হারিয়ে যাওয়া অনুভূতি  পাঠ-২৬

0
2338

হারিয়ে যাওয়া অনুভূতি  পাঠ-২৬
#আরিশা অনু
-ফ্রেশ হয়ে রুমে এসে দেখি মা মেয়ে জমিয়ে গল্প শুরু করেছে।আজ অফিসে যায়নি সারাদিনের কাজ পড়ে আছে তাই ল্যাপটপ টা নিয়ে কাজে লেগে পড়লাম।অনেক কাজ জমে আছে শেষ করতে করতে রাত শেষ হয়ে যাবে মনে হচ্ছে।

-আম্মু যানো আজ কতো জায়গায় গিয়েতি(গিয়েছি)টাইগার দেখেছি লায়ন দেখেছি পিচ্চিটা আজ বাবাইয়ের সাথে ঘুরতে যেয়ে কি কি দেখেছে তার বর্ননা দিচ্ছে। আর আমি ওর মুখথেকে উপচে পড়া খুসির ঝলক দেখছি।এত আনন্দ এর আগে কখনো হতে দেখিনি রুহিকে।আমার সাথে তো অনেক বার অনেক জায়গায় বেড়াতে গেছে এতখুসি ওকে কখনো হতে দেখিনি। মনে মনে কথা গুলো চিন্তা করছিল অনন্যা তখন রুহির ডাকে হুস ফিরল ওর।আবার গল্প শোনায় মন দিল ও।

-দিনগুল বেশ সুখেই কেটে যাচ্ছিল। দেখতে দেখতে সাতটা দিন কেটে গেল। অনন্যা এখন অনেকটাই সুস্থ।যেহেতু এখন সুস্থ হয়ে গেছে তাই এখন এবাড়ি থেকে চলে যাওয়াই সমীচিন।ভাবছে আজ রোহান অফিস থেকে আসার পর ওকে কথাটা বলবে অনন্যা।

-খুব কষ্ট। হবে এবাড়ি ছেড়ে যেতে। এই সাতটা দিন রোহান হাজার উপায়ে আমার মন ভালো করেছে। পাগলটা বেড থেকে নামতেই দেইনি।নামার সাথে সাথে ধমক দিয়ে আবার বেডে শুইয়ে দিয়েছে।

-রোহান আজ বাড়ি ফিরলো নয়টার পর।আজ নাকি মিটিং ছিল অফিসে তাই আসতে এত দেরি হল।
সারাদিন অনেক পরিশ্রম করে ছেলেটা। দুপুরে খেয়েছে কিনা কে জান।বাসায় এসেই আজ শাওয়ার নিতে ঢুকে পড়েছে বাথরুমে।মুখটা একদম শুখিয়ে গেছে বেচারার।একমনে কথাগুলে ভাবছিলাম তখন ও বলে উঠল। খুব ক্লান্ত আমি আজ এখনি শুয়ে পড়ব।সেকি খাবেনা তুমি একটু বসো আমি এখনি খাবার দিতে বলছি রুমকি কে।আমি অসুস্থ হওয়ার পর রুমকি আবার চলে এসেছে এবাড়িতে।সম্ভাবত রোহান ওকে ফোন করে আনিয়েছে।

-রুমকিকে খাবার দিতে বললাম একটু পরে ও এসে খাবার দিয়ে গেল।আমি যে টেবিলটাই বসে বই পড়তাম ওটার সাথে একটা মাএ চেয়ার রাখা ছিল।রোহান রুহিকে কোলে নিয়ে খেতে বসেছে।রুহিয়ে খাইয়ে দিয়ে ও খেয়ে নিল।ওর খাওয়া শেষ হলে আমি প্লেট গুলো নিয়ে নিচে চলে আসলাম।রুমকি কে বললাম টেবিলে খাবার দিতে।মেয়েটা যেন আমার ইশারার অপেক্ষায় ছিল এতক্ষণে সাথে সাথে খাবার গুলো এনে টেবিলে রাখলো।আমি ও সাহায্য করলাম ওকে।মেয়েটা বড্ড ভালো শান্তশিষ্ট একটা মেয়ে।সাত চড়ে ও রা উচ্চারণ করবেনা ওকে দেখলে মনে হয়।মাঝে মাঝে আমি অবাক হয়ে দেখি কত নিরীহ একটা মেয়ে।দুচোখ যেন মায়ায় ভরা।

-একটু পর সবাই খেতে এলো।তৃধা যে রেগে আগুন হয়ে আছে আমাকে দেখে তা ওর ফরসা মুখ দেখলে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।বেচারির মুখটা ঠিক লাল টমেটো হয়ে আছে। রাগে ফোস ফোস করছে বাট মুখে কিছু বলছেনা মুখ নিচু করে খেয়ে যাচ্ছে।বেস মজা লাগছে আমার তৃধাকে এভাবে দেখতে।কিছুক্ষণের মধ্যে সবার খাওয়া শেষ হয়ে গেল।বাকিরা উপরে চলে গেল।আমি আর রুমকি মিলে টেবিল গুছিয়ে বাকি খাবার গুলো ফ্রিজে রেখে দিলাম।রুমকি কে ঘুমাতে পাঠিয়ে দিয়ে আমি ও রুমের দিকে এগোলাম।মনে মনে ভাবছি রুমে যেয়ে রোহানকে আমাদের বাসায় ফিরে যাওয়ার কথাটা বলবো।আর কতদিন ওর বাসায় থাকবো।ও হয়তো চলে যাওয়ার কথা মুখ ফুটে কিছু বলতে পারছে না তাই বলে কি আমি ও চুপ থাকবো।মনে মনে কথাগুলো ভাবতে ভাবতে রুমে যাচ্ছিলাম তখন ই কে যেন ডাক দিল।পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখি
মামি দাঁড়িয়ে আছে।আমি বললাম কিছু বলবেন মামি?

-হ্যাঁ বলবো একটু এদিকে আসো।ঠিক আছে চলেন।কি বলবে কে যানে।ভয়ে আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে। সেদিনের মত আজ আবার হয়তো অপমান করবে তাই ডেকে নিয়ে যাচ্ছে।ভয়ে ভয়ে আমি ওনার পিছনে পিছনে যেতে লাগলাম।অবশেষে উনি ছাদে এসে থামলেন।আমি ছাদে চুপচাপ দাঁড়িয়ে ওনার অপমান গুলো গেলার জন্য রেডি হচ্ছি হঠাৎ উনি শুর বদলে বলে উঠলেন……
.
.
.
.
.
Continue….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে