কালো মেয়ের প্রতি অবহেলা পার্ট-০২
লেখা-jannatul ferdous.
{দেহের সৌন্দর্য তো একদিন হারিয়ে যাবে,কিন্তু মনের সৌন্দর্য অাজীবন থাকবে}
ধাক্কা খেয়ে তাকাতেই শিমুর চোখ ছানাবড়া হয়ে গেলো।
জিহাদ-হোয়াট ননসেন্স.
রহিমা-মেয়েটার যে এখন কী হবে?(মনে মনে ভাবছে)
তারপরেই একটা থাপ্পড় পরলো শিমুর গালে.
জিহাদ-এই কাজের মেয়েটাকে কে অানছে এখানে.অার দেখে শুনে হাটতে পারে না.?(প্রছন্ড রেগে)রহিমা,এই স্টুপিড জোকারটা কে???
শিমু-অা,,অা,,,অামি……. ..
জিহাদ-চুপ থাকো যত্তোসব.এই পেত্নিটাকে কই থেকে তুলে অানলো পাপা।তার উপর সকালে এই মেয়েটার জন্য অামাকে এত কথা শুনতে হইছিলো।
(শিমু চুপচাপ চোখের পানি পেলছিলো।এতক্ষনের চিৎকারে জিহাদের বাবা,শিমুর বাবা উপরে চলে অাসলো)
জিহাদের অাব্বু-কী হচ্ছে এসব জিহাদ???(??)
জিহাদ-এটা কে?হু ইজ সি???
জিহাদের অাব্বু-ও শিমু.
জিহাদ-অামাদের কী নতুন কাজের লোকের দরকার অাছে নাকি????
জিহাদের অাব্বু-ও কাজের লোক না.
জিহাদ-জামা কাপড় অার চেহারা দেখে তো কাজের লোকেই মনে হচ্ছে।কাজের লোক থেকেও নিচু ক্লাসের মনে হচ্ছে।
জিহাদের অাব্বু-চুপচাপ রুমে যাও,তোমাকে এত কিছু বলতে কেউ বলে নাই।
জিহাদ-একে যেনো অামার চোখের সামনে অার না দেখি.
(বলেই রেগে চলে রুমে চলে গেলো জিহাদ)
জিহাদের অাব্বু-মা রে কাঁদিস না।
(বলেই জিহাদের অাব্বু শিমুর চোখের পানি মুছে দিলো)
জিহাদের অাব্বু-তুইও এত চিন্তা করিছ না,কিছুক্ষন পর রিত্ত অাসবে।ওর বান্ধবীদের সাথে ঘুরতে গেছে।
শিমুর অাব্বু-রিত্ত তো এবার পরিক্ষা দিছে তাই না?
জিহাদের অাব্বু-হুম শিমুর সাথেই।
(বলতে না বলতেই রিত্ত বাসায় এসে হাজির)
রিত্ত-পাপা কই তুমি?(চিৎকার দিতে দিতে উপরে অাসলো রিত্ত।এসে নিজেই মুখে হাত দিয়ে পেললো)
জিহাদের অাব্বু-সারাদিন এত চিৎকার দেস কেন?
রিত্ত-পাপা অামার বাড়ি অামি চিৎকার দিবো,কার কী?
জিহাদের অাব্বু-দেখ বাসায় অন্য কেউ অাছে।
রিত্ত-কারা এরা?
জিহাদের অাব্বু-তোর কাকাই অার তোর কাজিন।
রিত্ত-পরশ ভাইয়ার বোন?
জিহাদের অাব্বু-হুম।
রিত্ত-এই তুমি চলো তো অামার সাথে,চলো.
(শিমু অবাক হয়ে তাকালো রিত্তের দিকে)
রিত্ত-অারে অবাক হচ্ছো কেন?তুমি তো অামার সমবয়সী তাই না?
শিমু-হুম
রিত্ত-তাহলে চলো তোমার সাথে অনেক কথা বলবো।তোমার সম্পর্কে কত কী জানা বাকি অাছে অামার।
শিমু-ঠিক অাছে চলো।
(শিমু অার রিত্ত চলে গেলো)
শিমুর অাব্বু-অামি ভাবতেও পারিনি রিত্ত এরকম ভাবে শিমুকে এই বাড়িতে মেনে নিবে।
জিহাদের অাব্বু-রিত্ত এরকমি কিন্তু অামার ছেলেটা যে কেনো এত বদমেজাজি হলো জানিনা।চল নিছে চল,অামরা দুইজন মিলে একটু গল্প করি।
শিমুর অাব্বু-হুম চলো।
ওইদিকে শিমু রিত্তের কথা শুনেই যাচ্ছে।
রিত্ত-ওই শুনো অামি অার তুমি একসাথে কলেজে যাবো।
শিমু-তুমি অামার সাথে গেলে তোমার বান্ধবীরা অনেক বকবে তোমাকে।
রিত্ত-কি মনে করবে,তুমি অনেক ভালো।তাই তুমি অামার সাথে থাকবে।
শিমু-ঠিক অাছে।
রিত্ত-অামি নিয়মিত কলেজে যায় না।
শিমু-কেনো?
রিত্ত-অামার পার্টি,লং ড্রাইভ ভালো লাগে।তাই মাঝেমধ্যে চলে যায়।রাতে পার্টি করে দিনে ঘুমাই।
শিমু-তাহলে পড়ালেখা।
রিত্ত-দূর পড়ালেখা।এত পড়ে কী হবে বলো তো।
শিমু-তোমার ভবিষ্যত?
রিত্ত-পাপার এত টাকা অাছে কেন।খাবো,ঘুরবো এসবের জন্যই তো।বাদ দাও এসব।
শিমু-ঠিক অাছে।
রিত্ত-শুনো তুমি এরকম কালো দেখতে কেনো?
শিমু-কালো এটাই তো অামার জীবনের সবথেকে বড় অভিশাপ।(বলেই একটা দীর্ঘশ্বাস পেললো)
রিত্ত-কি যে বলো তুমি।কিছুদিন থাকো অামার সাথে তারপর দেখবা রিত্ত কী করে।
(শিমু মুচকি হাসলো)
রিত্ত-তোমার হাসিটা সুন্দর অাছে।শুনো কলেজ খুলতে অনেক দিন বাকি,অামরা কিছুদিন শুধু ঘুরবো অার ঘুরবো।
শিমু-তোমার মত এসব অাধুনিক চলাফেরা করতে পারি না অামি।
রিত্ত-ওহ তাই তো।তোমাকে অামি শিখাবো সবকিছু।
শিমু-না অামি এসব শিখবো না।
রিত্ত-শিখতে হবে।কোনো না শুনবো না।অাজকে রেস্ট নাও,কাল থেকে তোমাকে অামি সব শিখাবো।
শিমু-অামি বলছিলাম কী?
রিত্ত-কোনো কথা না।শিখবে মানে শিখবে।
(শিমু মাথা নাড়ালো)
রিত্ত-মাথা নাড়ালে চলবে না,কাল থেকেই সব শুরু করবো.
শিমু-ঠিক অাছে।
বিকেল গড়িয়ে রাত হয়ে গেলো।প্রায় ৯ঃ০০টা বেজে গেলো,রিত্ত কোথাও বের হচ্ছে।
শিমু-রিত্ত কই যাচ্ছো?
রিত্ত-পার্টি করবো।
শিমু-এত রাতে?
রিত্ত-মাত্র ৯ঃ০০টা।
শিমু-কখন অাসবে?
রিত্ত-১২ঃ০০টায়।
শিমু-ঠিক অাছে অামি অপেক্ষা করবো তাড়াতাড়ি অাসবে।
রিত্ত-করতে হবে না।
শিমু-অামি করবো।অামার কথা মনে থাকলে তাড়াতাড়ি অাসবে।তুমি যতক্ষন অাসবে না অামিও খাবো না।
রিত্ত-ঠিক অাছে এখন টাটা।
শিমু-সাবধানে যাইয়ো।
রিত্ত চলে গেলো.শিমুও রুমে চলে গেলো.
রাত প্রায় ১২ঃ৩০ মিনিট.রিত্ত অাসার খবর নেই.শিমু টেবিলেই বসে অাছে.
রিত্ত-ইশশ রে ১২ঃ৩০।শিমু মনে হয় অপেক্ষা করছে।এই তোরা থাক অামি অাসছি।
রনি-এত তাড়াতাড়ি চলে যাবি?
রিত্ত-যেতে হবে।
লিজা-এখনো তো ঠিক মত ড্রিংকসও করি নাই।
রিত্ত-অামি বিল দিয়ে যাচ্ছি।তোরা থাক অামাকে যেতেই হবে।
লিথি-ওকে বাই।
রিত্ত-বাই গাইস।
(রিত্ত ১ঃ০০টায় বাসায় অাসলো)
রিত্ত-শিমু,এই শিমু।রাগ করছো নাকি?সরি ভুলে গেছিলাম.
শিমু-না তবে অনেক রাত করে ফিরেছো।
রিত্ত-অামি তো মাঝেমধ্যে রাতে ফিরিই না।
শিমু-এবার থেকে ফিরবে।এখন খেতে অাসো।
রিত্ত-ভাইয়া এসেছে?
শিমু-না তো অামি দেখিনি.
রিত্ত-তাহলে মনে হয় ড্রিংকস করতাছে।
শিমু-তুমিও করছো নাকি?
রিত্ত-না অামি অল্প খাই।তবে ভাইয়া অনেক ড্রিংকস করে
শিমু-অাচ্ছা ফ্রেস হয়ে অাসো।
(খাবার শেষ করে রুমে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই দরজায় অাওয়াজ শুনা গেলো)
শিমু-অামি দেখতেছি।
দরজা খুলতেই ড্রাংক অবস্থায় জিহাদ বাসায় ডুকে।মুখ থেকে খুব বাজে অাসছিলো,হাটতে গিয়েই পরে যাচ্ছিলো.শিমু ধরলো জিহাদকে.
জিহাদ-ডোন্ট টাচ মি।নিজেকে দেখ অাগে. পেত্নির মত দেখতে অাবার অামাকে টাচ করে।
(বলেই ধাক্কা দিয়ে হাটা শুরু করলো।কিন্তু হাটতে গিয়েই পরে যায় যায় অবস্থা)
রিত্ত-ভাইয়া চল তোকে রুমে দিয়ে অাসি।
জিহাদ-অামি যেতে পারবো তুই যা।
রিত্ত-চল তো অামার সাথে.
(রিত্ত জিহাদকে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে জিহাদের রুমে নিয়ে অাসতেই বিছানার মধ্যে পড়ে গেলো)
রিত্ত-শিমু,চলো।ভাইয়া ঘুমাক।
শিমু-তুমি যাও অাসছি।
(রিত্ত চলে গেলো)
চলবে……..