Devil love part 8

0
4866

Devil love part 8
writer_কাব্য_মাহমুদ

আফরোজাঃ বউমা মুখটি উঁচু করো তো?

–তানিশা মাথা নিচু থেকে মাথা উচু করতে যেয়ে সামনের দিকে তাকাতেই, একদম বড় ধরনের ধাক্কা খাই,,প্রথমত তার বান্ধবী নীলা,ও দ্বিতীয় কাব্য যে বিয়ের অনুষ্ঠান থেকেই তার শত্রু।

তানিশাঃ তুই এখানে(জোরে চেচিয়ে, নীলাকে উদ্দেশ্য করে)

–নীলা বেচারি তো চমকে উঠেছে,,,আর অন্য দিকে,,,তানিশার কথা শুনে তো পরিবার এর সবাই ভয় পেয়ে গেছে,

নীলাঃ না ম্মান্নে(থতমত খেয়ে)

তৌহিদঃ সে কীরে মা তোরা কী একে উপরকে চিনিস(জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে)

তানিশাঃ (মাথা নিচু করে)না মামানেএ হ্যা ও আমার বান্ধবী, আমরা একসাথেই পড়াশোনা করি(সবার সামনে এভাবে রিয়েক্ট করে লজ্জা পেয়ে যাই)

পারভেজঃ তারমানে তোমরা সবাই একসাথে বাহ শুনে খুব ভালো লাগল,,তাহলে তো বিয়ের পর দুজনে একসাথেই থাকা-সব কিছু করতে পারবে।

নীলাঃ (কোন শাকচুন্নিকে ঘরের বউ করছ বাবা তোমার মেয়েকে তো ও কুপিয়ে কিমা বানিয়ে লুচির সাথে খাবে,,মনে মনে)

কাব্যঃ (বসা থেকে উঠে) বাবা আপনারা অনুমতি দিলে আমি একা তানিশার সাথে কিছু কথা বলতে চাই,

তানিশাঃ (তুই হলি আমার জন্মের শত্রু আর তুই এসেছিস আমার সাথে বিয়ে করতে,, এই বিয়ে তো আমি কিছুতেই হতে দেব না এই তানিশা বলে রাখল)

কাব্যঃ কী হলো চলো,,,

—তারপর তারা সোজা ছাদের এক পাশে চলে যাই, দুজনে একসাথে দাড়িয়ে ঝিরিঝিরি বাতাস একটা রোম্যান্টিক সময়,

কাব্যঃ আমাকে বিয়ে করতে কী তোমার কোন আপত্তি আছে(একপাশে দুজন দাঁড়িয়ে)

তানিশাঃ(রেগে গিয়ে) আপনার মতো, অকর্মা, ক্যাবলাকান্ত,অকর্মার হাড্ডি,,অপদার্থর সাথে আমি বিয়ে করব impossible কোনদিন ও না,,(ঝাড়ি মেরে) আপনি আমার সব শেষ করে দিয়েছেন,,আমার devil এর সাথে বিয়ে করা বন্ধ করে দিয়েছেন,কতো শখ ছিলা আমার devil কে বিয়ে করে সুখে শান্তিতে থাকব, কিন্ত আপনি নাইজেরিয়ার এনাকন্ডা, আফ্রিকান গন্ডার,আমার সপ্নগুলো ভেঙে দিলেন(রেগে গিয়ে, একদমে বলে দিল)

–তানিশা কথা গুলো বলার সময় কাব্যর দিকে সেভাবে খেয়াল করে নি,কিন্ত সে কাব্যর দিকে তাকানোর পর দেখে কাব্য রেগে পুরো জ্বয়ালামুখির মতো আগুন বের হচ্ছে তার চোখমুখ দিয়ে

কাব্যঃ তারমানে তুমি বিয়েতে রাজি তাইতো(এমনভাবে রেগে আছে যেন অন্য কেউ হলে তাকে সেখানেই মেরে ফেলতে কাব্য দুইবার ভাবত না)

তানিশাঃ ক্কী বোঝাতে চাচ্ছেন আপনি(ভয় পেয়ে)

কাব্যঃ (কোন কথা না বলে সোজা তানিশাকে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নিয়ে, এমন ভাবে চেপে ধরেছে যেন একবিন্দু পরিমাণ বাতাস প্রবেশ করতে পারবে না)তানিশাকে চেপে ধরে

তানিশাঃ ক্কী কররছেন আপ্পনি(তুঁতলিয়ে) ভালো হ

কাব্যঃ বাকিটা কাব্য তানিশাকে বলতে না দিয়ে একদম তানিশার মুখ এর সাথে নিজের মুখ এক করে নেই,,, যাকে বলে jam kiss???

–দীর্ঘ ৫মিনিট পর ও কাব্য তানিশাকে ছাড়ার কোন নাম নেই,এলোপাথাড়ি চুমু খেয়েই চলেছে,কিন্ত তানিশা অযথা চেষ্টা করেই যাচ্ছে,আস্তে আস্তে তানিশার শ্বাসকষ্ট হতে চলেছে,যখন আর পারছে না, এক ধাক্কায় কাব্যকে দূরে সরিয়ে দেই,তারপর তানিশা একটু সরে যেয়ে হাঁপাতে থাকে,

কাব্যঃ (তানিশার কাছে এসে তাকে আবার বাহুডোরে জড়িয়ে ধরে) যদি শুনেছি আমাকে বিয়ে করবে না, তাহলে কিন্ত এর পরিনাম এরকমই হবে(এখনও রেগে আছে) আর সেদিন এর জন্য স্যরি আসলে আমার আন্দাজ ছিল যে তোমার সাথেই আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে,তাই আমি নিজের বউকেই কিস করেছি কোন ভুল তো করিনি(আদর করে)
।।
তানিশাঃ ছাড়ুন আমাকে(ঝাকুনি দিয়ে,কাব্যর কাছে থেকে সরে যেয়ে) আমি আপনাকে ভালবাসতে বা বিয়ে করতে পারব না আমি একজনকে ভালোবাসি আর তাকেই বিয়ে করব।

কাব্যঃ কাকে পছন্দ তোমার????

তানিশাঃ ওর নাম আর আপনার নাম একই

কাব্যঃ মানে?(কপাল কুচকে)

তানিশাঃ মানে ওর নাম ও কাব্য মাহমুদ, ওই devil এর বাচ্চা আমার মন চুরি করে নিয়েছে(তেজ দেখিয়ে)

কাব্যঃ (এটা আবার কেমন কথা,মনে মনে) কীভাবে মন কেড়ে নিয়েছে(জানার আগ্রহী নিয়ে)

তানিশাঃ শুনবেন???

কাব্যঃ হুম বলো

তানিশাঃ আমার কাছে যখন ফোন আসে ধীরে ধীরে আমিও সব কিছু ফোন এর ব্যাপার এ যেনে যাই,,,,তারপর বান্ধবীদের সাথে ফেসবুক সম্পর্কে শুনি,আর তারপর আমিও চালানোর চেষ্টা করি,আর সব জেনেও যাই,,,
তারপর একদিন ফেসবুকে দেখি একটি গল্প গল্পটির নাম ছিলা অন্ধপ্রেম এর গল্প আর আমি সেটা পড়তে থাকি কিন্ত গল্পটাতে এমন কী ছিল যে আমার খুব ভালো লেগে যাই,এবং আমি আস্তে আস্তে তার সকল গল্প পড়তে পড়তেই আমি তার গল্পের প্রেমে পড়ে যাই, এবং ভাবি যে এর গল্প যখন এতো কিউট তাহলে সে কত কিউট হবে তারপর তার কথা ভাবতে ভাবতেই এই অবস্থা (মন খারাপ করে)

কাব্যঃ(এতক্ষণ তানিশার কথা মন দিয়ে শুনছিল) তারপর কী অবস্থা

তানিশাঃ ওইযে তার প্রেমে পড়ে যাই তার কথা ভাবতে ভাবতে,কিন্ত বজ্জাত devil কে আমি দিনে মনে হয় ১০০০ এসএমএস দিই কিন্ত বেটা অকর্মা আমার কোন এসএমএস এর রিপ্লে দেই না,,জানেন ওর জন্য আমিও গল্প লিখি, কবিতা লিখি,

কাব্যঃ (তারমানে এই সেই বজ্জাত এর হাড্ডি তানিশা,যে আমার অবশর সময় টুকু কাটাতে দেই না, সবসময় শুধু এসএমএস দেওয়া,তোমাকে তো আমি ছাড়ছি তা miss tanisha islam tuli?)
.
তানিশাঃ কী ভাবছেন এতো, জানেন আমি ওনার জন্য কবিতাও লিখেছি।

কাব্যঃ কী কবিতা??।

তানিশাঃ শোনেন,

ডেভিলকে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও,
একসাথে সবাই মিলে অনেক এসএমএস দাও
ডেভিল এর ফেসবুক তো নয়
পাখির বাসার ছাউনি,
একটুখানি বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে পড়ে পানি।

—-কেমন হয়েছে বলবেন, আমি জানি এটা খুব ভালো হয়েছে কারণ আমার মা তো প্রতিদিন আমার কবিতার প্রসংশা করে,(আনন্দে আত্নহারা)

তানিশাঃ কী এতো ভাবছেন??বলুন আমার কবিতাটি কেমন হলো

কাব্যঃ(কাব্য তো আবার রেগে গিয়েছে,,,জসীম উদ্দিন এর কবিতাও ছাড়ল না এই মেয়ে,,,,,রাগ কন্ট্রোল করে) না কিছু না,, চল নিচে যেয়ে বলবে আমি বিয়েতে রাজি.

তানিশাঃ আপনার আমার বিষয় এ এতো কিছু জেনেও বলছেন যে বিয়ে করব

কাব্যঃ হুম সমস্যা কোথাই?

তানিশাঃ সমস্যা নেই মানে নেংটি ইদুর,ডাইনোসর,ক্যাবলাকান্ত কোথাকার

কাব্যঃ shut up,insane girl তখন থেকে বকবক করছ,,,চলো আমার সাথে(কাব্য তানিশাকে জোর করে টেনে নিয়ে নিচে চলে গেল)
.
পারভেজঃ কী ব্যাপার এতো সময় লাগে কথা বলতে??

কাব্যঃ না মানে নিজেদের ব্যাপারে জানতে হলে একটু সময় তো লাগবেই,,,(তানিশার হাত ছেড়ে দিয়ে,)

পারভেজঃ হুম,তা অবশ্য ঠিক,,,,,আচ্ছা মা তোমার কী ভালো লেগেছে আমার ছেলেকে

তানিশাঃ (এই একটা সুযোগ তানিশা,বলে দে সব যে আমার আপনার ছেলেকে মোটেও ভালো লাগে নি,, মনে মনে,,,)

পারভেজঃ কি হলো মামুনিই??

তানিশাঃ জ্বী না আংকেল আমার আপনার ছেলেকে মোটেও ভালো লাগে নি,আমি এই বিয়ে করতে পারব না

–তানিশার কথা শুনে সবাই চমকে উঠে, কেউ কিছু বুঝতে পারছে না

আফরোজাঃ কেন?কি হয়েছে??তুমি বিয়ে করবে না কেন? আমার ছেলে তো সবদিক থেকে ভালো,,

তানিশাঃ (দ্বারাও চান্দু তোমাকে বোঝাচ্ছি) কে বলেছে আপনার ছেলে সবদিক থেকে ভালো, আপনার ছেলে মোটেও ভালো না,আপনারা হয়তো জানেন না যে আপনার ছেলে সারাক্ষণ মেয়ের পেছনে পড়ে থাকে,তাদের ছবি লুকিয়ে লুকিয়ে তুলে ফেসবুক এ আপলোড দেই,(একদম এ বলে দিল)

পারভেজঃ এসব কী বলছ তুমি?? (সবাই অবাক হয়ে)

তানিশাঃ আমি ঠিকই বলছি(ঝাড়ি মেরে)

কাব্যঃ অনেক বলেছ miss tanisha ইসলাম, এবার চুপ করো(কাব্য রেগে আছে ঠিকই কিন্ত তার বাবা-মাকে সেটা কোনদিন দেখাই নি বা এখনও দেখাবে না),,,বাবা আমি আপনার মেয়েকে এখনিই নিয়ে যাব,

তৌহিদঃ মানে??(সবাই অবাক হয়ে কাব্যর দিকে তাকিয়ে আছে)

কাব্যঃ মানে আমি আমার বাসাই তানিশাকে নিয়ে যেতে চাই(কাব্য তানিশার হাত ধরে,আর তানিশাতো ভয়ে কিছু বলতে পারছে না আর)

তৌহিদঃ কিন্ত কেন?

কাব্যঃ বাবা আমি আপনার মেয়েকে আমার বাসাই থেকেই বিয়ে করব, আর আপনার মেয়েকেও আমি সব শিখিয়ে দেব,,বাকিটা আপনারা সবাই সামলে নেন,আর তানিশা যা বল্ল সে বিষয় এ আমি আপনাদের সাথে পরে কথা বলব,আসা করি বুঝতে পারছেন

পারভেজঃ হ্যা বুঝতে পেরেছি, বলছিলাম ওরা ওদের বিষয় বুঝে নিক আমরা আমাদের গুলো নিয়ে ভাবি,,,কি বলিস☺☺

তৌহিদঃ আমি আবার কী বলব,, যাও কাব্য তোমরা নিজেদের মানিয়ে নাও

কাব্যঃ আচ্ছা৷,, আর বাবা বললাম কারণ বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর তো বলবই তাই এখন থেকেই শুরু করলাম, কেমন হলো???

তৌহিদঃ হুম, আমি গর্ব করছি যে আমি এতো ভালো একটা জামাই পাবো,,,যাও তুমি

–কাব্য তানিশার হাত ধরে নিয়ে চলে গেল

চলবে,,,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে