সবিতা
পর্ব: ০৩
মুমতাহিনা জান্নাত মৌ
“আমি মানুষ তো, না কি শুধুই এক কাজের মেয়ের মতো বসবাস করা মেশিন?”
সেই ভাবনা থেকেই আচমকা এই সিদ্ধান্ত—
আজ এই ঘর, এই সংসার, এই চেনা অথচ অচেনা মানুষের দল ছেড়ে বেরিয়ে পড়তে হবে।
কোনো ব্যাগ নয়, কোনো টাকা-পয়সা নয়, এমনকি নিজের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও নয়।
আন্নি বেরিয়ে যায় খালি হাতে। পরনের ওড়নাটাও ঠিকমতো নেই তার গায়ে।
তবুও মনে এক অদ্ভুত শান্তি—
“এই নির্যাতন আর নয়।”
চাঁদের আলোয় ছায়া পড়ে তার চোখের নিচে।
রাস্তার বাতি মাঝে মাঝে কেঁপে উঠে।
সে হাঁটছে, উদ্দেশ্যহীন ভাবে।
জীবনে এমন একটা সময় আসে, যখন কোথাও না যাওয়াটাও একটা যাত্রা হয়ে দাঁড়ায়।
আজ আন্নির সেই যাত্রা।
হাঁটতে হাঁটতে পা আর চলে না।
চোখের জল শুকিয়ে গাল নোনা করে রেখেছে অনেক আগেই।
কোনো ঠিকানা নেই তার কাছে, নেই কারো আশ্রয় চাওয়ার অধিকার।
কিন্তু তবু সে চলেছে, একা, নিশ্চুপ।
ক্ষুধা লেগেছে, গা ভেঙে যাচ্ছে, চোখে অন্ধকার।
কিন্তু তবুও থামে না সে।
হাঁটতে হাঁটতে একটা জায়গায় এসে দাঁড়ায়—মাথা নিচু, কাঁধ ঝুঁকে গেছে ক্লান্তিতে।
ঠিক তখনই পেছন থেকে এক চেনা কণ্ঠস্বর ভেসে আসে—
“আন্নি?”
ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে কাকুলি আর আনোয়ার।
তার বান্ধবী, তার একমাত্র সমব্যথী।
কিন্তু এতটা ভাঙা অবস্থায় নিজেকে কারো সামনে প্রকাশ করতে চায় না আন্নি।
তাই সে দ্রুত মুখ ফিরিয়ে নেয়, চোখের জল লুকাতে চায়।
আনোয়ার উদ্বিগ্ন গলায় বলে ওঠে,
“আন্নি, কী হয়েছে তোমার?
এভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছো কেন? সব ঠিক আছে তো?”
কাকুলিও এগিয়ে আসে।
তার চোখে স্পষ্ট উদ্বেগ, কণ্ঠে কাঁপুনি—
কাকুলি কাছে এসে চিন্তিত গলায় জিজ্ঞেস করে,
“আবার সাইফের সঙ্গে ঝগড়া করেছিস?”
আন্নি কোনো উত্তর দেয় না। তার চুপ থাকা যেন আকাশভরা উত্তর হয়ে নেমে আসে।
তার ঠোঁট থরথর করছে, চোখ আবারও জলে ভরে যাচ্ছে।
কাকুলি তার হাত ধরে—
“চল, আমাদের বাসায় চল। এখানে দাঁড়িয়ে থাকা যাবে না। তুই তো কাঁপছিস, আন্নি।”
আন্নি নিচু গলায় বলে—
“আমি আর কোনো ঘরে ফিরতে চাই না।আমি… রাস্তাতেই থাকবো।”
এটাই আমার শান্তি।”
কাকুলি চোখ বড় করে তাকায়।
“তুই পাগল নাকি? এভাবে কেউ থাকে? দুঃখে মন ভেঙে গেল মানে কি নিজের জীবনও ছুড়ে ফেলা?”
আন্নি কিছু বলে না।
শুধু তার দৃষ্টিতে ক্লান্তি, কষ্ট আর ভাঙা স্বপ্নের ছায়া।
আনোয়ার এবার একটু কঠোর গলায় বলে—
“দেখো, সাহস করে বেরিয়ে এসেছো, তার জন্য তোমার সাহসকে আমি সম্মান করি।
কিন্তু এর মানে এই না যে তুমি নিজেকে শেষ করে দেবে।
চলো, আমাদের বাসায় যাও। কালকের দিন কী হবে, পরে ভাবা যাবে।”
কাকুলি তার চোখে চোখ রেখে বলে—
“যা হবার হয়েছে। এবার তুই নিজের কথা ভাব।
তুই যে জীবিত আছিস, সেটাই এখন সবচেয়ে জরুরি।”
আন্নি একবার তাদের দিকে তাকায়।
শেষমেশ কাকুলি আর কোনো কথা না শুনেই জোর করে তার হাত ধরে ফেলে—
তোকে আমি একা রাস্তায় রেখে যেতে পারবো না।”
এই প্রথম সে অনুভব করে, কারও ছায়া এখনও আছে তার জীবনে।
অপমানের ঘর ছাড়লেও, আশ্রয়ের হাত এখনও থেমে যায়নি।
সে ধীরে ধীরে কাঁপা পায়ে হাঁটতে থাকে কাকুলি আর আনোয়ারের সাথে।
আর সেই মুহূর্তে তার চোখের কোণ বেয়ে নেমে আসে শান্তির জল।
সেই চোখের জলে কষ্ট ছিল, তবে এবার ছিল নতুন শুরুর ইঙ্গিতও।
……..
অবাক করার মতো বিষয় হলো—আন্নি বেরিয়ে যাওয়ার ঘন্টাখানেক পরেও কেউ খোঁজ নিলো না।
এদিকে সাইফ রাতে বাড়িই ফেরে নি।
সকাল বেলা শাশুড়ি অবশেষে সাইফকে ফোন করলেন।
“আন্নি বাসায় নাই।”—কণ্ঠটা যেন নিস্পৃহ।
সাইফের প্রতিউত্তর ছিল যেন তার চরিত্রেরই প্রতিচ্ছবি—“কই যাবে আর? বাপের বাড়িতে গেছে নিশ্চয়।”
একটুও উদ্বেগ, একটুও দায়িত্বের বোধ—কিছুই ছিল না কণ্ঠে। এমন কাপুরুষ স্বামী নিয়ে বেঁচে থাকার মানে কী?
এতটাই স্বার্থপর, এতটাই নির্দয় সে!
যে নারী বছরের পর বছর প্রেম করে অবশেষে তার সংসারে নিজেকে বিসর্জন দিয়েছে, তার মানসিক যন্ত্রণা আর অপমানের বোঝা টানতে টানতে আজ নিজেকে ভেঙে ফেলেছে—তার খোঁজে একটাবার বেরিয়ে পড়ার প্রয়োজন বোধ করে না সাইফ।
আন্নি তখন কাকুলিদের বাসায়।
বন্ধু কাকুলি একটিবার জড়িয়ে ধরেছিল—
“থাক তুই আমার কাছে। ঠিক হয়ে যাবে সব।”
আন্নি একটুও হাসতে পারেনি। তার মুখে কেবল নিঃস্পৃহতা, আর মনে একটাই প্রশ্ন—এই “সব” ঠিক হওয়ার মতো আছে কি?
কিন্তু কাকুলির বাসায় তো চিরকাল থাকা যায় না।
এটা তার স্থায়ী ঠিকানা নয়।সব সময় দয়া-ভিত্তিক সম্পর্ক মানুষকে কুরে কুরে খায়।
নিজের বাবা-মায়ের বাড়ি?
না,
বাবার বাড়ির দরজাও তার জন্য আজ বন্ধ।
পরের গন্তব্য—বড় বোন আমেনার বাড়ি।
তবে সেখানেও মিলল না আশ্রয়।
বরং শুনতে হলো চরম কথাগুলো—
“এইভাবে বাড়ি থেকে চলে আসে কেউ?”
“তুই কি পাগল হয়ে গেছিস?”
তুই কি ছোট শিশু?”
“আর কিছুদিন সহ্য করতে পারলি না?”
রক্তের সম্পর্কগুলোও এখন প্রশ্ন তোলে।
আন্নির চোখ ভরে ওঠে অশ্রুতে। গলার স্বর কাঁপে—
গলা ধরে আসে। সে ফুপিয়ে ফুপিয়ে বলে—
“আমি আর সহ্য করতে পারছিলাম না। একদম না।”
আমি ভেঙে পড়ছিলাম, দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিলো আমার!”
কেউ বুঝলো না তার যন্ত্রণার ভাষা, শুধু সিদ্ধান্তের জন্যই দোষারোপ।
শুধু বলে—তুই ভুল করেছিস।
কয়েকদিনের মাথায় মা-বাবা এসে হাজির আমেনার বাড়িতে। মা একদিকে ঝাড়ছে, বাবা আরেকদিকে। কেউ একটা প্রশ্নও করলো না—“তুই কেমন আছিস?”
তাদের চোখে আন্নি যেন এক অপবিত্র বোঝা।
মা বলে—“তোর মতো মেয়ে আমাদের মুখ দেখায় কেমনে!”
বাবা বলে—“তুই আমাদের মুখ পুড়ালি!”
আন্নি মাথা নিচু করে।
তাদের চোখে চোখ রাখার সাহসও তার আর নেই।
একটা মানুষের ভেতরকার সবটুকু তুচ্ছতা আজ তার দেহমুখে লেখা।
অভিমান আর অপমানে রাগ করে বোনের বাসা থেকেও বেরিয়ে পড়ে আন্নি।
আর তখনই শুরু হয় তার নিঃসঙ্গ ভ্রাম্যমান অধ্যায়।
সাইফের পরিবার ভাবে সে হয়তো মা-বাবার বাড়ি গেছে। মা-বাবা ভাবে সে হয়তো স্বামীর বাড়ি ফিরেছে।
কিন্তু আসলে, আন্নি কোনো বাড়িতেই নেই।
সে এখন রাস্তায়—নির্জন, অচেনা, একা।
সে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে—একটা ঠাঁইহীন, ভালোবাসাহীন, নির্বাসিত নারীর মতো।
চোখের সামনে মানুষ আসে-যায়। কেউ তাকে দেখে না।
জীবনের গাঢ় অন্ধকারে সে হাঁটছে—অচেনা এক ভবিষ্যতের দিকে।
তবুও সে থেমে নেই।
একটুও।
….……….
ঢাকার শহর রাত নামলেই যেন অন্য এক রূপ নেয়।
লোকের ভিড় কমে, আলো কমে, শব্দ কমে… আর ভয় বাড়ে।
পায়ে পায়ে হেঁটে ক্লান্ত আন্নি একটা ফুটপাথের কিনারে বসে পড়ে।
চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ভিখারিদের ভিড়ে আজ সে-ও যেন এক হয়ে গেছে।
একসময় যার সাজগোজে ব্যস্ত থাকত সন্ধ্যা, আজ তার চুল এলোমেলো, গায়ে ধুলোমাখা, চোখে শূন্যতা।
মুখ ফিরিয়ে কেউ তাকায় না তার দিকে।
হঠাৎ একটা ছেলে থামে।
চিন্তা করে বসে, কাঁধে ব্যাগ, হাতে পানির বোতল।চেহারার মতিগতি ঠিক মনে হচ্ছে না।
– “আপু ঠিক আছেন?”
আন্নি ভয় পেয়ে যায়। চোখে চোখ রাখে না, মাথা নিচু করে শুধু বলে,
– “ভালো আছি। এই বলে সে অন্য জায়গায় গিয়ে বসলো।
আন্নির চোখের কোণ ভিজে ওঠে—এই শহরে মানুষ আছে, আবার নেইও।
একটা ভাঙা বেঞ্চে বসে থাকে সে।
রাত বাড়ে।
রাতের গাড়িগুলোর হেডলাইটে মাঝে মাঝে তার মুখটা ঝলসে ওঠে।
সাথে আসে কত প্রশ্ন—
“কোথায় যাবো আমি?”
“কেউ কি আর কখনও আমাকে বিশ্বাস করবে?”
পরক্ষণেই ভাবে,
“আমি কি এতটাই দুর্বল?”
এইসব প্রশ্নের ভেতরেই হঠাৎ একটা কাঁপা গলা,
– “এই যে মা, এইখানে ঘুমাইও না, খুব বিপদ হইতে পারে।”
বয়স পঞ্চাশের মতো এক মহিলা। মুখে ক্লান্তির রেখা, হাতে পাতলা চাদর।
আন্নিকে দেখে থমকে দাঁড়ায়।
– “নতুন আইছো?”
আন্নি কোনো কিছু না ভেবে মাথা নাড়ে।
– “চলো, আমার সঙ্গে চলো। যতটা পারি যত্নে রাইখা দিব। শুইস না এইখানে। খারাপ মানুষ এলা দ্যাখলে তো খোদারেও ভয় করে না।”একদম গিলে খাবে।
আন্নি কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে।
তারপর অনেক ভেবেচিন্তে ধীরে ধীরে মহিলার পিছু নেয়।তাছাড়া অনেক রাত ও হয়েছে।এই পরিবেশে একা থাকা ঠিক হবে না।এখন এই পরিস্থিতিতে তাকে কাউকে না কাউকে বিশ্বাস করতেই হবে।
একটা পুরোনো ভবনের নিচতলায় কিছু মেয়েরা বসে আছে, কেউ রান্না করছে, কেউ কাপড় শুকাচ্ছে, কেউ নিঃশব্দে তাকিয়ে আছে।
এ যেন ছিন্নভিন্ন মেয়েদের এক অস্থায়ী সংসার।
কেউ বাসা থেকে বেরিয়ে আসা, কেউ পেটের দায়ে চলে আসা, কেউ সমাজের চোখে “অযোগ্য” হয়ে পড়া।
আন্নিকে এক কোণে বসতে দেয় সেই মহিলা টি।
তার নাম—”রহিমা।”
রহিমা বলে,
– “ভয়ে থাকিস না মা। কয়দিন থাকিস, তারপর যদি চানস পাই, তো চাকরির কিছু দেখি, না হলে মহিলা হোস্টেল আছে, আমি ঠিকানাও জানি। তুই শুধু দম ছাড়িস না।”
এই কথায় চোখ ভিজে যায় আন্নির।
রহিমা যেন অন্ধকারে একটা হালকা আলো।
এই প্রথম কেউ তাকে “মা” ডেকে স্নেহে কিছু বললো।
রাত গভীর হয়।
আন্নি ছোট্ট একটা কম্বলের নিচে কেঁপে কেঁপে ঘুমায়।
ঘুম আসে না ঠিক। আসে এক ধরনের অবচেতন—
যেখানে তার বাপ-মায়ের মুখ ভেসে ওঠে,
সাইফের ঠান্ডা কণ্ঠ,
আমেনার গালমন্দ,
আর আজকের রহিমা।
হয়তো এই শহরের বুকেই কোথাও তার জন্য একটা ছোট্ট জায়গা আছে।
যেখানে কেউ তার ভালোবাসা পাবে না বলে ঠেলে দেবে না।
যেখানে সে নিজের নামে একটা পরিচয় গড়তে পারবে।
নিজেকে খুঁজে পাবে।
রহিমা খালার সেই ছোট্ট ঘরেই ক’দিন কাটিয়ে দেয় সে।
…………..
সকালে আশপাশের বাসাগুলোর রান্নার গন্ধে চোখ মেলে আন্নি।
কেউ তাকে জোরে ডাকে না, কেউ দায়িত্ব চাপায় না,
তবু তার মধ্যে এক অদ্ভুত খালি জায়গা তৈরি হয়েছে।
একদিন রহিমা বলে,
– “চল মা, তোকে একটা জায়গায় লইয়া যাই।”
আন্নি চুপচাপ যায় তার সঙ্গে।
ছোট একটা অফিস, দরজার সামনে লেখা—
“নারী সহায়তা কেন্দ্র – প্রশিক্ষণ ও সহায়তা কার্যক্রম”
একটা আপু জিজ্ঞেস করেন নাম কি তোমার?
___আ,,,,বলতেই থেমে যায় আন্নি।
না,সে আজ থেকে আন্নি নয়।তার নতুন নাম সে নিজেই ঠিক করে।
কারণ আন্নি মারা গেছে স্বামীর অযত্ন আর ভালোবাসার অভাবে,আন্নি মারা গেছে শশুড় শাশুড়ীর অবহেলায়,আন্নি মারা গেছে বাবা মার দুর্ব্যবহারে,আন্নি মারা গেছে বোনের গালমন্দে।
কি হলো?নাম কি?
____সবিতা।
____নাইচ নেইম।
আপুটি হাসিমুখে বলেন,
–সবিতা “তুমি চাইলে এখানে থেকে সেলাই শেখা, কম্পিউটার শেখা বা হেল্প ডেস্কে কাজ করতে পারো। আর থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও আছে।”
সবিতার চোখে জল এসে যায়। এতদিন পর কেউ তাকে মানুষ মনে করছে, অবহেলা করছে না।
তিনদিন পরই সে সেলাই শেখা শুরু করে।
রোজ ঠিক সময়ে উঠে পড়ে, আয়নায় নিজের চোখে চোখ রাখে।
“আমি পারবো”— নিজেকে বলতে শেখে।
প্রথম নিজের বানানো থ্রিপিস যখন নিজের গায়ে পরে দেখে, মনে হয় কতকাল পরে যেন নিজেকে সাজিয়েছে।
রাতে রহিমা খালা একদিন বলে,
– “তোরে এই শহর ঠেকাইতে পারে নাই মা, তুই একদিন ঠিকই উঠবি।”
সবিতা মাথা নিচু করে হাসে।
সে নিজেকে একধরনের মুক্ত পাখি মনে করে, যার পাখায় এখনও আঘাত আছে, কিন্তু উড়ার শক্তি জমে উঠছে।
কিন্তু পুরোনো ছায়া কি এত সহজে পিছু ছাড়ে?
এক সন্ধ্যায় সবিতা যখন এনজিওর বারান্দায় বসে সেলাইয়ের কাজ করছিল,
তখন একটা পরিচিত কণ্ঠ শুনতে পায়।
– “আপনারা কি আন্নি নামের কাউকে চেনেন?
গলা শুনেই শরীর ঠাণ্ডা হয়ে আসে।
এ তো সাইফ।
সবিতা জানালার ফাঁক দিয়ে দেখে—সাইফ দাঁড়িয়ে আছে।
মুখে অস্থিরতা, হাতে তার একটা ছবি।
কেউ একজন বলে,
– “না ভাই, এই নামে তো কেউ নাই।”
আন্নি ধীরে ধীরে দরজা বন্ধ করে দেয়।
তার ভিতরটা কাঁপে।
সাইফ তাকে খুঁজছে, কিন্তু কেন?
ভালোবাসায়?
নাকি সমাজের ভয়ে?
নাকি “মেয়েটা আবার যেন মুখ না তোলে” সেই অভিপ্রায়ে?
রাতে রহিমা খালা দেখে সবিতার চেহারায় অদ্ভুত এক হতাশা।
জিজ্ঞেস করে না কিছু, শুধু পাশে বসে চুপচাপ হাত ধরে।
সবিতা বলে,
– “আমি কি কিছু ভুল করলাম খালা?”
– না,মা।
“তুই এখন বেঁচে আছিস,আর পূর্বে বেঁচে থেকেও মৃত ছিলি। সঠিক পথেই তুই আছিস।
চলবে……….