Monday, October 6, 2025







“মেঘনাদ”পর্ব ৩…

“মেঘনাদ”পর্ব ৩…

পরদিন আমি কলেজে গিয়ে খবর পেলাম, আসিয়া নিখোঁজ। কালরাত থেকে নাকি সকাল থেকে তা কেউই স্পষ্ট করে বলতে পারছে না। আলিয়ার কী অবস্থা হচ্ছে? তাকে সান্ত্বনা দিতে যাওয়া উচিত। কিন্তু কেউ কিছু মনে করতে পারে। মৌমিতাকে একবার জিজ্ঞেস করে দেখলাম, আলিয়ার বাসায় যাবে কিনা। সে বলল, আসিয়া হয়তো রাগ করেই কোথাও গিয়েছে। ভলে আসবে। আমি অগত্যা বাসায় এসে আলিয়াকে ফোনই করলাম। কিন্তু সে রিসিভ করছে না। সম্ভবত সত্যিই সে মর্মাহত। আসিয়ার নিখোঁজ হয়ে যাওয়া আমার কেন যেন মৌমিতার ন্যায় সাদাসিধা ঠেকছে না। এখানে আসার পর আমি অনেকের অনেক ঘটনা সম্বন্ধে জেনেছি। জেনেছি বাস্তবতা কল্পনার চেয়ে অনেক নিষ্ঠুর হয়। তবে এটাই আশা করতে পারি, আসিয়া যেন সুষ্ঠুভাবে ফিরে আসতে পারে।
আমি সারাদিনে বেশ কয়েকবার আলিয়াকে ফোন করলাম। সে রিসিভ করল না। তবে আমার জন্য দিনটা অনেক চিন্তিত ভাবে কাটল। কারণ এর পূর্বে আমি কাউকে ফ্রেন্ড বানাইনি। কাউকে এতটা গুরুত্ব দিইনি। আলিয়াই প্রথম, যে কিনা তার মনে আমাকে নিয়ে কিছুটা সন্দেহ রেখেছে।
পরদিন কলেজে গেলে মৌমিতা আমায় কল করে জানাল, আসিয়ার মৃত্যু হয়েছে। আবির স্যার তাকে জঙ্গলে রক্তাক্ত অবস্থায় পেয়েছে। আমি কিসের ওপর কয়েক সহপাঠীকে নিয়ে ছুটে গেলাম, বুঝতেই পারিনি। আসিয়ার সাথে আমার ভালো বন্ধুত্ব না থাকলেও মানুষের সাথে থাকতে থাকতে এতদিনে আমার মনে তাদের নিয়ে ভালোবাসা জেগেছে। যে টানে মৌমিতা সাঈদেরা গিয়েছে, আমিও সে টানেই গেলাম। আসিয়ার লাশকে সাদা কাপড়ে আবৃত করা হয়েছে। আসগর সাহেব গলা ছেড়ে কাঁদছেন। আলিয়া কাঁদছে না, আচ্ছন্নের মতো আসিয়ার দিকে চেয়ে রয়েছে। খুবই হৃদয়স্পর্শি একটি মুহূর্ত! আমরা কয়েকজন আলিয়াকে সান্ত্বনা দিলাম। সে একইভাবে পাথরের ন্যায় বসে রইল। আসিয়াকে দাফন করতে খাটিয়া নিয়ে যাওয়ার সময় মৌমিতা আলিয়াকে ধাক্কা দিয়ে হুঁশ ফেরায়। মৌমিতা আসিয়ার লাশকে নিয়ে যাওয়ার কথা বলল। আলিয়া এতক্ষণে চিৎকার করে ডুকরে কেঁদে উঠল। যারা আসিয়ার লাশকে বাইরে নিয়েছে, তারা পেছনে ফিরে তাকায়। আলিয়া দৌড়ে বাইরে গেলে খাটিয়া নিচে নামানো হলো। আলিয়া আসিয়ার ওপর ঝুঁকে পড়ল। আসিয়াকে সে উঠতে মিনতি করছে। মৌমিতারা তাকে পেছন থেকে টেনে চলেছে, আসিয়ার লাশকে জড়িয়ে না ধরার জন্য। আলিয়া একসময় ব্যথা জড়িত কণ্ঠে আরেকবার সজোরে আর্তনাদ করে উঠল। সে তৎক্ষণাৎ চক্কর খেতে শুরু করল। তার চোখ বন্ধ হয়ে আসার পর আসগর সাহেব তার সামনে চলে এলেন। সে তাঁর বাহুতে গিয়ে ঝোঁপ করে পড়ল। আসগর সাহেব খাটিয়া নেবেন বলেই বললেন, কেউ একজন যাতে আলিয়াকে ভেতরে নিয়ে যায়। সবাই কবরের দিকে যাবে বিধায় আমিই তাকে কোলে নিয়ে নিলাম। কে কী মনে করল, তার পরোয়া আমি করলাম না। আমি ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলিয়ার পাশে বসে রইলাম। কারণ সে অভুক্ত। সন্ধ্যা শেষে অতিথিরা যেতে শুরু করল। একসময় ভিড় কিছুটা কমে এলে পুলিসেরা আসে। আমি একভাবে আলিয়ার হাত ধরে রইলাম। তার হৃদস্পন্দন খুবই অস্পষ্ট, যেন দূর কোথাও থেকে আসছে। একসময় আলিয়ার হুঁশ ফিরল। আমি ব্যতীত কেউ আপাতত তার দিকে তাকিয়ে নেই। সে একবার সবাইকে দেখে নেয়। আমি পাশে থাকায় সে আমাকে না দেখলেও আমার উপস্থিতি টের পেয়েছে।
আমি আসগর সাহেবকে বললাম, ‘আঙ্কেল, ওর হুঁশ ফিরেছে।’
তার বাবা পাশে এলে আমি তার হাত ছেড়ে দিলাম। তিনি কর্কশ কণ্ঠে বললেন, ‘মা, কিছু খেয়ে নে। আসিয়ার নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে পানি ব্যতীত কিছুই খাসনি।’
‘বাবা, ওকে কি আর পাওয়া যাবে না?’ কেউ তার কথাটির উত্তর দিতে পারল না। সবাই নিস্তব্ধ হয়ে রইল। সে তার শুকনো ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে বলল, ‘আসিয়ার কী হয়েছিল?’
‘কিছুই জানতে পারছি না। কী হলো, কবে হলো। কে ওর পেটে ছুরি ঢুকিয়ে তার হত্যা করেছে, কিছুই বুঝতে পারছি না। পুলিসরা তদন্ত করছে।’
সে কিছুক্ষণ নিস্তব্ধ হয়ে প্রাণশূন্য দেহের ন্যায় পড়ে থাকল। একসময় তার ক্ষিধে পাওয়ার কথা মৌমিতা বুঝে যায়। সে অনেক মিনতি করে আলিয়াকে খাবার খাইয়ে দেয়। এরপর কিছুক্ষণ বসে সবাই তার কাছ থেকে বিদায় নিতে উদ্যত হলো। আমি খেয়াল করলাম, আলিয়া প্রায় শান্ত। এটা স্বাভাবিক ব্যাপার নয়। তাকে যতটুকু জানি, কেন যেন লাগছে, সে বিপদজনক কিছু একটা অবশ্যই করবে। সে আসিয়াকে হারিয়ে কোনো একটা কাণ্ড অবশ্যই করবে। সবাই চলে যাওয়ার সময় আমি আলিয়ার কাছে ফিরে গেলাম। সে মৃদুভাবে হাসার চেষ্টা করল। যেই ভাবা! মেয়েটি পরিস্থিতি সাপেক্ষে অতিরিক্ত সহজ হচ্ছে। তার জন্য চিন্তা হতে লাগল। কেন যেন ওর ওপর নজর রাখতে গিয়ে আজ আমি ওকে সত্যকার বন্ধু ভাবতে শুরু করেছি। আঙ্কেল আমাকে ফিরে আসতে দেখে কিছু মনে করলেন না, তা তাঁর মস্তিষ্ক পড়ে ইতোমধ্যে বুঝলাম।
