Khatarnak Isq part-03

0
2722

#Khatarnak_Isq.[Impossible Love]
#Sumaiya_Moni.
#Part_03.
_______________________
আজ রাতেও একি স্বপ দেখে ঘুম ভেঙে গেছে আলফির। বাকি রাত টুকু না ঘুমিয়ে কাঁটিয়ে দিয়েছে। কাল রাতের ঘটনা ও স্বপ্নের কথা ভাবতে ভাবতে আলফি আনমনা হয়ে যায়। ব্রেকফাস্ট তৈরি করার পর দুধ গরম করছিল। আনমনা হয়ে থাকার কারণে দুধ উতলে পড়ে যাচ্ছে সেটা খেয়াল করেনি। যখন খেয়াল করল তখনি তড়িঘড়ি করে চুলা অফ করে দুধের পাতিল নামাতে গিয়ে হাত চুলার ভেতরে চলে যায়। এখন অবাক করা কাণ্ড! হাতে আগুন লাগার ফলেও হাত পুড়ে যায় নি। না জ্বলসে গেছে! হাত ঠিক ঠাক ছিল। আলফি অবাক হয়ে যায়। কপাল কুঁচকে তাকিয়ে আছে জ্বলন্ত চুলার আগুনের দিকে। আলফি বুঝতে পারছে না। ওর সাথে এটা কী হচ্ছে। দুধের পাতিল চুলার উপর থেকে নিচে নামিয়ে ডান হাত ধীরে ধীরে আগুনের দিকে এগিয়ে দিল। পুরো জলন্ত আগুনের উপরে হাত রাখা। এবারও আশ্চর্যের বিষয়! হাত পুরো অক্ষত ছিল। না করছে জ্বালাপোড়া,না হাত জ্বলসে গেছে। আলফি এক ভাবে হাত চুলোর উপর ধরে রেখেছে। কেন জানি আলফির খুব ভালো লাগছে আগুন। মন চাইছে সর্ব অঙ্গ-পতঙ্গ আগুনের মধ্যে বিলিন করে দিতে। কিন্তু ওর ধারণা ছিল সব কিছু অক্ষত থাকবে। কিছুই হবে না ওর। চুলার উপর হাত রেখে আলফির নিজের কাছে ভালো লাগছে। ঠোঁটে এক চিতলে হাসি ফুটে ওঠে। কিন্তু পরক্ষণে হাসি মিলিয়ে যায়। চট করে হাত সরিয়ে নেয়। চোখ পিটপিট করে চুলার দিকে তাকিয়ে ভাবতে থাকে।
-“এটা কি আদৌও সম্ভব? কে আমি? কেন আমার হাত আগুনের মধ্যে দিয়েও পুঁড়ছে যাচ্ছে না। ঠিকঠাক আছে…..।”

-“আলফি..।” জিনান জোরে চিল্লিয়ে ডাকছে।

আলফি আর ভাবার সময় পায় না। চুলা বন্ধ করে দুধ গ্লাসে ঢেলে ড্রইং রুমে চলে আসে।

-“আমি এসে গেছি মামা।”

-“তাড়াতাড়ি খেয়ে নেও। হাতে বেশি সময় নেই। অফিসের টাইম হয়ে যাচ্ছে।”

-“হুম!”

আলফি আনমনা হয়ে কোনোমতে নাস্তা শেষ করে। তারপর মামার সাথে খাবার খেয়ে বের হয়ে যায় কলেজের উদ্দেশ্যে।
.
.
এলেন ও এরোন অনেক আগে থেকেই কলেজ এসে প্রিন্সিপালের কক্ষে এসে বসে আছে। এরোন কলেজে আসার কারণ টা জানে। তাই এলেনকে এই বিষয় নিয়ে কোনে প্রশ্ন করে না। আর এখানে এরোনেরও যথেষ্ট কারণ আছে কলেজে আসার। কাল রাতে জঙ্গলে লিনাকে দেখে ওর ভালো লাগে। বলতে গেলে এরোন লিনাকে পছন্দ করে ফেলেছে। কিন্তু সেটা এলেনের কাছ থেকে লুকিয়েছে।

-“এরোন,বের হয়ে দেখ। আলফি মেয়েটি এসেছে কি না।”

-“দেখছি! ওয়েট,নাম জানলি কি করে?”

এলেন এরোনের দিকে ঘাড় কাত করে তাকিয়ে বলে,
-“কাল রাতে ওর বান্ধবী রা মেয়েটির নাম ধরে এত বার ডেকেছে। সেটা কী তুই শুনতে পাসনি?”

-“নাহ!”

-“মাঝে মাঝে ভাবি তুই কেন ভ্যাম্পায়ার হলি? গরু,ছাগল,ভেড়া আরো অনেক প্রাণী আছে সেগুলো তো হতে পারতি!” ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে এলেন।

-“ইনসাল্ট করছিস?”

-“এটা বুঝতে এতক্ষণ লাগলো।”

-“আরলেন!”

এলেন এরোনের দিকে রাগী ভাব নিয়ে তাকায়। পরক্ষণে ফিক করে হেসে দিয়ে বলে,
-“থ্যাংকস,সুন্দর করে আমার নাম ধরে ডাকার জন্য। এবার তুমি আসতে পারো।”

-“কিচ্ছু বলব না। সময় হলে আমিও একটি একটি করে শোদ নিবো।”

-“একটি কেন? দুটি করে নিস।”স্বাভাবিক ভাবে চেয়ারে বসে দুলতে দুলতে বলে এলেন।

এরোন রাগে গজগজ করতে করতে চলে যায়। বাহিরে বের হয়ে দেখে আলফি নামের মেয়েটি গাড়ি থেকে নামছে। এরোন একটু আড়ালে দাঁড়ায়। ওর বান্ধবীদের আলফির কাছে আসতে দেখে ভ্রু কুঁচকে তাকায়। তারপর ওরা কথা বলতে বলতে ভেতরে চলে যায়। এরোন এলেনের কাছে চলে আসে।

-“আলফি এসেছে?” এলেন প্রশ্ন করে।

-“হুম,লাইব্রেরীতে গেছে বই কালেক্ট করতে।”

-“ওকে।” বলেই এলেন ওঠে দাঁড়ায়। বের হতে নিলে এরোন প্রশ্ন করে।

-“তুই কী আলফির রক্ত খেতে যাচ্ছিস?”

-“যদি পারি,তাহলে অবশ্যই খাব। আমি আবার কোনো কাজ আদুরা রাখি না।” বলেই কক্ষ থেকে বের হয়ে যায়।
.
আলফি লাইব্রেরীতে একা ছিল। আর কোনো ছাত্র -ছাত্রী ছিল না। তাক থেকে একের পর এক বই বের করে দেখছে। শেষের তাকের কাছে এসে একটি বই বের করে হাতে নিতেই ওর মনে হতে লাগল ওর পিছনে কেউ দাঁড়িয়ে আছে। আলফি পিছনে ঘুরতে যাবে ঠিক সেই সময় এলেন আলফিকে বইয়ের তাকের সাথে চেপে ধরে। আলফির মুখ বইয়ের তাকের সাখে লেগে বই চার পাঁচটা অন্য পাশ থেকে পড়ে যায়৷ মুড়ামুড়ি করতে থাকে নিজেকে মুক্ত করার জন্য। এলেন আলফির দু হাত কাল রাতের মতো চেপে ধরেছিল। যার কারণে আলফির কাল রাতের ব্যাক্তির কথা মনে পড়ে যায়। আলফি জোরে বলতে যাবে তার আগেই এলেন আলফির কানে স্লো ভয়েসে বলে,
-“আমি কাল রাতের সেই ব্যাক্তি! যে তোমাকে জঙ্গলের ভেতরে নিয়ে গিয়েছিল।”

-“কেন নিয়ে গিয়েছিলেন? আর এখন কেন আমাকে এভাবে চেপে ধরে রেখেছেন?”

-“উঁহু! প্রশ্ন তুমি নয়। আমি তোমাকে করবো। হু আর ইউ?”

প্রশ্নটা শুনে আলফির মুড়ামুড়ি বন্ধ করে দেয়। চুপটি করে দাঁড়িয়ে থাকে। বুঝতে পারছে না এই ছেলেটি কিভাবে জানলো সে মানুষ না।

-“বলো,তুমি কে? কেন আমি তোমার রক্ত খেতে পারছি না। হোয়াই?” একটু জোরে চিল্লিয়ে বলে এলেন।

রক্ত খাবার কথা শুনে আলফি ঘাবড়ে যায়। তারপরও নিজেকে সামলে নেবার ট্রাই করে।

-“বলো বলছি।”

