MEANINGLESS LIFE PARTNER Part-11+11

0
2005

#MEANINGLESS_LIFE_PARTNER (অর্থহীন জীবন সঙ্গী)
10&11
পর্ব:10
#লেখিকা_Arshi_khan

(রোমান্টিক পার্ট :THE QUEEN OF MY HEART:আমার হৃদয়ের রানী)

কোথায় যাওয়া হচ্ছে রুত পাখি?অনেক তো উড়লে এবার নাহয় আমার হৃদয়ের মাঝে বন্ধি হতে এসো।অনেক তো বলেছিলা আয়ান ভাই বিয়ের ব্যবস্থা কর।তাহলে এখন কেন এমন পেছনে যাচ্ছ?(আয়ান রুতবার সামনে দাড়িয়ে)

আয়ান ভাই আমার খুব ঘুম পাচ্ছে এখন আমি ঘুমাব। (রুতবা বলেই খাটে গিয়ে শুয়ে পড়ল)

রুত গিয়ে দৌড়ের উপর খাটে কাথা গায়ে দিয়ে শুয়ে পড়ল।আমি মুচকি হেসে চেয়ার টেনে বসে পড়লাম। ওর দিকে আমি এক পলকে তাকিয়েই আছি।হঠাৎই ও কাথা সরিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আবার কাথা মুরি দিয়ে শুয়ে পড়ল।আমি ঝড়ের গতিতে ওর কাছে গিয়ে কাথা শরীরে জড়িয়ে শুয়ে পড়লাম তবে ঘুরে।আমার কান্ডে ও লাফিয়ে উঠে বসে পড়ল। আমি ওর দিকে তাকিয়ে এক চোখ টিপ দিয়ে পাশে ফিরে শুয়ে থাকলাম। (আয়ান মনে মনে)

আয়ান ভাই এমন ভাবে কেউ আসে আমি ভয় পেয়ে গেছিলাম। (রুতবা মুখ গোমরা করে)

ঘুম পাচ্ছিল তাই এমন করে এসেছি।তুমিও ঘুমিয়ে পড়।(মাথা উচু করে বলেই আবার চোখ বন্ধ করে নিল আয়ান)

খারাপ লোক কোথাকার!আমাকে না জ্বালাতন করলে পেটের ভাত হজম হয় না যেন!আরো কয়েকখানা বকা দিয়ে আয়ান ভাই এর পাশেই শুয়ে পড়লাম। আয়ান ভাই এর পিঠের দিকে আমিও পিঠ দিয়ে রাখলাম। তবে এক কাথার নিচে যেতে আমার ভিষন লজ্জা +ভয় লাগছে।সেই জন্য গুটি সুটি মেরে পড়ে রইলাম। আয়ান ভাই কি সত্যি ঘুমিয়ে পড়ল। বিয়ের প্রথম রাতে এভাবে কেউ ঘুমায় নাকি।মানলাম বাসর সাজায় নাই।আদর ভালোবাসা নাই দেক একটু কথাতো বলাই যায়।তানা সে ঝড়ের গতিতে বিয়ে করে আইলার গতিতে ঘুমাতে চলে গেছে।এমনে যখন ডাক দিতো না গেলে রেগে থাকত।আর এখন পাশে থাকতেও মনে হচ্ছে আমি ওর থেকে কত্ত দূরে।(রুতবা মনে মনে)

আমি অনেকক্ষন নিজেকে ধরে রাখার চেষ্টা করলাম। ওর কাছে যাব না ভেবে বসে ছিলাম। খুব শখ জেগেছিল ও নিজের থেকে এই আমার কাছে আসবে ঐদিন এর মত।কিন্ত যা বুঝলাম ও আজকে সেধে আমার ধারে কাছে ও ঘেসবেনা।তাই আমি আস্তে করে ওর দিকে ঘুরে ওকে পেছনের থেকে হালকা হাতে জড়িয়ে ধরলাম।
(মনে মনে)
রুত পাখি চল দুইরাকাত নফল নামাজ পড়ে নেই।(আয়ান ফিসফিস করে)

নিশ্চুপ। (চোখ বন্ধ রেখে রুতবা)

আমি চাই আমার রুতকে প্রপারলি নিজের করে নিতে।তুমি কি রাজি আছ রুত পাখি?রাজি থাকলে ওযু করে আস।আর নাহলে ঘুমাতে পারো।(রুতবার ঘারে মুখ রেখেই আয়ান ফিসফিস কর)

নিশ্চুপ (রুতবা)

আচ্ছা ঘুমাও। (আয়ান রুতবার পিঠে মুখ ঘুজে চোখ বন্ধ করে)

আমি আয়ান ভাই এর হাত সরিয়ে উঠেই ওয়াশরুম চলে আসলাম। ওযু করে ভাল মতো মাথায় ঘোমটা দিয়ে বের হয়ে আসলাম। আয়ান ভাই খাটে বসে আছে এখন ও।
আয়ান ভাই ওযু করে আস।(মাথা নিচু করে রুতবা)

আর ইউ সিওর?(আয়ান লাফিয়ে রুতবার সামনে এসে মুচকি হেসে)

হুম।(চোখ বন্ধ করেই রুতবা)

একটু ওয়েট কর আসছি।
বলেই ওয়াশরুম চলে গেলাম ওযু করার উদ্দেশ্য। ওযু করে এসে রুত এর সাথে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে নিলাম আমাদের নতুন জীবনে বৌবাহিক সম্পর্ক সুখ ময় রাখার জন্য ।নামাজ শেষে জায়নামাজ জায়গা মতো রেখে রুত এর সামনে এসে দাড়ালাম। ও মাথা নিচু করে রেখেছে।আমি ওর আরেকটু কাছে গিয়ে ওর হাতটা হাতে নিলাম।
রুত আজকের শাড়িটা আবার একটু পড়বে।দুপুর এ ভাল মতো দেখতে পারিনি।আমি তোমাকে ঠিক ততক্ষণ পর্যন্ত দেখতে চাই যতক্ষণ পর্যন্ত না আমার গত সাত বছরের তোমাকে না দেখার বাসনা পূরণ হচ্ছে। (আয়ান রুতবার হাতে চুমু খেয়ে)

আচ্ছা থাক আমি পরে আসছি।(রুতবা)

রুত কালকের মতো শুধু শাড়ি পেচালেই হবে।তাহলে ভালো মতো দেখতে পারব ।(আয়ান মুখ টিপে হেসে)

আয়ান ভাই তুমি কি জানো তুমি একটা বদ লোক!অসভ্য মার্কা কথা কেন বল?(রুতবা চোখ বড় করেই)

একটু পর এমন অনেক কিছুই করব। তখন কি বলবা আয়ান ভাই এভাবে ধরো কেন?ঐভাবে কিস কর কেন?তোমার কি মনে হয় এসব বললে আমি তোমাকে সেই সময় আদর না করেই ছেড়ে দিব?(আয়ান রুতবার কোমর জড়িয়ে)

দূর শাড়ি এই পড়ব না।তোমার এসব উল্টা পাল্টা কথা আমার মাথা হ্যাং করে দিচ্ছে। সরো আমি ঘুমাব।(রুতবা লজ্জা পেয়ে)

তুমি শাড়ি পরে আস যাও আর পচা কথা বলব না সিওর যাও।(আয়ান রুতবার হাত ঠেলে)

সত্যিই তো?(রুতবা ব্রু কুচকেই )

হুম সত্যি যাও শাড়ি পরে আস।
আমার রুত পাখি আমি আর পচা কথা বলব না পচা কাজ করব আমার বাচ্চা বউ। রুত দশমিনিট এর মধ্যেই শাড়ি পরে আসল।হালকা গোলাপি শাড়িতে ওকে মাসাআল্লাহ অনেক সুন্দর লাগছে।ও এসে চুপটি করে দেওয়াল ঘেসে দাড়িয়ে রইল। আমি ও আস্তে করে ওর পাশে দাড়িয়ে দেওয়াল এ মাথা রেখে ওর দিকে তাকিয়েই থাকলাম।
তোমাকে কে বলেছে এত্ত কিউট হতে?আমার যে তোমাকে দেখলে নিজেকে সামলাতে কষ্টকর হয়ে উঠে।তোমাকে আজ পুরোপুরিই আমার করে পেতে চাই বউ। দেবে কি সেই অধিকার?নাকি আরো কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে?সত্যি বলতে আমি আর পারছিনা অপেক্ষা করে থাকতে রুত পাখি।(আয়ান রুতবার ঠোঁটের দিকে তাকিয়েই)

নিশ্চুপ (রুতবা চোখ বন্ধ করেই)

ঐ রুত শোন না।আমার কাছে একটু ধরা দাও না পাখি।একটু আভাস দাও নাহলে যে আমি তোমার কাছে যেতে পারব না।তোমার মতামত ও যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ রুতপাখি।(আয়ান রুতবার কাছে গিয়ে গাল ধরেই)

আয়ান ভাই আমি আসলে আমার (আমতা আমতা করে রুতবা)

ঘুম পেয়েছে তোমার?(আয়ান রুতবার চোখের দিকে তাকিয়ে)

হুম ।(রুতবা চোখ এদিক ওদিক ঘুরিয়ে)

আচ্ছা চল ঘুমাবে।
বলেই ওকে ধরে খাটে এনে বসিয়ে দিলাম। ও এক সাইটে আস্তে শুয়ে পড়ল। আমি লাইট অফ করে বারান্দার দিকে অগ্রসর হলাম। রাতের আকাশে হাজার তারার মেলা বসেছে।তাদের সবার মাঝে চাঁদ টা ভিষন একা।চাঁদের আলোর কারণে পুরো আলোকিত হয়ে আছে এখানে।পুকুরের পানিতে চাঁদের আলো স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। বারান্দার ছোট টুলে বসে পুকুরের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলাম। মনকে কন্ট্রোল করার সবচেয়ে ভাল এবং কার্যকরী উপায় হচ্ছে প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটানো।সেই ছোট বাচ্চাটার উপর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ না ঘটালেও দুইদিন আগে আমি তাকে কিছুক্ষণ এর জন্য আকরে ধরে ছিলাম। কিন্ত স্বামী হিসাবে আমার স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক গড়ার আগে তার পারমিশন নেওয়া জরুরী। স্বামীর অধিকার আছে বলেই তা প্রয়োগ করতে হবে এমন কিন্তু না।স্ত্রী রা হয় নরম ও কমলীয় সভাবের।তাদের সাথে সর্বদাই ভাল আচরণ করা একান্ত জরুরী।যদিও কোনদিন রাগের মাথায় স্ত্রী এর সাথে খারাপ ব্যবহার করেই ফেলেন তাহলে এটাও মনে রাখবেন তাকে আবার ভালোবেসে মানিয়ে কিভাবে কাছে টেনে নিবেন।একজন নারী আর সবার কাছে দ্বায়িত্ব পরায়ন হলেও দিন শেষে সে আপনার কাছে একটু ভালোবাসার ভাগিদার।সে এটা ভেবেই রাতে আপনার কাছে আসে যে আর সবার কাছে আমি যেমন দ্বায়িত্ব পরায়ন তেমনি আমার স্বামী ও আমার জন্য দ্বায়িত্ব বান পুরুষ। তাই সর্বদাই চেষ্টা করবেন নিজের স্ত্রীর প্রতি সদয় হতে।এসব ভাবনার মধ্যেই হঠাৎই রুত আমার পাশে এসে দাড়াল। আমি ওর পানে তাকিয়েই মুগ্ধ হয়ে গেলাম। চাঁদের আলোর কারণে ওর চেহারার মধ্যেই একটা অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করছে।ও আমার দিকে ছলছল চোখে তাকিয়েই আছে।
কান্নার কারণ কি বউ?(রুতবার হাত টা ধরে আয়ান)

তুমি খুব খারাপ আয়ান ভাই। (ফুফিয়ে রুতবা)

আমি আবার কি করলাম?(ব্রু কুচকেই আয়ান)

আমাকে একা রেখে এখানে জোৎসা বিলাস করছ যে তাই জন্য তুমি খারাপ।(রুতবা একহাতে চোখ মুছে)

বস এখানে। আমি জোৎসা বিলাস করতে আসি নাই রুত।নিজের মন ও মস্তিষ্কের যুদ্ধ দমন করতে এসেছি। মন কে সামলাতে আমি সর্বদাই পারদর্শী। তবে এ ক্ষেত্রে মস্তিষ্ক আমার কথা কে প্রাধান্য দিতে প্রস্তুত না।তার উপর আমার বাচ্চা বউ এর ঘুম পাচ্ছে। তাতে বেঘাত ঘটাতে চাইনা বলে এখানে এসেছিলাম।কি করব বল অনেক বছরের লুকায়িত ভালোবাসা বের হয়ে আসতে চাইছে।(আয়ান রুতবার উদ্দেশ্য গ্রীল ধরে দাড়িয়ে)

আয়ান ভাই ।(রুতবা আয়ান এর পিঠে হাত রেখে)

দেখ রুত ভালোবাসতে আরো এক বছর পর দিলেও হবে।আপাতত আয়ান ভাই এর থেকে ভাই টাকে ঐ পুকুরে ফেল তো।কানটা আমার বউ এর মুখ থেকে শুধু আয়ান শোনার অপেক্ষা করে আছে বহু বছর। (রুতবার দিকে তাকিয়েই আয়ান)

আমিতো আয়ান ভাই বলেই ডাকব তাতে তোমার কান থাকুক বা না থাকুক।(মুখ ভেংচি কেটে রুতবা)

ঠিক আছে এখন গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন। এত্ত রাতে নতুন বউ বারান্দাতে এসেছ ভুতে ধরবে তো।আমার এত্ত সুন্দর বউ এর ভাগ আমি ঐ ভুত কেও দিতে নারাজ।
বলেই ওকে ঠেলে রুমে পাঠালাম। তারপর বারান্দার গেট লক করে খাটে গিয়ে বসলাম। মোবাইল টা নিয়ে ফেসবুক এ ঢুকতেই কয়েকটা ফ্রেন্ড এর মেসেজ দেখলাম। এখন এদের সাথে কথা বলে সময় কাটাই।তাহলে বউ সামনে অথচ আদর না করার আফসোস টা তেমন কাজ করবেনা।এসব ভাবতে ভাবতেই দেখি রুত রুমে ডিম লাইট জ্বালিয়ে আমার সাইট দিয়ে পাশে গিয়ে শুয়ে পড়ল। আমি ওর থেকে চোখ সরিয়ে ফোনে মেসেজ দিতেই যাব রুত হঠাৎই আমার থাই(পা) এর উপর মাথা রেখে পেটে মুখ গুজে শুয়ে থাকল।আমি মুচকি হেসে ফোনটা সাইটে রেখে ওকে উঠিয়ে বসিয়ে দিলাম।
কি?(আয়ান মুচকি হেসে)

ঘুমাব।(রুতবা মাথা নিচু করে)

এক ঘন্টার মধ্যেই পাচঁবার বলা শেষ ঘুমাব। ঘুমাও না কেন?আর এমন করে যে ধরেছ আমি এইবার কন্ট্রোল হাড়া হলে তোমার পারমিশন এর অপেক্ষা না করেই কিছু করে বসব।তখন আবার কেদে কেদে আয়ান ভাই তুমি খারাপ আয়ান তুমি খুব খারাপ এর স্লোগান শুরু করে দিবা।(আয়ান রুতবার হাত ধরেই)

আমি তো একবার ও বলিনাই আয়ান ভাই তুমি নিজেকে দুরে রাখ।বলেছি!তুমি নিজেই তো –
আর বলতে পারলাম না আয়ান আমাকে তার সাথে জড়িয়ে নিয়েছে। পুরো মুখে ভালোবাসার পরশ একে দিতে দিতে একটা সময় আমার অধর জোড়া তার আয়ত্তে নিয়ে নিল।তার ভালোবাসার ধরন গুলো অনেকটা উন্মাদ এর মতো।এক মুহূর্তেই পাগল পাগল অবস্থাতে পরিণত হয়।(রুতবা মনে মনে,)

রুত আই লাভ ইউ মাই কুইন। (আয়ান রুতবার উদ্দেশ্য)

লাভ ইউ টু আয়ান ভাই। (রুতবা ক্লান্ত সুরে)

আবার ভাই বললে শাস্তি আছে।
বলেই ওর গলাতে একটা বাইট করে দিলাম। তারপর আমি আমার সেই আট বছরের ছোট বাচ্চার থেকে বড় হয়ে উনিশ বছরের মেয়েটাকে পুরোপুরিই নিজের করে নিলাম।
রাত চারটা
রুত আমার বুকে মুখ লুকিয়ে শুয়ে আছে।তার কিছুতেই ঘুম আসছেনা।আমি যখনি ওর দিকে তাকাই ও যেন আরো লজ্জা পেয়ে মুখটা আমার বুকে লুকায়।তা আমি ওকে আমার কোলবালিশ এর মতো জড়িয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম
কিন্তু তাতে ও লজ্জা পাচ্ছে। আমি ওর কপালে চুম্বন করে ঘুমানোর জন্য বলে চোখ বন্ধ করে নিলাম।
সকালে মুখে অনেক গুলো পানির ঝাপটাতেই ঘুমটা ভাঙ্গল। উঠে দেখি রুত পানির মগ হাতে দাড়িয়ে এই আছে।আমি ওর হাত ধরে আমার পাশে শুইয়ে আমার চুলের ও মুখের পানি ওর মুখে লাগিয়ে দিলাম ।(মনে মনে)
খুব শখ ভেজানোর তাইনা!চল এখনি তোমাকে নিয়ে গোসল এ ঢুকব।(বলেই রুত কে কোলে তুলে হাটা দিল)

আমি শাওয়ার নিয়েছি তো। এখন ভেজালে আবার বল শাওয়ার নিবে।পাগল নাকি!নিচে নামাও আমাকে। (রুতবা হালকা চিৎকার করেই)

আমাকে ভেজালে কেন?(আয়ান রুতবাকে ওয়াশরুম নিয়ে দাড় করিয়ে)

আচ্ছা সরি আর করব না।
বলেই বের হতে নিব হঠাৎই আয়ান ভাই এর কান্ডে আমি হতবাক হয়ে গেলাম। (মনে মনে রুতবা)

*************(চলবে)*********

পর্ব: 11

(HONEYMOON TIME :মধুচন্দ্রিমার সময়)

ও বের হতে নিবে এমন সময়ই আমি ঝড়ণা ছেড়ে দিলাম। সাথে সাথেই ওর সাথে আমি ও ভিজে গেলাম।ও আমার দিকে রাগি লুক দিতেই আমি ওকে আমার সাথে জড়িয়ে নিলাম।
শাওয়ার নেওয়ার পর দুইজন ড্রেস চেঞ্জ করে নিলাম। রুমে এসে রুত আয়নাতে যখন চুল আচড়ায় আমি ওর পেছনে দাড়িয়ে ওকে বিরক্ত করতে থাকি।ও যেন আরো তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে।এই দেখে আমার হাসতে হাসতেই অবস্থা খারাপ।
বালিশ গুলোতে পানি পরে ভিজে যাওয়ার কারণে বালিশ গুলোকে বারান্দার মধ্যেই রেখে দিলাম রোদের উত্তাপ এ শুখানোর জন্য। তারপর দুইজন নিচে নেমে আসলাম ব্রেকফাস্ট করব বলে।
আজকে আয়েশার হাজবেন্ড কে সবাই সালামী দিবে জামাই বাজার এর উদ্দেশ্য। আমি মানিব্যাগ আনতে ভুলে গেছি তাই রুতকে পাঠালাম মানিব্যাগ আনতে।ও বেশ কিছুক্ষন পর মানিব্যাগ নিয়ে নিচে নেমে এলো।আমি বড় ভাই হিসাবে চার হাজার টাকা ওর রুমাল এ দিলাম।
আর রুত এর হাতে দুই হাজার ধরিয়ে দিলাম জামাই কে দেওয়ার জন্য। আফটার অল একমাত্র ভাই এর বউ বলে কথা।
জামাই সালামী পাওয়া টাকা ও আরো টাকা মিলিয়ে সব রকমের বাজার করে নিয়ে আসল।সেগুলো রান্না করতে সব মেয়েরা লেগে গেল।এদিকে সারাদিন আর রুত এর খবর নেই ।তার উপর আয়েশার শশুর বাড়ির মানুষ এসেছে ওদের নেওয়ার জন্য। দুপুর এর খাবার পর সবাই একটু গল্প করে নিল।সেই সময় রুত সবার জন্য চা নাস্তা নিয়ে আসল।আয়েশার যাওয়ার পর সবাই রেস্ট নিতে নিয়ে নিল।
আর এভাবেই আমাদের হাসিখুশি দিন চলতে লাগল ।রোমান্স, খুনসুটি হাসি মজা করেই বারো দিন চলে যায়।আংকেল এসেছে ওকে নিতে। কারণ তিনদিন পর আমাদের অনুষ্ঠান করে হবে।আংকেল এসে দুপুর এর খাবার খেয়ে রেস্ট নিচ্ছে। এইদিকে রুত এসে রুমে আমাকে জড়িয়ে এই রেখেছে।পাগলি একটা।(মনে)
রুত পাখির রেডি হয়ে নাও। ।সন্ধা হয়ে যাবে বেশি দেরি করে বের হলে।জলদি যাও তাহলে সন্ধার আগেই যেতে পারবে।(আয়ান রুতবার মাথায় হাত বুলিয়ে)

যাব তো।আর একটু থাকি এমন করো কেন?তিনদিন তোমার থেকে দূরে থাকতে হবে।তাই তোমার শরীর এর সুগন্ধ একটু গায়ে মেখে নিচ্ছি। (রুতবা ছলছল চোখে)

তাই। আসো ভাল মতো আমার বউ টাকে আদর করে দেই।তাহলে আর তিনদিন থাকতে কষ্ট হবেনা।
তারপর ওকে অনেকটা আদর করে দিলাম। আংকেল ওকে নিয়ে গেল। এদিকে বাড়িতে মেহমান দিয়ে আবার ভরে উঠল।বিয়ের তরজর চলছে ধুমছে।হলুদ অনুষ্ঠান খুব সুন্দর মত হয়ে গেল। পরের দিন সকালে সবাই মিলে রং ও কাদা দিয়ে খেলল।তারপর আমরা গেলাম আমার রুতকে আনার উদ্দেশ্য। মাসাআল্লাহ একটা পুতুল বউ কে পেয়েছি। আজ খুব করে আমার বুড় দাদার কথা মনে পড়ছে।তার জন্য এবং আল্লাহর ইষাড়ায় আজকে আমরা একে অপরের পরিপূরক। রুতকে দেখে গত তিন দিন না দেখার আফসস টা অনেকটাই কেটে গেল।
আমার হাতে যখন ওকে তুলে দিল আমি শক্ত করে ওর হাত টা আকড়ে ধরলাম। ও সবাই কে জড়িয়ে কান্না তে ভেঙ্গে পড়ল ।
তারপর আমরা ওকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা হলাম। রুত গাড়িতে আমার কাধে মাথা রেখে শুয়ে পড়ল।
বাড়িতে পৌঁছানোর পর আমাকে আর রুতকে বরণ করে ঘরে তোলা হল।তারপর আরো নিয়ম কানুন মেনে আমরা ফ্রেস হতে গেলাম। রুতকে আয়েশা সাহায্য করছে।
রাতের খাবার খাওয়ার পর আমাদের ঘরে আসলাম। আমাদের ঘরটা খুব সুন্দর করে ফুল দিয়ে সাজিয়ে দিয়েছে।সেখানে ঢুকতে পুরো পাচঁ হাজার দিতে হয়েছে বোনদের কে।
ঘরে ঢুকে আমি ওকে আমার কোলে নিয়ে নিলাম।তারপর দুজনে ভালোবাসার সাগরে ঢুব দিলাম।
পরের দিন বৌভাত অনুষ্ঠান এর পর আমি রুত এর বাড়ি বেড়াতে গেলাম। তিনদিন থেকে আমরা বাড়ি ফিরে আসলাম।
বিয়ের পর আমরা কোথাও ঘুরতে যাইনি।তাই ভাবলাম রুত কে নিয়ে ঘুরতে যাব।আমরা বিয়ের এক সপ্তাহ পর খাগরাছড়ির উদ্দেশ্য রওনা হলাম। পাহাড়ে ঘোরার খুব শখ রুত এর। সেই জন্য এই খাগরাছড়িতে যাওয়া। খাগরাছড়ির একটা ভ্রমণ গাইড এর বাংলোতে থেকেই আমরা হানিমুন টা সেরে যেতে চাই।বাংলো টা পাহাড়ের চুড়ায় অবস্থিত যার দরুন পুরো এলাকা ভালো ভাবেই দেখা যায়।
বাংলোর ভেতরে প্রবেশ করে রুত জানালার সামনে দাড়ালো আমি ওকে পেছনের থেকে জড়িয়ে ধরলাম। ও মুচকি হেসে পাহাড়ের দৃশ্য উপভোগ করতে লাগল। আমি ওকে কোলে তুলে ওয়াশরুম এর উদ্দেশ্য চলে গেলাম ফ্রেস হব ভেবে।তারপর ফ্রেস হয়ে এসে দুপুর এর খাবার অর্ডার করলাম ।খাবার আসার পর দুইজন খাবার খেয়ে একটু রেস্ট নিলাম। হানিমুন এ যেমন হয় আরকি রেস্ট কম রোমান্স বেশে।
বিকাল চারটার দিকে আমরা খাগরাছড়ির অনেক বিখ্যাত জায়গাতে ঘুরতে গেলাম। অনেক মনো মুগ্ধ কর পরিবেশ দেখে চোখ জুড়ে গেল। বাংলাদেশে এত্ত সুন্দর দৃষ্টান্ত থাকতে কেনযে মানুষ দেশের বাইরে যায় ঘুরতে তা আমার বোধগম্য হয়না।(আয়ান মনে মনে)

*************(চলবে)************

বিঃদ্রঃ HONEYMOON TIME আর একটা পার্ট হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে