lo phir se zinda kar do
Tu mile, dil khile
Aur jeene ko kya chaahiye,,,,,,,,
চোখের পানি সামলাতে পারছিলো না রুহী।রুহীর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়েছিলো রোয়েন।রুহী হেঁটে গান গেয়েছে আর রোয়েন রুহীকে দেখেছে।চোখের পানি কেন?জানা নেই রোয়েনের। অশ্রু গুলো রোয়নের বুকখানাকে দুমড়ে মুচড়ে দিচ্ছে।গান শেষ হতেই রুহী মুখে হাত চেপে দৌড়ে চলে যায়।রোয়েন রুহীর পিছু নেয়।রুমের দরজা আটকাতে যেতেই রোয়েন ভিতরে ঢুকেই রুহীকে বাহুডোরে বন্দী করে নেয়।রোয়েনের বুকে আশ্রয় পেয়ে হু হু কেঁদে উঠে রুহী।
চলবে