Contract_marriage ❤?❤
Last part :???
writer-Jubaida Sobti♥
…
সকালে খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে নিলা…
(নিলা ভাবছে) কাল রাত তার জীবনের সবচেয়ে স্পেশাল রাত ছিলো…
আবিরের দিকে তাকালো…আবির ঘুমিয়ে আছে…
নিলা উঠে ফ্রেশ হয়ে সবার জন্য নাস্তা বানালো… আজ নিলা সব খাবার নিজের হাতে বানিয়েছে…
ভাবী রান্নাঘরে এসে সব রেডি দেখে অবাক..
ভাবী : কি ব্যপার নিলা আজ অনেক খুশি খুশি মনে হচ্ছে…
নিলা : না ভাবী এমনিতে…
ভাবী : আচ্ছা…? নাকি কাল ?
দেখি দেখি এগুলো কিসের মার্ক…
নিলা : যা ভাবী…এগুলো এলার্জির…
ভাবী : ঐ আমাকে বোকা পাইসস শয়তান…
নিলা ড্রইং রুমে গিয়ে সবার জন্য নাস্তা দিলো…
দাদী : নিলা! আবির কোথায়…?
আবির : yes দাদী I m here…
নিলা আবিরের দিকে তাকালে
আবির নিলাকে চোখ টিপ মারলো..?
নিলা ও হেসে দিলো…
আবির : (নিলার কাছে এসে কানে কানে উইস্পার করে)…থেংক্স!
নিলা : কেনো!
আবির : কাল রাতটা এতোসুন্দর করে দেওয়ার জন্য।
দাদী : ঐ তুই খালি বউ এর কানে কানে কি ফিস ফিস করোস?
নিলা আবিরের পাশ থেকে সরে চলে যায় লজ্জা পেয়ে..
আবির : উফফ দাদী তোমাকে না… একটা প্রাইজ দেওয়া দরকার…কি জন্য
জানো রোমান্টিক মোমেন্ট খারাপ করে দেওয়ার জন্য…
দাদী আবিরের কান ধরে আচ্ছা শয়তান…
ভাবী : কি হলো দাদী নাতি ঝগড়া করছিস কেন?
আবির : ভাবি ডিয়ার দেখোনা… আমি নাকি দাদীর সাথে রোমান্স করতাম…
তুমিই বলো দাদীর কি এটা রোমান্স করার বয়স…
আবিরের কথা শুনে দাদী আর ভাবি হেসে দেই…
নিলা রুমে এসে দেখে আবির অফিস না গিয়ে বসে আছে…
নিলা : কি বেপার আপনি অফিস যাচ্ছেন না?
আবির : না! এদিকে এসো কথা আছে…
নিলা : কি কথা ঐদিক থেকেই বলেন।
আবির : ঠিকাছেতো আসবানা ওকে…?
নিলা আবিরের পাশে গিয়ে হাতটা ঝরিয়ে ধরে…
নিলা : বলেন!
আবির : না বলবো না!
নিলা : ইসসস! কতো ডং…
আবির : ডং আমি করছি নাকি তুমি…এক কথায় আসো না…
প্রথমে একটু ঢং করবা তারপরে ঠিকি আসবা…
নিলা : (আবিরকে আস্তে করে একটা থাপ্পড় দিয়ে) হয়েছে?.. ইডিয়ট এবার বলেন..
আবির : একটা জায়গায় নিয়ে যাবো…চলো..
নিলা : এখন?
আবির : হে এখন তুমি তৈরী হয়ে নাও..তোমাদের তো আবার তৈরী হতে পুরাদিন লাগে..
নিলা: কি বললেন ?
আবির : হা-হা-হা কিছুনা
আবির নিলাকে নিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে আসে…
আবির : নিলা! বলোতো… তোমাকে আজ এইখানে কেনো এনেছি…
নিলা : রেস্টুরেন্টে যখন এনেছেন তাহলে খেতেই এনেছেন ?
আবির : আচ্ছা ওয়েট চলো…
নিলা : কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আবার…
আবির নিলাকে টেনে ওয়াসরুমের ঐদিকে নিয়ে গেলো..
আবির : এইবার বলো কেনো এনেছি..
নিলা : (এইবার বুঝতে পেরে) এই জায়গায় আপনার সাথে প্রথম দেখা হয়ে ছিলো…
আপনি আমাকে টিসু দিয়েছিলেন…
আবির : হুম… তখন এই জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিলাম অচেনা হিসেবে… আজ একই জায়গায় সামী-স্ত্রী হিসেবে..
তখন তুমি শুধু নিলা ছিলে আর এখন মিসেস. নিলা আবির হক….
নিলাও হেসে দেই আবিরের কথা শুনে..
এভাবে দুবছর কেটে যায়…
ভাবীর একটা ফুটফুটে মেয়ে হয়েছে.. আমাকে ও সবাই পেয়েছে এবার নাকি আমার পালা
আর আবিরকে বললে আবির বলে সে নাকি নিজেই এখনো বাচ্চা….
সকালে আবির অফিস চলে যায়…
খুব খারাপ লাগছে আবিরকে বলিনি… বললে শুধু শুধু টেনশন করবে..
বাসার কেউকে ও বলিনি..
মাথাটা ও ঘুরাচ্ছে…
ভাবছি রান্নাঘরে গিয়ে রান্না করি…ব্যস্ত থাকলে হয়তো আর খারাপ লাগবে না…তাই গিয়ে রান্না করছি..ভাবী ও এসে সাহায্য করছে…
ভাবী বুঝতে পারে আমার খারাপ লাগছে তাই গিয়ে আরাম করতে বলে…
দু-তিনদিন ধরেই এভাবে খারাপ লাগছে..
আমার ভাবসাব দেখে দাদী আর মা হয়তো বুঝতে পারলো… তাই তারা ভাবীকে দিয়ে টিউব টেস্ট করে দেখে.. ৩ টা দেখলো ৩টাই পজেটিব আসলো…
মা হওয়ার ফিলিংস টাই অন্যরকম।এমন খুশি আর কখনো লাগেনি… এ খুশিটা অন্যরকম খুশি….
মা,দাদী, ভাবী সবাইকে নিষেধ করে দিয়েছি আবিরকে না বলতে…
সামনে আমাদের Anniversary ভাবছি আবিরকে এটাই স্পেশাল গিফট দিবো…
Anniversary দিন সবাইকে দাওয়াত করলাম মামা-মামীদের সবাইকে আসতে বলেছি মমিতা আপু ও তার হাজবেন্ড ও এসেছে…
আবিরতো পারছে না যে দুলাভাইকে গিলে খেয়ে ফেলতে… তাই আবিরকে তাদের থেকে দূরে দূরেই রাখছি।কারন আবিরের মাথার ভুতটা কখন উঠে যায়…তখন আবার সবার সামনে মারামারি শুরু করে দিবে…
মামী আর শ্রেয়াকে ও বলেদি মা হয়েছি..জেনে মামী অনেক খুশি হয়েছে..
শ্রেয়া তো আরো খুশি সে খালামণি হচ্ছে তাই…
রাতে সবাইকে বিদায় দিয়ে রুমে আসি আবির ও আসে….
নিলা : আপনি কিন্তু আজ আমাকে গিফট দেন নি।
আবির : আমি আছি না! এর চেয়ে বড় গিফট আর কি চাই তোমার…
নিলা : Shut-up আবির… এতোকিছু বলে লাভ নেই….
আবির : কিন্তু নিলা…! আমিতো কিছু আনিনি!
নিলা : ওহ ঠিকাছে!
(এই বলে নিলা খাটে বসে পরে…)
আবির নিলার পায়ের দিকে বসে নিলার পা টা আবিরের হাটুর উপর রেখে নিলাকে একটা পায়েল পরিয়ে দেই…
নিলা : মিথ্যা বলেছেন কেন…আপনি তো গিফট এনেছেন..
আবির : সারপ্রাইজ! তুমি সারপ্রাইজ খুব পছন্দ করো তাই সারপ্রাইজ দিলাম।
নিলা : yeah i love surprise ?
আবির : এবার আমার গিফট দাও!
নিলা : আমি কি টাকা কামাই গিফট কই পাবো..
আবির : ওকে… টাকা লাগবেনা এমন গিফট ও দিতে পারো!
(এই বলে আবির নিলার মুখের কাছে আসতে লাগলো…)
নিলা : Stop! এইদিকে বসেন।
আবির : ও আচ্ছা সুবিধা করে… করার জন্য বসাচ্ছো যে…
নিলা আবিরের কথা শুনে আর না হেসে পারলো না….
নিলা : আবির! সবসময় সবকিছু ফানে নিয়ে যান কেন? কখনো তো সিরিয়াস হন…এখন আর আপনি বাচ্চা না…
এখন আপনার নিজের বাচ্চা হবে..
(নিলা আবিরের হাতটা তার পেটের মধ্যে রাখলো)
আবির নিলার দিকে তাকিয়েই রইলো সে কি বলবে খুজেই পাচ্ছে না।
আবির : নিলা! সত্যি?
নিলা : হুম সত্যি!
আবিরকে খুশিতে কাঁদতে এই প্রথম দেখলাম… আবির নিলাকে ঝরিয়ে ধরলো…
আবির: নিলা! তুমি জানো না তুমি আমাকে কতোবড় সারপ্রাইজ দিয়েছো…থেংক ইউ নিলা!
নিলা : আপনাকে ও থেংকস!
আবির হেসে… রাইট আমাকে ও থেংকস দেওয়া দরকার আমার ও ক্রেডিট আছে…. কিন্তু…
নিলা ও হেসে দিলো…
এখন থেকে আবির রোজ সকালে আমাকে আগে নাসতা করিয়ে তারপর অফিস যায়…
আর অফিস থেকেও যে কতোবার ফোন দেই…. ঔষধ খেয়েছো… খাবার খেয়েছো
বেশি হাটাচলা করবানা ডাক্তার নিষেধ করেছে….
এসব বলতে থাকে।
আর আমার মোবাইলের ওয়ালপেপারে আবিরের ছবি দিয়ে রেখেছি যাতে আমার বাচ্চার চেহেরা তার বাবার মতো হয়।
কিন্তু আবির সেটা সরিয়ে আবার আমার ছবি বসিয়ে দেই যাতে আমার চেহেরার মতো হয়।
তাই আমিও মোবাইলে লক দিয়ে রেখেছি যাতে আবির আর আবিরের ছবি চেঞ্জ করতে না পারে।
৫ মাসের পর থেকে আমি খুব অসুস্থ হয়ে পড়ি বিছানা থেকে উঠে ও দাড়াতে পারিনা। কোনদিকে সকাল হচ্ছে সূর্য কখন ডুবছে কোনদিকে রাত হচ্ছে কোনো কিছুর খবর নেই…
কিছু খেলে সাথে সাথে আবার বমি করে বের করে দি। ডাক্তার বলেছে এইকারনে বেশি দূর্বল হয়ে পড়েছি আমাকে দেখে কেউ বলবেনা যে আমার বাচ্চা হবে।
মা হলে নাকি সবাই মোটা হয়ে যায় কিন্তু আমি যতোটুকু ওজন ছিলো তার চেয়ে ও অনেক কমে গিয়েছি।
আর আবির আমাকে যথেষ্টভাবে সেবা করে যায়… প্রায় সময় আবির আমার কারনে অফিসে যেতে পারে না।
আজকের দিনটা মোটামুটি ভালোই লাগছে তাই আবিরকে জোড় করে অফিস পাটিয়ে দিয়েছি।
কিন্তু হঠাৎ সন্ধ্যা থেকে খুব ব্যথা অনুভব করছি…অনেক্ষন চেপে রাখি নিজের মধ্যে আর পারছি না তাই চিৎকার শুরু করলাম।
আমার চিৎকার শুনে দাদী দৌড়ে আসে।
মা ভাবী সবাইকে ডাকে…
আমি বললাম আবিরকে ফোন দিতে।
আবিরকে ফোন দিলো আবির ফোন পেয়ে কিসের উপর বাসায় আসে সে নিজেও জানে না…আবির আমাকে কোলে করে গাড়িতে তুলে….
মা আর দাদী ও আসে আমাদের সাথে…
… আর আমার কান্না থামছে না… ব্যথার যন্ত্রনায় ছটফট করছি।
আবির আমার এসব দেখে অনেক গাভ্রীয়ে যায়…আমার কান্না দেখে মনে হচ্ছে সে ও এখন কেঁদে দিবে কারন আবির এসব এর আগে কখনো দেখেনি… এই প্রথম।
বার বার মা থেকে জিজ্ঞেস করছে মা নিলার কিছু হবে না তো নিলা এমন কেনো
করছে…
হসপিটাল পৌছালাম… ডাক্তার বললো সিজার করতে হবে…
কারন আমি অনেক দূর্বল ছিলাম…
একটা সন্তান জন্ম দিতে কতো কষ্ট তা আজ বুঝতে পারলাম।
আমাদের একটি ফুটফুটে মেয়ে হলো….
আবির অনেক খুশি… কিন্তু আবার আমার জন্য অনেক টেনশন করছে… আমি আবিরকে দেখে কেঁদে দি।
আবির কাছে এসে বসলো…
আবির : নিলা! অনেক কষ্ট হয়েছে তাই না?
নিলা : অনেক!
আবির : যদি ভাগ নেওয়া যেতো তাহলে আমি অর্ধেক নিয়ে নিতাম..
মা এসে আমাকে আমার বাচ্চা কোলে দিলো….
আবির : নিলা চোখ গুলো একদম তোমার মতো হয়েছে..
গায়ের রংটা ও তোমার মতো একদম পারফেক্ট… পুরাই স্লিপিং বিউটি…
মা : হে আর তোর মতো দুষ্টু ও হয়েছে…
আবির: মা আমার মেয়ে বলে কথা…
আবির আর নিলা দুটো নাম মিলিয়ে…
আমাদের মেয়ের নাম রেখেছি
(আবনি).. নামটা অবশ্য দাদী ঠিক করেছে আমার ও খুব পছন্দ হয়েছে…
আমাদের বাসায় এখন দুটো বাবু…
আবনির একটা বড় বোন ও আছে… যেটা সারাদিন আবনির পাশে বসে থাকে…
ভাবী তাকে খেতে ডাকলে ও যায় না…
আবনির সাথে খাবে ও…
(আবির নিলার কাছে এসে)
আবির : নিলা!
নিলা : হুম
আবির : ভাবছি আবনিকে একটা ভাই গিফট দিবো…
নিলা : Thanks…but not interested…
Now i feel complete…
আবনি এখন একটু একটু হাটতে পারে… আমাকে মা আর আবিরকে বাব্বা ডাকে…
নিলা আর আবিরের ছোট্ট সংসারটি এভাবেই কেটে যাচ্ছে তাদের পিচ্চি আবনিকে পেয়ে তাদের ভালোবাসা আরো
গভীর হয়ে উঠে….
সমাপ্ত,,
গল্পটি কেমন লাগলো জানাবেন কিন্তু?