চুক্তির বউ ৯ম পর্ব
লেখা:তামান্না
হ্যা সে আর কেউ না পিয়ালি নিজে।
মেঘ মাথা তুলে পিয়ালির দিকে তাকায়।তারপর আবার পড়া শুরু করে………
পিয়ালির বলেছিলো মেয়েটা নাকি পিয়ালির খুব ভালো বন্ধু।আর পিয়ালি ওর সম্পর্কে সব জানে।যাই হোক আমি যে মেয়েটাকে ভালোবেসে ফেলেছি সেটা পিয়ালিকে না বললেও মেয়েটা কি করে যেন বুঝে নিলো।আর এটা ও জানালো যে আমি যাকে ভালোবাসি সে অন্যকাউকে ভালোবাসে।
ওর কাজ কর্ম প্রতিটা জিনিস খুব যত্ন করে গুছিয়ে রাখা।কাজের প্রতি যত্নশীল আর দায়িত্ববোধ দেখে ওর প্রতি ভালোবাসাটা আর টান যেন বাড়তেই থাকে।দিনদিন ওর প্রতি আলাদা একটা টান জন্মাতে থাকে।ওকে না দেখে থাকাটা আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছিলো না।
এরপর একদিন জানতে পারলাম ও যে ছেলেটাকে ভালোবাসতো সে অন্য একজন কে বিয়ে করে দেশ ছেড়ে চলে গেছে।তাও ওকে না জানিয়ে।খবরটা শুনে খুব খারাপ লেগেছিলো।ওর কষ্টটা আমি ফিল করতাম কাউকে কতোটা ভালোবাসলে তার দেওয়া কষ্ট গুলো সহ্য করা যায় না সেটা আমি বুঝি আর বুঝি বলেই ওকে খুশি দেখতে চেয়েছিলাম।কিন্তু খটকা একটা জায়গায় ও যে আমাকে ভালোবাসে না।
দেখতে দেখতে কয়েকমাস কেটে যায়।
আজ ওকে খুব কান্না করতে দেখেছি কিন্তু কেনো কাঁদলো ও এইভাবে।এখনো ও কি ভালোবাসার মানুষ টার জন্য রাত জেগে কাঁদে মেয়েটা।
ওর কান্নার কারণ জানতে পিয়ালি কে ডেকে পাঠাই।তারপর পিয়ালির থেকে জানতে পারি ওর কান্নার কারণ টা কি?ওর মায়ের হার্টের ফুটো অপারেশন এ অনেক টাকার দরকার।মেয়েটা একা সব সামলাতে পারবে না বলে কান্নায় ভেঙে পড়ে।সত্যি তো কি করার থাকতে পারে ওর।এমনিতেই ভালোবাসার মানুষ টাকে হারিয়ে কষ্ট থাকা সত্ত্বেও হাসিমুখে অফিসের সব কাজ সামলে নিতো।আর আমি ওকে ইচ্ছে করেই কাজ বাড়িয়ে দিতাম।ওকে কাজের মাঝে ডুবিয়ে রাখতাম যেন ও সব কষ্ট ভুলে স্বাভাবিক হতে পারে।
আমি জানতাম টাকাটা আমি ওকে কাজ ছাড়া দিলে দান হিসেবে দেখবে।ভাববে আমি ওকে করুণা করছি।কিন্তু সত্যি তো এটাই আমি ওর মুখে একটু খানি হাসির ছোঁয়া দেখতে চাই।
যখন ওকে টাকা দিবো ভাবলাম ও টাকাটা এমনি এমনি নিতো না।কি করবো এসব ভাবছিলাম।এরপর যখন ওকে বিয়ের কথা বলতে যাবো তখন রাস্তায় ওর প্রিয় মানুষ টার সাথে দেখা হয়ে যায়।বেচারা অন্যদেশে গিয়ে নাকি অনুভব করতে পেরেছে সে তার ভালোবাসার মানুষ টাকে কতোটা ভালোবেসে।তাই ওই মেয়েকে ডিভোর্স দিয়ে দেশে ফিরে এসেছে।আমিও খুব বোকা সহজেই বিশ্বাস করে নিলাম।কিন্তু হাল ছাড়ার পাত্র আমি নই।তাই আমি ওকে বলে দিলাম যে আমি ওকে বিয়ে করবো আর তা আজকেই।তখনই ও মেয়েটাকে মারার হুমকি দেখায়।আরো অন্যান্য ভাবে ব্লেকমেইল করতে থাকে।একটা সময় বাধ্য হয়ে আমরা দুজনেই একটা সিদ্ধান্ত নেই।আর সিদ্ধান্ত এটাই যে আমি ওই মেয়েকে বিয়ে করে যদি একবছরের মধ্যে আমার প্রতি ভালোবাসা জন্মাতে পারি তাহলেই সে আমার নয়তো তাকে তার অতীতের মানুষ এর কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে।
এরপর বাধ্য হয়ে আমি তাকে #চুক্তির_বউ করে আমার বাসায় আনি।আমি চাইনি ওকে কষ্ট দিতে কি করতাম আমি।আমি যে অসহায় ছিলাম।ওই মুহুর্তে ওর মাকে বাঁচানো ছিলো আমার একমাত্র লক্ষ্য।
এরপর ওকে বউ করে ঘরে আনলাম ঠিকই কিন্তু ওর মন থেকে ওর ভালোবাসার মানুষ কে মুছে দিতে পারলাম না।একটা মিথ্যে মায়াজালে বন্ধি ছিলো সেটাও ওকে বুঝাতে পারলাম না।
আজ ওর জীবন থেকে ওর সবচাইতে কাছের মানুষ টাকে হারালো।ওর মা ওকে এইভাবে ছেড়ে চলে যাবে এটা আমি বা ও কেউ ভাবিনি।
ওর কষ্ট টা সহ্য করতে পারছিলাম না।ইচ্ছে করছিলো কেঁদে কেঁদে আল্লাহ কে বলি আর মেঘকে কষ্ট দিও না আল্লাহ।আমি আর পারছিনা ওকে এইভাবে দেখতে।সেদিন ওকে অনেক কষ্ট করে বুঝাই।মা কে হারিয়ে কেমন যেন হয়ে গেছিলো মেয়েটা।
এরপর অনেক কষ্টে ওকে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনলাম।
আজ আমি অফিসের কাজে তিনমাস এর জন্য ওকে ছেড়ে আমেরিকা যাবো।জানিনা এই তিনিটা মাস আমার কিভাবে কাটবে শুধু জানি আমি আমার মায়াবতী কে খুব মিস করবো।
এরপর আর কিছু লেখা নেই।
…………….
……………..
………..
মেঘ কয়েকটা পেইজ উল্টে দেখে আরো কিছু লেখা…..
আজ দেশে ফিরলাম।তিনমাসের কাজ দুমাসেই শেষ করলাম।একটা ডিল ফাইনাল করতেই যাওয়া।বাসায় এসে মেঘকে সারপ্রাইজ দিবো ভেবেছিলাম কিন্তু মেঘ যে আমার জন্য একটা বিরাট সারপ্রাইজ রাখবে আমার জানা ছিলোনা।আজ তিনবছর পর মামনিকে হাটকে দেখেছি।আর সেটা শুধু মেঘের জন্য।
দেশে ফিরে বার বার মেঘকে বলতে চেয়েছি “আমি তোমাকে ভালোবাসি”কিন্তু কোথাও যেন একটা বাধা আমাকে আটকে দিতো।এই একটা চুক্তির জন্য মেঘকে সত্যি টা বলতেও পারছিনা।কি যে কষ্ট লাগে না বলা কথাগুলো চেপে রাখতে সেটা শুধু আমি জানি।
আজ আমার জন্মদিনে মেঘ আমার জন্য যে আয়োজন করলো প্রথমে একটু কষ্ট লাগলেও ওর কথা শুনে খুব সুখী মনে হচ্ছিলো নিজেকে।মনে হয়েছিলো পৃথিবীর সবচাইতে সুখী মানুষ আমি।কিন্তু ওর কথার দ্বারা এটা বুঝতে পারলাম ওর এই বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়ার খুব ইচ্ছা।হয়তো পারেনি আমাকে ভালোবাসতে কিন্তু ওকি জানে ও যদি এই বন্ধন ছেড়ে চলে যায় পরেরদিন আমি মারা যাবো।ওকে ছাড়া বাঁচা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।আমি কি করবো এখন……
মেঘ পেইজ উল্টাচ্ছে কিন্তু তাতে আর কিছু লেখা নেই।মেঘ ডায়রীটা জড়িয়ে কাঁদছে।
পিয়ালিঃএইবার বল মেঘ তুই কি চাস।তুই চাইলেই স্যারকে ছেড়ে চলে যেতে পারিস।আমার আর কিছু বলার নেই।
মেঘঃকেনো এতো ভালোবাসলেন ওনি আমাকে।আমি যে শুধু শাণের জন্য ওনাকে মেনে নিতে পারতাম না।বার বার মনে হতো আমি শাণকে ঠকাচ্ছি কিন্তু শাণ আমাকে এইভাবে ঠকাবে আমি ভাবতেই পারিনি।আমি তো এটাও জানতাম না শাণ অন্যকাউকে বিয়ে করে আমার থেকে দূরে সরে গেছে।অথচ আমি কিনা শাণ কে এতোদিন ভালো ভেবে এসেছি।
পিয়ালিঃএইবার তো জানলি।
মেঘঃওনি কোথায় এখন?
পিয়ালিঃজানিনা রুমে দেখলাম না।
মেঘ তাড়াতাড়ি নিচে নেমে ডায়রিটা রুমে রেখে তারপর মায়ের কাছে যায়।
মেঘঃমা ওনাকে দেখেছেন।
শ্রাবণের মাঃগাড়ি নিয়ে কোথায় গেলো কিন্তু এখনো ফিরছে না কেনো?
মেঘঃআপনাকে বলে যান নি।আমাকেও কিছু বলেননি তাহলে কোথায় ওনি?
মেঘ শ্রাবণের ফোনে বার বার ফোন দিচ্ছে কিন্তু ফোন বন্ধ।এতোরাতে লোকটা গেলো কোথায়?
আমি এখন কিভাবে খুঁজবো ওনাকে?
কোথায় পাবো?
মেঘ টেনশনে পড়ে যায় কি করবে এইটা ভেবে।
পিয়ালি মেঘকে বুঝাচ্ছে চিন্তা না করতে।
কিন্তু চিন্তা কি বলে হয়?
মেঘঃপিয়ালি আমার খুব ভয় হচ্ছে ওনি বাসায় আসছেন না কেনো?
পিয়ালিঃমেঘ চিন্তা করিস না একটু পর চলে আসবে।হয়তো কাজ পড়ে গেছে তাই বেড়িয়েছে।ভাবিস না তুই।
মেঘঃএতো রাতে কিসের কাজ থাকতে পারে।রাত ১১:০০ টা পিয়ালি।একবার ও কি মাথায় যায় না বাসায় সবাইকে চিন্তা রাখে।এমন কেনো ওনি?
মেঘ কপালে হাত দিয়ে টেবিলের সাথে কনুই লাগিয়ে বসে আছে।একটুপর কলিংবেল এর আওয়াজ।মেঘ তাড়াতাড়ি উঠে দরজা খুলে দিলো।শ্রাবণ কে দেখে একটু রাগী লুক নিয়ে কোমরে হাত দিয়ে ওর দিকে তাকায়।শ্রাবণ ভয় পেয়ে যায় মেঘকে এভাবে দেখে।ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করে….
শ্রাবণঃকি ব্যাপার ওই ভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?
মেঘ ভ্রু কুচকে তাকায়….
শ্রাবণঃসরে দাড়াও ভেতরে যাবো।
মেঘঃএতোক্ষণ কোথায় ছিলেন?
শ্রাবণঃতোমাকে সব বলতে বাধ্য নই।
মেঘঃকিহহহহহহ
শ্রাবণ মেঘের হাতে আলতো করে ধরে দরজার সামন থেকে সরিয়ে ভেতরে ডুকে…..
তারপর পিয়ালির কাছে গিয়ে কি যেন বলে।পিয়ালি তাড়াতাড়ি মেঘের কাছে গিয়ে খাবার আনতে বলে।
পিয়ালিঃমেঘ খিদে পাইছে খাবার রেডি করবি আয়।
মেঘঃউফফ পিয়ালি জানতে দে না আগে ওনি কোথায় ছিলেন।
পিয়ালিঃদুর সেটা পরেও জানবি আগে আয় আমার খুধা লাগছে প্লিজ দুস্ত।
মেঘঃএই মেয়ের শুধু খাওয়ার জ্বালা।
মেঘ রাগে গজগজ করতে করতে রান্না ঘরে গেলো।তারপর সবাইকে খাবার দিয়ে নিজেও খাবার খেতে বসে।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে মেঘ রুমে গিয়ে অবাক।টেবিলের উপর একটা পেপার রাখা।
মেঘ সারা রুম খুঁজে শ্রাবণ কে পেলো না।
মেঘ পেপারটা হাতে নিয়ে দেখতে লাগলো।
এটা কি?
ওনি এটা কেনো করলেন?
খুব শখ না আমাকে ডিভোর্স দেওয়ার।
আজ দেখবো আমাকে কিভাবে ডিভোর্স দেয়।
এইবুঝি ওনার ভালোবাসা।
একবছরে শেষ হয়ে গেলো সব অনুভূতি।
এইজন্য তখন বাইরে গেছিলো।শয়তান বানর হনুমান কোথায় গেলো এখন।
এই ডিভোর্স পেপারের বারোটা আমি বাজাচ্ছি।
মেঘ একটা ষ্টীলের ডাস্টবিন আনে।তারপর রান্নাঘর থেকে দিয়াশলাই আনে।কাটি দিয়ে আগুন জ্বালায়।তারপর ডিভোর্স পেপারে আগুন জ্বালিয়ে ডাস্টবিনে রাখে।পেপার টা পুড়ে ছাই হয়ে গেলে একহাত দিয়ে অন্যহাতে সুন্দর করে তালি বাজায়।
এইবার দেখি শ্রাবণ মাহমুদ আমাকে ডিভোর্স দেন কিভাবে?
কিন্তু বজ্জাত টা গেলো কই।ড্রয়িংরুমেও দেখলাম না।পিয়ালির সাথে আড্ডা দিতে গেলো নাকি আবার।দেখিতো……
মেঘ পিয়ালির রুমে দরজা লক দেখে ভাবে পিয়ালি ঘুমিয়ে পড়েছে।
মায়ের রুমে ও গিয়ে দেখে মা ঘুমাচ্ছে।
বাকি রইলো একটা জায়গা ছাদ।
এতোরাতে ওনি আবার ছাদে গেলেন কেনো?
দূর এতো ভেবে কাজ নেই দেখে আসি।
মেঘ ছাদের দিকে পা বাড়ায়……
পুরো ছাদ জুরে মোমবাতি জ্বালানো।
এমা ওনাকে আবার ভুতে ধরলো নাকি।
কেউ এইভাবে ছাদে মোমবাতি জ্বালায় নাকি।
কিন্তু ওনি গেলেন কোথায়?
মেঘ ঘুরে ঘুরে ছাদের চারিদিক দেখছে।
চারিদিক মোমবাতির আলোয় ভরে উঠেছে।
হঠাৎ মেঘের অনুভব হলো কেউ ওকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরেছে।এমন ভাবে জড়িয়ে ধরেছে যেন ফাঁক না থাকে।মেঘ আবার ফাঁক পেলেই পালাবে।
মেঘঃএসবের মানে কি?
শ্রাবণঃবুঝলে কিভাবে আমিই এসেছি?
মেঘঃমন বলছিলো।
শ্রাবণঃআর কি বলে শুনি?
মেঘঃআমার মাথা।এইভাবে সারা ছাদ জুরে মোমবাতি কেনো?
শ্রাবণঃকেনো মানে।আজ আমাদের বিবাহবার্ষিকী।
মেঘঃঘোড়ার ডিম।কিসের বিবাহবার্ষিকী?দিন শেষ হয়ে রাত পেরিয়ে যাচ্ছে আর ওনার মাথায় এখন আসছে আজ নাকি বিবাহবার্ষিকী।
শ্রাবণঃইহহহ বললেই হলো এখনো ৫ মিনিট বাকি আছে।
মেঘঃতাতে কি হয়েছে?
শ্রাবণঃHappy Anniversary My Dear Wife.
মেঘঃদুর ছাড়েন তো।
মেঘ জুড়ে ধাক্কা দিয়ে শ্রাবণ কে সরিয়ে দিলো।
শ্রাবণঃএটা কি হলো?আজ আমাদের Anniversary আর তুমি কি না এইভাবে রিয়েক্ট করছো।
মেঘঃAnniversary হ্যা Anniversary.একট
া নকল বিয়ের একবছর পূর্ণ হলো যে বিয়ের কিনা কোনো মানেই নেই।নেই কোনো স্বপ্ন নেই কোন আশা।আর সেই বিয়ের একবছর পুর্তি উপলক্ষে এইসব তাইতো।কি মানে আছে এসবের?
শ্রাবণঃমেঘ………….
মেঘঃহুম ঠিকই তো বলছি।আপনি সব সময় যা ভাববেন যা চাইবেন তাই হবে একবারো অন্যের চাওয়ার মুল্য দিবেন না।একবার ও বুঝবেন না আমি কি চাই।আমার মন কি চায়।একবারো জানতে চেয়েছেন আমার মনে কি আছে।
শ্রাবণঃ………….
মেঘঃডিভোর্স দিবেন তাইতো।ঠিক আছে আপনার ইচ্ছাতেই সব হবে।এই বিয়েটাও যখন আপনার ইচ্ছায় হলো ডিভোর্স টাও আপনার ইচ্ছায় হবে।
শ্রাবণ মেঘের সামনে গিয়ে দুকাধে হাত রাখে।
শ্রাবণঃমেঘ আমার কথা শোণ।
মেঘঃআর কি শোনবো।সব কথাই তো শুনি আমি আপনার।আজও শুনবো ভাবছেন কিভাবে আপনি?ডিভোর্স পেপার রেডি করে আনলেন একবার আমাকে জানানোর ও প্রয়োজন মনে করেননি?আমি কি এতোটাই খারাপ।আমার কথা বলার মত প্রকাশ করার কি কোনো ইচ্ছে নেই কোনো দাম নেই?
কথা বলতে বলতে মেঘ কান্না করে দিয়েছে।
শ্রাবণ কি করবে ভেবে পাচ্ছে না।মেঘ যে ভীষণ রেগে আছে এটা ঠিকই বুঝতে পারছে।অন্যদিকে অভিমান ও জমেছে অনেক।সত্যি তো শ্রাবণ কিভাবে ভুলটা করলো।মেঘকে জানিয়ে ডিভোর্স পেপার টা আনা উচিত ছিলো।
হুট করেই মেঘের কপালে চুমু দিয়ে জড়িয়ে ধরলো।
শ্রাবণঃআই এম সরি মেঘ।খুব বড় ভুল করে ফেলেছি আমি।আর এমন হবে না লক্ষিটি প্লিজ কেঁদোনা।
শ্রাবণের কথাগুলো মেঘের কান্না আরো দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিলো।শ্রাবণের শার্টের পিছনে দুহাত দিয়ে খামছে ধরে।অনেক টা সময় পর মেঘের মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি আটে।
মেঘঃএই বিয়ের তো কোনো মানে নেই।তাই বলছি কি আমাদের ডিভোর্স টা হয়ে যাক।আপনি তো ডিভোর্স পেপার রেডি করে আনলেন তাই আর দেরী করা ঠিক হবে না।বারোটা অলরেডি বেজে গেছে আর একবছর চুক্তির সময় ও শেষ।
মেঘের কথায় শ্রাবণের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।মেঘ কে বুক থেকে সরিয়ে নেয়।মেঘের হাতে হাত রেখে বলে…….
শ্রাবণঃতুমি এসব কি বলছো?
মেঘঃহ্যা ঠিকই তো বললাম।আমি কাল সকালেই চলে যাবো।শুধু আজকের রাতটা এখানে
শ্রাবণঃমেঘ স্টপ দিস ননসেন্স।
শ্রাবণের ধমকে মেঘ অনেকটা ভয় পেয়ে কেঁপে উঠে।একহাত দিয়ে শাড়ির আচল আঙুলের সাথে পেছাচ্ছে।অন্য হাত দিয়ে জুড়ে শাড়ি ধরে রেখেছে।
চলবে………..