চাহিদা পর্ব: ৯
সাদিকের ফোন পেয়ে শাওনের টেনশন আরো বেরে গেলো
সাথে সাথে সিমাকে ফোন দিলো শাওন।
।
হ্যালো সিমা
।
হুম বলো
।
এখন আমি কি করবো? আমার খুব টেনশন হচ্ছে। আমি কাল সব বলে দিবো।
।
তোমার বলতে হবে না। আমিই বলে দেব।
কারণ এখন আমার বলার সময় হয়েছে।
তুমি শুধু কাল আসবে।
যা করার আমি করবো।
।
পরের দিন সকালে সাদিক অফিসে না গিয়ে হসপিটাল থেকে রিপোর্ট আনতে চলে গেলো।
।
রিপোর্ট নিয়ে বাসা য় চলে আসে সাদিক।
এসে দেখে লিজা,শাওন,সিমা সবাই বসে আছে।
।
সাদিকের হাতে রিপোর্ট দেখে লিজার বুক কেপে উঠলো
কারণ সে সিওর যে রিপোর্ট এ নিশ্চয়ই সাদিকের জায়গায় শাওনের নাম আছে।
তাই লিজা কেউ কিছু বলার আগে সাদিকের হাত থেকে রিপোর্ট এর খামটা কেরে নিতে চাইলো।
কিন্তু সাদিক তা হতে দিলো না।
।
পরে সাদিক খামের ভিতর থেকে রিপোর্ট এর কাগজটা বেড় করবে তখনি শাওন বলল এসব করো না ভাইয়া তার আগে আমি কিছু বলতে চাই।
।
নাহ,, আজ যা বলার এই কাগজ বলবে।
।
প্লিজ ভাইয়া কথাটা তো শোনো।
।
সাদিক কোন কথা না শুনে রিপোর্ট টা বের করলো।
।
লিজা,সাওন এর বুক কাঁপানোর গতি বেড়ে গেলো।
লিজা লজ্জায় মাথা নিচু করলো।
শাওন কিছু বলছে না।
।
সাদিক রিপোর্ট টা বেড় করলো
আর বের করে দেখে নিরব হয়ে দাড়িয়ে আছে
কিছুক্ষন দাড়িয়ে থাকার পর আসতে আসতে বসে পরলো
সাদিকের এমন আবস্থা দেখে লিজা দোড়ে এসে সাদিক কে ধরলো, সাথে শাওন ও।
কিন্তু সিমা এলো না।
সিমা ঠাই দাড়িয়ে আছে।
.
শাওন পরে থাকা পেপারটা কাঁপা হাতে তুলে নিলো।
নিয়ে একবার,দুইবার ভালো করে দেখলো।
দেখে একটা সস্থীর নিশ্বাস ছাড়লো।
ছেড়ে কউকে কিছু না বলে সোজা গিয়ে সোফায় বসে পড়লো।
লিজা সাদিককে ধরে সোফায় বসালো।
তারপর লিজাও কাঁপা হাতে শাওনের হাত থেকে পেপারটা নিয়ে দেখতে শুরু করলো।
।
সাব টিকিই ছিলো কিন্তু বাবার জায়গায় যে নাম টা দেখলো
দেখে লিজা অবাক
কারন সেখানে পরিষ্কার লেখা সামিরার DNA শাওনের সাথে নয় বরং
সামিরার DNA ম্যাস করেছে সাদিকের DNA এর সাথে।
কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব?
যেদিন ডক্টর যে বললো সাদিক বাবা হতে পারবে না?
লিজা মাথা ঘুরতে লাগলো কিন্তু নিজেকে কন্ট্রোল করে সাদিকের পাশে গিয়ে কিছু বলতে চেয়েও পেলো না,, আবার ফিরে এলো।
তারপর শাওনকে প্রশ্ন করলো
।
বল শাওন সামিরা কার মেয়ে,, এখন বল।
।
ভাবি আমি আসলে অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি। আমাকে মাফ করে দাও। বিশ্বাস করো সিমা আমাকে যেভাবে বলেছে আমি সেভাবেই করেছি।
এসব সিমার প্লান ছিলো। শুরু থেকে।
।
তারপর লিজা সিমাকে বললো বল সিমা এসব তুই কেন করেছিস।
।
সিমা চুপ…….
।
চুপ করে আছিস কেন??
আমি মানছি দোষ আমারো ছিলো।
তাহলে তুই সাদিকের মতো নিষ্পাপ কাউকে কষ্ট দিলি কেন??
।
সাদিক নিষ্পাপ?? তুমি কতোটা চেনো ওকে??
কতটা জনো তুমি সাদিককে যে নিষ্পাপ বলছো???
।
সিমার কথা শুনে সাদিক অবাক হয়ে মাথা তুলে সিমার দিকে তাকালো সাথে শাওন লিজাও।
।
চুপ, একদম চুপ নিজের দোষ ঢাকার জন্য এখন সাদিককে দোষ দিচ্ছিস??
।
কেন দোষ ঢাকবো আমি,,, আমি দোষ করেছি বা কি যে ঢাকবো??
।
আচ্ছা, তোর কোন দোষ নেই। তাহলে এটা বল তুই কার কাছে শুনেছিস যে সামিরা শাওনের মেয়ে?
আর সাদিক বাবা হতে পারবে না?
।
কারো কাছে না।
।
তাহলে শাওনকে বললি কেন?
।
কারণ আমি চেয়েছি সাদিককে বোঝাতে যে কারো সন্তান কেড়ে নিলে কেমন লাগে।
।
মানে??
।
মানে ওকে প্রশ্ন করো শেফালি কে??
।
সাদিক এবার পুরাই থ হয়প গেলো।
মনে মনে ভাবছে সিমা শেফালিকে কিভাবে চেনে,, জানে?
।
সেফালি কে সাদিক?
।
সাদিক চুপ
।
ও কি বলবে তোমার আমি বলছি।
তুমি কি মনে করো তুমি সাদিকের প্রথম পক্ষ?? না তুমি ২য় পক্ষ।
ও বিবাহীত ছিলো। আর সবচেয়ে বড় কথা ও আগে ঢাকায় থাকতো না।
।
মানে??
।
ওর বাসা খুলনায় আর সেখানেই ভালোবেসে বিয়ে করে আমার বেস্টফ্রেড শেফালিকে।
।
কিন্তু তুমি কে? তোমায় তো কোন দিন শেফালির আশে পাশে দেখি নি।( সাদিক)
।
দেখবা কিভাবে। আমি তখন দেশে থাকলে তো দেখতো।
আমি ইন্টার পাশ করে কানাডা চলে যাই পড়াশোনা করতে। একদিন মায়ের সাথে কথা বলতে বলতে শেফালির কথা উঠে আসে। মায়ের কাছে শুনি শেফালির বিয়ে হয়েছে। সেটাও অনেক আগে।।
আমি যখন ওর সাথে কথা বলার জন্য নাম্বার চাই। তখন মা হু হু কেঁদে দেয়। আমিও বুঝতে পারি খারাপ কিছুই হয়েছে ওর সাথে।
তাই সাথে সাথে দেশে চলে আসি।
।
এসে মায়ের কাছে এই কুত্তার বাচ্চার কথা শুনি
যে ও
ভালোবেসে বিয়ে করেছিলো শেফালিকে।
যখন বিয়ের ২ বছর শেফালি বুঝতে পারে সে প্রেগনেন্ট।
আর সেটা একে বলার পর ই
এই কুত্তার বাচ্চা এর আসল রুপ দেখাতে শুরু করে।
মেয়েটা সকাল দুপুর রাত কোন সময় বাকি রাখে নি মারা।
এই কুত্তার বাচ্চা বলতো শেফালির বাচ্চা টা নাকি জারজ সন্তান ছিলো।
এ নাকি ওর বাচ্চার বাবা চিলো না। তাই বাচ্চাটা নষ্ট করতে বলতো ওকে। কারণ এ বলছিলো এ নাকি শেফালিকে বিয়ে করেছে শুধু শারীরিক চাহিদা মেটানোর জন্য। শেফালিকে নাকি কখনো স্ত্রীর মর্যাদা দিতে পারবে না।
কিন্তু শেফালি ওর বাচ্চা নষ্ট করতে চাইছিলো না। শেফালি এর থেকে মুক্তি চাইছিলো, চাইছিলো ওর বাচ্চাকে পৃথীবির আলো দেখাতে। ও শুধু মুক্তি চেয়েছিলো এর কাছে। স্বামীর অধিকার ও না। শুধু মুক্তি। কিন্তু এই কুত্তা, এই কুত্তার বাচ্চা ওকে মুক্তিও দেয় নি।
সব সময় রুমে বন্ধ করে রাখতো আর মারতো।
এভাবে কিছুদিন যাবার পর নাকি শেফালি মারা যায়।
আর এই জারজের বাচ্চা ঢাকা চলে আসে।
।
মায়ের মুখে এসব শুনে সারাদিন কেঁদেছি।
কিন্তু পরে ভাবলাম আমি কেনো কাঁদছি??
কাদবে তো এই কুত্তার বাচ্চা।
।
তাই খুলনায় থেকে সব প্লান করি।
তারপর ঢাকা চলে আসি
এসে শুনি এ আবার বিয়ে করেছে।
তাই অনেক কষ্টে তোমাদের বাসা খুজে তোমাদের বাসায় চাকরানির কাজটা নেই।। আর তার পর শুরু করি আমার কাজ। তোমাকে শাওনের সাথে মিথ্যে নাটক করে লাগিয়ে দেই কারণ আমার প্লান ছিলো ফাকা বাসায় এই জারজ টাকে খুন করবো কিন্তু পরে ভাবি একে খুন করে কি হবে। খুন করলে যদি এর মতো মানুষ রুপি জানোয়ার গুলা ভালো হতো তাহলে একে রাস্তার উপর কুপিয়ে খুন করতাম। কিন্তু সেটা ত আর হবে না। তাই একে ভাবে শাস্থি দিতে চেয়েছিলাম। আর শাওনের আমার কোন সম্পর্ক ছিলো না। সব প্লানের অংশ।
।
কিন্তু আমি কেন প্রেগনেন্ট হলাম না? আর ঐ ডাক্রটার?
রাইটার:আদিল খান
চলবে….?