শারদীয়ায় শুভমিলন পর্ব-০৩ এবং শেষ পর্ব

0
2

#শারদীয়ায়_শুভমিলন ( শেষ পর্ব )
#ঈপ্সিতা_মিত্র
যাইহোক, এরপর পুজোর শেষ দিন চলেই এসেছিল। দশমীর সন্ধ্যে। বরণ শুরু হয়েছিল ঠাকুর দালানে। সিঁদুর খেলায় মেতে উঠেছিল সবাই। এর মধ্যে নীলার হঠাৎ খেয়াল হলো ঠাম্মাকে প্রসাদ দেয়ার কথা। তাই দালানের সিঁদুর খেলার মাঝে নীলা এসেছিল ঠাম্মার ঘরে, কিন্তু হাতে প্রসাদ নিয়েও ভিতরে ঢুকতে পারেনি ও। পা টা থমকে গিয়েছিল দরজার সামনে। ভিতরে এখন অমিতাভ আর অন্তরা। অমিতাভ বেশ অধিকার দেখিয়ে বলছে এই মুহূর্তে,
———-” মা, আর তোমাকে এই শ্রীরামপুরে থাকতে হবে না। এত বয়স হয়েছে তোমার! কেনই বা নিজের ছেলে আর নাতির থেকে দূরে থাকবে তুমি! এবার তোমাকে আমাদের সাথে ওই দেশে যেতেই হবে। আর ওই নীলা মেয়েটার কথা তুমি একদম চিন্তা করো না। ওর জন্য আমরা একটা হোম ঠিক করে দেব। আর ওর কোন দায়িত্ব নেয়ার দরকার নেই তোমার। এতদিন তো দেখলে! পড়াশোনা শিখিয়েছ, মানুষ করেছো। এরপর নীলাকে নিজের ব্যবস্থা নিজেকেই করতে হবে। ”
কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে বললো অমিতাভ। অন্তরাও এই কথায় সায় দিয়ে বলে উঠলো,
———-” হ্যাঁ মা। আপনার ছেলে তো ঠিক কথাই বলেছে। এবার আমাদের সাথেই থাকবেন আপনি। তাহলে তো নাতিকেও কাছে পাবেন সব সময়। আর রইলো এই বাড়িটা, এটা তো আর কোন কাজে আসবে না। এটা অমিতাভর নামে লিখে দিন। ওর তো প্রোমোটারের সাথে কথা হয়েই গেছে। এই বাড়িটার জন্য ভালোই দাম দিচ্ছে। ”
কথাগুলো বেশ হাসি মুখে বলেছিল অন্তরা। কিন্তু এইসব শুনে নীলার শরীরটা যেন কেঁপে উঠেছিল হঠাৎ। বাকি কথা শোনার আর ধৈর্য্য ছিল না ঠিক। চোখ দুটো ভিজে গিয়েছিল জলে। নীলা এরপর দৌড়ে এসেছিল নিজের ঘরে। অদ্ভুত একটা কষ্ট হচ্ছিল ভিতরে, চোখের জল কিছুতেই আটকাতে পারছিল না যেন। এই সময়েই আন্তরিক যাচ্ছিল ওর ঘরের পাশ দিয়ে। আন্তরিক সেই মুহূর্তে খেয়াল করেছিল নীলা একা ঘরে বসে কাঁদছে। এটা দেখে ও নিজেই এসেছিল নীলার কাছে। কিন্তু ‘কি হয়েছে ?’ জিজ্ঞেস করতেই নীলা আর নিজেকে সামলাতে পারেনি ঠিক। রাগে ক্ষোভে ভীষণ রুক্ষ স্বরে বলেছিল,
———-” আপনি ভাবেনটা কি নিজেকে? এত কিছুর পরেও এত সুন্দর ভাবে বন্ধুত্বের অভিনয় করে যাচ্ছেন! আপনি কি ভাবেন, কিছু জানি না আমি! কিছু বুঝি না। আমি প্রথম দিন থেকেই জানতাম আপনারা এতদিন বাদে কোন মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে তো আসবেন না এখানে। আজ ব্যাপারটা পরিষ্কার হলো। এই বাড়ি বিক্রি করে ঠাম্মাকে আমেরিকা নিয়ে যাবেন, আর আমাকে হোমে পাঠিয়ে দেবেন। বিশ্বাস করুন এই বাড়ি নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা নেই আমার। কারণ আমি আপনাদের মতন না। এই প্রপার্টির কোন লোভ নেই আমার। কিন্তু ঠাম্মার লোভ আছে। ঠাম্মাকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না। কিন্তু এইসব আপনাকে বলে কি হবে! প্রথম থেকে আমার সঙ্গে ভালো ব্যবহার, আমার সাথে বন্ধুত্ব করার চেষ্টা, এইসব তো জেনে বুঝেই করছিলেন আপনি, যাতে ঠাম্মাকে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আমি কোন আপত্তি না করি। আমি প্রথম থেকেই বুঝেছিলাম এইসব। আর আরেকটা কথা, এতদিন ধরে এইসব অভিনয়ের কোন দরকার ছিল না। শুধু সত্যিটা বললেই হতো। ”
কথাগুলো বলেই নীলা আর কোন উত্তরের অপেক্ষা করলো না। চলে গেল আন্তরিকের সামনে থেকে। কিন্তু আন্তরিক যেন নিঃস্তব্ধ হয়ে রইলো কয়েক মুহূর্ত। নীলার কাছ থেকে এইসব কথা শুনবে আসলে ভাবতে পারেনি।
কিন্তু সেদিন ঠাকুর দালানে এরপর একটা ঘটনা ঘটেছিল। ঠাকুর নামানোর সময় ঝাড়বাতি খোলার জন্য ঝাড়বাতির বাঁধন আলগা করে দেয়া হয়েছিল। সেটা নীলা খেয়াল করেনি। ও ভীষণ মন খারাপ নিয়েই এসে দাঁড়িয়েছিল মণ্ডপে। সকলের সিঁদুর খেলার ভিড়ে যেন থমকে ছিল ও। ছোটবেলা থেকে আসলে অনেক কিছু হারিয়েছে নীলা। এবার ঠাম্মাকেও! এটা যেন মানতে পারছিল না কিছুতেই। এই ভাবনার ভিড়েই ঝাড়বাতির বাঁধন আলগা হয়ে ওর মাথার ওপরই পড়ছিল, কিন্তু হঠাৎ কেউ যেন খুব শক্ত করে ধরে ওকে সরিয়ে নিল ঝাড়বাতির নিচ থেকে চোখের পলকে,আর ঝাড়বাতিটা এসে এক নিমিষে পড়লো মাটিতে ভেঙে। নীলা ভয়ে আঁকড়ে ধরলো সেই মানুষটাকে, আর চোখ খুলে দেখলো সামনে আন্তরিক। ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে ছেলেটা। দৃশ্যটা দেখে নীলা যেন কেমন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। আন্তরিক ওকে বাঁচালো এত বড় বিপদ থেকে! কিন্তু ঝাড়বাতিটা তো আন্তরিকের নিজের মাথার ওপরও ভেঙে পড়তে পারতো! কত বড় এক্সিডেন্ট হয়ে যেতে পারতো ছেলেটার। সেই সব কথা না ভেবে আন্তরিক ওর জন্য এত বড় বিপদের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়লো! কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই খেয়াল করলো আন্তরিকের হাতে কাঁচ ফুটে রক্ত পড়ছে। এটা দেখে নীলা ঘাবড়ে গিয়ে ওর হাতটা শক্ত করে ধরে বলে উঠেছিল নিজের মনে,
———” তোমার তো হাত কেটে গেছে আন্তরিকদা! কেন যেতে গেলে ওইভাবে? যদি কিছু হয়ে যেত তোমার? ”
কথাগুলো শুনে আন্তরিক একটু অবাক হয়ে গেল যেন। নীলা সেই আগের মতন কথা বলছে কেন! তবে ভাবনাগুলোকে আর বেশি এগোতে দিল না আন্তরিক। নীলার চোখে ও কতটা খারাপ, আজ সেটা খুব ভালো ভাবে জেনে গেছে। তাই আর ভাবনা বাড়িয়ে লাভ নেই। কথাটা ভেবেই আন্তরিক নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিল নীলার কাছ থেকে। সেই সময়েই অন্তরা আর অমিতাভ বেরিয়ে এলো বাড়ি থেকে। আজ দুজনেরই পারদ ভীষণ চড়ে। অমিতাভ এই সময় সবার সামনেই আন্তরিককে বলে উঠলো,
———” এক্ষুণি নিজের ব্যাগ প্যাক করো। আমরা আর এক সেকেন্ড থাকবো না এই বাড়িতে। মা এত বাজে ভাবে অপমান করবে আমি ভাবতে পারছি না। যখন নিজের লোকেদের থেকে বাইরের লোকের দামই এত বেশি, তখন থাকুক এই বাইরের মেয়েকে নিয়ে। তবে আমিও ছেড়ে দেব না। কেস করবো এই প্রপার্টির জন্য। দেখি কে জেতে। ”
কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে বলেছিল অমিতাভ। অন্তরা সেই মুহূর্তে নিজের মনেই আন্তরিককে বলে উঠেছিল,
———” ছেলে তো দূরে থাক, নিজের নাতিকেও ভালোবাসে না ওই মহিলা। মুখের ওপর বলে দিল এই বাড়ি আমাদের নামে লিখে দেবে না! চলে যাই যেন আমরা। আমাদের থেকে বেশি আপন না কি ওই নীলা। উনি না কি ওই নীলাকে নিয়েই থাকবে। ”
কথাগুলো বলেই অন্তরা আন্তরিকের হাত ধরে ওকে টেনে বলেছিল,
———” দাঁড়িয়ে আছিস কেন! চল এখান থেকে। এত কথা শোনার পর আর এখানে থাকার কোন মানেই হয় না। ”
কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে বলেছিল অন্তরা। তবে আন্তরিক এইসব শুনে স্থিরভাবে নিজের মায়ের হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বলেছিল,
———” আমি কোথাও যাবো না মা। আর ঠাম্মা যা করেছে একদম ঠিক করেছে। ”
এই কথায় অমিতাভ আর অন্তরা দুজনেই যেন থমকে গেছিল। অমিতাভ ভীষণ অবাক হয়ে বলেছিল,
———” মানে! কি বলছিসটা কি তুই! আর যাবি না মানে? ”
কথাটায় আন্তরিক শান্ত গলায়ই বলেছিল,
———” যাবো না মানে যাবো না। পনেরো বছর আগেও আমি যেতে চাইনি বাবা। কিন্তু সেই সময় ছোট ছিলাম বলে জোর খাটিয়ে নিয়ে চলে যেতে পেরেছিলে। তবে আজ পারবে না। আমি ইন্ডিয়াতেই থাকবো। সেই মতন এখানে আমি চাকরির চেষ্টাও শুরু করে দিয়েছিলাম। এন্ড গেস হোয়াট, আই গট আ জব.. আর তোমরা কি ভেবেছিলে, এই বাড়ি বিক্রি করে প্রমোটিং এ দেবে, সেই প্ল্যান আমি জানতে পারবো না? আমি তোমার আর মায়ের সব কথা শুনেছিলাম। আর সেইসবই আমি ঠাম্মাকে এখানে এসে বলে দিয়েছিলাম প্রথম দিন। ”
কথাগুলো শুনে অমিতাভ চুপ করে গিয়েছিল। অন্তরা তবে নিজের মনেই বলে উঠেছিল,
———” তুই আমাদের সাথে এরকম করতে পারলি! আর আমাদের ছেড়ে তুই এই দেশে থাকবি? ”
এই কথায় আন্তরিক সেই শান্ত গলায়ই উত্তর দিয়েছিল,
——–” আর তোমরা ঠাম্মার সাথে এরকম করতে পারলে! এত বছর বাদে দেশে ফিরলে, তাও স্বার্থের জন্য! ওই বয়স্ক মানুষটার মনের দিকটা একবারও ভাবলে না? আর বাবা, তুমি কিরকম ছেলে যে নিজের মায়ের এগেনস্ট এ কেস করার কথা ভাবছো! এত লোভ প্রপার্টির? যাইহোক, যদি তোমরা ঠাম্মাকে ছেড়ে পনেরো বছর কাটিয়ে দিতে পারো, তাহলে আমিও তোমাদের ছেড়ে থাকতে পারি। ”
কথাগুলো বলে আন্তরিক আর দাঁড়ালো না। চলে এসেছিল নিজের ঘরে। তবে এরপর অন্তরা আর অমিতাভও অপেক্ষা করেনি। আসলে ভীষণ অহং এ লেগেছিল ওদের। ছেলের এই ব্যবহারটা আর ঠিক সহ্য করতে পারছিল না যেন। তাই সেদিনই ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে এসেছিল বাড়ি থেকে। এক দুদিন কোন হোটেলে থেকে তারপরই ফিরে যাবে ইউএসএ। কিন্তু এই সময় অরুণা দেবী আন্তরিকের কাছে এসে বলেছিল,
———-” তুমি কিন্তু তোমার মা বাবার সাথে এটা ঠিক করলে না দাদুভাই। ওরা খুব কষ্ট পেয়েছে। ”
এই কথায় আন্তরিক বেশ কঠিন স্বরেই বলেছিল,
———” আর তোমার কষ্ট ঠাম্মা? এত বছর ধরে একা থাকার কষ্ট? সেটা কি ঠিক ছিল? আর মা বাবাকে একটু বুঝতে দাও, সন্তান দূরে সরে গেলে ঠিক কেমন লাগে। তাহলেই ওরা ফিরে আসবে। আমি তো চিনি দুজনকে। বেশিদিন আমাকে ছেড়ে থাকতে পারবে না। ”
শেষ কথাটা বলে আলতো হেসেছিল আন্তরিক। অরুণা দেবী সেই মুহূর্তে জড়িয়ে ধরেছিল ছেলেটাকে।
যাইহোক, এইভাবে বেশ কিছুটা সময় কেটে যাওয়ার পর আন্তরিকের ঘরে নীলা এসেছিল। সেই মুহূর্তে আন্তরিক নিজের হাতে নিজেই ব্যান্ডেজ করার চেষ্টা করছিল। হাতটা বেশ ভালোই কেটেছে। নীলা এই সময় অপরাধীর মতন ওর সামনে এসে দাঁড়িয়েছিল। আন্তরিক সেটা খেয়াল করেও আজ আর কোন কথা বলেনি। নীলা এটা দেখে নিজেই এগিয়ে এসেছিল ওর কাছে, তারপর আলতো স্বরে বলে উঠেছিল ,
———” আমাকে দাও ব্যান্ডেজটা। আমি করে দিচ্ছি। ”
এই কথায় আন্তরিক অল্প কথায়ই বলেছিল,
———” লাগবে না। ”
নীলা এটা শুনেও জোর করে ওর হাত থেকে ব্যান্ডেজটা নিয়ে আন্তরিকের হাতে জড়াতে জড়াতে ভিজে গলায় বলে উঠেছিল,
———-” আই এম সরি আন্তরিকদা। আমি বুঝতে পারিনি তুমি এতটা ভালো! আমি আসলে ঠাম্মার কথা এত চিন্তা করছিলাম, সেই জন্য তোমাকেও প্রথম দিন থেকে এতটা ভুল ভাবতাম। ”
এই কথায় আন্তরিক ভীষণ অবাক হয়ে বলেছিল,
———-” আমাকে হঠাৎ তুমি করে বলছো! আমার মতন খারাপ মানুষ আর কেউ হয় না কি! একদম আমার সাথে কথা বোলো না। আমার মতন লোকের থেকে দূরে থাকা উচিত। ”
কথাটা বলেই আন্তরিক নীলার কাছ থেকে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিয়েছিল। কিন্তু নীলা এরপর কেঁদে ফেলেছিল নিজের মনে। আন্তরিকের এই রুক্ষ কথাগুলো ও কোনভাবেই মানতে পারছে না। তাই আপন মনেই বলে উঠেছিল,
———” এই পনেরো বছরে আমি ভেবেছিলাম সব বদলে গেছে। ভেবেছিলাম ওই দেশে গিয়ে তুমি আর পুরনো কিছুই মনে রাখবে না। যখন ফিরবে তখন অন্য কেউ হয়েই ফিরবে। কিন্তু আমি তো এত বছর ধরে মনে সেই পুরনো আন্তরিককেই রেখেছিলাম, যার সাথে আমি ঘুড়ি ওড়াতাম, খেলতাম, পড়তে যেতাম, স্কুলে যেতাম। যে সব সময় আমার হাতটা শক্ত করে ধরে থাকতো রাস্তায় বেরোলে। তোমার দেয়া গ্রিটিংস কার্ড, আমাদের ওড়ানো ঘুড়ি, তোমার দেয়া জন্মদিনের গিফ্ট সেই পেন, পুতুল সব আমি আজও যত্ন করে রেখে দিয়েছি বিশ্বাস করো। ”
কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে বলেছিল নীলা। তবে এইসব শুনে, নীলার চোখে জল দেখে আন্তরিক আর রেগে থাকতে পারেনি। মনটা ভিজে গিয়েছিল হঠাৎ। তাই নরম গলায় বলেছিল,
———” থাক, আর কাঁদতে হবে না। এখন বিশ্বাস হয়েছে তো, আমি সেই পুরোনো আন্তরিকই আছি! তাহলেই হবে। ”
কথাগুলো বলে আন্তরিক নীলার হাতটা শক্ত করে ধরে বলেছিল,
———” এরপর আমরা একসাথে থাকবো। আর কোথাও যাচ্ছি না। ”
কথাটায় নীলার মুখে হাসি। একটা নতুন গল্প শুরু হওয়ার আনন্দ এসে ধরা দিল মনে। নীলা মনে মনে দুর্গা মা কে একটা থ্যাঙ্ক ইউ তো বলেইছিল। কারণ ও তো কখনোই চায়নি আন্তরিক চলে যাক। এই শারদীয়ার দিনগুলোতে ইচ্ছেটা পূরণ হলো।

সমাপ্ত।

একটি উত্তর ত্যাগ

লগ ইন করুন গল্প পোকা. প্রস্থান?

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!