আলিয়াকে বললাম, ‘নিজেকে শক্ত রাখার চেষ্টা কর। তোমার বাবাকেও তোমার সামলাতে হবে।’
কথাটি বলে আমি হাতের মুঠো থেকে একটি কালো সুতার ন্যায় বস্তু বের করলাম। এটা আসলে আমার আঙুলে থাকা সুতাটিরই এক টুকরো। এটা মা আমাকে পৃথিবীতে রেখে যাওয়ার সময় তার ব্যান্ড থেকে নিয়ে দিয়েছিলেন, যাতে তিনি আমার সাথে কানেক্টেড থাকতে পারেন। আর আমার নিজেরটা… আমার রুমের একুরিয়ামেই আছে।
‘কী এটা?’ সে জিজ্ঞাসা করল।
‘তুমি বুঝবে না। একটাই অনুরোধ করব, এটা কখনও সরাবে না।’
তুমি এটা পরে থাকলে এতে তোমারও হৃদস্পন্দন যোগ হবে। সেই সাথে তোমার ওপর কোনো বিপদ তেড়ে এলে আমি তোমাকে উদ্ধার করার চেষ্টা করব। আমি তা তার এক আঙুলের আংটিতে পেঁচিয়ে দিতে গেলাম। এমন সময় আমি যেন আঙুলে পুড়ে গেছি, এমন এক ব্যথা অনুভব করলাম। পুড়ে যাওয়া! এমনটা তো আমার সাথে স্টিল ধরলেই হয়।
আলিয়া সাথে সাথে বলল, ‘কী হয়েছে?’
আমি ব্যথাকে সহ্য করতে দাঁতের ফাঁক দিয়ে বললাম, ‘স্টিলের আংটি কেন পরলে?’
‘এমনিই। কেন?’
‘আমার স্টিল পছন্দ নয়।’
সুতাটি পেঁচাতে পারব না বিধায় তা আমি ওকে দিয়ে বিদায় নিলাম।
আমি বাসায় এসে কাপড় ছেড়ে কিছুক্ষণ বসে থাকি। পরিচারিকা এসে আমায় খাবার দিয়ে গেল। বাকিরা হয়তো ডাইনিং টেবিলে। এটুকু মমতা আমার জন্য কারও কাছে নেই। কেবলই আমার মতো একটি সুদর্শন ছেলেকে তাদের কাছে রাখার ধান্দা! খাবারগুলো আমি বাইরে বসে থাকা টমির সামনে ফেলে দিলাম। সে গপাগপ করে খেতে লাগল। আমি আবারও বিছানায় এসে বসলাম। হঠাৎ একটা সুরেলা কণ্ঠ আতঙ্কজড়িত হয়ে আমায় বলল, “এটা কার হৃদস্পন্দন? এতো দ্রুত কেন?”
“আলিয়ার।”
“তুমি কি পাগল হয়ে গেছ? তোমার বাবাও শুনতে পাচ্ছে। তোমাকে দিয়ে আসাটা কোনোভাবে ও মেনে নিয়েছে। একটা মানুষের হৃদস্পন্দনও কেন যোগ করতে গেলে?”
“সরি মা।” একটা অসত্য অজুহাত দেখালাম, “আসলে আলিয়া আমাকে অনেক আগে থেকেই সন্দেহ করে। ওর সাথে কানেক্টেড থাকার জন্যই..”
