কালো মেয়ের প্রতি অবহেলা পার্ট-০৬
লেখা-jannatul ferdous.
ডাক্তারের সাথে কথা বলেই যাচ্ছিলো জিহাদের অাব্বু.
জিহাদের আব্বু- ডাক্তার শিমুর কি অবস্থা এখন ?
ডাক্তার- Accident এর পর খুব ব্লিডিং হয়।আর এর সাথে খুব খারাপ ভাবে শারীরিক সম্পর্ক করা হয়।আর আমার মনে হয় এটা Accident না,এটা সুইসাইড করতে চেয়েছিলো শিমু।তবে এবারের মত বেঁচে গেল।(এটা বলে ডাক্তার চলে গেল)
(জিহাদের আব্বু জিহাদের সামনে গিয়ে ঠাস করে একটা থাপ্পড় মারলো তাকে)
জিহাদের আব্বু- তোকে আমার নিজের ছেলে বলতে ঘৃণা হচ্ছে। ছিঃ তুই এতটা নিছে নামতে পারলি ।
জানতাম তুই রাতে ড্রিংকস করোস,কিন্তু রাতে আর বাসায় আসোছ না । তোদের মা মারা যাওয়ার পর আমি তোদের সব স্বাধীনতা দিয়েছি। আর তুই এভাবে তার প্রতিদান দিলি। দূর হয়ে যা আমার চোখের সামনে থেকে..
(জিহাদ নিজেও ভাবতে পারছে না কীভাবে এতটা জগন্য কাজ করতে পারলো)
জিহাদ-সরি বাবা, আমি বুঝতে পারছি না কাল রাতে কিভাবে এত কিছু হয়ে গেল।
রিত্ত- তুই এটা ঠিক করলি না ভাইয়া।
জিহাদ- বোন বিশ্বাস কর আমি…
জিহাদের আব্বু- তোর মুখ থেকে আমি আর কিছু শুনতে চাই না। শিমু সুস্থ হলেই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমি তোদের বিয়ে দিবো।
জিহাদ- বাবা আমি ওকে বিয়ে করতে পারবোনা।
জিহাদের আব্বু- তাহলে কেন ওর ফুলের মত পবিত্র জীবনটা নষ্ট করলি?
জিহাদ- বাবা…
জিহাদের আব্বু-আমি কিছু শুনতে চাই না। শিমু সুস্থ হলেই তোদের বিয়ে হবে এটাই Final..
(( বলেই জিহাদের আব্বু চলে গেল। আর শিমু অসুস্থ বলে শিমুর আব্বু-আম্মু , আর শিমু বোন সাথী আসলো শহরে শিমুকে দেখতে))
কিছু দিন পর…
জিহাদের আব্বু- শিমু এখন সম্পূর্ণ সুস্থ তাই আমি সবাইকে উদ্দেশ্য করে একটা কথা বলতে চাই।
শিমুর আব্বু – বলো ভাইজান,,
জিহাদের আব্বু- আমি আমার শিমু মাকে শুভ্রের বউ করে এই বাড়িতে রেখে দিতে চাই।
শিমুর আব্বু- না ভাইজান এটা কখনো সম্ভব না, তোমরা কোথায় আর আমরা কোথায়? আমাদের কি বা আছে।
জিহাদের আব্বু- শুধুমাত্র টাকা পয়সার জন্য তুই আমার কথা অগ্রাহ্য করবি?
শিমুর আব্বু- না ভাইজান তুমি কি বলো এসব।
জিহাদের আব্বু- আমি আর কোনো কথা শুনতে চাই না, শিমু শুভ্রের বউ হবে।
শিমুর আব্বু- ওকে ভাইজান , তুমি যা ভালো মনে কর তাই হবে,।
((সবার সম্মতিতে এক সপ্তাহের মধ্যে বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে শিমু আর জিহাদের। রিত্ত বিয়ের দিন পুষ্পকে নিয়ে আসলে।))
শিমু- পুষ্প তুই এখানে কিভাবে আসলি?
রিত্ত- কেন,আমি নিয়ে আসছি শিমু,ওহ্ সরি ভাবি,,
শিমু- না রিত্ত আমি সবসময় তোমার কাছে শিমু হয়েই থাকতে চাই।
রিত্ত-ওকে মহারাণী.
পুষ্প-চল রেডি করাই ওকে.
(রেডি হয়ে নিছে অাসতেই পুষ্প-পরশ মুখোমুখি হয়ে গেলো।পরশকে দেখেই পুষ্পের চোখ ছানাবড়া হয়ে গেলো)
পরশ-পুষ্প!!!!
পুষ্প-অাপনি এখানে?
শিমু-ভাইয়া।
(শিমু দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরলো পরশকে।তারপর কান্না করে পেললো)
পরশ-আরে পাগলি কান্না করিছ না।আমি তো এসে গেছি।
শিমু-কেনো আমাদের কোনো খোঁজ খবর নিলে না ভাইয়া?
শিমুর অাব্বু-শিমু ওর কাছ থেকে দূরে সরে অায়।আর এখানে কে আসতে বলেছে তোকে।চলে যা তুই এখান থেকে।
পরশ-বাবা আমাকে তুমি ক্ষমা করে দাও।আমি ভুল করেছি।
জিহাদের অাব্বু-অামি ওকে এখানে আসতে বলেছি।নিজের পরিবারের জন্য অনেক দিন ধরেই ছেলেটা অনেক কষ্ট পেয়েছে,তোদের থেকে দূরে থেকে অনেক কষ্ট সহ্য করেছে।অার কত অালাদা থাকবে তোদের থেকে.হয়তো শহরের চাকচিক্যে ও সব ভুলে গেছিলো অার ভুলে গেছিলো ওর পরিবারকেও।কিন্তু ১বছরে পরশ ওর ভুল বুজতে পেরেছে।
শিমুর অাব্বু-তাহলে ১বছর কই ছিলো ওর ভালোবাসা।কেনো এক বছর অাগে আমাদের কাছে ফিরে যায়নি?
জিহাদের অাব্বু-এক বছরে ও নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে।এই বাড়ি থেকেও দূরে ছিলো।আজ পরশ কলেজের টিচার।দেখ কত বদলে গেছে ছেলেটা।
শিমুর অাব্বু-এসব আমাকে এতদিন বলোনি কেনো ভাইজান?
জিহাদের অাব্বু-আমি চেয়েছিলাম পরশ ওর ভুল বুজতে পেরে নিজেকে বদলে তোদের সামনে যাবে।
পরশ-বাবা আমি ভুল করেছি,আমাকে ক্ষমা করে দাও।
(শিমু,সাথী সহ সবার চোখেই পানি।অাজ এতদিন পর শিমুর পরিবার ফেরত পেলো পরশকে.
পরশ এসে পায়ে ধরতে যাচ্ছিলো শিমুর অাব্বুর.শিমুর অাব্বু ওকে বুকে জড়িয়ে নিলো)
দুইজনের চোখেই অাজ পানি ঝরছে।শিমুর অাম্মুও দূরে দাঁড়িয়ে কান্না করছে.
শিমু-মা কাঁদছো কেনো?দেখো ভাইয়া ফিরে এসেছে,যাবে না ভাইয়ার কাছে?
শিমুর অাম্মু-পরশ.
পরশ-মা (বলেই জড়িয়ে ধরলো)
রিত্ত-আজকে এত খুশির দিন অার সবাই কান্না করছো কেনো?পরশ ভাইয়া এবার তোমার বোনের বিয়েটা দাও তাড়াতাড়ি.
পরশ-হুম যা বোন.
(পুষ্প সবার অাড়ালে চলে যেতে চাইছিলো)
পরশ-পুষ্প.
শিমু-তুই কোথায় যাচ্ছিস?
পুষ্প-আমি মামানে……
পরশ-আমার কিছু বলার ছিলো তোমাকে পুষ্প.
শিমু-ভাইয়া তোমরা দুজন দুজনকে চিনো?
পরশ-হুম চিনি।পুষ্প অামি তোমার সাথে অনেক অন্যায় করেছি।ক্ষমা করে দাও অামাকে।তোমাকে প্রথম দেখেই ভালো লেগেছিলো তাই তোমার পিছনে ঘুরতাম।তুমি পাত্তা দিলে না দেখে কলেজ থেকে চলে আসতে বাধ্য করেছি তোমাকে.আমাকে ক্ষমা করে দাও পুষ্প.
পুষ্প-আমি এসব কিছু মনে রাখিনি।
পরশ-তুমি চলে অাসার পর তোমাকে অনেক খুঁজেছি ক্ষমা চাওয়ার জন্য.কিন্তু পাইনি.আমি যা করেছি ভুল করেছি.অামাকে প্লিজ ক্ষমা করে দাও পুষ্প।
পুষ্প-বিশ্বাস করুন অামি কিছুই মনে রাখিনি।ওই খান থেকে আসার পর শিমু অার রিত্তের মত ফ্রেন্ড পেয়েছি এটাই তো বড় পাওয়া। সব ভুল বুজাবুজি বাদ দিয়ে এখন বিয়েটা দেওয়া যাক।
পরশ-ওহ জিহাদের সাথেই তো দেখা হলো না।
(পরশ জিহাদের কাছে গেলো)
পরশ-কেমন অাছিস?
জিহাদ-অবস্থা তো দেখছিস।পাপা জোর করে শিমুকে আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছি।বলছে ওকে বিয়ে না করলে আমাকে ত্যাজ্যপুত্র করবে।
পরশ-এসব কী বলছিস?
জিহাদ-আমি একটা ভুল করেছি,যার শাস্তি অামাকে এই ভাবে পেতে হচ্ছে।
পরশ-মানে কি করেছিস,অার কেনোই বা শিমুর সাথে জোর করে তোর বিয়ে দিবে?
(হঠাৎ করেই রিত্ত চলে অাসলো)
রিত্ত-জানি দুই বন্ধু অনেকদিন পর একসাথে হয়েছেন,অনেক কথা জমা অাছে. তা পরেও বলা যাবে।আগে বিয়েটা শেষ হোক,তারপর বাকি সব কিছু হবে।
পরশ-হুম ঠিক বলেছিস।বিয়েটা আগে হয়ে যাক।
রিত্ত-চলো আমার সাথে।
পরশ-কোথায়?
রিত্ত-কথা অাছে,আসো তো।
(রিত্ত-পরশ চলে গেলো।বিয়েও সম্পূর্ন হয়ে গেলো)
রাত প্রায় ২ঃ০০ টা বেজে গেলো।শিমু বাসর ঘরে বউ সেজে শুভ্রের জন্য অপেক্ষা করেই যাচ্ছে,কিন্তু জিহাদের খবর নেই।
অপর দিকে জিহাদ বাগানে বসে একটার পর একটা
সিগারেট শেষ করে পেলছে.ধোঁয়া গুলো শুণ্যে উড়িয়ে দিচ্ছে.
হঠাৎ করেই কারো স্পর্শ অনুভব করলো জিহাদ.পিছনে তাকাতেই….
পরশ-রুমে যাবি না?
জিহাদ-আমার জীবনটা এলোমেলো হয়ে গেলো রে.
পরশ-আমি জানি তুই ইচ্ছে করে বিয়ে করিসনি।কিন্তু প্লিজ আমার বোনটাকে কষ্ট দিছ না রে।জীবনে অনেকের অবহেলা সহ্য করেছে আমার বোনটা
প্লিজ রুমে যা.আমার বোনটা তোর জন্য অনেক্ষন অপেক্ষা করছে তোর জন্য.প্লিজ যা.
(পরশের কথা শুনে রুমে গেলো জিহাদ।রুমটা খুব সুন্দর ভাবে সাজানো ফুল দিয়ে।অাস্তে অাস্তে জিহাদ এগিয়ে অাসলো)
চলবে……