Dont forget me পর্ব-০২

0
76

#Dont_forget_me (পর্ব – ২)

আলো হতাশ গলায় আদিবাকে বলল- তুমি যে কী সব বলো না আপু। আমাদের বাড়িওয়ালা আন্টির ছেলেকে দেখলে বুঝতে হ্যান্ডসাম কাকে বলে?

-বাড়িওয়ালা আন্টির হ্যান্ডসাম ছেলে মানে?

-মানে আন্টির ছেলে দেখতে অনেক ভালো।

-এই তুই কী আন্টির ছেলের প্রেমে পড়েছিস? আর এইজন্যই মুখ এমন ভোতা করে বসে আছিস পাত্র দেখতে চাচ্ছিস না? একটু ঝেড়ে কাশ তো…

-ধুর কী বলো এসব? দেখতে ভালো হলেই প্রেমে পড়তে হবে নাকি?

-সত্যি করে বল আলো? এখনো সময় আছে, তেমন কিছু হলে আমি বাসার সবাইকে বলে ম্যানেজ করব।

-বললাম তো তেমন কিছু নেই।

আদিবা এরপর আর কিছু বলল না তবে সন্দিহান চোখে তাকিয়ে রইল আলোর দিকে।

গেস্টরা এসেছে প্রায় ঘন্টাখানেক হয়ে গেছে কিন্তু তাদের কেউই এখনো আলোকে দেখতে ভেতরে আসেনি। খাওয়ার পর আলোকে ড্রইংরুমে ডাকা হয়। আদিবা ওকে নিয়ে আসে। এমন সময় কেউ একজন বলল- বাহ্, আজ কী মিষ্টি লাগছে আলোকে। আগে তো কখনো শাড়ি পরা দেখিনি।

কথা শুনে আলোর কেমন সন্দেহ হলো, গলাটা পরিচিত… সে চোখ তুলে তাকিয়ে দেখে সামনে বাড়িওয়ালা আন্টি বসা! সে টাশকি খেয়ে চোখ বড় বড় করে ফেলল। আর আন্টির পাশেই তূর্য ভাইয়া বসা। এমন সময় আদিবা আলোর কানে কানে বলল-

-কিরে এ নাকি তোর সেই বাড়িওয়ালা আন্টির ছেলে? এখন বল, পাত্র পছন্দ হয়েছে নাকি আমার জন্য বলব চাচীকে? ছেলে কিন্তু অলরেডি আমার দিকে বার বার তাকাচ্ছে। বলে আদিবা চাপা গলায় হেসে কুটপাট হচ্ছে। আলো ওকে চাপা ধমক দিয়ে বলল-

-ও মোটেও তোমার দিকে তাকায়নি। ওসব অল্ড জোকস অন্য কোথাও চালাও।

-ওওও… এখন সে “ও” হয়ে গেল! একটু আগে এত মিথ্যে বললি কেন তাহলে?

-উফ ওসব পরে বলো তো আপু। এখন ওকে একটু দেখতে দাও। পিচ কালারের পাঞ্জাবীটাতে কী কিউট লাগছে, মাগো! “দিলি বড়ো জ্বালারে পাঞ্জাবীওয়ালা…” একটু পরেই আলোকে বাড়িওয়ালা আন্টি আংটি পরিয়ে দিলেন। আর তূর্যকে আংটি পরিয়ে দিলেন আলোর বড় চাচ্চু। আলোর মনে কী যে আনন্দ হচ্ছে… স্বপ্ন এভাবেও সত্যি হয়!

আংটি পরানো হয়ে গেলে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করতে বসল সবাই। আদিবা তখন আলো আর তূর্যকে ভেতরের রুমে নিয়ে যায়। আদিবা তূর্যকে উদ্দেশ্য করে বলল-

-কতদিন ধরে চলছে আপনাদের এইসব?

-এইসব কোন সব?

-এই যে, যার কারণে আজকের এত আয়োজন?

-আমার কী চলবে? আমি তো এসব জানিও না। বিয়ের বয়েস হয়েছে বাবা-মা ধরে নিয়ে এসেছে। তাদের নাকি আলোকে খুব পছন্দ।

তূর্যর কথা শুনে আলোর চেহারার সবটুকু আলো নিভে গেল। আদিবা অবাক হয়ে বলল- আর আপনার?

-আমি তো কখনো আলোকে ওভাবে ভালো করে দেখিইনি।

আদিবা আর আলো দুজনের মুখই অন্ধকার হয়ে গেল। আদিবা ওদের কথা বলার জন্য এক্সকিউজ দিয়ে চলে গেল। আলো চুপ করে বসে রইল। কথা বলার মুড চলে গেছে তার। তূর্য তখন বলল-

-কই তুমি তো দেখছি ভালোই আছ?

-মানে? খারাপ থাকতে বলছেন নাকি?

-কাল তো খুব কান্নাকাটি করলে ভাইয়া মারবে বলে কিন্তু তেমন কিছু তো দেখছি না তাই বললাম।

-ভাইয়া কিছু বলেনি।

-ও… আচ্ছা। কিছু বলবে তুমি?

-কী বিষয়ে বলব?

-বাহ্, ডেকে এনে বলছ কী বিষয়ে বলব?

-আমি তো ডেকে আনিনি। আদিবা আপু এনেছে।

-তাহলে আদিবা আপু কিছু না বলেই চলে গেল যে?

-তাকেই গিয়ে জিজ্ঞেস করুন। ডাকব আপুকে?

-না থাক। পরে শুনলেও চলবে। আমি কী তাহলে চলে যাব?

আলো অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে বলল- যান, মানা করছে কে?

-আহা কী কপাল আমার! হবু জামাইয়ের সাথে প্রথমবার একান্তে কথা বলার সুযোগ হলো আর তার কথা বলার ঢংটা দেখো! একটাবার থাকতেও বলছে না…

-আপনার তো আমাকে পছন্দ নয় থেকে কী করবেন?

-“পছন্দ নয়” এমন কিছু কী বলেছি?

আলো তূর্যর দিকে তাকিয়ে রইল কিছু বলল না। হয়ত বোঝার চেষ্টা করছে…

-ঠিক আছে যাই তাহলে। বলে উঠতে উঠতে তূর্য বলল- রাতে ফোন করবে নয়ত ভাইয়াকে বলে আবার মার খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

আলো করুণ মুখে তূর্যর দিকে তাকিয়ে থেকে ভাবল- এই ছেলেটা এমন কেন? নিজের হবু বউয়ের সাথে কথা বলতে চায় সেটাও এমন হুমকি ধামকি দিয়ে বলতে হবে? সে তো কথা বলতেই চায়।

তূর্যরা সবাই চলে যাবার পর আদিবা একটা বক্স নিয়ে হনহন করে আলোর ঘরে এসে বলল- তূর্য এটা তোকে দিয়ে গেছে। খুলে দেখ তো কী আছে?

আলো আদিবার হাতের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখে বেশ বড় একটা বক্স। সে বক্সটা হাতে নিয়ে বলল- এটা কখন দিল?

-এই তো যাবার সময়। তাড়াতাড়ি খোল না দেখব তো?

আলো বক্সটা হাতে নিয়ে খুলল। ভেতরে পাশাপাশি আবার দুটো বক্স! আলো একটা খুলে দেখল ভেতরে- চা পাতা, গুঁড়ো দুধ, কফি আর সাথে দুটো কাপল চায়ের কাপ যেটা পাশাপাশি রাখলে হার্ট শেপ হয়। এগুলো দেখে দুজনের মুখ থেকেই মনের অজান্তে বের হয়ে এলো, “ওয়াও…” একটা চিরকুট পেল সেখানে লিখা- “দুকাপ চা এনে একা পান করো কেন? তূর্য তো আর অনেক দূরে থাকে না, ডাকলে কী হয়?”

আদিবা চোখ বড় বড় করে বলল- আলো এই ছেলে তো মারাত্মক লেভেলের কিউটরে! তারপর আড় চোখে আলোর দিকে তাকিয়ে দেখে তার চোখে মুখে মিষ্টি লালচে আভা মাখামাখি করছে। নতুন নতুন প্রেম করলে যেমন হয়। লজ্জা লজ্জা ভাব… তীব্র ভালো লাগায় আকাশে বাতাসে পাহাড়ে জঙ্গলে উড়ে উড়ে ঘুরে বেড়িয়ে স্বপ্ন দেখা টাইপ। ইস কী মিষ্টি লাগছে ওকে দেখতে, একেবারে হিংসে লাগার মত। এই সুখ যেন আজীবন ওর চোখে মুখে লেপ্টে থাকে। তারপর মুচকি হেসে বলল- আর কী আছে দেখ?

অন্য বক্সটা থেকে এরপর হলুদ আর মেরুন রঙের দুইটা ছাতা, একগুচ্ছ দোলনচাঁপা, ৪টা আম আর একটা খাম পেল। ছাতা দুটোর উপর ট্যাগ লাগানো। হলুদ ছাতার ট্যাগে লিখা, “বৃষ্টির ছাতা” আর মেরুনটায় লিখা “রোদের ছাতা”। আলো মৃদুস্বরে বলল- how sweet! আদিবা বলল-

-ছাতা! এ আবার কেমন ধরনের গিফট?

আলো মুচকি হেসে বলল- তুমি বুঝবে না আপু।

-ও বাবা… এখানে আবার বোঝাবুঝির ব্যাপার স্যাপারও আছে! তোদের তো সুবিধের লাগছে না!

-অসুবিধারও কিছু নেই আপু। আমি নিজেও আসলে কিছু বুঝতে পারছি না তুমি কী বুঝবে?

-বোঝা বুঝি বাদ দে, আগে খামটা খোল দেখি কী আছে ওতে?

-খাম তোমার সামনে খুলব কেন? তুমি যাও না?

-যাব কেন? খাম তো আমার সামনেই খুলতে হবে। আমি না দেখে তো ছাড়ব না। খোল?

-আপু…

-এমন মায়া মায়া মুখ করে কোনো লাভ নেই। খোল? নয়ত দেখবি কী করব?

-আপু সব সময় তুমি এমন করো… শুধু বড় হয়েছ বলে যা খুশি করে গেলে… নাও তুমিই খোলো?

-উহু, তোরটা তুই খোল। আমি খুললে পরে আফসোস করবি আর আমাকে গালাগাল করবি তা হবে না। খোল…

আলো খামটা খুলল, ভেতর থেকে ভাজ করা একটা নীল কাগজ আর বেশ কিছু ছবি বের হয়ে এলো। আরে, এ তো সব তারই ছবি! দুজন মিলে হুমরি খেয়ে ছবিগুলো দেখতে লাগল। সবগুলো ছবি ছাদ থেকে লুকিয়ে তোলা। গতকাল সকালে ও যখন বৃষ্টির মধ্যে চায়ের ছবি তুলছিল সেই ছবিও আছে। তারমানে রসগোল্লাটা ওখানে অনেক আগেই এসে ছবি তুলছিল লুকিয়ে থেকে! আর এমন ভাব করল যেন মাত্র এসেছে, কী বদলোক! একটা ছবি পেল যেটাতে আলো গাছ থেকে আম পেড়ে খাচ্ছে! ইসস… এইজন্যই তো বলছিল, আমি চুরি করতে এসেছি কিনা? ছিঃ ছিঃ সে ধরা পড়ে বসে আছে সেটা তো জানেই না! আদিবা তখন বলল-

-এই ছেলে তো আস্ত একটা চোর রে! লুকিয়ে লুকিয়ে সারাক্ষণ তোর ছবি তোলে। এ পুরাই তোর প্রেমে লাট্টু হয়ে আছে। তোদের ব্যাপারটা আমি শালা কিছুই বুঝতে পারছি না। তুই ওর প্রেমে পড়েছিস নাকি ও তোর প্রেমে ডুবে আছে? নাকি দুজন দুজনের সাথে প্রেম করছিস আর আমাদের চোখে ঠুলি পরিয়ে বোকা বানাচ্ছিস? আবার বলছিস কেউ কিছু জানিস না। ওদিকে বিয়ে ঠিক হচ্ছে! আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। পুরা ব্যাঙ হয়ে গেলাম!

-তুমি ব্যাঙ আর আমি ব্যাঙাচি হয়ে আছি আপু। শুধু এই অংশটুকু বাদে সেটা হলো একে দেখলেই আমার মনের মধ্যে লা লা লা শুরু হয়ে যায়!

-আমার মাথাটা আর খারাপ করিস না। তোরা তোদের ব্যাপার নিয়ে যা খুশি কর, এখন জলদি ওইটা খোল।

-ওইটা কোনটা?

-নীল কাগজটা। ওটা তো চিঠি মনে হচ্ছে আই থিংক লাভ লেটার! তাড়াতাড়ি খোল, লুকিয়ে লাভ নেই।

-আপু প্লিজ এটা অন্তত ছেড়ে দাও?

-নো, বের কর।

-হে আল্লাহ আমাকে কেন এবাড়ির ছোট মেয়ে করলা? সারাক্ষণ সবাই শুধু ফায়দা নেয়।

-এত বড় অপবাদ? আচ্ছা যাহ দেখলাম না। বলে আদিবা উঠে চলে গেল আর যেতে যেতে বলল- দরজা বন্ধ করে পড় নয়ত আমি আবার এসে পড়ব তখন কোনো মানা শুনব না বলে দিলাম।

আদিবা বের হতেই আলো দ্রুত দরজা বন্ধ করে দিয়ে কাগজটা খুলল। গোটা গোটা অক্ষরে তূর্য লিখেছে-

“এই যে আম চোর, ছবি দেখে কী বুঝলে? নিশ্চই ভাবছ আমি তোমার প্রেমে পড়েছি? ওসব পুতুপুতু টিনএজ টাইপ দিবা স্বপ্ন দেখা বন্ধ করো। তুমি যে আমার মায়ের থেকে হাতে পায়ে ধরে চাবি নিয়ে ছাদে গিয়ে কী কী সব কান্ড করে বেড়াও তার প্রমাণ দেখাতেই এগুলো করা। এটা দেখে মা বলেছে, এরপর আম খেতে চাইলে যেন বলে খাও এভাবে চুরি করার দরকার নেই। তাই আম পাঠালাম।

নেহাৎই ভদ্র ছেলে বলে ছাতা পাঠালাম। আর হ্যাঁ তুমি যে রোজ ছাদে উঠে আমাকে দেখার অপেক্ষা করো, এক কাপ চা বেশি করে কেন আনো সেটা আমি প্রথম দিন থেকেই বুঝতে পেরেছি। আমার সাথে প্রেম করতে হলে তোমাকে অনেক স্মার্ট হতে হবে বেবি।

বিদায়।”

আলো রাগে চিড়বিড়িয়ে উঠল। ইচ্ছে হলো ওর মাথার ঝুটি ধরে ঝাকিয়ে দিয়ে আসে। উপরেই তো থাকে যাবে নাকি একবার? হাতের আংটিটার দিকে তাকিয়ে ভাবল, এখন তো যেতেই পারে আফটার অল লিগ্যাল পারমিশন আছে। না থাক, এবারের মতো মাফ করে দিলাম। তারপর উঠে চেঞ্জ করে ফ্রেস হয়ে নিল। আজ আর তার ছাদে যাওয়া হবে না। ওয়েট, এখন থেকে ছাদটা তো তারও! আহ্ এতক্ষণে একটা ভালো কিছু পাওয়া গেল। নাহ, বিয়ে আসলে অতটা খারাপ কিছু না।

রাতে খাওয়ার পর আলো ওর ঘরে দরজা বন্ধ করে পায়চারি করতে লাগল। তূর্য ওকে ফোন করতে বলেছিল, করবে? না করলে তো ভাইয়াকে বলে দিবে বলেছে… কেন, তূর্য নিজে ফোন দিতে পারে না? দিব না আমি ফোন। ভাইয়াকে বলে দিবে, আসছে। ঘরের কথা পরকে বলে নাকি কেউ? আচ্ছা, এমনও তো হতে পারে ওটা আসলে জাস্ট ভয় দেখাতে বলেছে? ok… ফোন তো তোমাকেই দিতে হবে রসগোল্লা, বলে আলো শক্ত হয়ে বসে রইল। এমন সময় আলিফ ম্যাসেঞ্জারে নক দিয়ে বলল-

-কিরে কী করিস?

-কিছু না।

-তূর্যর সাথে কথা হয়েছে?

আলো বসা থেকে লাফ দিয়ে দাঁড়িয়ে গেল। তূর্য ভাইয়া কী ভাইয়াকে কিছু বলেছে? এই ছেলেটা আসলেই এত পাজি!

-কিরে কথা বলিস না কেন? দেখ, হুট করেই সব হয়ে গেল। এখন কথা না বললে সম্পর্ক আগাবে কীভাবে? ফোন দিস ওকে।

আলো তখন কিছুক্ষণ সময় নিয়ে ভেবে তূর্যর ম্যাসেঞ্জারে নক দিল।

তূর্য সাথে সাথে রিপ্লাই দিল- এই মেয়ে, সালাম দাও না কেন? আর ম্যাসেঞ্জারে কী? আমি তো তোমাকে ফোন করতে বলেছিলাম?

-ফোন দেয়ার জন্য নাম্বার থাকতে হয়।

-সাথে ইচ্ছেটাও থাকতে হয়। মা’র কাছ থেকে বলে বলে ছাদের চাবি তো ঠিকই নিয়েছ।

-ছাদের চাবি নেয়া আর কারো ফোন নাম্বার নেয়া এক বিষয়?

-ওটা শ্রেফ বাহানা নইলে এখন তো চাইতে পারতে?

আলো ব্যাঙ্গাত্মক ভাবে বলল- আমাকে আপনার নাম্বারটি প্রদান করুন প্রিয়। এই মুহুর্তে আমি আপনার গুনাহগার, মহাপাপী। আজ যদি পরিচালক দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর সাথে আমার পরিচয় থাকত তাহলে তিনি নিশ্চই আমার কাছে আপনার নাম্বার না থাকার শোচনীয় দূরবস্থা দেখে “উড বি বউ কেন আসামী?” নামক একটা সিনেমা বানিয়ে ফেলতেন! শাহেনশাহ জাহাপনায় আলামপনা, বাদশা ওলি শাহ সুফি তূর্য বিন শের শাহ আমার গোস্তাখী মাফ করবেন। আমাকে আপনার গুরুত্বপূর্ণ নাম্বারটি দিয়ে কৃতার্থ করুন, ধন্য করুন, জিন্দেগী বরবাদ করে দিন সরি জিন্দেগী সফল করুন। এর অন্যথায় আমি মরে যাব। আমার শ্বাস আটকে আছে আপনার নাম্বারের প্রতিটি সংখ্যার ভাঁজে ভাঁজে। প্লিজ আমাকে বাঁচিয়ে তুলুন…

-খুবই বাজে ধরনের ন্যাকামো হয়েছে। নেক্সট টাইম ভালো করে ট্রাই করবে। বলে তূর্য ওর নাম্বারটা দিল।

আলোর ইচ্ছে হলো মোবাইলটা তূর্যর কানের নিচে ছুঁড়ে মারে। সে বড় বড় শ্বাস নিল ৫মিনিট তারপর কল দিল। তূর্য সাথে সাথেই ওর কল কেটে দিয়ে ফোন ব্যাক করল।

আলো সালাম দিয়ে চুপ রইল।

-কী হলো কথা বলো?

-আমি পারি না, আপনিই বলুন?

-আমিই যদি বলব তাহলে তুমি ফোন করেছ কেন?

-আরে! ফোন তো আপনিই করতে বললেন।

-আমি তো তোমাকে কথাও বলতে বলছি?

-আপনি লুকিয়ে লুকিয়ে আমার ছবি তুলেছেন কেন?

-সেটা তো লিখেই দিয়েছি। নাকি পড়তে পারো না?

-যা লিখেছেন তা মোটেও সত্যি নয়।

-আর তুমি যে নিজে ছাতা উড়িয়ে দিয়ে আমার উপর দোষ চাপালে তখন খুব সত্য হলো, না?

-আপনাকে দেখে খুব ভদ্র ভেবেছিলাম।

-এখন কী মহাপুরুষ মনে হচ্ছে?

-এখন মহা জালিম মনে হচ্ছে। বলে আলো ফোন রেখে দিল আর তূর্য হাসতে লাগল। নাহ, খুব বেশি করে ফেলেছে, বেচারা ওকে জালিম ভাবছে রীতিমতো! দুঃশ্চিন্তায় রাতের ঘুমটাও হয়ত চলে যেতে পারে। সেটা উচিত হবে না। তখন একটা ম্যাসেজ পাঠালো- “আমি আমার ব্যক্তিগত সম্পদের ছবি তুলেছি, তাতে কারো পারমিশন নেয়া বা আপত্তি থাকার কথা নয়। থাকলেও তূর্য সেটা মানতে নারাজ। …congratulations for your engagement.”

কিন্তু আলো মেজাজ খারাপের কারণে ম্যাসেজ সীন না করে শুয়ে পড়ল।

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে