বিয়ের রাত প্রথম পর্ব
•
•
আমার খুব ঘুম পাইছে,আমি কি এখন ঘুমাতে পারি ?
•
–হ্যাঁ,অবশ্যই।কিন্তু এই শাড়ি পড়ে তো তুমি ঘুমাতে পারবে না।এটা চেন্জ করে একটা সুঁতির শাড়ি পড়ে তারপর ঘুমাও।
•
–আমি তো শাড়ি পড়তে পারিনা,,,,
•
নতুন বউয়ের মুখ থেকে কথাটা শুনে আমার বুকটা কেমন করে উঠল।যদিও এটা তেমন কঠিন কোন কথা না,তবে বাসর রাতে বউয়ের থেকে শোনার জন্য আমার কাছে এটা কঠিন কিছুই মনে হল।
•
একবার মনে হল,এই মেয়ে যখন সামান্য একটা শাড়ি পড়তে পারেনা, তাহলে এই মেয়ে পারে টা কি,,,
এ আমি কাকে বিয়ে করলাম,,,
যদিও চেহারা সুরত মাশল্লাহ ভালই।
আগে দুবার দেখা হওয়াতে তো এমন মনে হয়নি,,ভালই মনে হয়েছিল।
প্রথম বার যেদিন মিলির দেখা হল, সেদিন মিলির কথা শুনে মনে হয়েছিল এই মেয়ে জিনিয়াস টাইপের কিছু একটা।
মা অবশ্য আগেই বলেছিল, যে এই মেয়ে লেখাপড়ায় যেমন রান্না বান্নাতেও তেমন।
•
মিলির সাথে দেখা হওয়ার দিন আমি একটু লেট করে ওর সামনে উপস্থিত হয়েছিলাম।তাই দেখে মিলি বলেছিল,,,,
-আপনাকে তো বিয়ে করা যাবেনা।সময় এর প্রতি কোন রেসপন্স নাই আপনার।
•
–রাস্তায় অনেক জ্যাম ছিল,,,,
•
–আচ্ছা, মেনে নিলাম। তো এখন বলেন আপনি কি কি কাজ করতে পারেন ?
•
–মোটামুটি সব পারি,,,,
•
–রান্না বান্না কিছু জানেন ?
•
মিলির মুখে এই প্রশ্নটা শুনে আমার মনে হয়েছিল,,,,আমি পাত্রী আর ও আমাকে দেখতে এসেছে।
আর রান্না বান্না আমার পারা খুব দরকার। রান্না বান্না না পারলে জীবন ব্যার্থ।
তাও মাথা ঠান্ডা করে সেদিন জবাব দিয়েছিলাম,,,,
–হুম, কিছুাটা পারি,,,
•
–মাংশ রান্না করতে পারেন ?
•
–হ্যাঁ,
•
–মাছ ?
•
–না,,
এরপর শুরু হল মিলির কথা।পুরো সময় আমি আর কোন কথাই বলিনি যা বলেছিল মিলিই।সে কি কি পারে তাই বলছিল।কিন্তু এই মেয়ে যে সামান্য শাড়ি পড়তে পারেনা সেটা কে জানত,,,
বিয়েতে আমার খুব একটা মত ছিলনা,, মিলিকে দেখে সামান্য অহংকারী মনে হয়েছিল,কিন্তু বাসার সবার নাকি খুব পছন্দ হয়েছে।
এরকম মেয়ে তারা আগে কোথাও দেখেনি।
তাই বাড়ির মানুষের কথা ভেবেই বিয়ে করা।
আমি মুখ তুলে মিলির দিকে তাকালাম।
বিছানার এক পাশে হাতে একটা সুতি শাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মিলি।
কি সুন্দর লাগছে ওকে দেখতে।আর একটু আগেও ওকে অহংকারী মনে হচ্ছিল,, কিন্তু এখন কত পবিত্র লাগছে।
মিলির গায়ে এখনো লাল রঙ্গের মোটা একটা জামদানীশাড়ি। বিয়ের শাড়ি পড়ে তো আর ঘুমানো যায়না তাই মা একটা সুতি শাড়ি দিয়ে গেছে ওকে,,,,
আমি আস্তে করে বললাম,,,,
•
–এখনো তো শাড়িই পড়ে আছ।তাহলে ওটা কিভাবে পড়লে ?
•
–এটা তো আমি পরিনাই,আমারা বাসা থেকে পড়াই দিছে,,,
•
–ও আচ্ছা,
.
আমি কিছুক্ষন ভেবে তারপর বললাম,,,,
–আমি একটু একটু শাড়ি পড়াতে পারি।তো আমি কি তোমাকে শাড়ি পড়িয়ে দিব ?
•
–এটা তো মেয়েদের কাজ।তুমি এটা শিখলে কি করে।সত্যি করে বল এর আগে কয়জন কে শাড়ি পড়িয়েছ ??
•
–এর আগে আমি আর কাউকে শাড়ি পড়াই নি।আর এটা আমি ইউটিউব থেকে শিখছি।
•
–এত কিছু থাকতে হটাৎ এটা শিখতে গেলে কেন
•
–যদি কখনো কাজে লাগে,এটা ভেবেই শিখেছিলাম।
•
মিলি আমার কথার কোন জবাব দিলনা।
আমি আবার বললাম,,,,
–কি হল পড়িয়ে দিব ?
•
মিলি নীচু গলায় বলল,,,,
–কিন্তু আমি শাড়ি কোন ভাবেই শাড়ি সামলাতে পারিনা,,,এটা পড়লে আমার খুব আনইজি ফিল করি।রাতে ঘুমালে শাড়ি ঠিক রাখতে পারি না।
•
–তাহলে কি করা যায় ?
•
–জানিনা,,,,,
•
–তুমি বাসা থেকে কোন কাপড় আনোনি ?
•
–এনেছি তো,কিন্তু কাপড়ের ব্যাগ অন্য রুমে,,,,,
•
–ওহ,,,,,এখন তো অনেক রাত,,,বাড়ির সবাই হয়ত শুয়ে পড়েছে।
•
–হুম,,,,
আমি কিছুক্ষন ভাবনা চিন্তা করে বললাম,,,
–আমার পাঞ্জাবি পড়ে শুতে পারবা,,,
•
–হম পারবো,কিন পাঞ্জাবির সাথে নিচে কি পরবো ?
•
–আমার পাইজামাটা গত ঈদের নামাজ পড়তে গিয়ে ছিড়ে গেছে।আর আমার কোন পেন্ট তোমার সাইজের হবে না।
•
–তাহলে,,,
•
–একটা আইডিয়া আছে,,,
•
–কি আইডিয়া বল শুনি,,,
•
–পাঞ্জাবির সাথে লুঙ্গি পড়তে পারবা ??
•
–কিহ্ বললা তুমি,,,,, ???
চলবে…..
লেখা ~ Tuhin Ahamed