My_Mafia_Boss পর্ব-১২

0
6307

My_Mafia_Boss পর্ব-১২
Writer:Tabassum Riana

রোয়েন কাপটি নিচে ছুড়ে মারতেই ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে গেল কাপটি।আজ নিয়ে যাবো ওকে।আর কখনো আসতে দিবোনা। কারন বিয়ের পর থেকে আমি ওর সব হয়ে যাবো।রোয়েন দ্রুত হেঁটে রুহীর রুমে এলো।ব্যাগ নিয়ে বসে আছে রুহী।চোখ মুখ লাল হয়ে আছে ওর।কাপড় গুছাও নি কেন? এখন ও দাঁতে দাঁত চেপে জিজ্ঞেস করলো রোয়েন।

রুহী উঠে আলমারি খুলতে গেলে রোয়েন ওর হাত ধরে নিজের দিকে ফিরায়।রুহীর কোমড় জড়িয়ে নেয় এক হাতে।রুহীর পুড়ে যাওয়া হাতে চুমু খায় আলতো করে।রুহী কিছু বলতে পারছিলো না। রোয়েন একহাত রুহীর গালে রাখে।রুহীর চোখ বুজে আসতে চায়।রুহীর কপালে চুমু খেয়ে ছেড়ে দেয় রোয়েন। বসো আমি গুছাই।আ আপনি ব বসুন আ আমি ক করছি।

রোয়েন চোখ বড় করে রুহীর দিকে তাকাতেই খাটে বসে পড়ে রুহী। রোয়েন আলমারি খুলে হামা কাপড় বের করে লাগেজে ভরে নেয়।রুহীর বই খাতা গুছিয়ে ব্যাগে নিয়ে নেয়।ওর কসমেটিকস সব কিছু গুছিয়ে নেয়।হয়েছে রুহীর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে রেহান?

আমার রেডি হতে হবে।

ওহ।ওকে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও।বেশিক্ষন থাকবোনা ওকে?(রাগী গলায়)

হুম।রোয়েন বের হতেই রুহী জামা পাল্টে নেয়।চুল গুলোকে আছড়ে বেরিয়ে যায় রুম থেকে।মামী আগের মতোই দাঁড়িয়ে আছে।সেদিকে তোয়াক্কা না করে রোায়েনের কাছে আসে রুহী।

রুহী আসতেই ওর হাত ধরে ঘর থেকে বের হতে নিলে আফজাল সাহেব ঘরে ঢুকার সময় দেখে নেয়।আঙ্কেল রুহী কে নিয়ে যাচ্ছি আমি।বিয়ে পর্যন্ত আমার সাথে থাকবে।

আফজাল সাহেব কিছু বুঝে উঠতে পারছেন না।কি হচ্ছে এসব?রুহী কি হলো মা কই যাচ্ছিস?.

জানিনা মামা নিচে তাকিয়ে বলতে থাকে রুহী।

ইচ্ছে হলে দেখতে আসবেন ওকে।আন্টিকে যেন আমার বৌয়ের আশেপাশে না দেখি রাগী গলায় বলল রোয়েন।

রোয়েনের মুখে বৌ কথাটি রুহীর কানে যেন ঝংকার তুলল।পুরো শরীরে ঠান্ডা বাতাস বয়ে গেল।অবাক চোখে তাকিয়ে আছে রোয়েনের দিকে।কি চায় সে আসলে ঐদিন লোক গুলো কে মারলো, এতিমখানার সবাইকে সাহায্য করলো আবার আমাকে বিয়ে করতে চায়।কি আছে ওনার মনে কে জানে?

আফজাল সাহেবের উত্তরের অপেক্ষা না করে রুহীর হাত ধরে বেরিয়ে গেল এলো রোয়েন।গাড়ির ওপর খুব জোরে হাত দিয়ে বাড়ি দিলো।রুহী চুপচাপ রোয়েনের পিছে দাড়িয়ে দেখছে রোয়েনকে।একেক টা রুপ এ লোকের।কিছুক্ষন অপেক্ষা করে দরজা খুলে রুহী কে বসতে দিলো রোয়েন ড্রাইভিং সিটের পাশের সিটটায়।রুহী বসে পড়লো চুপচাপ।রোয়েন ও বসে পড়লো কিন্তু গাড়ি স্টার্ট দিলোনা।কিছুক্ষন চুপ থেকে রুহীর দিকে তাকিয়ে বলল আটকাতে পারবোনা বলে রুহীর দুগালে দুহাত রেখে ওর ঠোঁটে নিজের ঠোঁট চেপে ধরলো রোয়েন।রুহীর ঠোঁটের আশেপাশের জায়গা গুলোয় ভালাবাসার পরশ একেঁ দিতে শুরু করলো রোয়েন।

এতো প্রশান্তি পাবে ভাবতেই পারেনি রুহী।এ কেমন অনুভূতি।নিজেকে রোয়েনের মাঝে চিরতরে গুম করে দিতে মন চাইছে ওর।মানুষটার ঠোঁটের ছোঁয়া পাগল করে দিচ্ছে ওকে।ভালবাসা গুলি গভীর থেকে গভীরতর হতে লাগলো।রুহী রোয়েনের শার্ট খামচে ধরেছে।রোয়েনের হাত রুহীর পিঠ ছাড়িয়ে কোমড় জড়িয়ে ধরেছে।শেষ মুহূর্তে রোয়েন রুহীর ঠোঁটে দু তিনটে চুমু দিয়ে সরে এলো।জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে দুজনে।রুহীর মন চাইছে মাটি ফাঁকা হয়ে যাক ও ঢুকে পড়বে।চোখ বন্ধ করে মাথা নিচু করে বসে আছে রুহী।
রোয়েন আর রুহীর দিকে তাকাতে পারলো না।গাড়ি স্টার্ট দিলো সে।গাড়ি চলছে অজানার পথে।রুহী জানালা দিয়ে বাহিরে দেখছে।রোয়েন এক নজর রুহীকে দেখে গাড়ি চালানোয় মন দিলো।কিছুক্ষন পর রোয়েনের বাসায় পৌছে গেল।পাশে তাকাতেই দেখে রুহী ঘুৃমোচ্ছে। রুহীর কপালে হাত রাখতেই রোয়েন বুঝলো জ্বর বেড়েছে।রুহীকে কোলে তুলে ঘরের দিকে এগোলো রোয়েন।ভিতরে এসে কাজের লোক গুলোকে মাল পত্র ঘরে আনতে বলে সিড়ি বেয়ে উঠে এলো উপরে।রুহীকে রোয়েনের রুমের পাশের রুমটায় শোয়ালো রোয়েন।গায়ে কম্বল টেনে কপালে চুমো একেঁ দিলো ও।উঠে দাঁড়িয়ে একটা নম্বরে কল দিতেই অপরপাশে কেউ কথা বলে উঠলো।ইয়েস ডক্টর রোয়েন বলছি।জি স্যার বলুন(ডাক্তার)।আমার বাসায় আসতে হবে এক্ষুনি (রোয়েন)।জি স্যার এক্ষুনি আসছি।ফোন কেঁটে রুহীর পাশে বসে একটি হাতে নিজের হাতের মাঝে নিলো রোয়েন।

কিছুক্ষন পর ডাক্তার লিমন রুমে আসলেন।স্যার এসেছি।

প্লিজ ডাক্তার ওকে দেখুন খুব জ্বর এসেছে ওর( রুহীকে দেখিয়ে)

জি স্যার দেখছি।ডাক্তার লিমন রুহীর জ্বর চেক করলো।অনেক পানি ব্যাবহার করেছেন ওনি।ওনার মনে হয় ঠান্ডার সমস্যা আছে।একটু খেয়াল রাখবেন।

হুম।ডাক্তার উঠে রোয়েনের পাশে দাঁড়ালো।

স্যার ওনাকে তো চিনলাম না।

আমার ওয়াইফ হয়েছে?নাউ ইউ ক্যান গো ধমক দিয়ে বলল রোয়েন।

জি স্যার।ডাক্তার বেরিয়ে গেলেন।রোয়েন আর অপেক্ষা না করে নিজের রুমে চলে আসে।দলের একজন লোককে কল করে।
হ্যালো শাকিল(রোয়েন)

জি স্যার।

শুনো একটা সিসিক্যামেরা লাগবে।

জি স্যার এক্ষুনি পাঠাচ্ছি।

হুম।আর শোন তোমরা ডেমরার জায়গাটা ঘেরাও করো।শুনলাম তারা সেখানে হামলা করবে।

জি স্যার।আপনি কখন আসবেন?

সময় হলে চলে আসবো।কাজে মনযোগ দাও।

জি স্যার।সিসিটিভি ক্যামেরা এক্ষুনি পাঠাচ্ছি।

হুম।বায়।ফোন টি টেবিলে রেখে ফ্রেশ হতে চলে গেল রোয়েন।ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে রুহীর রুমে আসতেই দেখলো এখনো ঘুমুচ্ছে ও। রুহীর পাশে এসে বসলো রোয়েন। ওর কপালে হাত রাখলো জ্বর কমে গেছে।রুহীকে আস্তে আস্তে করে ডাকতে শুরু করলো রোয়েন।রুহী!!!! উঠো।রুহী!!!!!কি হলো উঠো?

কারোর ডাক শুনে ঘুম ভাঙ্গলো রুহীর।মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা হচ্ছে ওর।চোখ অল্প অল্প করে খুলে রোয়েন কে দেখতে পেল রুহী।আবার চোখ বন্ধ করতেই ওর হাত টেনে ধরলো রোয়েন।

উঠো!!! কিছু খেয়ে নাও ধমক দিয়ে বলে উঠে রোয়েন।

রুহী চোখ খুলে কাঁদো কাঁদো চোাখে রোয়েনের দিকে তাকালো।

দেখি উঠো।রুহির পিঠে এক হাত আর আরেক হাত দিয়ে রুহীর একটি হাত ধরে উঠিয়ে বসালো রোয়েন।রুহীর মাথা রোয়েনের কাঁধে ঢলে পড়লো।রুহ……..রুহীর মুখের দিকে তাকিয়ে আর ডাকতে পারলোনা রোয়েন।রোয়েনের কাঁধে ঘুমিয়ে পড়েছে ওর মায়াবতী। ডাকতে গিয়ে ও পারলো না রোয়েন। ঘুমে থাকা রুহীকে আরো বেশি মায়াবী লাগছে। ওর গাল দুটোয় সূ্র্যের আলো পড়েছে।রোয়েন রুহীর গালে আলতো করে হাত ছুইয়ে দিতেই কেমন জানি কেঁপে উঠলো রুহী।আস্তে করে বালিশের ওপর শুইয়ে দিলো রুহীকে রোয়েন।
স্যার একজন কাজের লোক দরজায় এসে ডাকলো।
কি হলো(রোয়েন)?
একজন লোক এসেছে।
ওহ।আসছি আমি।রুহীকে রেখে নিচে এলো রোয়েন।শাকিল ক্যামেরা এনেছো?
জি স্যার।
শাকিলের হাত থেকে ক্যামেরাটি নিলো রোয়েন।যাও।
জি স্যার। বেরিয়ে গেল।
চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে