কালো মেয়ের প্রতি অবহেলা পার্ট-০৯
লেখা-jannatul ferdous
অফিস থেকে বের হয়েই জিহাদ শপিং করতে গেলো।নিজের পছন্দ অনুযায়ী অনেক শপিং করলো.
বাসায় আসতেই—-
রিত্ত-এত কিছু কার জন্যে ভাইয়া???
জিহাদ-একজনকে মনের মত সাজাবো.
রিত্ত-ভালো.
জিহাদ-সায়নির জন্যই আজ আমি সত্যিকারের ভালোবাসা বুজতে পেরেছি.
রিত্ত-হুম সায়নি তোকে এভাবে না ঠকালে বুজতেই পারতি না শিমু তোকে কতটা ভালোবাসে.
জিহাদ-ওইদিন গুলো আমি এখনো ভুলিনি রে।সায়নি এরকম করতে পারে ভাবতেই পারিনি.
রিফাত-কি করেছে?(হঠাৎ করেই রিফাত চলে আসলো)
রিত্ত-তুমি?
রিফাত-কি করেছিলো সায়নি?
রিত্ত-বাদ দাও তো এসব।
রিফাত-না আমি শুনবো.
জিহাদ-ঠিক আছে বলছি.সায়নির ভাই শাওন রিত্তকে ভালোবাসতো.রিত্ত তখন মাত্র এসএসসি পরিক্ষা দিছিলো।তখন শাওন ওকে প্রোপোজ করাতে রিত্ত শাওনকে অপমান করে.তারপর শাওন রিত্তকে কিডন্যাপ করে,তার জন্যই শাওনকে মেরেছিলাম আমি ওকে.
রিত্ত-তখন ভাইয়া খুব বাজে ভাবে মেরেছিলো ওকে.১মাস হাসপাতালে ছিলো শাওন.
জিহাদ-আমার বোনের দিকে নজর দেওয়ার সাহস হলো কীভাবে তাই মেরেছি.
রিফাত-এখন তাহলে আমার কী হবে?
জিহাদ-তোমার সাথেও তো কম হলো না।
রিফাত-তাহলে এই কারণে সায়নি জিহাদ ভাইয়ার সাথে ভালোবাসার অভিনয় করে.
জিহাদ-হুম আচ্ছা বাদ দাও এসব।তুমি হঠাৎ এখানে?
পরী-আমাকে বাইরে রেখে এসেছো কেনো ফ্রেন্ড?
রিফাত-ফ্রেন্ড তোমাকে বললাম আমি না বলা পর্যন্ত ভিতরে আসতে না,কেনো এসেছো?
পরী-আমার একা একা ভয় লাগছিলো.
রিত্ত-তাসফিহা মামনি.
পরী-আমি তোমাকে চিনি.
রিত্ত-কি ভাবে?
পরী-বললে ফ্রেন্ড বকা দিবে আমাকে।
রিত্ত-দিলে আমি বকে দিবো.
পরী-আমি দেখেছি ফ্রেন্ড তোমার ছবি সারাদিন দেখে,চুমু দেই আবার.
রিফাত-চিটিং করতাছো ফ্রেন্ড.
জিহাদ-একেই বলে আমার মেয়ে.
পরী-তোমাকেও দেখছি আমি.
জিহাদ-কোথায় দেখেছো শুনি?
পরী-মাম্মাম তোমার ছবি নিয়ে রাতে কান্না করে.
জিহাদ-পাকা বুড়ি আর কাঁদতে দিবো না তোমার মাম্মামকে।
পরী-কিন্তু কান্না করে কেনো?আর তুমি কে?
জিহাদ-শিমু ওকে আসতে দিলো?
রিফাত-শিমুকে অফিসের কাজে বিজি রেখে চলে এসেছি.
পরী-এই তুমি কে বলো না কেনো?
রিফাত-তোমার বাবাই.
পরী-আমার বাবাই নেই মামনি বলছে.
জিহাদ-না আমিই তোমার বাবাই.
পরী-ফ্রেন্ড আমার বাবাই…..
রিফাত-হুম এই তোমার বাবাই.
পরী-তাহলে আমারো বাবাই আছে.
(জিহাদ এগিয়ে এসে পরীকে কোলে তুলে নিলো)
জিহাদ-একবার বাবাই বলে ডাকো আমাকে মামনি.
পরী-তোমার চোখে পানি কেনো?
রিফাত-ফ্রেন্ড বাবাই কে ডাকবে না?তুমিই তো বাবাই বাবাই করে কত কান্না করতে.
পরী-বাবাই,আমার বাবাই.
(জিহাদ তাসফিহার গালে চুমু খেলো.তাসফিহাও চুমু দিলে জিহাদকে)
জিহাদ-আজ অনেক বড় উপহার দিলে আমাকে রিফাত ভাইয়া.
রিফাত-আপনাদের যখন এক করবো বলেছি তখন তো করতেই হবে।আমার বোনটাকে আর কান্না করতে দিবেন না প্লিজ.অনেক কষ্ট পেয়েছে জীবনে.
জিহাদ-হুম আর কোনো কষ্ট ওকে স্পর্শও করতে দিবো না.
রিত্ত-ভাইয়া তুই এত বদলে যাবি ভাবতেও পারছি না.
রিফাত-হুম আমি তোমাকে খুব খারাপ ভেবেছিলাম, শিমুও তাই ভাবে।
জিহাদ-ওর ধারণা ভুল ছিলো না।আমি অনেক অত্যাচার করেছি ওর উপর।পুষ্পের বিয়ের দিনেই সব বলবো ওকে,যে করেই হোক ওকে এই বাড়িতে ফিরিয়ে আনবো.
রিত্ত-এই যে শুনুন পাকা বুড়ি,আপনার মাম্মামকে এসব বলবেন না.
পরী-কেনো?
রিফাত-জানলে তোমাকে খুব বকা দিবে।
পরী-আচ্ছা বলবো না
রিফাত-এবার শুধু ভুল বুজাবুজির অবসান হওয়ার পালা.
রিত্ত-সেটাও পুষ্পের বিয়ের দিন.
পরী-তাহলে আমিও বাবাই আর মাম্মামের সাথে থাকবো।
জিহাদ-থাকবেই তো আমার মামুনিটা আমার সাথে.
(বলেই চুমু দিলো জিহাদের গালে.সাথে জিহাদও দিলো আবার)
রিফাত-এবার যেতে হবে আমাদের।
রিত্ত-না খেয়ে চলে যাবে?
রিফাত-শিমু পরীকে না দেখলে রেগে যাবে.যেতে হবে তাড়াতাড়ি.
রিত্ত-৫মিনিট পর যেয়ো,চলো খাবে.
(খাবার খেয়ে চলে গেলো রিফাত-পরী)
রিত্ত-মন খারাপ করিছ না,শুধু কয়েকটা দিন পরেই শিমু ফিরে আসবে তোর কাছে.
জিহাদ-তা-ই যেনো হয়.
রিত্ত-হুম।
এভাবেই কেটে গেলো কয়েকটা দিন.আজ পুষ্পের বিয়ে.খুব খুশি সে.এই দিনটার জন্য অনেক দিন ধরেই অপেক্ষা করছে পুষ্প।কারণ আজ সে পরশকে আপন করে পাবে.
৪বছরের রিলেশনের পর আজ তাদের এক হওয়ার পালা.তাছাড়া আজকের দিনটাই অনেক ভুল বুজাবুজির অবসান ঘটবে।
পুষ্পের বিয়ে উপলক্ষ্যে শিমু, পরী,রিফাত আর রিমু সবাই খুব খুশি.পরী সকাল থেকেই খুব খুশি.
পরী-মামনি আমি এই ড্রেসটা পড়বো?
শিমু-হুম ভালো ড্রেস পড়ো.
রিফাত-না এটা পচা।এই দেখো আমি ড্রেস এনেছি তোমার জন্য।
পরী-তাহলে এটাই পরবো.
শিমু-ঠিক আছে.
পরী-বিয়েতে অনেক মানুষ আসবে তাই না মাম্মাম?
শিমু-তোমার মামা,নানু-নানা,খালামনিকে দেখবে.
পরী-এত মানুষ কে দেখবো?
রিমু-হুম দেখবে তো.
পরী-ওরা সবাই আমাকে আদর করবে?
রিমু-অনেক অাদর করবে.
পরী-তাহলে আমি তাড়াতাড়ি যাবো.
রিমু-ওকে.
রেডি হয়ে সবাই মিলে চলে গেলো বিয়ে বাড়িতে.
পরী-সবাই কই?
সাথী-এই তো আমি.কিন্তু এই পিচ্চি কে তুমি?
পরী-এটা কে মাম্মাম।আমি কী পিচ্চি নাকি?(মুখ বাকা করে)
শিমু-সাথী,তোমার খালামনি.বোন কেমন আছিস?
সাথী-কে?
শিমু-আমি তোর বোন শিমু.
সাথী-আপ্পি তুমি.কতদিন পর তোমাকে দেখলাম.আমি বাবা-মা কে ডেকে আনি.দাঁড়া তুই.
(সাথী দৌড়ে সবাইকে ডাকতে চলে গেলো)
কিছুক্ষন পর……
শিমুর আম্মু-আমার শিমু কই?ফিরে এসেছে আমার মেয়েটা.এত দিন কই ছিলি মা।তোর বাবা তোকে পাওয়া যাচ্ছে মা শুনে কান্না করতে করতে অসুস্থ হয়ে গেছিলো।
শিমু- বাবা কই?
শিমুর আম্মু-মা রে তোর বাবা খুব অসুস্থ ছিলো এখন তবুও একটু সুস্থ আছে,সবটাই পুষ্পের জন্য.
শিমু-পুষ্প সত্যিই খুব ভালো মেয়ে.
সাথী-আপু বলছিলো তুই আসবি তাই তোর জন্যই অপেক্ষা করছিলাম.আজকে আমি খুব খুশি আপু.
পরী-তোমরা কেউ আমাকে আদর করো না।সব আদর মাম্মামকে দিচ্ছো.(মুখ বাকা করে বললো তাসফিহা)
শিমুর আম্মু-কে গো তুমি?
শিমু-তোমাদের নাতনি তাসনিয়া জান্নাত পরী.
শিমুর আম্মু-এক সাথে এত কিছু ফিরে পাবো ভাবতেই পারছি না।
রিফাত-মা আমিও আপনার আরেকটা ছেলে,কি নিজের ছেলের মত ভাবতে পারবেন না আমাকে.
শিমুর আম্মু-তুমি কে?
শিমু-আম্মু ৫বছর আগে ভাইয়াই আমাকে বাঁচিয়েছিলো,আশ্রয় দিছিলো।
শিমুর আম্মু-তোমার ঋন কোনো দিন শোধ করতে পারবো না।পরশ যেমন আমার ছেলে,তুমিও আমার ছেলে.
রিফাত-ছেলের কাছে মায়ের ঋন কিসের?এবার আর কোনো কষ্ট থাকবে না কারো জীবনে।
রিমু-এখন তাহলে পরশ ভাইয়াকে নিয়ে যাওয়া যাক.
শিমু-সে কই সাথী?
সাথী-কই আর বললাম তুই এসেছিস.রাগ করে বসে আছে.
শিমু-ওকে দেখতাছি.
পরশের রাগ ভাঙ্গিয়ে চলে গেলো বিয়ে বাড়িতে.কিন্তু গিয়ে শিমু পুরো অবাক হয়ে গেলো.
শিমু-সবাই কই?আর বিয়ে বাড়িতে এত অন্ধকার কেনো?
হঠাৎ করেই…………
চলবে………