“ধ্রুব, আমার ছেলে, তুমি ওই মেয়েটি থেকে দূরে থাকার চেষ্টা কর। সে ঘনিষ্ঠ হতেই যাবে। এর ওপর তোমার নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। মানুষ জাতি অনেক মোহময়, তা আমি সাবরিনার হাত ধরে তার জীবনী সম্বন্ধে জানার মাধ্যমে অনেক আগে থেকেই অবগত আছি, যদিও পৃথিবীতে আমি স্রেফ কয়েকটা ঘণ্টাই কাটিয়েছি।”
“এমনটা হবে না। ও ফ্রেন্ড হিসেবে খুব ভালো। সিক্রেটকে সে যথার্থভাবে রাখে। আমারও বন্ধুত্ব রক্ষা করা উচিত।”
“ঠিক আছে। দেখো, আবার কোনো অনর্থ যেন না হয়ে যায়। কারণ.. আমি ওই সুতার মাধ্যমে ওর মাঝে প্রবেশ করে দেখেছি। তার মস্তিষ্ক তো পড়তে পারিনি। কিন্তু সে খুব সুন্দর। এবং কিছুটা.. অমায়িকও। সাবধানে থাকিস।”
আমি হাসলাম। সবাই খারাপ জিনিসকে ভয় পায়। আমি কিনা একটা সুন্দর সুইট মেয়েকে ভয় পাব। মা-বাবাও হাসলেন। তাঁদের সাথে কথা বলা শেষে আমি আবারও শূন্যতায় ডুবে গেলাম। আগে এদিক-ওদিক অদৃশ্য হয়ে ঘুরতাম। আলিয়া আমার জীবনে আসার পর থেকে কিছুটা বঞ্চিতই হয়ে পড়েছি। এই মেয়েটি কোনদিকে আবার যেন কিছু দেখে না বসে! কিন্তু আমি জঙ্গলে তো যেতে পারি। দেখে আসি না, আসিয়াকে কোন গর্তে ফেলা হয়েছিল। দেখি, কিছু আন্দাজ করা যায় কিনা। আমি নিজের ভারকে অনেক হালকা করলাম। নিম্নচাপের জায়গায় যেভাবে বাতাসের কোনো ভার থাকে না, আমারও তেমনটা রইল না। আমার বাতাস জানালা গলিয়ে বাইরে গেল। এরপর আমি খুব দ্রুতই মাটি থেকে কয়েক ইঞ্চি উপরে থেকে হাঁটতে লাগলাম। অবশ্য আমার এই হাঁটার গতি মানুষের দ্রুতগতিতে দৌড়ার ন্যায় দ্রুত। কেননা আমি মাটিকে স্পর্শ না করে অভিকর্ষের বিপক্ষে কাজ করছি। অভিকর্ষ বল আমার ওপর কাজ করে না। কারণ আমি পরী জগতের জ্বিন।
রীতিমতোই আমি জঙ্গলে ঢুকলাম। আমার আশেপাশে অনেকগুলো প্রাণী ঘোরাফেরা করছে। এসব আমাকে দেখতে না পেয়ে আক্রমণ করছে না। আমি আদৌ জানলাম না, চিড়িয়াখানায় রাখার যোগ্য এই প্রাণীগুলো এখানে কী করছে। আমি তাদের স্পর্শ করে জানতে পারতাম, তাদের ইতিহাস। কিন্তু সেই ইচ্ছা নেই। থাকুক তারা তাদের স্থলে। আমি কেন যেন আলিয়ার হৃদস্পন্দন আগের তুলনায় একটু বেশিই শুনতে পাচ্ছি, যেন সে কাছে কোথাও আছে। আমি জঙ্গলের বামপাশে কখনও যাই না। সেদিকে প্রাণীর চলাচল একটু বেশিই। হঠাৎ খেয়াল করলাম, আলিয়ার হৃদস্পন্দন এখন আর আগের মতো স্পষ্ট করেও শুনতে পাচ্ছি না। ও সুতাটি খুলে ফেলেছে নাকি? আঙুলে পেঁচানো সুতাটি ছুঁয়ে খেয়াল করলাম, তার হৃদস্পন্দন খুব দ্রুত। কেউ উত্তেজিত হলেই এমনটা হয়। আমি সেই হৃদস্পন্দন অনুভব করে এগিয়ে যেতে লাগলাম। যতই যাচ্ছি, স্পন্দনের শব্দ ততই নিকটে মনে হচ্ছে। মেয়েটা জঙ্গলে কী করছে? একসময় ঝোপ করে একটা শব্দ হলো। আমি এবার সেই শব্দ অনুসরণ করে আরেকটু এগিয়ে গিয়ে দেখলাম, আলিয়ার শরীর উল্টোভাবে মাটিতে পড়ে আছে। পশুর গর্জন আমি স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি। তড়িঘড়ি করে আলিয়াকে আমি নিজের বাহুতে নিয়ে ফেললাম। সে বেহুঁশ হয়ে আছে। পশুগুলো আসার আগেই আমি তাকে নিয়ে চলতে শুরু করলাম। তাকে আমি জঙ্গলের বাইরে নিয়ে এসে একপাশে রাখলাম। আমার ওই সুতাটি খুঁজতে হবে। সুতাটি অমূল্য। আমি আলিয়ার অস্পষ্ট হৃদস্পন্দনের পিছু নিয়ে ওই সুতাটি জঙ্গলে খুঁজে পাই, যে জায়গায় আলিয়াকে পেয়েছিলাম তার একটু পেছনে। কিন্তু আমি ওই জায়গায় আলো দেখতে পেলাম। কী আছে জঙ্গলের ভেতর? আমি এটা নিয়ে ভাবতে পারলাম না। আলিয়াকে রেখে এসেছি আমি।
আলিয়াকে কোলে নিয়ে তার বাসার দিকে রওনা দিই। রাত এখন সাড়ে এগারোটা। জানি না, আঙ্কেল কী ভাববেন।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share


আমি তবু তাঁর বাসায় গিয়ে কলিং বেলটা বাজালাম। একটা লোক খুলল। মজিদ ভাই। সে আলিয়াকে দেখে আঙ্কেলকে ডাকল। আঙ্কেল দৌড়ে এলেন। তিনি হয়তো ঘুমাননি। এবং আলিয়ার জন্যই চিন্তিত ছিলেন। আমি তাকে নিয়ে তার রুমে শোয়ালাম। আঙ্কেল কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে সরে গেলেন। তিনি কেন যেন মনে করছেন, আলিয়া তাঁকে পছন্দ করবে না। বারোটার আগেই আলিয়ার ঘুম ভাঙল।
‘আলিয়া.. আলিয়া… পানি খাবে?’
‘হু’, সে চোখ পিটপিট করল।
আমি তাকে পানি খাইয়ে দিই।
‘আমি বেঁচে আছি?’
‘সৌভাগ্যক্রমে।’
‘এখানে কীভাবে এলাম?’
‘আমি এনেছি।’
‘কোথায় পেলে?’
‘জঙ্গলে, বেহুঁশ অবস্থায়।’
সত্য যতই বলি, মেয়েটা আমাকে ছাড়ার পাত্রী নয়।
‘জঙ্গলে তুমি কী করছিলে?’
‘তোমায় খুঁজছিলাম। তুমি চিৎকার করতে জানো না? ভয় পেলে তো মানুষ প্রথমই এই কাজ করে।’
‘আমি আগামীবার ট্রাই করব।’
হা হা হা.. অদ্ভুত একটা মেয়ে! আগামীবারের বিপদের কথা কে কল্পনা করে! ‘আমিও তোমার মতো ওই গর্তটা দেখতে গিয়েছিলাম, যেখানে আসিয়ার লাশ পাওয়া যায়।’ সে হয়তো এই কারণেই গিয়েছিল।
‘আমি গর্তটা কখনওই দেখব না, যেখানে আসিয়ার লাশকে ফেলা হয়েছিল। আমি যাস্ট ওকে হারানোর কারণে হুঁশ হারিয়ে ওখানে গিয়েছি।’
‘আহ্! তুমি কি নিজের কথা একটুও ভাবো না? আসিয়া যদি থাকত, তবে তার কি তোমার এসবকিছু ভালো লাগত?’
‘না।’
‘তোমার আংটির সুতাটি কোথায়?’
‘ইশ, জঙ্গলে পড়ে গেছে। আচ্ছা, তুমি আমাকে কীভাবে এনেছ?’
একটু ইতস্তত করলাম, ‘অন্য কেউ থাকলে যেভাবে আনত।’
‘ওহ্।’
‘তোমার বাবা কিন্তু মাইন্ড করেননি। এজন্যই কোলে…’
সে ঠোঁট কামড়াল। ‘প্লিজ, তাঁর কথা বলবে না।’
‘কী হয়েছে?’
‘তোমাকে কেন বলব?’
সে আমার প্রতি বিরক্ত দেখিয়েছে? আমার প্রতি? ‘আমি যাচ্ছি।’
‘সরি। আসলে বাবার সাথে রাগারাগি হয়েছে..’ তাকে আমি কথাটি শেষ করতে দিলাম না। উঠে বেরিয়ে পড়লাম। আমি তার কতই না কেয়ার করি! সে বন্ধু ভেবে আমায় কিছু শেয়ারও করতে পারে না?
আমি এসে একটু ঘুমালাম। ভোর সকালে আমার ওই জঙ্গলে যেতে হবে।
(চলবে…)
লেখা: ফারিয়া কাউছার

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES
- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