part- 22??
নিলা ওয়াসরুম থেকে বের হলো….
আবির : (নিলাকে দেখে.)… ওয়াও
নিলা : এটা আপনি কিনেছেন?
আবির : হে কোনো সন্দেহ?
নিলা : না! সুন্দর হয়েছে…
কিন্তু বেশী সুন্দর হয়েছে বলতাম যদি ওড়নাটা ও সাথে থাকতো….
আবির : (অবাক হয়ে) ওড়না থাকতো মানে ওড়না নেই?…
নিলা : ( মাথা নেড়ে) না!..
আবির : কিন্তু আমিতো ওড়না সহ কিনেছি..
নিলা : লাইফে প্রথমবার বিয়ের পরে নিজের বউকে একটা গিফট করেছেন তাও আবার ওড়না ছাড়া….
(নিলা হেসে হেসে)
অবশ্য আপনাকে মানাই এইধরনের ভূল কাজে…
(আবির মন খারাপ করে সোফায় গিয়ে পিছন ফিরে বসে পরে….)
নিলা আবির রাগ করেছে বুঝতে পেরে আবিরের কাছে যায়….
নিলা: আবির!
(আবির চুপ করে আছে…)
নিলা ও আবিরের পাশে বসলো
নিলা : আমিতো ফান করছিলাম….
আচ্ছা ওকে বাবা…. সরি!
সরিতো…
আবির : (মন খারাপ করে) আমি কি ইচ্ছা করে এমনটা করেছি… আমিতো সব দেখে কিনেছি..
প্যাকিং করতে বলেছি… তখন হয়তো ভুল করে ও ওড়নাটা আর প্যাক করেনি….
নিলা : ইটস! ওকে……….. কিছু হবে না পরে গিয়ে নিয়ে আসবেন।
..আমিতো মজা করছিলাম…আর
আপনি মন খারাপ করে ফেললেন….
আবির : এমনিতে ও নিলা তোমার সাথে বিয়ে করেছি যে ওটা ও হাসিখুশিতে হতে দেইনি… এই প্রথম তোমাকে একটা গিফট করেছি ওটাও ঠিক করে দিতে পারলাম না… ভালো কিছুই দিতে পারলামনা তোমাকে।
আসলেই বাবা ঠিক বলেছে আমাকে দিয়ে কিছু হবে না…
নিলা : আরে…. আপনি এতো ইমোশনাল হয়ে যাচ্ছেন কেনো… সব হবে আপনাকে দিয়ে..কে বলেছে কিছু হবে না.. আপনি আগে থেকে কতো চেঞ্জ হয়েছেন জানেন..
আপনি এখন অফিসে যান.. নিজের ইনকাম নিজে করেন..
আর..আমাকে এত্তোগুলা ভালোবাসেন…
আমাকে খুশি রাখার যথেষ্টভাবে চেষ্টা করেন..
(নিলা আবিরের হাত ঝড়িয়ে ধরে কাধে মাথা রেখে)
আবির! আপনার চেষ্টা করাটাই আমার জন্য অনেক। আমিতো অনেক প্রাউড ফিল করছি আপনার মতো জীবন সংগী পেয়ে..
আবির : পাম্পিং তাই না?
নিলা : হি-হি.. আপনি কি গাড়ীর চাকা পাম্প কেনো দিবো..?
আবির : (হেসে) নিলা তুমি কিন্তু বেশী ফাজিল হয়ে গেছো..
নিলা : (হেসে) তাই?
আবির : (নিলার দিকে তাকিয়ে) হুম তাই।
নিলা : আচ্ছা গিফট তো পেয়েছি তারপরের প্লান?
আবির : (মন খারাপ করে) ধুর… ওড়নাটার জন্য পুরা মুডটাই অফ হয়ে গেলো।
নিলা : (একটু রেগে) আবারো?
আবির : আর এমনিতেও পরের প্লানটা তোমাকে দিয়ে হবে না।?
নিলা! আমি জোড় করে ফায়দা উঠায় না।…so তোমাকে দিয়ে হবে না,,
এই বলে আবির উঠে চলে যায়..
নিলা : (মনেমনে চিন্তিতো ভাবে What!? আমাকে দিয়ে হবে না..
of course হবে.. ?)
এই যে শুনেন কি বলেছিলেন…
আমাকে দিয়ে হবে না?.!
আবির : Yeah! ?
নিলা : ওকে চ্যালেঞ্জ করলাম আপনাকে…..আমার সাথে কাটানো রাতের এক এক মূহুর্ত আপনি জীবনে ও ভুলতে পারবেন না!
কিন্তু আমার জন্য ভুলতে তেমন ব্যপার না…
এগুলো কি কোনো ব্যপার…
u know.! bcz i m strong girl…
(নিলার চোখে পানি টলমল করছে)
আবির নিলাকে দেখে খুবই অবাক..এমন কেনো বলছে নিলা…
নিলা : (কাদো কাদো ভাবে) আবির! বলেননা?… আমি strong girl?…
i m not heart-broken…
আবির কিছু বুঝে উঠতে পারলো না কিন্তু নিলাকে তবুও বললো…
আবির : ?Yeah… u strong girl.. not heart-broken..
নিলা আবিরের বুকে মাথা দিয়ে ঝরিয়ে ধরে…
আবির নিলাকে কোলে তুলে খাটে শুয়ে দে…আবির ও নিলার পাশে গিয়ে শুয়ে পরে…
নিলা আবার গিয়ে আবিরের বুকে মাথা দিয়ে শুয়ে পরে…
নিলা : আবির!
আবির : হুম?
