MEANINGLESS LIFE PARTNER Part-13

0
1885

#MEANINGLESS_LIFE_PARTNER
পর্ব:13
#লেখিকা_Arshi_khan

(WAITING FOR A NEW JOURNEY:একটি নতুন যাত্রার জন্য অপেক্ষা করছি)

আপনার জন্য যখন সবচেয়ে সুখের সময় চলতে থাকে সেই সময়টা যে ঠিক কত্তটা তাড়াতাড়ি চলে যায় তা আপনি ভাবতেও পারবেন না।দেখতে দেখতে আমাদের বিয়ের দুইমাস বিশদিন পূরণ হল।এদিকে ফেমেলির কাউকে এখন ও বলা হয়নি আমি যে আবার সিঙ্গাপুর যাব।ভিসা নিয়ে দেশে এসেছিলাম। আগেই বলেছি বোনের বিয়ে উপলক্ষে এসেছি।কিন্ত ভিসা নিয়ে আসব কেউ যানে না।সবাই ভেবেছে এবার এখানেই থেকে যাব।আর যাবনা।কিন্ত এসেই যে রুতকে বিয়ে করার জন্য মন উতলা হয়ে উঠবে বুঝতে পারিনাই।ভিসা এর জন্য দুই লক্ষ টাকা খরচ করে এসেছি।শুধু টিকিট কাটার অপেক্ষা।এদিকে মামা বারবার তাড়া দিচ্ছেন সিঙ্গাপুর যাওয়ার জন্য। কারণ আমার পোস্টে আমি যাকে রেখে এসেছি তার ও দেশে ফেরার সময় এসেছে।তাই আমার পনের থেকে বিশ দিনের মধ্যেই সিঙ্গাপুর ফিরতে হবে।কিন্তু আব্বু চাইছিল আমি দেশে ব্যবসা করি।অবশ্য আমার যাওয়ার কথা জানে না বলেই বলেছে।কিন্ত আর সবাই কে যেমন তেমন বোঝাতে পারলেও রুত কে মানাতে সময় লাগবে।কিন্ত আমার যে যেতেই হবে।কারণ আমি যে ভিসা তে সিঙ্গাপুর গেছি ঐ ভিসাতে আমি প্রায় আঠারো বছর সিঙ্গাপুর এ যাতায়াত করতে পারব নিমেশে।যদিও এত্ত বছর থাকার ইচ্ছে নেই।আর ব্যবসা সম্পর্কে আমার ধারণা 0%।তাই এখন আমি আরো দুই-তিন বছর সিঙ্গাপুর এ থেকে আমাদের ভবিষ্যত এর চিন্তা করতে পারি।এখন আসল কথা হল টিকিট কাটার আগে কাউকে জানানো জাবেনা।টিকিট কেটে পুরো পরিবার কে এবং রুতকে জানাব।আর আমি চাইনা রুত এত্ত আগের থেকেই কষ্টে থাকবে।(আয়ান বারান্দায় বসে মনে)

আয়ান এই আয়ান শোন না।(রুতবা বারান্দায় এসে আয়ান এরহাত ধরেই)

হ্যা রুত বল।(আয়ান হতভম্ব হয়ে)

কিছু ভাবছিলে?(রুতবা ব্রু কুচকেই)

নাতো এমনেই। বল কি জন্য ডাকছিলে?(আয়ান রুতবার হাত টেনে কাছে এনে)

আমার পরীক্ষার রুটিন দিয়েছে কলেজ থেকে।আমার বান্ধবীর কল এসেছিল।আর চারদিন বাকি পরীক্ষার।তাই ভাবছিলাম পরীক্ষার পনের দিন বাড়িতে গিয়ে থাকব।তুমি কি বল?(রুতবা উতলা কন্ঠে)

পনের আর চার মানে ঊনিশ দিন ওর থেকে দূরে থেকে আবার বিদেশ চলে যেতে আমি পারব কি করে?আর ও এখানে থাকলেও টিকিট এর জন্য ঢাকা যেতে পারব না।(মনে মনে)
এত্ত দিন পরীক্ষা হবে?(আয়ান মন খারাপ করে)

হুম।কি করব বল?তুমি যদি চাও আমি পরীক্ষা আর দিব না।তাহলে আমার কোন জোর নেই।তোমার ইচ্ছা এই সব ।(রুতবা আয়ান এর হাত শক্ত করে ধরে)

পড়া চোর কোথাকার?খবরদার এমন কিছু বলেছ তো।আমার সপ্ন পূরণ করতে পারি নাই। কিন্ত আমি চাই তুমি পড়া কমপ্লিট কর।নিজের জন্য একটা যোগ্য সার্টিফিকেট তৈরি কর।যেন ভবিষ্যত এ কিছু করতে পার।তা না করে এখন পরীক্ষার সময় মজা করছ।কালকেই তোমাকে বাড়ি দিয়ে আসব। সব গোছাও।(আয়ান রাগি সুরে)

আসছে আমার বিদ্যা সাগর।ঢং নিজেও পড়ার জন্য পাগল ছিল আমাকেও বানাবে।আব্বুকে বলে পড়ালেখা জীবনের থেকে বিদায় করতে চাইছিলাম টেন এই।কিন্ত এই খারাপ বিদ্যা সাগর এর জন্য এখন ও আমার এই পড়া লেখা করতে হচ্ছে। দূর ভাল লাগে না।এই পরীক্ষার প্যারা শেষ কবে হবে আল্লাহ মালুম। কালকের থেকে আবার পড়াতে মন দিতে হবে।ফেল করলে শশুর বাড়িতে মুখ দেখাতে পারব না।এদিকে তিনমাস হল ভাল মতো পড়ালেখা করা হয়না।তাই এই চারদিনে বই পড়ে নিজেকে পাগলি বানাইতে হবে।নাহলে নির্ঘাত ফেল মারব।এসব ভাবনার মধ্যেই নিচে চলে আসছি।নাহলে খারাপ লোকটার এখনি আমাকে পড়ানোর কিড়া উঠত।রাতের আগে তোমার ধারে কাছেও যাচ্ছি না খারাপ লোক।সারাদিন আম্মুর সাথেই বসে বসে টুকটাক কাজ করলাম।দুপুর এ খাওয়ার পর ও উপরে না গিয়ে আম্মুর রুমে ঘুমাতে গেছি বিকালে।আব্বু ঢাকা তে গেছে কি একটা কাজে।আম্মুর সাথে থাকার কারণে আয়ান ডাকতে এসেও ফিরে গেছে।সন্ধার সময় চা নাস্তা ও খেলাম তারপর টিভি দেখতে বসলাম।রাতের খাবার পর সব গুছাতে লাগলাম আম্মুর সাথে।(রুতবা মনে মনে)

কিরে আয়ান এর সাথে ঝগড়া করেছিস নাকি?(আম্মু রুতবার হাত ধরেই)

নাতো।(রুতবা কাজ বন্ধ করে)

তাহলে সারাদিন রুমে না গিয়ে আমার পেছনে পেছনে ঘুরলি কেন?(আম্মু ব্রু নাচিয়ে)

এমনি।যাও তো তুমি ঘুমাতে।এমনেও কালকে যাচ্ছি আব্বুর বাড়ি। তাই তোমার সাথে সময় কাটালাম।এখন তুমি গিয়ে রেস্ট কর।আমি এগুলো ধুয়ে ঘুমাতে যাব।(রুতবা আম্মুর উদ্দেশ্য)

এখনি চুপচাপ রুমে যাবি।এসব আমি করে নিব।চারদিন পর পরীক্ষা এখন কে বলেছে তোকে কাজ দেখাতে। (আম্মু রুতবার কান ধরে)

ছাড় লাগছে।(রুতবা চোখ বন্ধ করে)

যা রুমে গিয়ে ঘুমাবি।সকালে উঠে ভাইজান এর বাড়ি যাবি।আর শোন ভাল মতো পড়ালেখা করবি।যদি ফেল করিস ঠেং ভেঙ্গে দিব।আর আয়ান এর সাথে রাগারাগি হলে বল ওকে ডেকে বকে দিচ্ছি। কিন্ত তোর যদি দোষ থাকে তাহলে গিয়ে ওর রাগ ভাঙ্গাবি।নতুন বিয়ে হয়েছে কোথায় দুজন মিলেমিশে থাকবে তানা টম এন্ড জেরির মত ঝগড়া করে বেড়ানো হচ্ছে। (আম্মু রুতবার উদ্দেশ্য)

তোমার ছেলে আর তুমি এক খেতের এই আলু।দূর ভাল লাগেনা।যেখানেই যাই পড়ার গান এই শুনতে হয়।
বলেই দৌড়ে ওপরে চলে এসেছি।কে এইবা চাইবে আবার কান মলা খেতে।রুমে ঢুকে দেখি আয়ান ঘুরে শুয়ে আছে।ঢং আর ঢং!যাই ঘুমাই।এ ছাড়া আর কিইবা করব।গেট লক করে লাইট অফ করে কানার মতো খাট খুঁজে খাটের এক সাইটে শুয়ে পড়লাম। শুতে দেরি ঐ খারাপ ছেলের ঝাপটে ধরতে দেরি হয়নি।
কি সমস্যা?(রুতবা আয়ান এর বুকে হাত দিয়ে)

চুপি চুপি বলি তোমায় প্রিয়তমা
আমায় ছেড়ে যেন দূরে যেওনা!!
তুমি আছ আমার হৃদয়ের একদম গহীন বনে
তোমায় ছাড়া থাকতে পারবোনা এ ভূবনে।
কেন বোঝ না?(আয়ান রুতবার কপালে কপাল ঠেকিয়ে)

আসছে আমার কবি মশাই।সরো তো আমি ঘুমাব। (রুতবা মুখ ভেংচি কেটে)

কালকে যাচ্ছ উনিশ দিনের জন্য। এখন ছেড়ে রাখলে চলে বল?(আয়ান রুতবার ঠোঁটের কাছে এসে)

কেন তুমি কি দিয়ে চলে আসবে?(রুতবা অবাক চোখে)

হ্যা। তা নাহলে তুমি রাতে আমার জন্য ঘুমাতে পারবেনা।সকালে পরীক্ষার হলে পরে পরে ঘুমাবে।আর ফেল করলে আমার দোষ দিবে তাতো হবে না রুত পাখি।তাই আজকে আর কালকেই আমার অনেক দিনের আদর ভালোবাসা গুলো আমি চাই।(আয়ান রুতবার উদ্দেশ্য)

আসছে আমার সব আদর নিতে। দিবনা যাওতো ঘুমাও।(রুতবা মুখ ঘুরিয়ে)

সত্যি তো?(আয়ান রুতবার মুখ নিজের দিকে ঘুরিয়ে)

হুম সত্যি। (চোখ বন্ধ করেই রুতবা)

দেখা যাক। (মুচকি হেসে রুতবাকে জড়িয়ে আয়ান)

পরের দিন সকাল এই আমরা রুতদের বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা হলাম। যাওয়ার পর সারাদিন বেশ জামাই আদর খেয়ে সন্ধার নাগাদ চলে এসেছি।ওর পরীক্ষা এখন হওয়ার কারণে আমার ও একটা সুযোগ আসল।খুব কষ্ট ও লাগছে সবাই কে ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবতেই।কিন্ত কি করব ভিসার জন্য দুই লক্ষ টাকা দেওয়া ছিল তাই মন না চাইলেও যেতেই হবে।আগের সাত বছর বোনদের বিয়ে,নতুন বাড়ির ও কিছু জায়গা কিনেই শেষ হয়ে গেছে।ব্যাংকে খুব অল্প টাকাই জমেছে।আর এই টাকা দিয়ে ব্যবসা করা সম্ভব নয়।তাই আরো দুই-তিনবছর সিঙ্গাপুর থাকলে ভবিষ্যত এর জন্য আমার আর কোন টেনশন থাকবেনা।পরেরদিন সকালে যখন আম্মু আব্বুকে আবার যাওয়ার কথা বললাম। তারা খুব অবাক হয়ে গেছিল। আম্মু তো যেতে দিতে একদম রাজি নয়।পরে টাকা জমা দেওয়ার কথা বলে ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা হয়ে গেছি।মেডিক্যাল টেস্ট, ভিসা প্রসেসিং ও টিকিট কাটলাম দশদিন লাগিয়ে। আর পনের দিন পর এর টিকিট পেয়েছি।টিকিট নিয়ে বাড়ি ফিরলাম।আম্মুর মন ভিষন খারাপ। আম্মুর সাথে রাতে কথা বলে কালকে রুত এর বাড়ি যাওয়ার কথা বললাম। আম্মু ও রাজি হয়ে গেল।রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে চলে আসলাম। এই দশদিন আর যাওয়া হয়নি।কল এ কথা বলেছি বেলায় বেলায়।কালকে না বলেই যাব সারপ্রাইজ দিতে।আর মাত্র নয়দিন বাকি ওর পরীক্ষার শেষ হবে।তাই ভাবলাম বাকি নয়দিন ওর সাথে ওদের বাড়ি থাকব।দশতম দিন বাড়ি ফিরে ওকে জানাব যাওয়ার কথা।নাহলে মন খারাপ হলে পরীক্ষা খারাপ হবে।এমনে পড়া চোর।
যেই ভাবা সেই কাজ পরের দিন সকাল এই চললাম শশুর বাড়ির উদ্দেশ্য। রুত গেছে পরীক্ষা দিতে।এই সময় ছোট সালার সাথে ওর স্কুল এর ব্যাপারে কথা বললাম। আংকেল এর সাথে কাজ এর কথা বললাম। দুপুর এর দিকে রুত বাড়ি ফিরে আসল।আমাকে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়েই ছিল কত্তক্ষন। আমি ওর পেছনে ওর রুমে চলে গেলাম।
কি হল আমার রুত পাখির?মন খারাপ?পরীক্ষা খারাপ হয়েছে?(আয়ান রুতবাকে পেছনের থেকে জড়িয়ে)

বললে না কেন আজকে আসবে?(রুতবা মুখ ভার করেই)

সারপ্রাইজ দিলাম আমার রুত পাখিকে।আর একটা কথা যত্তদিন তোমার পরীক্ষা শেষ না হবে ততদিন আমি এখানেই তোমার সাথে থাকব।এখন জলদি ফ্রেস হয়ে আসতো রুত পাখি।খুব খুদা লেগেছে।তোমার জন্য না খেয়ে বসে আছি।(আয়ান রুতবার কপালে একটা চুম্বন করে)

কেন না খেয়ে বসে আছ?আম্মু তোমাকে না খাইয়ে বসিয়ে রাখছে।দাড়াও আমি দেখছি।(রুতবা বলেই বের হতে নিবে)

আরে বোকা আন্টি তো সেই এক ঘন্টার আগের থেকেই খাবার এর জন্য বলছে।আমি তোমার জন্য বসে আছি।একসাথে খাওয়া হয়না কতদিন তাই জন্য। (আয়ান রুতবার হাত ধরেই)

ওরে ভালোবাসারে।ঢং এর কাথাবালিশ।বস এখানে আমি ফ্রেস হয়ে আসছি।
বলেই একটা থ্রিপিস নিয়ে ফ্রেস হতে চলে গেলাম ।ফ্রেস হয়ে এসে দুপুর এর খাবার খেতে বসলাম। ইতিমধ্যেই আম্মু অনেক রকমের রান্না সেরে ফেলেছে।খাওয়ার পর আমরা একটু রেস্ট নিতে গেলাম। আমি তো এতদিন পর আয়ান কে পেয়ে মহা খুশি ওকে একেবারে জড়িয়ে ঘুম দিলাম। (রুতবা,)

পরীক্ষা পড়া সব মিলিয়ে নয়দিন খুব তাড়াতাড়ি এই চলে গেল ।দশতম দিন আমরা বাড়ি ফিরে আসলাম। শশুর বাড়ির ফেরার সময় ও এই প্রথম মেয়ে যে এত্ত খুশি মনে যায়।বাড়িতে ফিরে ওর আনন্দের শেষ নেই।সারাদিন খুব সুন্দর মত এই গেল।রাতের বেলা ওকে কোলে বসিয়ে বারান্দার বসে চন্দ্র বিলাস করছি।
নীল আকাশে তারার মেলা,,
মধ্য রাতে চাঁদের খেলা।
মিষ্টি সকাল শিশির ভেজা,,
শুধু দেখ আমার প্রেমে
কতোই না মজা।রুত(আয়ান রুতবার গলাতে মুখ গুজেই)

হুম কবি মশাই।(রুতবা মুচকি হেসে)

পাচঁদিন পর এ আমার সিঙ্গাপুর যাওয়ার টিকিট কেটে ফেলেছি।(আয়ান রুতবার গালে হাত রেখেই)

জানিতো ।(রুতবা অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে)

কে বলেছে?(আয়ান অবাক চোখেই)

আমি দুপুর এ এসে তোমার টিকিট আর পার্সপোট দেখেছি একসাথে।ভেবেছিলাম আগের টিকিট হবে হয়তো।পরে ডেইট দেখলাম। ভাল তো যাও ধরে রেখেছে কে?(রুতবা আয়ান এর উদ্দেশ্য)

তোমার আমার উপর কোন রাগ আসছেনা?(আয়ান রুতবার উদ্দেশ্য)

নাতো।তোমার মন চাচ্ছে তুমি যাবে।আমাকে যখন বলার প্রয়োজন মনে করোনি।আমার ও তাই তোমার উপর কোন রাগ নেই।আচ্ছা এখন ঘুমাব চল।(রুতবা দাড়িয়ে)

রুত আই এম সরি পাখি।আসলে ভিসা নিয়ে এসেছিলাম। এখন না গেলে দুই লক্ষ টাকা উঠানো ও যাবেনা।আমার কষ্টের টাকা তাই আমি চাইনা তা বিফলে যাক।সেই জন্য এই যাচ্ছি। (আয়ান রুতবার হাত ধরে কাছে টেনে)

যাও আমরা তো আর বারণ করি নাই।তোমার কাছে যখন টাকাই সব তাহলে এখানে আমাদের রাগ অভিমান এর কিছুই না।ঘুম পাচ্ছে ঘুমাতে চল।
বলেই এসে ঘুমিয়ে পড়লাম ।এত্ত খুশি মনে বাড়ি ফিরলাম এই ভেবে নতুন সদস্যের আশার খবর দিব আয়ান কে।অথচ এসে উল্টো ওর যাওয়ার খবর এ মনটাই খারাপ হয়ে গেল। বলবোই না আমার বেবি আমি এই আদর করে বড় করব।ও গিয়ে বসে থাকুক আর টাকা কামিয়ে টাকার মেশিন এ পরিণত হোক।(রুতবা মনে মনে)

রুত এমন রেগে থাকলে চলবে?তুমি এমন করলে আমার কষ্ট লাগবে তো?(আয়ান রুতবাকে জড়িয়ে )

আয়ান ঘুমাও আমি রেগে নেই। ঘুম পাচ্ছে তাই ঘুমাতে এসেছি।(রুতবা)

আমি ও ওর কথা শুনে ঘুমিয়ে পড়লাম।পরের পাচঁদিন কে যতোটা পারি নিজের কাছে রেখেছি।আদর ভালোবাসার কোন কমতি রাখিনাই।যদিও ও কিছুক্ষণ পর পর একটু রেগে যেত।আমার যাওয়ার কথা শুনলে চোখ ছলছল করে উঠত।সে সময়ে ও বাহানা দিয়ে বাইরে চলে যেত।কালকে দুপুর এর টিকিট কাটা হয়েছে।সবাই এসেছে দেখা করতে।বোনেরা, বোনদের হাজবেন্ড ও বেবিরাও।রুত কে সারাদিন কাছে পাওয়া হয়নি।সারাদিন সবাই মিলে মিশে গল্প করেছে।রাতের খাবার খেয়ে এই রুমে আসতে পেরেছি। এসে দেখি রুত মন খারাপ করে বসে আছে।আমি ওর পাশে বসে আমার সাথে ওকে জড়িয়ে ধরতেই হালকা চিৎকার করে কান্না করতে লাগল। এই কয়েকদিন না কান্না করলেও আজকে হয়তো নিজেকে সামলাতে কষ্ট হচ্ছে। হঠাৎই ও আমাকে ছাড়িয়ে আমার ডান হাত টা নিয়ে ওর পেটে ধরল।
কি হয়েছে রুত পাখি?(অবাক হয়ে আয়ান)

তোমার যাওয়ার পর আমার আর আমার অনাগত বাবুই এর খেয়াল কে রাখবে বলে যাও?(রুতবা কান্না করে)

মানে!(আয়ান রুতবার চোখের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়েই)

আমি প্রেগন্যান্ট আয়ান।(রুতবা আয়ান এর গালে হাত দিয়ে)

কতদিন হল জেনেছ?(আয়ান দাঁতে দাঁত চেপে)

যাওয়ার তিনদিন পর এই যেনেছিলাম।সারপ্রাইজ দিতে চাইছিলাম।কিন্ত এসে দেখি তুমি এই আমাদের রেখে দূরে যাওয়ার চিন্তা করে রেখেছ।তাই আমিও রাগ করে বলি নাই।এখন আর লুকিয়ে রাখতে পারছিনা।আর না পারছি তোমার যাওয়ার কথা মেনে নিতে।তোমার না গেলে হয়না।(আয়ান কে জড়িয়ে রুতবা)

এখন যাই।আমাদের বাবুই হওয়ার আগেই আমি ফিরে আসব।প্লিজ রুত এমন করে কান্না করনা আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। আমি ওর কথা জানলে টিকিট কাটতাম না সত্যি বলছি।
মনের মধ্যেই বেশ গিলটি ফিলিংস হচ্ছে। তবে আমি নিরুপায়।আমাদের ভবিষ্যত এর কথা চিন্তা করে হলেও আমার যেতে হবে।পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই সবাই কে খুশির সংবাদ দিতেই পুরো বাড়ির সবাই খুশিতে আত্মাহাড়া হয়ে গেল। কিন্ত আমার যাওয়ার কথা চিন্তা করে সবাই আবার কেদে উঠল।সকালের ব্রেকফাস্ট করে বের হওয়ার জন্য রেডি হতে উপরে আসলাম। রুত খাটের কিনারে বসে ফুফিয়ে কান্না করে যাচ্ছে। আমি রেডি হয়ে ওর সামনে গিয়ে ওকে আমার সাথে দাড় করালাম।
আমার হৃদয়ে রয়েছ তুমি,
তোমায় নিয়ে সপ্নের জাল বুনি ,
ভালোবাসি আমি শুধুই তোমায়,
জনম জনম ভালোবাসতে চাই আমার রুত পাখি।ফিরে আসব খুব শীঘ্রই। অপেক্ষার প্রহর গুনে রেখ।(রুতবার কপালে চুম্বন করে আয়ান)

ভালোবাসি খুব ।(রুতবা মাথা উটু করে)

আমিও রুত পাখি।
তারপর ওর অধরে ভালোবাসার পরশ একে দিলাম। আর ওর পেটের উপর চুম্বন করে নিচে চলে আসলাম। যাওয়ার সময় এসেছে।(আয়ান)

**************(চলবে)**************

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে