অবুঝ পাড়ার বাড়ি পর্ব-০৪

0
3

#অবুঝ_পাড়ার_বাড়ি
#হুমায়রা
#পর্বঃ০৪

সকালে খলিল সাহেবের দয়ায় অহনার খাবার জুটলেও বেলা গড়াতেই নিজের রুপে ফিরলো ফরিদা। অহনা ঘর থেকে শুনলো, কাউকে গরম গলায় বলছে,
–তোর আর আসা লাগবে না। নতুন লোক পেয়েছি।

ওপাশের ধীর গলার স্বর তার কান পর্যন্ত না আসলেও ফরিদার আবার গলা শোনা গেল,
–না মানে না। জোর করে থাকলে কি বিনা বেতনে কাজ করবি? টাকার বেলায় তো এক চুল ছাড় নাই। তাহলে জোর করছিস কোন সাহসে?

তারপরই দরজা বন্ধ করার শব্দ শোনা গেল। এতো জোরে বন্ধ করা হয়েছে যে সেই আওয়াজে কেঁপে উঠলো অহনা। ভয়ে নিজেকে গুটিয়ে ফেললো। পরমুহূর্তেই তার ঘরের দরজা খুলে গেল। রণমুর্তি ধারণ করে ভেতরে আসলো ফরিদা। আগুন চোখে আগে পুরো ঘর দেখলো। সব ঝেড়ে পুছে বাসযোগ্য করা হয়েছে। অচল বাক্সগুলো সুন্দর করে গুছিয়ে রাখায় জায়গা অনেক বের হয়েছে। ভাঙা শোকেস পরিষ্কার করে তার দেওয়া কাপড় ভাজ করে গুছিয়ে রাখা। এসব দেখে আরো কপাল কুঁচকালো ফরিদা। অহনার দিকে ফিরে গর্জে উঠে বলল,
–এসব রঙঢঙ করতে মন চাইলে বাড়ির বাইরে গিয়ে করবে। এ বাড়িতে থাকতে হলে খেটে খেতে হবে। মাগনা খাবার দেই না আমি।

ফরিদার গর্জনে অহনার বুক ভয়ে ধুকপুক করতে লাগলো। শুকনো ঠোঁট জিভ দিয়ে ভিজিয়ে বলল,
–কি করতে হবে?

ফরিদা মুখ বেঁকিয়ে দাঁত কিড়মিড়িয়ে বলল,
–মহারানীর বাইরে পদার্পণ ঘটলে তবে না দেখতে পাবেন, কি কি করতে হবে?

অহনা সটান উঠে দাঁড়ালো। তক্ষুনি ফরিদার নজর খাটের পাশে জড়ো করে রাখা সকালের প্লেট আর গ্লাসের দিকে গেল। রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে বলল,
–ওগুলো কি বাপের বাড়িতে পাঠানোর ধান্দায় আছো? ফকিরের বংশ থেকে এসেছো নাকি চোরের বংশ থেকে?

অপমানে অহনার চোখে পানি চলে আসলো। কোনোমতে মাথা দুই পাশে নাড়িয়ে প্লেট গ্লাস হাতে তুলে নিলো। তার পরিবার যথেষ্ট ভালো, সচ্ছল আর শিক্ষিত ছিলো। বাবার ক্যান্সারের চিকিৎসায় সব চলে না গেলে আজ এইখানে থাকত না সে। হয়তো কলেজ পাশ করে কোন ভালো ইউনিভার্সিটিতে অ্যাডমিশন নিতো। তখন এখানে অপমানিত হতে হতো না। মন চাইলো এগুলো সামনের মানুষটাকে জানিয়ে দিক সে। কিন্তু জানাতে পারলো না। কবেই বা কাকে মনের কথা জানাতে পেরেছে সে! বাবা বলতো, “আমার মেয়েটার যে কি হবে!” কি হবে দেখার জন্য আজ বাবা নেই। আর নেই জন্যই বোধহয় কিছু হচ্ছে তার সাথে।

ঘরের কাজ করতে খুব কষ্ট হয়েছে তার। নিজের বাড়িতে রান্না ছাড়া আর কিছুই কোনদিন করতে হয়নি। রান্নাও শখের বশে করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর নানাবাড়িতে তার ভাগে এই রান্নার দ্বায়িত্বটাই পরেছিলো কারন ভালো রান্নার সুখ্যাতি তার ঝুলিতে ছিল। তখন রান্নার চাপে অন্যদিকে নজর দেওয়ার সময়ই হয়নি। যৌথ ফ্যামিলির তিন বেলার কয়েক পদের রান্না। তার উপর সাহায্যেরও কেউ ছিলো না। এই কয়েকমাসে আর কিছু না হলেও রান্নায় পাকা হয়ে উঠেছে। কিন্তু ওইযে আর কিছু! আর কিছু করতে অনেক সময় লেগে গেলো। এক ঘর ঝাড় দেওয়ার পর একটু বিরতি দিয়ে আরেক ঘর ঝাড় দিলো। ভারী ঝাটা হাতে দিয়ে ঝাড় দিতে গিয়ে কবজি ব্যাথা হয়ে গেলো। সেই কাজ শেষ হলে রান্নাঘরের এঁটো থালাবাসন পরে রইল। সকালের থালাবাসন মাজতে মাজতে দুপুর প্রায় হয়েই এলো। ভেতর ঘর থেকে চেঁচিয়ে উঠলো ফরিদা,
–ওইরকম খুটে খুটে কাজ করলে বাইরের দরজা খোলা আছে। যেতে পারেন আপনি।

ফরিদার কথার বাণে অহনার চোখের পানি থালা বাসন ধোয়ার নোংরা পানির সাথে মিশে চলে গেলো। দ্রুত হাতে বাসন মেজে সাজিয়ে রেখে রান্নার কাজে হাত লাগালো।বিয়ের পরের প্রথম রসুই অহনার। সে হোক, বিয়েটা কেউ মানেনি বা হোক, বউ হিসেবে রান্নার দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়নি৷ কিন্তু মনে প্রানে তো নিজেকে বাড়ির বউ বলে মেনে নিয়েছে নিজেকে। স্বামী তাকে না মানলেও সে তো মানে। বাঙালি রমনীদের বিয়ের সাথে সাথে স্বামীর প্রতি এক অবাধ্য টান অনুভব করে বলেই শুনেছে সে৷ এখন সেই টান সেও অনুভব করছে। মানুষটা তার হাতের রান্না খাবে ভেবেই উৎসাহ দ্বিগুণ তিনগুণ বেড়ে যাচ্ছে। মাছ কাঁটলো, সবজি কাটলো, মরিচ পেঁয়াজ সব কেঁটে চুলা ধরিয়ে চুলার আগুনে হাড়ি চড়লো। আর সেই আগুনেই গলতে লাগলো তার সব অভিমান।

সারাদিন বাইরে বাইরে থেকে বাড়ি ফিরে খেতে বসলো সাদিক। রুই মাছ ভুনা, লাল শাক, আলু ভাজি আর মিষ্টি কুমড়া ভর্তা। মেনু দেখেই কপাল কুঁচকালো সে। তার বাড়িতে আজ পর্যন্ত, আলু ভাজি আর মাছ একসাথে রান্না হয়নি। তাহলে আজ কেন! মাকে জিজ্ঞাসা করার আগেই অহনা ডালের বাটি নিয়ে ছুটে আসলো। সব গোছালেও ডাল দিতে ভুলে গেছে। ওকে দেখেই সাদিক ঠান্ডা স্বরে বলল,
–আজকের রান্না কে করেছে মা?

ফরিদা ব্যাজার মুখে বলল,
–কে আর করবে? তোর বউ করেছে। আমি কি অতো পারি…

কথা শেষ করার আগেই ভাঙচুর হয়ে গেল। টেবিলের কোনো খাবারই আর টেবিলে থাকলো না। তাদের অবস্থান হলো মেঝেতে গড়াগড়ি অবস্থায় । ফরিদা চমকে চেয়ার থেকে উঠে গেল। অহনা রান্নাঘরের দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে কাঁপতে লাগলো। সাদিক গর্জে উঠে বলল,
–যাকে দেখলেই ঘিন্না লাগে তাকে রান্নাঘরে অ্যালাও করেছো কেন? ওর হাতের রান্না রাস্তার কুকুর বিড়ালও থুথু ফেলে চলে যাবে।

অহনা শক্ত হাতে দরজার কপাট চেপে নিজেকে সামলালো। ইচ্ছে হলো নিজের হাত দুটো কেটে শরীর থেকে আলাদা করে ফেলুক।

***
জার্নির ক্লান্তিতে এসেই ঘুমিয়ে পরেছিলো সাদিক৷ উঠলো রাত আটটায়। উঠে চোখ ডলতে ডলতে বাইরে এসে দেখে সকালের সেই পিচ্চি ছেলেটা পা ছড়িয়ে নিজের ছোট টেবিলের উপর খাতা রেখে ঝুঁকে কিছু করছে৷ আগ্রহ হলো তার। ধীর পায়ে হেঁটে কাছে গিয়ে ঝুঁকে দেখলো বাচ্চাটা আর্ট করছে। একটা হলুদ রঙের বাড়ি, সামনে পিচঢাকা রাস্তা আর একটা গাড়ি৷ ঠিক ওর গাড়ির মতোই গাড়ি। আঁকানো এখনও শেষ হয়নি। সাদিক মুগ্ধ হয়ে গেলো। বাচ্চাটা অনেক ভালো আর্ট করে। আগ্রহ বশত পিছন থেকেই বলে উঠলো,
–এই বাড়িতে কে থাকবে?

মাহাদী চমকে উঠে পেছনে তাকাতেই সাদিকও চমকে উঠলো। ছেলেটা একদম ওর মতো দেখতে। চোখ, নাক, ঠোঁট সব কপি। সাদিক অনেকক্ষণ পর্যবেক্ষণ করলো। এমনকি মাহাদী মাথা ঘুরিয়ে নিলে ওর সামনে বসে ওকে দেখতে লাগলো। এমন ব্যবহারে ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে নিজের রঙ পেন্সিল সব গোছাতে লাগলো মাহাদী। সাদিক বিষ্মিত স্বরে বলল,
–তুমি আমার নাক চুরি করেছো কেন?

মাহাদী গোছানো বাদ দিয়ে অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালো। এই ছোট ছোট চোখের বারবার পলক ফেলা সাদিককে আরো বিভ্রান্ত করে ফেলল। সাদিকও ওর মতো পলক ফেলে নিজের চোখ দেখিয়ে বলল,
–এই দেখো, চোখও সেম।

মাহাদী বিরক্ত হয়ে বিড়বিড় করে কিছু বলে নিজের জিনিসপত্র নিয়ে ঘরে চলে গেলো। সাদিক অবাক হয়ে দেখলো, ছেলেটা ওর ছোট ছোট হাত দিয়ে শক্তি প্রয়োগ করে একদম মুখের উপর খট করে দরজা বন্ধ করে দিলো। বিষ্মিত হয়ে দুইবার পলক ফেলে সত্যতা যাচাই করতে চাইলো। ঘটনা সত্য বুঝেই চোখ ছোট ছোট করে উঠে ঘরে চলে গেলো। অপমানটা বেশ বড়ই ছিলো। বলা চলে ডেকে এনে অপমান!

ঘর থেকে আবার বের হলো ঠিকঠিক মাহাদীর খাওয়ার সময়। খাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে বসার ঘরের মেঝেতে। অহনা ছেলেকে পাশে বসিয়ে টিভি দেখাতে দেখাতে খাওয়াচ্ছ। সাদিক গিয়ে অহনার পাশ ঘেষে বসে পরলো। তাকে অহনার পাশে বসতে দেখে গাল ফুলালো মাহাদী। নিজের বসার জায়গা থেকে উঠে মায়ের কোলে জায়গা করে বসে পরলো। অহনা এক হাতে ধরতেই জড়িয়ে ধরলো মাকে। অহনা বিচলিত স্বরে বলল,
–এভাবে কোলে থাকলে কিভাবে খাইয়ে দেবো বাবা?

মাহাদী মাথা নেড়ে আরো জাপ্টে ধরলো। সাদিক ভ্রু বাঁকিয়ে দেখলো, হলুদ টিশার্ট পরা বাচ্চাটা পারলে একদম মায়ের সাথে মিশে যায়। খানিক বিরক্ত গলায় বলল,
–ছেলেকে এমন কোলে কোলে মানুষ করলে ভবিষ্যতে আর দেখতে হবে না।

সাদিকের কথার টোন মাহাদীর মোটেও ভালো লাগেনি। অহনা পাত্তা না দিলেও সে মায়ের বুকে মাথা রেখে মুখ ঘুড়িয়ে রাগী দৃষ্টিতে তার দিকে তাকালো। সাদিকের ইচ্ছে হলো, তার মতো দেখতে এই বাচ্চাটার রাগী মুখের সুন্দর নাকটা টেনে দিক। লোভ সংবরণ করতে না পেরে সত্যি সত্যি নাক টেনে দিতেই তারকশ্বরে কেঁদে উঠলো মাহাদি। হকচকিয়ে গেলো সাদিক। অহনা চমকে উঠে বিচলিত স্বরে বলল,
–কি হয়েছে বাবা? কাঁদছো কেন?

মাহাদী কাঁদতে কাঁদতে একবার নিজের নাক আরেকবার সাদিককে আঙুলের ইশারায় দেখালো। অহনা কিছু না বুঝলেও সাদিক বুঝে কেঁশে উঠে প্রসঙ্গ পাল্টাতে সামনের খিচুড়ির বাটি দেখিয়ে বলল,
–খিচুড়ি ছাড়া আর কিছু নেই?

খিচুড়ি তার খুব একটা পছন্দের না। অহনা ছেলে জন্য আর তার জন্য পাতলা খিচুড়ি করেছে। তাই তাড়াহুড়ো করে বলল,
–এটা খাবেন না।

সাদিক কপাল কুঁচকে বলল,
–কেন? এটা কি খাবার না?

–এটা আমি রান্না করেছি। একটু অপেক্ষা করুন, ওকে আগে খাইয়ে নেই তারপর আপনার খাবার গরম করে আনছি।

একটু আস্তে করে উত্তর দিয়ে খাবার খাওয়াতে মনোযোগ দিলো সে। এমন ভাব করতে লাগলো যেন এই জগতে সে আর তার ছেলে ছাড়া আর কেউই নেই। সাদিকের রাগ হলো। তাকে ডেকে এনে মা ছেলে আচ্ছা মতো অপমান করা শুরু করেছে। রাগে জেদ দেখিয়ে বলল,
–না, আমার ভীষণ ক্ষিদে পেয়েছে। তাড়াতাড়ি যাও।

অহনা চোখ বুজে শ্বাস ফেলে নরম গলায় ছেলেকে বলল,
–আব্বু, তুমি একটু বসো। আমি বাবার খাবার নিয়ে আসছি।

মাহাদী গাল ফুলিয়ে মাথা হেলিয়ে সায় জানালো। সাদিক ঘাড় বেঁকিয়ে অহনার যাওয়া দেখলো। ও যেতেই মাহাদীর দিকে ঘুরে বসে চোখ ছোট ছোট করে বলল,
–তুমি আমাকে পছন্দ করোনি কেন? আমি কি তোমাকে মেরেছি? আমাদের তো আগে দেখাই হয়নি। আর তখন আমার মুখের উপর দরজা কেন বন্ধ করলে?

সাদিক রীতিমতো জেরা শুরু করলো। মাহাদী উত্তর না দিয়ে নাক ফুলিয়ে, রাগ দেখিয়ে ছোট ছোট হাত দিয়ে চামচ ধরে নিজের পাতলা খিচুড়ি খেতে লাগলো। সাদিক কপাল কুঁচকে কিছুক্ষণ ওর কান্ড দেখে হাত থেকে চামচ কেড়ে নিয়ে বলল,
–দেখি তোমার মা কেমন রান্না করেছে?

বলেই দুই চামচ খিচুড়ি মুখে পুড়ে দিলো। মাহাদী কিছু বলতে না পেরে ঠোঁট উলটে কান্নার প্রস্তুতি নিতেই সাদিক আঙুল তুলে সতর্ক করে বলল,
–খবরদার কান্না করবে না। কান্না করলে নিশিভুত ধরে নিয়ে যাবে।

মাহাদী কান্না গিলে চোখ পিটপিট করে কৌতুহলী গলায় বলল,
–কেনো?

সাদিকের খুব ভালো লাগলো। এই আদুরে ছেলেটা প্রথমবারের মতো তার সাথে কথা বলছে। নিজেকে সামলে বলল,
–কারন যে বাচ্চারা কান্না করে সেই বাচ্চাদের নিশিভুত দেখতে পারে না। তুমি নিশিভুত দেখেছো?

মাহাদী মাথা নাড়লো। সাদিকের আবার খুব ভালো লাগলো। খুব আদুরে গলায় বলল,
–নিশিভুত দেখতে ইয়া বড়। ওর ইয়া বড় কান, ইয়া বড় নাক, ইয়া বড় চুল, ইয়া বড় দাঁত। যখন কথা বলে তখন মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়। খায় শুধু বাচ্চাদের হাড্ডিগুড্ডি।

–তাহলে কি তোমার মতো দেখতে?

মাহাদী চোখ পিটপিট করে নিরীহ গলায় প্রশ্ন করতেই সাদিকের আর ওকে আদুরে লাগল না। উত্তর না দিয়ে থমথমে মুখে খিচুড়ির প্লেট নিজের দিকে টেনে পুরো খিচুড়িই শেষ করে ফেলল। মাহাদী সেদিকে তাকিয়ে রইলো শুধু। কান্না এখন শুধু মায়ের অপেক্ষায়। অহনা আসলো খানিক পরেই। ওকে দেখেই মাহাদী ঠোঁট ফুলিয়ে ফেলল। সাদিক চোখ গরম করে কিছু বলার আগেই তারকশ্বরে কান্না শুরু হয়ে গেল। সাদিক কানে আঙুল গুজে ইশারায় নিজের খাওয়া হয়ে গেছে বুঝিয়ে ঘরে দিয়ে আগে দরজা বন্ধ করে কান্নার আওয়াজ কমালো। অহনা অসহায়ের মতো ছেলের কান্না বন্ধ করতে লাগলো আর খাবারের দিকে তাকিয়ে রইলো। ছেলের খাবারে ভাগ বসানোর কি খুব দরকার ছিলো!

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে