My_Mafia_Boss পর্ব-৩৮
Writer:Tabassum Riana
রুহীর সামনে কিছু খাবার নিয়ে রাখলো রায়ান।ছেলে মানুষ বেশি কিছু করতে পারিনি।খেয়ে নিও ওকে?বলে চলে গেল রায়ান।রুহী প্লেটের দিকে তাকালো রুটি আর ডিম ভাজা।রুহী প্লেট সরিয়ে দিতেই রোয়েনের কথা মনে পড়লো। কি হলো খাচ্ছো না কেন?খা খাচ্ছি তো বলেই স্যুপ মুখে দিলো রুহী।চোখ বেয়ে দুফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো রুহীর।খুব মনে পড়ছে তাকে।কিন্তু সে তো ভালোবাসেনি।কিনে নিয়েছে আমাকে বলেই মুখে হাত চেপে কেঁদে দিলো রুহী।রুটি গুলো সরিয়ে রেখে শুয়ে পড়লো রুহী।চোখের পানিতে বালিশের কোনা ভিজে যাচ্ছে।বুকটা যেন কেউ দুমড়ে মুচড়ে দিয়েছে।কাথা দিয়ে ঢেকে দিলো কচ্ছে রোয়েন।জ্বলজ্বলে চোখ গুলো থেকে অাগুন ঝরছে।রাগের মাঝে ও গাল বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়া বন্ধ হয়নি।হাতের বোতল টাকে জোরে চেঁপে ভেঙ্গে দিলো রোয়েন।হাতের আঙ্গুলের ফাঁকা দিয়ে রক্ত ঝরছে। সেখানে কোন খেয়াল নেই রোয়েনের।পুরো খেয়াল আকাশের চাঁদটির দিকে।কারন প্রতি রাতে মায়াবতীকে দেখে চাঁদ দেখতো রোয়েন।কারন ওর মায়াবতী চাঁদ থেকে কোন অংশেই কম ছিলো না।কিন্তু কেন করলো রুহী এমনটা?ভাবছে রোয়েন।ধীরে ধীরে কপালের রগ খাড়া হয়ে গেল রোয়েনের।বোতলের বাকি অংশটুকু জোরে ছুঁড়ে মারলো গুলো চিৎকার করছে বাহির থেকে।চলে যাও তোমরা বেঁচে আছি আমি। চিৎকার করে বলল রোয়েন।পাশে তাকাতেই বিছানার দিকে নজর পড়লো রোয়েনের।নাহ আর কিছু ভাবতে পারছেনা রোয়েন।টলতে টলতে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লো।বিড়বিড় করে বলল রুহী যা করেছো এর শাস্তি পেতেই হবে।কথাটি বলে ঘুমিয়ে তলিয়ে গেল রোয়েন।
পরদিন সকাল রুহীর ঘুম ঘুম চোখে পাশে হাতড়াতে লাগলো।বিছানা খালি দেখে চোখ খুলে রুহী।পুরো অচেনা রুমে অচেনা বিছানা সবকিছুই অচেনা।বুক ধুক করে উঠলো রুহীর।ধড়ফড় করে উঠে বসলো।আশেপাশে মাথা ঘুরিয়ে রোয়েনকে খুঁজতে লাগলো।সে তো নেই।তাকে রেখে চলে এসেছে রুহী।বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো রুহী।ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এলো।রায়ানের বাবা মার এতক্ষনে চলে আসার কথা।চুল মুছতে মুছতে রুম থেকে বেরিয়ে এলো রুহী। পুরো বাসা খালি। কেউ নেই রুহী ছাড়া।পাকঘরে এসে দেখলো নাস্তা রেডি করা।নাস্তার প্লেট নিয়ে টেবিলে এসে বসলো রুহী।
টেবিলে বসে আছে রোয়েন।সামনে কফি রাখা আর স্যান্ডুইচ।নিউজপেপারে চোখ বুলাতে বুলাতে স্যান্ডুইচে কামড় বসালো রোয়েন।হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো।নিউজপেপার দেখতে দেখতেই কানে ফোন রাখলো।স্যার ম্যামরে পাওয়া যায় নাই।নিউজ পেপার থেকে চোখ সরালো রোয়েন। যেখান থেকে পারো নিয়ে আসো।ওকে চাইই আমার।রোয়েনের হাত থেকে এতো সহজে ছাড়া পাবেনা রুহী।বলেই ফোনটা জোরে টেবিলে রাখলো রোয়েন।বিকেলে রায়ান ফিরে এলো।রুহীর রুমে এসে খাটের ওপর বসলো রায়ান।তোমার বাবা মা আসেনি যে এখনো?আমার খালা খুব অসুস্থ রোয়েন বলে উঠলো।ওহ রুহী মাথা নিচু করলো।ভেগে আসলে কারনটা জানতে পারি?রায়ান জিজ্ঞেস করে উঠলো।
৩দিন পর
নাহ এমনি কিছুনা মাথা নিচু করে বলল রুহী।কলিংবেল বেজে উঠতেই রায়ান দরজা খুলতে চলে গেল।পাঁচ ছয়জন লোক এসেছে।রায়ান রুহীর রুমের দরজা সামনে এসে বলল কিছু ফ্রেন্ড এসেছে না জানিয়ে।তোমার কোন সমস্যা নেই তো?রুহী মাথা নাড়লো।লোক গুলো রুহীর রুমে হনহনিয়ে ঢুকে পড়লো।কেমন করে রুহীকে সবাই দেখছে।তাদের মধ্যের একজনের চাহনি খুব বেশি অদ্ভুত মনে হলো রুহীর।লোকটি ফোনে কি যেন দেখছে আবার রুহীর দিকে তাকাচ্ছে।লোকগুলোর সাথে রায়ানের বেশি একটা কথা হলোনা।নাস্তা ও দিলোনা রায়ান।কিছুক্ষন পর লোক গুলো একে একে চলে গেল।
বিছানায় শুয়ে আছে রোয়েন।আজ সারাদিন ঘর থেকে বের হয়নি।চোখের ওপর হাত রেখে শুয়ে আছে রোয়েন।বিরক্ত লাগছে ওর।হঠাৎ ফোনের শব্দে চোখের ওপর থেকে হাত সরালো রোয়েন।হ্যালো হ্যা রাসেল কোন খবর পেলি?গম্ভীর গলায় প্রশ্ন করলো রোয়েন।জি স্যার।শোয়া থেকে উঠে বসলো রোয়েন।কি খবর জলদি বল।আনিলা বেগমের ভাইয়ের পোলার কাছে ম্যাডাম।তুই খবর পাইলি কই?রোয়েন ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো।স্যার আমার বন্ধু সজল বলল ওই রায়ান নাকি রুহী ভাবিরে বেঁচবো তাই গেছিলাম ঘটনা সত্য কিনা জানার জন্য।গুড জব গম্ভীর গলায় বলল রোয়েন।(রুহী এবার তোমাকে আমার হাত থেকে কেউ বাঁচাতে পারবেনা)।স্যার কিছুগব বলেন রাসেল বলে উঠলো।হুম রায়ানকে বলো তুমি কিনবে রুহীকে।আর দুজন মেয়েকে ওর কাছে পাঠিয়ে দাও রুহীর যেন কোন ক্ষতি না হয়।জি স্যার। ফোন কেঁটে দিয়ে বিছানার ওপর ছুড়ে মারলো রোয়েন।রুহীর রুমে দুজন মেয়ে এলো।একটা মেয়ে রায়ানকে বলল কেমন আছে ওনি রুহীকে দেখিয়ে প্রশ্ন করলো।ভালো না কিছু খায়না,সারাদিন কান্না করে, রুম থেকে ও বের হয়না।
ওকে আমরা আজ থেকে ওনার খেয়াল রাখবো মেয়ে দুটি রায়ান কে বলল।রায়ান কিছু না বলে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।মেয়ে দুটো রুহীর পাশে বসে পড়লো।রুহী নিঃশব্দে চোখের পানি ফেলছে।খেয়েছো কিছু একটি মেয়ে জিজ্ঞেস করে উঠে রুহীকে। কিছু খাবোনা ভালো লাগছেনা বলে অন্যদিকে ফিরে শোয় রুহী।একটি মেয়ে ভিডিও কলে রোয়েনকে কল দিলো।
ইমো তে কল আসতেই রিসিভ করে রোয়েন।ওর দলের একটি মেয়ের কল এসেছে।ফোন হাতে নিয়ে কল রিসিভ করতেই রুহীকে দেখতে পেলো রোয়েন।অপর মেয়েটি রোয়েনকে রুহীর অবস্থা সম্পর্কে মেসেজে জানান দিচ্ছে।বেশ কিছুক্ষন রুহীকে দেখলো রোয়েন।তারপর ফোন কেঁটে দিয়ে বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো।কি মনে করে ফোন হাতে নিয়ে কাকে যেন কল দিলো।
হ্যালো স্যার আশিক বলতেছি।
হ্যা আশিক।কাল রাতে রেডি থাকবি।রায়ান যেখানে রুহী সহ অন্য মেয়েদের নিলামে উঠাবে সেখানে যাবো।রুহী সহ আরো অনেক মেয়েকে বাঁচাতে হবে।
জি স্যার।
রোয়েন ফোন কেঁটে খাটের ওপর রাখলো।
চলবে