-“বলব না।” ঝাড়ি দিয়ে বলে আলফি।

কথাটা শুনে রাগে এলেনের চোখ লাল হয়ে যায়। দাঁত বড় হয়ে বের হয়ে আসে ঠোঁটের বাহিরে। ঘাড় চেপে ধরে কামড় বসাতে যাবে।কিন্তু কালকের মতো কোনো ভাবে ঘাড়ে কামড় বসাতে পারছে না। যতবার হা করে কামড় দিতে যাচ্ছে ততবার এলেন দমে যাচ্ছে। বাঁধা সৃষ্টি করছে কোনো এক শক্তি ওঁকে। আলফির উপর প্রচুর রাগ হচ্ছে। ধাক্কা দিয়ে ফ্লোরে ফেলে দিয়ে উল্টো দিকে ঘুরে দাঁড়ায় এলেন। আলফি ওঠে বসে পিছনে ঘুরে তাকায়। লম্বা কালো জ্যাকেট পড়া একটি ছেলেকে উল্টো দিকে গুঁড়ে দাঁড়াতে দেখে। আলফি মুখ দিয়ে কিছু বলতে যাবে তার আগেই এলেন ঝড়ের বেগে আলফির মুখের সামনে এসে ঝুঁকে দাঁতে দাঁত চেপে চিবিয়ে চিবিয়ে বলে,
-“তোমার রহস্য আমি খুঁজে বের করবোই। তোমার বিষয় কিছু না বললেও।আর……হুঁশশশশশশ।” মুখে আঙুল দিয়ে বলে এলেন। যার মানে ওর বিষয় যা জেনেছে চুপ থাকার জন্য।

এলেন আলফিকে ঠেঙিয়ে ঝড়ের বেগে লাইব্রেরী থেকে চলে যায়। আলফি ঢোক গিলে ওঠে দাঁড়ায়।এত দ্রুত যে ভ্যাম্পায়ার রা দৌঁড়াতে পারে তা আলফির জানা আছে। আলফি বুঝে গেছে এলেন কোনো মানুষ নয়। রক্তচোষা ভ্যাম্পায়ার। লাইব্রেরীতে বসে না থেকে ক্লাস রুমে চলে আসে আলফি। কিছুক্ষণ পর ক্লাস শুরু হয়ে যায়। আলফি এলেনকে ঠিকিই চিনতে পেরেছে। কালকের ঝুলে থাকা মেয়েটিকে এলেন বাঁচিয়েছে ওর শক্তি প্রয়োগ করে। জানার ইচ্ছে ছিল এলেনের ব্যাপারে। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি ওর বিষয় জেনে যাবে সেটা আলফির জানা ছিল না।
অন্যমনস্ক হয়ে আলফিকে বসে থাকতে দেখে ম্যারি হালকা ধাক্কা দেয়। আলফি ম্যারির দিকে তাকালে,ম্যারি স্যারের দিকে ফোকাস করতে বলে।
আলফি সব চিন্তা ভাবনা বাদ দিয়ে স্যারের লেকচার শুনতে থাকে।
.
.
এলেন ও এরোন কলেজ থেকে বের হয়ে ইমতিয়াজ কে খুঁজতে বের হয়। জঙ্গল থেকে শুরু করে। অনেক জাগা খোঁজ করে। কিন্তু ওরা খুঁজে পায় না।
এক দিকে এলেনের রাগ হচ্ছে আলফির উপর। আরেক দিকে ইমতিয়াজকে খুঁজে পাচ্ছে না। রাগে এলেন হিংস্র রূপ ধারন করে। জঙ্গলের ভেতরে প্রবেশ করে বাতাসের বেগে দৌঁড়াতে থাকে। দৌঁড়ে কোথায় যাচ্ছে তা ওর জানা নেই। এরোন এলেনের রাগের কারণ ওর মাইন্ড পড়ে জানতে পারে। তাই এলেনকে কিছু বলে না। এরোন ঠিক মতোই জানে এলেনের রাগ আপনা-আপনি কমে যাবে। তাই একা ছেড়ে দিয়ে অন্য পথে চলে যায়।
.
আলফি আজ আর এনাদের বাসায় আসেনি। কলেজ থেকে ডিরেক্ট বাসায় চলে এসেছে। ফ্রেশ হয়ে গোসল সেরে যোহরের নামাজ আদায় করে। আজ দুপুরে ওর মামা বাসায় আসবে না। কাজের চাপে অফিসে লাঞ্চ করবে ফোন করে বলে দিয়েছে। তাই আলফি খাবার খেয়ে রুমে চলে আসে ঘুমাতে। বিছানায় শোভার সাথে সাথে ঘুমিয়ে যায়। বাকি রাত জাগার কারণে ঘুমাতে বেশি সমস্যা হয় না।

সূর্য ঢলে পড়েছে পশ্চিমা আকাশে। চারদিক অন্ধকার নেমে আসছে। আলফি টিমটিম করে চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। লাফ দিয়ে ওঠে বসে। আছরের নামাজ কাজা হয়ে গেছে। দ্রুত ওঠে ফ্রেশ হতে হতেই মাগরিবের আজান দিয়ে দেয়। ওজু করে মাগরিবের নামাজও পড়ে নেয়।
এক কাপ কফি বানিয়ে খেয়ে পড়তে বসে।
________________________
রাত বাজে এগারোটা। স্যাম একটি সুন্দরী মেয়েকে নিয়ে ক্লাব থেকে বের হয়। স্যামের গাড়িতে ওঠিয়ে বসায় মেয়েটিকে। গাড়ি চালিয়ে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যেতে থাকে। মেয়েটি কিছু বলে না। কারণ মেয়েটি মাতাল ছিল। সেন্স ছিল না।
সুনসান একটি এড়িয়ায় নিয়ে এসে গাড়ি থামিয়ে দেয়। মেয়েটি ততক্ষণে ঘুমিয়ে গেছে সিটে হেলান দিয়ে। স্যাম মেয়েটির দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসে। আজকে রাতের ডিনার এই মেয়েটির রক্ত খেয়ে সারবে। রক্ত পান করে রাজ্যে ফিরে যাবে। গাড়ির কাঁচ উঠিয়ে মেয়েটিকে কাছে নিয়ে এসে সরু ধারালো দাঁত দিয়ে কামড় বসিয়ে দেয় ঘাড়ে। সঙ্গে সঙ্গে মেয়েটির আর্তনাদ চিৎকার পুরো জঙ্গলে ছড়িয়ে পড়ে। রক্ত খাওয়া শেষ হলে মেয়েটিকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে গাড়ি নিয়ে চলে যায় স্যাম। রক্তশূণ্য নিথর দেহ পড়ে থাকে মাটিতে। গাড়িটি আড়াল হতেই একটি লোক এসে মেয়েটির সামনে এসে দাঁড়ায়। পরনে ছিল সাদা পোশাক। মেয়েটির নিথর দেহ দেখে তাঁর রূহ কেঁপে ওঠে। তার মনটা নিমিষেই খারাপ হয়ে যায়।মেয়েটির সামনে বসে কোলে তুলে নেয়। এবং একটি কবরস্থানের মতো একটি জাগায় নিয়ে এসে মেয়েটিকে মাটি চাপা দিয়ে দেয়। সেখান থেকে চলে যেতে নিলে কিছুক্ষণ আকাশের দিকে তাকায়। বিড়বিড় করে বলে,
-“কবে শেষ হবে এই রক্তের খেলা। কবে ধ্বংস হবে ভ্যাম্পায়ার রা। কবে খুঁজে পাবো আমাদের শাহজাদিকে ।” দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলেন তিনি।
.
.
সকালে……

আজ কলেজ বন্ধ। ওদের সামার ভ্যাকেশনে যাওয়ার দিন। সবাই কালকে রাতেই প্লান করে রেখেছিল। নর্থ সাউথের একটি জঙ্গলে যাবে ওরা সবাই। সেখানে বিশাল বড় পাহাড়-পর্বত আছে। এই জায়গাটির খবর আলফি নিজে ওদের দিয়েছে। নেটে সার্চ করে বের করেছে আলফি। সেখানে গিয়ে একদিন থাকবে। সবাই ব্যাক গুছিয়ে আলফিদের বাড়িতে আসে। একটি মাইক্রো নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়ে।

-“আহহ! কি যে খুশি লাগছে আমার।” ম্যারি বলে খুশি মুডে।

-“আমারও!” লিনা বলে।

-“সেম!” জি-তাও বলে।

সবাই খুব খুশি তা দেখেই মনে হচ্ছে। কিন্তু আলফির কেন জানি মনটা খচখচ করছে। মনে হচ্ছে আজকে ওর সাথে কিছু একটা হবে। হোক সেটা ভালো বা খারাপ। জানালার বাহিরে তাকিয়ে আছে এক দৃষ্টিতে। কারো সাথে তেমন একটা কথা বলছে না। কারণ জিজ্ঞেস করলে বাহানা দিচ্ছে। ‘সব ঠিক আছে’ বলে এড়িয়ে যাচ্ছে।
.
.
এলেন,এরোন কলেজে এসে জানতে পারে আজ কলেজ বন্ধ ছাত্র-ছাত্রীদের সামার ভ্যাকেশনের জন্য। এলেন,এরোন এটাও জানতে পারে আলফিরাও সামার ভ্যাকেশনে গিয়েছে। কিন্তু কোথায় গিয়েছে সেটা জানে না। তাই চলে আসে রাজ্যে। এলেনর খুব রাগ হচ্ছে। এমনেতেও কাল রাতে কোনো মানুষের রক্ত খেতে পারেনি বিধায় রাগের মাত্রা একটু বেশিই বেড়ে আছে। তাই এখন তাজা ব্লাডের খুব প্রয়োজন। কিন্তু এরোন এলেনকে বাহিরে যেতে নিষেধ করে বলে,
-“আমার কাছে যা ব্লাড আছে আপাতত সেটা খেয়ে রাগ কন্ট্রোল কর। এখন দিনের বেলা, বুঝতে পারছিস।”

এলেন এরোনের কথাটা বুঝতে পারে। থেমে যায়। সোফায় বসে পড়ে। এরোন ব্লাডের ব্যাগ নিয়ে এসে এলেনকে দেয়। এলেন গ্লাসে না ঢেলেই খেতে শুরু করে। কিছু রক্ত ঠোঁট বেয়ে চুঁই চুঁই করে বেয়ে বেয়ে পড়ছে। ব্লাডের ব্যাগ পুরো খালি করে ফেলে। চোখ বন্ধ করে রাখে এলেন। আলফির কথা মনে করতে থাকে। হঠাৎ এলেন ওর ঠোঁটে কারো আঙুলের স্পর্শ পায়। চোখ মেলে তাকায়। দেখে পাশে লিসার বসে এলেনের ঠোঁট থেকে বেয়ে পড়া রক্ত আঙুল দিয়ে তুলে নিয়ে নিজের মুখে নিয়ে খাচ্ছে। আঙুল মুখ থেকে বের করে মুচকি হেসে বলে,
-“রক্তটা আগের তুলনায় এখন বেশি টেস্টি লাগছে। কেন জানো?”

লিসারের নেকা নেকা কথা শুনে এলেনের রাগ যে টুকু কমেছিল, সে টুকুও বেড়ে গেছে। ওঠে দাঁড়িয়ে চিল্লিয়ে বলে,
-“গেট আউট! আউট লিসার।”

লিসার মুখ বাঁকিয়ে রুম থেকে বের হয়ে যায়। তখনি পাশ থেকে এরোন হাসতে হাসতে আসে এলেনের কাছে। এলেন রাগে ফোসফোস করছে। এরোনের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকাতেই এরোন মুখে হাত রেখে হাসি থামায়। এলেন টেবিলের উপর থাকা ফুলের টপটা লাথি মেরে ফেলে দিয়ে বেরিয়ে যায়।
.
.
বারোটার দিকে ওরা জঙ্গলে পৌঁছে যায়। সেখানে নেই কোনো বাড়ি ঘর,নেই কোনো থাকার ব্যবস্থা। সারা জাগায় দালানের চেয়ে বড় বড় গাছ-গাছালিতে ভরপুর। সরু রাস্তার পাশে থামে ওরা। গাড়ি থেকে নেমে ওরা সবাই চারদিক টা ভালো করে চোখ বুলিয়ে দেখতে লাগল। জায়গাটা বেশ সুন্দর ছিল। অনেকটা দূরে বড় বিশাল পাহাড় দেখা যাচ্ছিল। আলফি কিছুক্ষণ পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে কোথায় যেন হারিয়ে যায়। পরক্ষণে ওদের সবাইকে টেন্ট লাগাতে বলে। সবাই টেন্ট লাগাতে শুরু করে। রান্নার কাজ আলফি ও ম্যারি সারছে। ওদের কাজ সারতে সারতে তিনটা বেজে যায়। ততক্ষণে রান্না ও টেন্ট লাগান শেষ। খুব খিদে লাগার কারণে সবাই খাওয়া শুরু করেছে। ভাত আর ভাজা মুরগী। সবাই খুব এনজয় করছে। সেলফি নিচ্ছে। খাওয়া-দাওয়ার শেষ করে সবাই ঘুরতে বের হয়। কারণ যেটুকু সময়ের জন্য এখানে এসেছে। সেটুকু সময় খেয়েদেয়ে আয়েস করে কাঁটাতে চায় না। জঙ্গলের প্রকৃতিটা কাছ থেকে দেখে মজা নিতে চায়। উপভোগ করতে চায় সামার ভ্যাকেশন টা। পায়ে পা মিলিয়ে হাঁটছে । যত দেখছে তত মন ছুঁয়ে যাচ্ছে ওদের। কিন্তু আলফির মনে হচ্ছে,জঙ্গল দিনের বেলা এতটা সুন্দর দেখাচ্ছে। না জানি রাতের বেলায় কতটা ভয়ানক দেখা যাবে?
.
.
.
.
.
Continue To…….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে