#Darkness
Writer: Abir Khan
Part: 04
তনু জানে না কাল সকালে ও কত বড়ো একটা সারপ্রাইজ পেতে যাচ্ছে। নেহাল শুধু কালকের সকালের অপেক্ষায় আছে।
পরদিন সকালে,
তনু ঘুমের মাঝে ফিল করছে, কেমন জানি ঠান্ডা একটা বাতাস, নোনতা ঘ্রাণ বাতাসে আর সমুদ্র সৈকতে থাকা পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ। সব মিলিয়ে ওর মনে মনে ভাবা পরিবেশের আভাস পাচ্ছে ও। তনু আর ঘুমাতে পারে না। ও আস্তে করে চোখ মেলে তাকিয়ে পুরো অবাক। আরে! এটা তো ওর বাসার রুম না৷ একটা ছোট্ট কাঠের ঘর। তনু একলাফে উঠে বসে। আশে পাশের তাকিয়ে দরজার বাইরে দেখে সাদা বালি। শুধু তাই না বাহিরটা অনেক উজ্জ্বল। আর কেমন জানি বড়ো বড়ো ঢেউয়ের শব্দ ভেসে আসছে। তনুর গলা শুকিয়ে যাচ্ছে অজানা উত্তেজনায়। হৃদস্পন্দন ক্রমশ বেড়েই যাচ্ছে। ও গুটিগুটি পায়ে আস্তে আস্তে ঘরটার বাইরে এসে দেখে অসম্ভব সুন্দর একটা সি বিচে ও। তনু খুশিতে একটা দৌড় দেয়। ওর বিশ্বাসই হচ্ছে না৷ এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখে বিশাল বড়ো সি বিচ। বিচের বালিগুলো একদম সাদা। আর সমুদ্রের পানি একদম পরিষ্কার। যেন কাচের মতো স্বচ্ছ। তনু একটু দূরে তাকিয়ে পুরো স্তব্ধ। এ যে নেহাল আসছে। তনু নেহালকে দেখা মাত্রই হা করে তাকিয়ে আছে। নেহাল খালি গায়ে শটস পরে সিক্স প্যাক বডিটা উডাম করে ঘাড়ের উপর বিশাল বড়ো বড়ো দুইটা গাছের টুকরা নিয়ে ওর দিকেই আসছে। তনু এবার লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু নেহালের উপর থেকে ও চোখই সরাতেই পারছে না৷ একসময় নেহাল তনুর কাছে চলে আসে। গাছ দুটো পাশে রেখে তনুর সামনে এসে দাঁড়িয়ে হাত দুটো দুদিকে ছড়িয়ে দিয়ে জোরে বলে উঠে,
— সারপ্রাইজজজজ….কেমন লাগলো?
দুষ্টু তনু মনে মনে ভাবছে, সারপ্রাইজ কি ওনার এই সিক্স প্যাক বডিটা নাকি এই সি বিচটা? উফফ! মনে হচ্ছে একসাথে দুইটা সারপ্রাইজ পেয়েছি। তনু লজ্জাসিক্ত মুখখানা নিয়ে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে,
~ অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ। অসম্ভব সুন্দর একটা সি বিচ৷ একদম আমার কল্পনার মতো। কিন্তু এটা কোথায়?
— পৃথিবীর একমাত্র এবং সবচেয়ে সুন্দর সি বিচ মানে,
Boracay White Beach, Philippines.
~ কি আমরা এখন ফিলিপাইনে?
— হ্যাঁ। এই সি বিচ’টা পৃথিবীর অন্যতম এবং সবচেয়ে সুন্দর সি বিচ। কারণ এই হোয়াইট বিচে যারা সাঁতার পছন্দ করে, তাদের সমতল, শান্ত জলের জন্য উপযুক্ত। ৩ মাইল দীর্ঘ এই প্রসারিতটি বোরাসাইয়ের অন্যতম জনপ্রিয় সৈকত হিসাবে বিবেচিত এবং এটি সৈকত কার্যকলাপ এবং রেস্তোঁরা থেকে নাইট লাইফ এবং হোটেলগুলির সমস্ত কিছু সরবরাহ করে। আবাসনটি সৈকত বরাবর তিনটি বিভাগে বিভক্ত, স্টেশনগুলি 1, 2 এবং 3 এবং যথাক্রমে বিলাসবহুল, মধ্য-স্তর এবং বাজেট থেকে শুরু করে। মোট কথা এই সি বিচের সাথে আর কোন বিচের তুলনা হয় না। তোমার ইচ্ছা ছিল না এরকম একটা বিচে আসার? নেও নিয়ে আসলাম তোমাকে। কি খুশি তো?
তনু বাকরুদ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে নেহালের দিকে। ও তো স্বপ্নেও ভাবে নি এরকম একটা জায়গায় ও কখনো আসতে পারবে৷ তনু কোন কিছু না ভেবেই সোজা নেহালকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে। আর বলে,
~ আপনি সত্যিই খুব খুব ভালো। আমি কল্পনাও করি নি জীবনের কখনো এত সুন্দর একটা সারপ্রাইজ পাবো। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। যান আজ থেকে আপনি যত খুশি তত আমার রক্ত খেয়েন৷ আমি কিচ্ছু বলবো না।
নেহাল হাসতে হাসতে তনুকে সামনে এনে প্রথমে ওর চোখ দুটো মুছে দিতে দিতে বলে,
— সেটা তুমি না দিলেও খেতে হবে আমাকে। নাহলে তোমাকে প্রোটেক্ট করবো কিভাবে! আমার যে অনেক পাওয়ার প্রয়োজন। আমার একমাত্র ভালবাসার মানুষটার কোন ভাবেই কোন ক্ষতি হতে দিব না আমি। বুঝেছো?
তনু মুগ্ধ হয়ে নেহালের সুন্দর আকর্ষণীয় মুখখানার দিকে তাকিয়ে আছে। নেহালও সেই রহস্যময় হাসি দিয়ে তনুকে দেখছে। হঠাৎ তনুর নজর চলে যায় নেহালের সিক্স প্যাক বডিটার উপর। এত কাছ থেকে এই প্রথম ও কোন ছেলেকে দেখছে। তাও আবার খালি গায়ে। তনু অজান্তেই নেহালের শরীরে হাত বুলিয়ে ওর টাইট ফিট বডিটা অনুভব করে দেখছে৷ নেহাল এই সুযোগে তনুকে জ্বালানোর জন্য বলে,
— পছন্দ হয়েছে আমার ফিটফাট বডিটা?
তনু নেহালের নেশায় এতটা বিভোর ছিল যে ও মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ হ্যাঁ বলে ফেলে। আর পরমুহূর্তেই ও জিহবায় কামড় দিয়ে অন্যদিকে ফিরে লজ্জায় মুখ ঢেকে ফেলে। নেহাল ওকে পিছনে থেকে নিজের সাথে জড়িয়ে ধরে বলে,
— লজ্জা পরে। আগে চলো সি বিচটা ঘুরে দেখবে। আফটার অল তোমার জন্যই তো এখানে আসা।
~ হ্যাঁ হ্যাঁ চলুন। (লজ্জাসিক্ত কণ্ঠে)
নেহাল তনুর হাত ধরে বিচটা ঘুরে দেখতে শুরু করে৷ এখানের অক্সিজেন এত ফ্রেশ যে তনুর খুব ভালো লাগছিল। ওর পুরো শরীর যেন মুহূর্তেই সতেজ হয়ে যাচ্ছিল এই ফ্রেশ অক্সিজেনের জন্য। এছাড়া পুরো বিচে সারি সারি নারিকেল গাছে ভরা। নেহাল তনুকে বলে,
— আমরা বিচের একটা পাশে আছি। তাই এখানে তেমন কোন লোকজন নেই। ওই দিকে মূলত লোকালয়। তুমি কি ওদিকে যাবে নাকি এখানে থাকবে?
~ এখানেই সুন্দর। আপনি আর আমি শুধু। আর কাউকে লাগবে না।
— বাব্বাহ! আমি ত অবাক হয়ে যাচ্ছি আমার রোমান্টিক তনুকে দেখে। হাহা।
তনু লজ্জা পেয়ে বলে,
~ আপনি কিন্তু আমাকে অনেক লজ্জা দিচ্ছেন। আমি কিন্তু তাহলে ওদিকে একা চলে যাবো।
— আচ্ছা আচ্ছা সরিইই। চলো পানিতে নামি?
নেহাল দেখে তনুর মুখখানা মুহূর্তেই অন্ধকার হয়ে গিয়েছে। ও তনুর দুই গালে হাত দিয়ে চিন্তিত স্বরে বলে,
— কি হলো আমার তনুটার? উজ্জ্বল মুখখানা এরকম অন্ধকার হয়ে গেল কেন? আমি কি ভুল কিছু বলেছি?
~ না না। আসলে…
— আরে আমার সাথে সংকোচ কিসের? বলে ফেলো।
~ আসলে আমি সাঁতার জানি না৷ সরি…
— ধুর পাগলি এই কথা! চলো তাহলে আজ তোমাকে সাঁতার শেখাবো।
~ যদি তলিয়ে যাই আমি?
নেহাল তনুকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ওর মায়াবী চোখের দিকে তাকিয়ে বলে,
— তোমার ভ্যাম্পায়ার কিং তোমার সাথে থাকতে মনে হয় তুমি তলিয়ে যাবে?
তনু মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে মাথা নাড়িয়ে না না বলে। নেহালও হেসে বলে,
— তাহলে চলো।
~ আচ্ছা।
নেহাল তনুকে নিয়ে পানিতে নামে। তনু প্রথমে একটু ভয় পাচ্ছিল। কিন্তু নেহালের সঙ্গ ওর সব ভয়কে লজ্জা আর আনন্দে রূপান্তরিত করে দেয়। তনু নেহালের হাত ধরে সাঁতার কাটছে। মানে শিখছে আর কি। নেহাল ভালবাসা আর স্নেহ মিশিয়ে তনুকে সাঁতার কাটা শেখাচ্ছে। একসময় তনু হাপিয়ে যায়। তাই নেহাল বলে,
— একটা জিনিস দেখবে?
~ কি?
— কাছে এসো।
তনু নেহালের আরো কাছে গেলে নেহাল টুক করে তনুর কপালে একটা চুমু দিয়ে দেয়। তনু চমকে যায়। আর লজ্জা পেয়ে বলে উঠে,
~ এটা কোন দেখানো জিনিস?
— একদম না। আসল জিনিস তো এখন দেখবে। হাহা।
বলেই ও তনুর হাত ধরে এক টানে সমুদ্রের তলদেশ ডুব দেয়। তনু আকস্মিক ভয়ে ছটফট করতে থাকে। ও ভাবে ও দম বন্ধ হয়ে মারা যাবে৷ কিন্তু একটু পরই ও ফিল করে ও পানির নিচে নরমাল ভাবে শ্বাস নিতে পারছে। তার মানে নেহাল কিছু একটা করেছে। নেহাল তনুর দিকে তাকিয়ে হাসি দিয়ে ইশারায় ওর সাথে আসতে বলে। তনু খুব খুশি হয়ে ইশারায় আচ্ছা বলে। এরপর ওরা দুজন দুজনের হাত ধরে সমুদ্রের অনেক গভীরে গিয়ে অনেক অজানা, অনেক সুন্দর সুন্দর মাছ, সামুদ্রিক জীব, সমুদ্রের তলদেশের দৃশ্য ইত্যাদি দেখতে থাকে৷ তনুর যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না৷ এ যেন কোন এক অবিশ্বাস্য সুন্দর স্বপ্ন। ওরা অনেকক্ষণ সমুদ্রের তলদেশে ঘুরে উপরে চলে আসে। তনু উপরে আসতেই দেখে নেহালের হাতে একটা বড়ো মাছ। ও বলে উঠে,
~ একি! এই মাছটা নিয়ে আসলেন কেন?
— আনবো না? সকালের নাস্তা করবে না? নাকি না খেয়ে থাকার ইচ্ছা আছে?
~ কাচা মাছ খাবো? (অসহায় ভাবে তাকিয়ে)
— আহরে পাগলি টা! আগে বিচে চলো তারপর সব দেখবে।
~ এই যে শুনুন না, একটা সমস্যা আছে।
— হ্যাঁ বলো।
~ আমি কি এই ভেজা জামা কাপড় পরে থাকবো?
— একদম না। আসো আমার সাথে।
তনু নেহালের পিছনে পিছনে যায়। নেহাল মাছটা গাছটার উপর রেখে তনুর হাত ধরে একসাথে দাঁড়ায়। সাথে সাথে ওদের সামনে বড়ো গোল করে একটা ব্লাক হোল চলে আসে। নেহাল তনুকে নিয়ে সেই ব্লাক হোলে ঢুকতেই তনু নিজেকে ওর রুমে আবিষ্কার করে৷ নেহাল বলে,
— যাও চেঞ্জ করে আসো।
~ ওয়াও! এটা কিভাবে সম্ভব! চোখের পলকে আমরা চলে আসলাম?
— হাহা। ভ্যাম্পায়ারদের পাওয়ার সম্পর্কে তোমার কোন ধারণাই নেই। যাও যাও। চেঞ্জ করে আবার এই হোল দিয়ে চলে এসো।
~ আচ্ছা।
নেহাল আবার বিচে চলে আসে। এসে ওর হাত দিয়েই গাছ গুলো কেটে পিছ পিছ করে সেগুলোতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। তারপর মাছটাকে ভালো করে রেডি করে যাতে তনু খেতে পারে। তারপর মাছটাকে আগুনের উপর পুড়তে দিয়ে দেয়। এই ফাঁকে ও পাউরুটি আর ডিম পোছ ও বানিয়ে ফেলে। মাছটাও হতে হতে তনু চলে আসে। এসে দেখে নাস্তা রেডি। তনু অবাক কণ্ঠে বলে,
~ আপনি দেখি রান্নাও পারেন। ভ্যাম্পায়ার’রা যে রান্নাও পারে আমার জানা ছিল না। বাহ! বাহ!
— হাহা। বসো বসো। আর দেরি না করে খেতে শুরু করো। এটা একটা মজাদার মাছ। তোমাদের ওখানে এই মাছের চাহিদা অনেক। কারণ এটা অনেক রেয়ার। সহজে কেউ পায় না। পাউরুটি আর ডিম দিয়ে মাছটা খেয়ে দেখো। কি মজাই না লাগবে।
তনু নেহালের কথা মতো খেয়ে দেখে। সত্যিই অনেক মজা লাগে ওর কাছে। এত সুস্বাদু মজার মাছ ও আগে কখনো খায় নি। ওরা দুজন মিলে পুরো মাছটা খেয়ে ফেলে। নেহাল হঠাৎ করেই কোথা থেকে যেন একটা জুসের বোতল নিয়ে এসে তনুকে দেয়। তনু বলে,
~ আমার নিজেকে অনেক স্বার্থপর মনে হচ্ছে। আপনি আমার জন্য কত কিছু করছেন আর আমি বসে বসে সব শুধু নিয়েই যাচ্ছি।
— তাই ভাবছো তুমি? তাহলে তোমার শরীরের মিষ্টি রক্ত গুলো কার পেটে যায় শুনি? কে খায় তোমার রক্ত?
~ তাই তো। আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম। আমার রক্তচোষা ভ্যাম্পায়ার আপনি। হিহি।
নেহাল অট্টো হাসিতে ভেঙে পড়ে তনুর কথা শুনে। সাথে তনুও হেসে দেয়। নেহাল হাসতে হাসতে বলে,
— এখন বলো সবকিছু কেমন লাগছে?
~ মনের গভীর থেকে যদি বলি, সবটা স্বপ্নের মতো লাগছে। ছোট কাল থেকেই একা একা ছিলাম আমি। বাবা আমার সাথে ঠিক মতো কখনো কথাও বলে নি। কেন জানি মনে হয় সে আমাকে পছন্দ করে না। হয়তো আম্মু মারা যাওয়ার কারণ হিসেবে আমাকেই মনে করেন। তাই আমার কাছ থেকে সবসময় দূরে দূরে থাকে। জানেন, আমাকে নিয়ে কখনো কোথাও ঘুরতেও যায় নি। সবসময়ই একা ছিলাম আমি। কিন্তু আপনি এসে প্রথমে আমাকে বাঁচালেন আর তারপর আমার বিষন্ন জীবনটাকে হঠাৎ করে আনন্দ আর খুশিতে ভরিয়ে দিলেন। সত্যিই আপনি অনেক ভালো একটা মানুষ। সরি সরি ভ্যাম্পায়ার।
— হাহা। পাগলি একটা। কিছু দিন পর তুমিও ভ্যাম্পায়ার কুইন হয়ে যাবে দেখো এই ভ্যাম্পায়ার কিং এর। খালি বিয়েটা হোক।
তনু খুব লজ্জা পায়। নেহাল তনুর লজ্জাসিক্ত মুখখানা মুগ্ধ হয়ে দেখতে থাকে। এরপর ওরা আরও অনেকক্ষণ গল্প করে। তারপর দুপুরে আবার পানিতে নেমে অনেক মজা দুষ্টামি করে। নেহাল তনুর জন্য অনেক কিছু রান্না করে৷ ও সেগুলো খেয়ে খুব খুশি হয়। খেয়ে দেয়ে ওরা দুজন ক্লান্ত হয়ে সেই কাঠের ঘরে দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে। বিকেলে ওদের ঘুম ভাঙে। আর কিছুক্ষণ পর সূর্য মামা অস্ত যাবে৷ নেহাল তনুকে সাথে নিয়ে সূর্য ডুবে যাওয়া দেখতে বসে। তনু নেহালে কাঁধে হেলান দিয়ে ওর পাশে বসে সূর্য ডুবে যাওয়া দেখছে। ও নেহালকে জিজ্ঞেস করে,
~ আচ্ছা আমি যে এতক্ষণ বাসার বাইরে আজিম আঙ্কেল চিন্তা করবে না?
— তাকে আগেই হিপনোটাইজ করেই তো তোমাকে নিয়ে এখানে এসেছি। বাসা, ভার্সিটি নিয়ে কোন চিন্তা করো না। শুধু মুহূর্তগুলো উপভোগ করো।
~ আচ্ছা।
আস্তে আস্তে সন্ধ্যা হয়ে আসলে নেহাল বড়ো করে আগুন জ্বালায়। এখনকার পরিবেশটা যেন আরও রোমান্টিক আর রোমাঞ্চকর হয়ে উঠছে। তনুর মধ্যে অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করছে। নেহাল আর তনু সমুদ্রের পাড়ে বসে আছে। ঢেউ গুলো পাড়ে আছড়ে পড়ছে। সাথে ঠান্ডা বাতাস৷ নেহাল তনুর একটা হাত শক্ত করে ধরে বলে,
— তুমি আমার কাছে কত মূল্যবান একজন তা হয়তো কখনো বুঝবে না৷ শুধু এটুকু বলবো, তোমাকে অনেক ভালবাসি। তাই তোমাকে খুশি করার জন্য আমি সব করবো। লাগলে নিজের জীবনটাও দিয়ে দিব একদিন।
~ চুপ…একদম চুপ। আপনি ছাড়া আমার আর কেউ নেই। আপনি না থাকলে কি নিয়ে আমি বাঁচবো বলেন? কে আমাকে সমুদ্রের তলদেশে নিয়ে যাবে?
— তনু… (খুব খুশি হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে)
তনু কান্নাসিক্ত নয়নে নেহালের দিকে তাকিয়ে আছে। নেহাল মুচকি একটা হাসি দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে ছিল। কিন্তু হঠাৎই করেই নেহাল ওর পিছনে তাকায়। অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। তনু দেখে নেহালকে খুব চিন্তিত মনে হচ্ছে। ও নেহালের এই অবস্থা দেখে মুহূর্তেই ভয় পেয়ে যায়। এদিকে নেহাল দাঁড়িয়ে বলে উঠে,
— তনু, বিপদ এসেছে। এখন এখানে যাই হোক না কেন প্লিজ ভয় পাবে না৷ আর আমার পিছু ছাড়বে না৷ ১০০ এর উপর ভ্যাম্পায়ার এসেছে আমাদের মারতে।
~ কিহ! এখন কি হবে?
— কিছু হবে না৷ ওরা জানে না ওরা কাকে মারতে এসেছে। দেখি এদিকে আসো…
নেহাল তনুর ঘাড়ে কামড় দিয়ে ওর রক্ত খায়। কিছুক্ষণ পর ওকে ছেড়ে দিয়ে বলে,
— ঠিক আছো?
~ হ্যাঁ।
— প্লিজ ভয় পেয়েও না আমার আসল রূপ দেখে৷ চেয়েছিল কোন দিন যেন আমার আসল রূপ তুমি না দেখো কিন্তু মনে হচ্ছে তা আর সম্ভব না। আমাকে যেভাবে হোক তোমাকে বাঁচাতেই হবে৷
বলেই নেহাল মুহূর্তেই মধ্যে ওর আসল রূপ ধারণ করে। তনু দেখে….
চলবে…?