My_Mafia_Boss পর্ব-৪৭
Writer: Tabassum Riana
ঠান্ডা বাতাস রুহীর চুল উড়িয়ে দিছে।শাড়ির আঁচল টাকে ধরে রেখেছে কোনমতে।চাঁদটাকে আজ বড়ই সুন্দর লাগছে রুহীর কাছে।তার থেকে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটাকে।তার সবচেয়ে আপন, হৃদয়ের সব থেকে কাছের মানুষটি।রুহীকে এভাবে আগলে রেখেছে এতো মায়া এতো দরদ এতো ভালবাসা দিয়ে।রোয়েনের দিকে একনজর তাকালো।মানুষটির রাগ থাকলে ও ভিতর টা ভীষন নরম।রুহী মাথা নিচু করে মুচকি হাসলো।ভালবাসে রোয়েনকে,হ্যা ভালোবাসে সে,ভালবাসার মানুষটার বুকে চিরদিন কাঁটিয়ে দিতে চায়।আবার ও রোয়েনের দিকে তাকালো রুহী।রোয়েনকে আজ ভীষন সুন্দর লাগছে।কালো শার্টের কলার টা উড়াউড়ি করছে।তার তাকানোর স্টাইল, কথা বলার স্টাইল,রাগী চোখে যখন তাকায়,রুহীকে বুকে টেনে নেয়ার সময়কার তাকানোর স্টাইল, তার দাঁড়ানোর স্টাইল সবই অসাধারন।ভাবতে ভাবতে এক ভিন্ন দুনিয়ায় চলে যায় রুহী। রোয়েনের দিকে নিষ্পলক ভাবে তাকিয়ে আছে রুহী। চোখের কোনে পানি চিকচিক করছে। রুহীর বুক অজানা ভয়ে কেঁপে উঠে।আকাশের জ্বলজ্বলে তারা গুলোর দিকে তাকিয়ে আছে রোয়েন।মা যখন ওকে কোলে নিয়ে তারা দেখিয়ে খাওয়াতো। খাইতে চাইতোনা ও,ভীষন জেদ করতো।বুকচিরে বড় নিশ্বাস বেরিয়ে আসে রোয়েনের।হঠাৎ পাশে তাকাতেই রুহীর চোখে চোখ পড়ে রোয়েনের।মায়াবতী এতক্ষন তাহলে দেখছিলো ওকে।সামনে তাকায় রোয়েন।ভালোবাসার মানুষটাকে আরো বেশি ভালবেসে ফেলেছে রোয়েন।একহাত রুহীর শাড়ীর ভিতর ঢুকিয়ে কোমড়ে রেখে কাছে টেনে নিলো রোয়েন।রুহী রোয়েনের দিকে তাকিয়ে আছে।কোমড়ে ভীষন ঠান্ডা অনুভব হচ্ছে রুহীর।মনে হচ্ছে একদলা বরফ রেখেছে কেউ।রুহী কিছুটা নড়ে উঠতেই রোয়েন আরো জোরে জাপটে ধরে রুহীকে নিজের সাথে।হয়েছেটা কি? সামনে তাকিয়েই প্রশ্ন করলো রোয়েন।
রুহী৷ মাথা নিচু করে বলতে লাগলো,আ আম আমার না ভীষন ঠান্ডা লাগছে বলে রোয়েনের দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকালো।রোয়েন রুহীর দিকে বাঁকা হাসি দিলো।রুহী কিছু বুঝতে পারছেনা হাসির মানে।রুহী কিছুটা চিন্তিত হয়ে রোয়েনের দিকে তাকিয়ে আছে।কি হয়েছে এ এব এভাবে হাসছেন কেন?রুহীর কানের সামনে মুখ নিয়ে এলো রোয়েন ফিসফিসিয়ে বলতে লাগলো,Both of we need worm of our bodies right?বলেই আবার বাঁকা হাসি দিলো রোয়েন।রুহী রোয়েনের দিকে তাকালো।কথাটা রুহীর বুকে ভীষন ভাবে তোলপাড় শুরু করেছে।রোয়েন রুহীর কাছ থেকে একটু সরে এসে রুহীর গলায় ঠোঁট রাখলো।রুহীর শরীর ঝাঁকুনি দিয়ে উঠলো।দাঁড়িয়ে থাকতে দিচ্ছেনা পা দুটো।অবশ হয়ে আসছে।রোয়েন ঠোঁট দিয়ে আঁকড়ে রেখেছে ওরা গলা।রুহীর কাঁপুনি পাগল করে দিচ্ছে রোয়েনকে।গলায় পাগলের মতো চুমো দিচ্ছে রোয়েন।রুহী রোয়েনের চুলের ভিতর হাত ঢুকিয়ে দিয়েছে।চোখ খিচে বন্ধ করে ফেলেছে রুহী। গলা থেকে সরে এলো রোয়েন। রুহীর দিকে চেয়ে আছে।বন্ধ চোখ জোড়া বেয়ে টপটপ করে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে রুহীর।ধীরে ধীরে চোখ খুলে তাকায় রুহী।রোয়েন ওর দিকে পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছে।রোয়েন রুহীর থুতনি ধরে মুখ আরেকটু উঁচু করে ধরলো।রুহীর কপালে চুমো দিলো।রুহীর মায়াবী চোখ জোড়ায় ঠোঁট ছুইয়ে দিলো রোয়েন।রুহী থরথর করে কাঁপছে।
শরীরের ভিতর ঝড় শুরু হয়ে গেছে।রোয়েন রুহীর ঠোঁট নিজের ঠোঁট জোড়া ডুবিয়ে দিলো।পরম মায়ায় ঠোঁট দুটি চুষতে লাগলো রোয়েন।রুহীর হাতের আঙ্গুল ছাড়িয়ে রোয়েনের হাত দুটি রুহীর হাত বেয়ে উপরে উঠতে লাগলো।রুহী বেশ কাছে চলে এসেছে রোয়েন।রুহীর কাঁধ ছাড়িয়ে ওর দুই গালে হাত রাখলো রোয়েন।কিছুক্ষণ পর সরে এলো রোয়েন।রুহী চোখ বন্ধ করে আছে।ওর মুখটি এখন ও উঁচু করা।রোয়েন আবার ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো রুহীর ঠোঁটে।বেশ খানিক্ষন চুমু দিয়ে কোলে তুলে নিলো রুহীকে।রুহী রোয়েনের কাঁধে মাথা লুকিয়ে ফেলেছে।তাঁবুর দিকে পা বাঁড়ালো রোয়েন।রুহীকে শুইয়ে দিয়ে ওর আঁচলের দিকে হাত বাড়ালো রোয়েন।বুক থেকে সরিয়ে দিলো আঁচল টিকে।রুহীর উপর শুয়ে ওর গলায় মুখ ডুবালো রোয়েন।উষ্ণ ভালোবাসায় ভরিয়ে দিলো সারারাত তার মায়াবতীকে।
অবন্তী ঘুম থেকে উঠে বেরিয়ে এলো তাঁবু থেকে।এখন ও কেউ উঠেনি। বেড়াতে এসে এতক্ষন ঘুমিয়ে থাকার মানে হয়না।বাহিরের দৃশ্যটা ভীষন অপরুপ লাগছে।হাত ছড়িয়ে বুক ভরে নিশ্বাস নিলো অবন্তী।রোয়েন দৌড়ে এলো তাঁবুর কাছে।জগিং করতে গিয়েছিলো।রোয়েনের দিকে তাকালো অবন্তী মিসেস উঠেনাই?মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করলো।মাথা নেড়ে তাঁবুর ভিতর ঢুকে পড়লো রোয়েন।রুহীর উলঙ্গ শরীরটাকে চাদর দিয়ে ঢেকে দিলো রোয়েন।রুহীর গালে হাত রাখলো রোয়েন।রুহী উঠো হোটেলে যেতে হবে। গম্ভীর গলায় বলল রোয়েন।রুহী চোখ খুলে রোয়েনের দিকে তাকিয়ে রোয়নের কাছ ঘেষে নিজেকে আড়াল করে নিলো।কেউ নেই।রেডি হয়ে নাও।বাহিরে দাঁড়িয়ে আছি কেউ আসবেনা।উঠে দাঁড়িয়ে রুহীর শাড়ী ঠিক করে দিয়ে বাহিরে গিয়ে তাঁবুর দরজার সামনে দাঁড়ায় রোয়েন।রুহী উঠে বসে। হাই তুলে উঠে দাঁড়ালো রুহী।শাড়ীটাকে ঠিক করে চুল আঁচড়ে নিলো রুহী।তাঁবু থেকে বেরিয়ে খাওয়ার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে চারপাশে তাকায় রুহী।সবাই উঠে গেছে। এখান থেকে হোটেল অতোটা দূরে নয়।কিছুক্ষন গল্প করে গাড়িতে ঢুকে বসলো ওরা।ইমান ড্রাইভ করছে।রুহী অবন্তী আনিলা ইসলাম একসাথে বসেছে। রোয়েন ইমানের পাশের সিটে বসেছে।নুহাশ আর আফজাল সাহেব একসাথে বসে পড়লো।১৫মিনিটের মাঝেই পৌছে গেলো ওরা হোটেলে।সবাই যার যার রুমে চলে এলো।রোয়েন ফ্রেশ হয়ে বের হলে রুহী ঢুকবে।লাগেজ থেকে রোয়েনের শার্ট বের করে খাটের ওপর রাখলো রুহী।
রোয়েন ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে সবসময়কার মতো রুহীর হাতো তোয়ালে ধরিয়ে ওকে কোলে বসালো।রুহী রোয়েনের চুল মুছে দিয়ে উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেল।আরো দুদিন থাকার পর ঢাকায় চলে এলো ওরা।বেশ ভালোসময় কাঁটিয়েছে সবাই।রুহী রোয়েন বাসায় ফিরে এলো।রোয়েন খাটে শুয়ে চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নিচ্ছে।একহাতে রুহীকে জড়িয়ে রেখেছে বুকের মাঝখানটায়। একয়দিন রুহান আসলাম খুব জ্বালিয়েছে রুহীকে কল দিয়ে।রুহান আসলামের নাম মৃত মায়ের কথা মনে করিয়ে দেয় রুহীকে।খাটের ওপর পড়ে থাকা ফোনটা অনবরত বেজেই চলছে।সাইলেন্ট করা ফোন তাই রুহীর খেয়াল হলোনা।বিকেলে ঘুম থেকে উঠে পাকঘরে এলো রোয়েনের কফি বনাতে।ফোনটাকে চুলার পাশে রেখে কফি বানানোয় ব্যাস্ত হয়ে পড়লো রুহী।ফোনে আবার কল আসতে লাগলো।কফি বানানোর একপর্যায়ে ফোনের দিকে চোখ পড়লো রুহীর।মুখে এসে পড়লো একরাশ বিরক্তির ছায়া।কল কেঁটে কফি নিয়ে সিড়ির দিকে পা বাড়ালো রুহী।রোয়েন চুল আঁচড়ে বাহিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।রুহী রোয়েনের টিটেবিলটায় কফি মগটি রাখলো।রোয়েন চিরুনী ড্রেসিংটেবিলের ওপর রেখে কফি মগ টি উঠালো।রোয়েন কফি খেয়ে শেষ চুমুক দিয়ে রুহীর ঠোঁটের ওপর ঠোঁট রেখে কফিটুকু ঢেলে চুমো খেলো।রুহী থেকে সরে এসে কিছু না বলে বেরিয়ে গেলো রোয়েন।রুহী ঠোঁটে হাত রেখে ভাবছে এটা তো শর্তের মধ্যে ছিলোনা।
আবার ও ফোন বেজে উঠতেই কল রিসিভ করলো রুহী।হ্যালো কি প্রবলেম আপনার?
একটু দেখা করতে পারবি আমার সাথে?
কখনো না।
কথা দিচ্ছি এরপর তোকে কখনো কল দিবোনা।
সত্যি তো?
হুম।
বিশ্বাস করতে ভীষন কষ্ট হচ্ছে।
প্লিজ আয়।
কখন আসতে হবে?
কাল সকাল ১০টায়।
ওকে।কাল যেহেতু ক্লাশ আছে।দেখা করা যাবে।
হুম।
ফোন কেঁটে দিলো রুহী।
চলবে