নিলা : (কাদো কাদো ভাবে) আমি যখন জন্ম হয় জন্মের পর থেকেই মায়ের চেহেরা দেখিনি… আর আমার যখন ৭ বছর তখন আমার চোখের সামনে বাবা হার্ট এটাক্ট হয়ে মারা যায়….
তারপর থেকেই মামা-মামীর কাছে বড় হয়…
নানী আমাকে সবসময় মনে করিয়ে দিতো আমি তাদের পরিবারের মানুষ না।
আমি নাকি অনাথ।
এলাকার সবাই আমার নামে নানানরকম কথা ছড়াতো..
সেগুলো অবশ্য মামা-মামী আর শ্রেয়া বিশাস করতো না…
কোনো বিয়ের প্রস্তাব আসলে বিভিন্নদিক থেকে বিভিন্নরকম কথা শুনে চলে যেতো।
ওসব কথা নানী আর মমিতা আপু বিশাস করতো…
ওরা মনে করতো আমি দুলাভাইকে আমার প্রতি আকর্ষিত করি।আমি নাকি সুন্দরের দেমাগ দেখায়।
কিন্তু মামা-মামী আমাকে অনেক আদর করতো যতটুকু সম্ভব খুশিতে রাখার চেষ্টা করতো…ওতোটুকু ভালোবাসা পেয়ে ও আমি যথেষ্ট খুশী ছিলাম
(নিলা কেঁদেই দিলো)
কিন্তু আবির তবুও কেনো যেনো কোন দিকটা কমতি ছিলো…
আমার নিজের একটা পরিবার থাকবে… আমাকে কেও অনাথ বলবে না…সবার সাথে সমান অধিকারে থাকবো…
আমি যে দিন আপনাকে বিয়ে করে এই ঘরে এসেছিলাম ঐ দিন থেকে আমি বুঝতে পেরেছি… আপনার পরিবারের মতো আপন পরিবার আর কোথাও পাবো না আমি… আমাকে তারা এতো আদর দিয়েছে যে আমি এইঘর ছেড়ে কোথাও যেতে চাচ্ছিলাম না।
তারপর আপনি ও আমাকে ভালোবেসে এই পরিবারে সারাজীবনের জন্য রেখে দিলেন।
আবির! আমি যখন কাঁদতাম তখন শ্রেয়া আমাকে heart-broken ডাকতো ..
আমি নাকি কখনো strong হতে পারবো না।
কিন্তু আমিতো strong তাই না আবির!
আমি কি ভেংগে পরেছি? আমিতো strong আছি।
আবির! আপনি শ্রেয়াকে বলবেন আমি strong আমি heart-broken না…
?আবির নিলার চোখ মুচিয়ে আরো ঝড়িয়ে ধরলো…
আবির : হে আমি শ্রেয়াকে বলে দিবো।
নিলা আবিরের বুকেই ঘুমিয়ে পরে…
আবির (মনে মনে) মেয়েটা কতোকিছু সজ্য করেছে….আর এক আমি এর উপরে আরো কতো কষ্ট দিয়েছি।
এসব ভাবতে ভাবতে আবির ও ঘুমিয়ে পরে…
পরদিন সকালে আবির অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে…
নিলা রুমে আসলো…
নিলা : অফিস যাচ্ছেন?
আবির : হুম।
(আবির নিলার দিকে এগিয়ে এসে.)
i hope আজকে আপনি তাড়াতাড়ি ঘুমাবেন না…
নিলা একটু মুচকি হাসে…
আবির অফিসে চলে গেলো।
একেবারে রাতে বাসায় আসে..
রাতে ডিনার করে রুমে এসে দেখে…
নিলা একটি সাদা রঙের শাড়ী পরেছে…
হাতে লাল চুরি…. চোখে খুব যত্ন করে কাজল লাগিয়েছে…
নিলা আমার দিকে এগিয়ে আসে…
আর বোঝাতে চাচ্ছে যে সে সেজেছে চুরি পরেছে শাড়ী পরেছে…
অবশ্য তারদিক থেকে চোখ সরাতে মহা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে কারন নিলাকে অপরুপ সুন্দর লাগছে..শাড়ীর সাদা রংটা তার গায়ের সাথে মিশে গেছে… কারন নিলাও সাদা শাড়ী ও সাদা…
আর পেটের দিকে তাকালে so hot ?
আমিও অভিনয় করা ছাড়ছিনা…দরজাটা বন্ধ করে
পাশ কেটে..চলে গেলাম নিলা পিছন থেকে ডাক দিলো…
ফিরে তাকালে..
নিলা : i think আপনি আমাকে ভালো করে দেখতে পাননি..?
আবির : হে দেখেছি সেজেছো আরকি।
নিলা : হে সেজেছি আপনার জন্য।?
আবির : হে সেজেছো আরকি।
নিলা : আমার মনে হয় আপনি ভালো করে শুনতে পাননি…
আমি বলেছি আমি সেজেছি আপনার জন্য….?
আবির : ও তুমি সেজেছো..আমার জন্য..
ওওও….
(আবির নিলার দিকে এগিয়ে এসে)
So নিলা! তুমি আমার জন্য কেনো সেজেছো..?
নিলা : ???
আবির নিলার দিকে তাকিয়ে আছে আর নিলা লজ্জায় নিচের দিকে তাকিয়ে আছে..
আবির নিলার হাতের চুরিগুলো আস্তে আস্তে খুলে নেই….
আবির : (নিলার কানে কানে) looking so hot…
নিলা : ????
আবির নিলাকে কোলে তুলে খাটে শুয়ালো….
এবং দুজন দুজনের ভালোবাসায় আবদ্ধ হলো….
চলবে….