My_Mafia_Boss পর্ব-৪২

0
5383

My_Mafia_Boss পর্ব-৪২
Writer: Tabassum Riana
গাড়িতে ঢুকে বসতেই গাড়ি চলতে আরম্ভ করলো।রুহী ফোন বের করে রোয়েনের নম্বর বের করে বসে রইলো।কল দিবে কি দিবেনা ভাবছে।কল দিতেই কেঁটে দিলো রুহী।ঠিক কিছুক্ষণ পরই রোয়েনের কল এলো রুহীর ফোনে।রোয়েনের নম্বর দেখে রুহী ভয় পেয়ে গেছে।কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা।কল রিসিভ করে কানের সামনে ধরলো রুহী।
হ্যা হ্যা হ্যালো
কি হলো কল দিলে কেন?গম্ভীর কন্ঠে প্রশ্ন করলো রোয়েন।
ন নন না ম মম মানে।
কি না মানে না মানে করছো?যা বলার বলো মিটিং চলছে।
ভ ভভ ভুলে কল চলে গেছে।
হুহ। কল কেঁটে টেবিলের ওপর রাখলো রোয়েন।দলের লোক গুলো রোয়েনের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে।রোয়েন চোখ রাঙ্গাতেই মাথা নিচু করে ফেলল লোকগুলো।রোয়েন ওদের দিকে রাগী চোখে তাকিয়েই উঠে দাঁড়ালো। পকেটে ফোন লাইটার আর বন্দুক টি ঢুকিয়ে নিলো।যাওয়ার সময় তালা মেরে যাবে।রাগী গলায় বলল রোয়েন।তারপর বেরিয়ে গেলো।
রুহী ফোনটা ব্যাগে ঢুকিয়ে বড় একটি নিশ্বাস ফেলল।বাসার সামনে এসে গাড়ি থামায় রোয়েন।সিগারেটে লাস্ট টান দিয়ে গাড়ি থেকে নেমে পড়ে।দরজার সামনে এসে কলিংবেল চাপতেই কিছুক্ষন পর বুকে কারোর নিশ্বাস আর পিঠে দুজোড়া কোমল হাতের ছোঁয়া অনূভব করে রোয়েন।মায়াবতীর ছোঁয়া গুলো খুব বেশি মিস করছিলো সে।
রুহীকে সরিয়ে দিয়ে ভিতরে চলে যায় রোয়েন।রুহী ছলছল চোখে রোয়েনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।
রুমে এসে দরজা চাপিয়ে খাটে বসে পড়ে রোয়েন।বুকের তোলপাড় টা কমানো উচিৎ।রুহীর নৈকট্য রোয়েনের বুকে তোলপাড় শুরুর জন্য যথেষ্ঠ।

রুহী হালকা টোকা দিয়ে রুমে প্রবেশ করে।আলমারি খুলে কাপড় বের করতে যাবে রুহী তখনই রোয়েন রুহীর হাত ধরে ফেলে।দাঁতে দাঁত চেপে রোয়েন বলতে লাগলো আমার কিছুই করতে হবে না তোমাকে।রুহীর চোখ ভরে আসতে চায়।কানে হাত দিয়ে মাথা নিচু করে রুহী।প্লিজ মাফ করে দিন। আর কখনো এমন হবেনা কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলল রুহী।
এসব মেলোড্রামা বন্ধ করো।ধমক দিয়ে বলে উঠে রোয়েন।খাট ছেড়ে উঠে আলমারির থেকে কাপড় বের করে ওয়াশরুমে ঢুকে যায় রোয়েন।রুহী আলমারির সামনে সেভাবে দাঁড়িয়ে চোখের জল ফেলছে।রোয়েন ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এসে রুহীকে দেখতে পায়।রুহীর দিকে এক নজর তাকিয়ে মাথা মুছতে শুরু করে।রুহী পলকহীন ভাবে তাকিয়ে থাকে রোয়েনের দিকে।মাথা মুছার কাজটা তো ওর ছিলো।আলমারি থেকে কাপড় বের করার কাজটা এমন কি জড়িয়ে ধরার কাজটা ও।রোয়েনের কাছে এগিয়ে তোয়ালে ধরতেই রোয়েন অন্যপাশে চলে যায়।রুহী আর সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনা।দৌড়ে বেরিয়ে আসে চোখ মুছতে মুছতে।ছাদে চলে আসে রুহী।রেলিং এর ওপর হাত রেখে দুরের দালান গুলো কে দেখছে ও।রোয়েন নিচে নেমে আসে।কাজের লোকগুলো খাবার সার্ভ করছে।রোয়েন টেবিলে এসে আশেপাশে তাকিয়ে রুহীকে খুঁজতে থাকে।তোমাদের ম্যাডাম কই কাজের লোকগুলোকে প্রশ্ন করে রোয়েন।
একজন বলে উঠলো ম্যাডাম কে ছাদে যেতে দেখলাম।একজন গিয়ে ডেকে আনো।বলো খাবার খেতে আসতে।না করলে আমাকে কল দিবে রাগী গলায় বলতে লাগলো রোয়েন।
একজন কাজের লোক ছাদের দিকে পা বাড়ালো।
ম্যাডাম স্যার খেতে ডেকেছে।
বাহিরের দৃশ্য দেখতে থাকা রুহী বলল যাবোনা।কিছুক্ষন পরই ওর হাত টেনে কোলে উঠিয়ে নিলো রোয়েন।সবসময় ত্যাড়ামি করে কি মজা পাও হুম???চিৎকার করে বলল রোয়েন।রুহী মাথা নিচু করে রোয়েনের শরীরের ঘ্রান নিচ্ছিলো।এসব করলে মনে করোনা সব ঠিক হয়ে যাবে।যা করেছো এর পর থেকে সব ঠিক হওয়ার আশা রেখো না দাঁতে দাঁত চেপে বলল রোয়েন।
(যতোই বলুন না কেন মাফ তো আপনাকে করতেই হবে)ভাবছিলো রুহী।
রুহীকে নিয়ে নিচে নেমে আসে রোয়েন। ডাইনিং টেবিলের চেয়ারে বসিয়ে দিলো রুহীকে।রোয়েন ও বসে খেতে শুরু করলো।
আয়েশা আর অবন্তী পাশাপাশি দাঁড়িয়ে রান্না করছে।নাকটানার শব্দে পাশে তাকায় আয়েশা।অবন্তীর চোখের পানি নাকের পানি এক করে ফেলছে।অবন্তী কিছু হয়েছে?কাল আসার পর থেকেই দেখছি তোমার মন খারাপ।নুহাশ ভাইয়ের সাথে কিছু হয়েছে?
মাথা নাড়ায় অবন্তী।না ভাবি কিছু হয়নি।
তাহলে কাঁদছো কেন?মায়াবী হাসি দিয়ে জিজ্ঞেস করলো আয়েশা।
না ভাবি এমনি।বাসার কথা মনে পড়ছে তো।
ওহ।প্রথম প্রথম এমন হয়ই।পরে সব ঠিক হয়ে যাবে।মেয়েদের জীবন টাই এমন।একসময় না একসময় মা বাবা কে ছেড়ে চলে আসতে হয়ই।বলে বড় একটি নিশ্বাস ফেলল আয়েশা।
মায়ের কাজে খুব কষ্ট পাচ্ছিলো অবন্তী।আয়েশার কথায় কোথাও যেন একটু শান্তির ছোয়া পেয়েছে ও।চোখ মুছে আয়েশার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে অবন্তী।আয়েশাও হালকা হেসে রান্নায় মনযোগ দিলো।
রোয়েন খাটে আধশোয়া হয়ে আছে।রুহী রোয়েনের রুমের দরজা উঁকি দিয়ে চলে আসতে নিলে রোয়েনের ডাক পড়লো।
এখানে এসে শুয়ে পড়ো কঠিন গলায় বলল রোয়েন।
রুহী চুপচাপ এসে পিছনে ফিরে শুয়ে পড়লো।ভাবছিলো রোয়েন হয়ত বুকে টেনে নিবে।কিন্তু এমন কিছুই হলোনা।রুহী ঘুমিয়ে পড়লো।সন্ধ্যায় রিংটোনের আওয়াজে ঘুম ভাঙ্গে রোয়েনের। ঘুমঘুম চোখে ফোন রিসিভ করে কানে ধরে।
ঐপাশ থেকে বলে উঠে কি মিঃরোয়েন আহমেদ ভালোই মজায় আছো?
রোয়েনের চোখের ঘুম চলে যায়।মুখ কঠিন হয়ে উঠে।সাহস হলো কি করে কল দেয়ার?রাগী গলায় বলে উঠে রোয়েন।
ওহ প্লিজ রাগ করোনা। খুব আকাশে উড়েছো এতোদিন। এবার আমার পালা।তোমার ধ্বংস তোমাকে ডাকছে।Get ready for your destruction.
I will kill you bloody scoundrel চিৎকার করে বলে উঠে রোয়েন।ফোন কেঁটে যায় ঐপাশ থেকে।
চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে