♥Love At 1st Sight $2
Part – 11
writer-Jubaida Sobti♥
রাহুল স্নেহার দিকে তাকাতে তাকাতে হারিয়ে গেছে সে ভাবনার দেশে…?
হঠাৎ, একটি লোক এসে ঝাঁকুনি দিলো…
লোকটি : আরে ভাই কে আপনি…এভাবে ভিজতেসে্ন কেনো?…
রাহুল তাড়াতাড়ি আবারো উঠোনের দিক তাকালো…দেখে কেউ নেই… রাহুল একটু হেসে মাথা চুলকাতে লাগলো…?
লোকটি : গ্রামে নতুন মনে হচ্ছে?..
রাহুল : জি আমি এই গ্রামে নতুন এসেছি… আপনি কি ঐ বাড়ীটা চেনেন?..
লোকটি : আমি এইগ্রামের চৌকিদার..আর আমি চিনবো না…?
তবে কার বাড়ী যাবে তুমি?…
রাহুল : [ভাবতে লাগলো কার বাড়ী যাবে বলবে…এইখানে তো কাউকেই সে চেনে না..হঠাৎ মাথায় বুদ্ধি এলো গাড়ীতে একটি ক্যামেরা আছে] এক মিনিট ওকে…☺
রাহুল ক্যামেরাটি বের করলো..
লোকটি : এইটা আবার কি?..
রাহুল : জি! এটা দিয়ে ফোটো তুলে…আই মিন…মেমোরেবল মোমেন্ট..গুলো এইখানে..বন্ধি করে রাখে…
লোকটি : [কিছুই বুঝতে পারলো না]??
রাহুল : ওকে..মানে হচ্ছে যে আমি একজন ম্যাগাজিন ফোটোগ্রাপার…মানে সুন্দর সুন্দর গ্রামে যায়..তারপর ঐখানের রহস্যময় জিনিষ গুলো ছবি তুলে…তা আমার ম্যাগাজিনে ছাপায়..
আসলে আপনাদের গ্রামটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে…তাই ভাবলাম এইগ্রামের ও কিছু ফোটো তুলে নিয়ে যায়…
লোকটি : ওহ আচ্ছা তাই ভালো… তবে থাকবে কই?…
রাহুল : ?থাকার তো কোনো জায়গা নেই…but u don’t worry আমি আমার গাড়ীতেই রাত কাটিয়ে নিবো…
লোকটি : গাড়ীতে কাটাবে কেনো…তুমিতো আমাদের গ্রামের..অতিথি চলো তোমার থাকার ব্যবস্থা আমি করে দিচ্ছি…
রাহুল : [মনে মনে] Yes? এটাইতো চেয়েছিলাম…
লোকটি : চলো আমার সাথে..
রাহুল : ওয়েট জাষ্ট One second..
[রাহুল গাড়ী থেকে তার ব্যাগটি ও নিয়ে নিলো.. ]
রাহুল লোকটির পেছন পেছন যায়..লোকটি বাড়ীটির ভেতরে রাহুলকে ঢুকালো…অনেক বড় উঠোন…রাহুল আর লোকটি দাঁড়িয়ে আছে….বৃষ্টি সেরে এবার মেঘের ফাকে..সূর্য উকি দিচ্ছে…
রাহুল সানগ্লাসটি পড়ে নিলো?
লোকটি : [ চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে ] নিলাজ বাবু…ও নিলাজ বাবু…
হরিকাকা : [বেড়িয়ে এসে] কি গো…চন্দন মিয়া…চেঁচাচ্ছো কেনো?…
চন্দন : আরে নিলাজ বাবু কই..অতিথি নিয়ে এসেছি বলো..
হরিকাকা : দাঁড়াও ডাকছি…
হরিকাকা নিলাজ বাবুকে সহ নিয়ে আসে…[ নিলাজ মজুমদার স্নেহার বাবার নাম…গ্রামের একজন অতি সম্মানি ব্যাক্তি…আগে গ্রামের চেয়ারম্যান ছিলো..তবে নিজ ইচ্ছায়..পদত্যাগ করে নিয়েছে…তবুও গ্রামের সবাই..তার মতামত ছাড়া কিছু করে না…]
স্নেহার বাবা : আরে চন্দন কি হয়েছে?..
চন্দন মিয়া : বাবু অতিথি এসেছে গ্রামে…শহরে থাকে ছোড়া…..কি যেন নিয়ে আসছে…এই যে এটা…এটা দিয়ে ফোটো তুলে…গ্রামের দৃশ্য বইয়ে ছাপাইবে…
রাহুল : হ্যালো আংকেল…✋? ওহ সরি! [ রাহুল স্নেহার বাবাকে পায়ে ধরে সালাম করলো ]
স্নেহার বাবা : থাক থাক…! তো এই গ্রামে আসার কারণ…?
রাহুল : জি! আমি ম্যাগাজিন ফোটোগ্রাপার…বিভিন্ন জায়গায় ষ্টেই করে করে…কিছু রহস্যময় জিনিষ ক্যাচ করেনি এই ক্যামরার মাধ্যমে…
আপনাদের গ্রামটা অনেক সুন্দর… ভাবলাম এই গ্রামে ও অনেক কিছু থাকতে পারে যা আমার ম্যাগাজিনের কাজে লেগে যাবে…তাই আরকি দেরী না করে চলে এসেছি…?
ওনাকে বলেছিলাম আমি গাড়ীতে থেকে যাবো চিন্তা করার কিছু নেই..কিন্তু ওনি জোড় করে নিয়ে এসেছে..
স্নেহার বাবা : ? আরে কটা দিনই তো…
এসেছো আমাদের গ্রামে…গাড়ীতে থাকবে কেনো?… এই হরি.. যা তুই ওনার থাকার জন্য মেহেমান খানায় ব্যবস্থা কর… আর গিয়ে বল আমাদের জন্য চা পাঠাতে…
এসো এদিকে বসো…[ স্নেহার বাবা রাহুল..এবং চন্দন মিয়া গিয়ে উঠোনের একটা বৈঠকখানায় গিয়ে বসলো ]
স্নেহার বাবা! : আমাদের গ্রাম কিন্তু অনেক সুন্দর..অনেক সুন্দর সুন্দর দৃশ্য রয়েছে এখানে…
রাহুল : জি! আমি শুনেছি তাই এখানে এসেছি… [ হঠাৎ রাহুলের বারান্দা দিয়ে চোখ পড়লো, কয়েকটা মেয়ে চুপিচুপি বারান্দা দিয়ে দেখছে রাহুল দেখাতে তারা লুকে যায়.. আবার না দেখলে তখন তাকাতে থাকে..]
[স্নেহার বাবা রাহুলের সাথে গল্পে লেগে গেলো… রাহুল ও সাতপাঁচ বানিয়ে তাকে বুঝিয়ে দিচ্ছে…]
হঠাৎ, নুপুরের আওয়াজ বাজছে রাহুলের কানে…পা যতো কদম দিচ্ছে…যেনো লাগছে কোথাও সফটেড মিউজিক চলছে..?
উত্তেজনার চোখে…পাশফিরে বারান্দার দিকে তাকাতেই… রাহুলের বুক ধুপধুপ করে উঠে…
?হালকা ভেজা চুল, চোখে..লেপ্টানো কাজল, পায়ে ঝুমুরে বাধা নুপুর…সাদারঙের জামা পড়া…ঠোটের কোণে…হাসি মেখে হাতে চায়ের বাটি নিয়ে এগিয়ে আসছে স্নেহা?.. কি অপরুপ লাগছে আজ স্নেহাকে…[ রাহুল চেয়ে আছে স্নেহার হেটে আসা ]
স্নেহা : বাবা! এই নাও তোমাদের চা!? [ চায়ের বাটি টেবিলে রাখতেই ছিলো.. কিন্তু পাশফিরতেই স্নেহা Shocked?হয়ে যায়]
[রাহুল তার মায়াবী চোখে স্নেহার দিকে চেয়ে আছে…?…স্নেহার হাত কাপছে গিরগির করে…মনে হচ্ছে চায়ের বাটি গুলো এক্ষুনি হাত থেকে পড়ে যাবে]
রাহুল তাড়াতাড়ি স্নেহার হাত থেকে চায়ের বাটি গুলো এগিয়ে নিলো…
স্নেহার বাবা : স্নেহা! কতোবার বলেছি তোকে বৃষ্টিতে ভিজিস না মা..ভিজিস না..এখন দেখ ঠান্ডায় শরীরটা কাঁপছে..
স্নেহা রাহুলের দিক তাকিয়েই রইলো..?
স্নেহার বাবা : ওহ! ওর নাম..রাহুল শহর থেকে এসেছে.. কদিন থাকবে..মেহেমান খানায়…এই গ্রামের…কিছু ছবি তুলে আবার চলে যাবে..
স্নেহা : what!?…
রাহুল : জি!?আমি ম্যাগাজিন ফোটোগ্রাপার…এই গ্রামের..সবচেয়ে সুন্দর জিনিষগুলো আমি আমার ক্যামেরায় তুলে নিতে এসেছি…
স্নেহার বাবা : ও হলো আমার মেয়ে স্নেহা!?.. ওও..কিছুদিন আগে এসেছে শহর থেকে…পড়তে গিয়েছিলো..?
রাহুল : হ্যালো!✋? [ চোখ টিপ মাড়লো স্নেহাকে ]
স্নেহা : ?… [মনে মনে] কি মিথ্যুক.. বাবাকে সাতপাঁচ বানিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে আর বাবাও বিশাস করে নিলো..ইহ!? কেনো এসেছে এখানে..কতো কষ্ট করে মনকে বুঝ দিয়ে এইখানে চলে আসলাম..আর ও?…[ স্নেহা বির বির করতে করতে চলে গেলো.. কিন্তু মনে মনে অবাক হয়ে আছে..রাহুল স্নেহার বাড়ী এখানে কেমনি জানলো…কেনই বা এলো..? আবার বাবাকে ও কেনো মিথ্যে বললো…এসব বিড়বিড় করে বলতে বলতে স্নেহা চলে গেলো ]
বারন্দায় উঠতেই দেখে…স্নেহার কিছু কাজিন আর কাজের মেয়েগুলো…লুকিয়ে লুকিয়ে কি যেন দেখছে…
স্নেহা : ?এই যে! আপনারা…কি এমন দেখছেন..একজনের গায়ের উপর আরেকজন উঠে…
গীতালি : [স্নেহার বাড়ীতে কাজ করে] আরে দিদি…ঐ দেখো ছেলেটা কি না দেখতে লাগছে…?
অরণি : [স্নেহার চাচাতো ভোন] আরে আপু দেখনা..ঐছেলেটা মনে হচ্ছে শহর থেকে এসেছে…? আমি তো পাক্কা ওর সাথে লাইন মারবো..
মহিমা : ?এই আমি কিন্তু আগে দেখেছিলাম…সানগ্লাসটা খুলে রেখেছে কেনো যখন সানগ্লাস লাগিয়ে উঠোনে ঢুকছিলো না?? উফ!
স্নেহা : ??(মনে মনে) কি বলেরে এগুলো…? (রাহুলের দিক তাকিয়ে মনেমনে)..সানগ্লাস লাগিয়ে ঢুকতে হয় নাকি এমনি আসা যায় না..যত্তোসব..]?আই শোন যা ভেতরে যা…বেশি পেকে গেছিস..! মা কে গিয়ে বললে না..তারপর লাইন মারা বেড়িয়ে যাবে..
[স্নেহার বকুনিতে সবাই..স্নেহাকে মুখ ভেঙিয়ে চলে গেলো ?]
[স্নেহা রাহুলের দিক একবার তাকিয়ে ভেতরে চলে যায়…রুমে..জানালা খুলে লুকে লুকে তাকাতে থাকে..কি কি করছে রাহুল…]
অনেক্ষন পর দেখে বাবা উঠে ভেতরে চলে যায়…আর রাহুলকে বাড়ীর Opposite এ মেহেমানখানার একটি রুমে থাকতে দেওয়া হলো…শহর থেকে আসা প্রায় সব অতিথিদের ঐখানেই থাকতে দেওয়া হয়..
রাহুল রুমে ঢুকে দেখে..একটা চৌকি আর একটা টেবিল ছাড়া কিছুই নেই..
চৌকিটা ব্যাগ দিয়ে ঝেড়ে…একটু বসলো রুমের চারদিক ঘুরঘুর করে তাকাচ্ছে…
রাহুল : [মনে মনে] কি আর করবি রাহুল! প্রেমে যখন পড়েছিস… এইদিনটাও দেখতে হবে তোর…
হঠাৎ.. হুট করে স্নেহা রুমে ঢুকলো..ওড়না দিয়ে মুখ ঢেকে..দরজার এক কোণে গিয়ে দাঁড়ালো…যাতে বাইরের কেউ তাকে দেখতে না পায়…
রাহুল : ?আরে তুমি দরজার পেছনে লুকিয়ে আছো কেনো…
স্নেহা : শিস!☝…কেউ দেখলে সমস্যা হবে! আর তুমি এইখানে কেনো এসেছো বলোতো?..?
রাহুল : [দরজার কাছে এসে]???
স্নেহা : কি হলো কথা কি কানে যায় না?..এইখানে কেনো এসেছো?..
রাহুল : আগে তুমি বলো আমাকে না বলে চলে এলে কেনো?…?
স্নেহা : হুহ?তোমাকে বলে কেনো আসতে হবে…আমার ইচ্ছে..
রাহুল : ওহ রিয়েলি!? আমাকে কেনো বলে আসতে হবে তাই না? [ স্নেহার কাছে এসে]
স্নেহা : আরে কি করছোটা কি কেউ চলে আসবে তো?..দূরে গিয়ে দাঁড়াও ?
রাহুল : [পিছিয়ে গিয়ে] স্নেহা তুমি আমার জবাব এখনো দাওনি কিন্তু..
স্নেহা : দেখো! আমি যা করেছি সবই ভূল ছিলো..পরে আমি রিয়েলাইজ করে দেখলাম… আমার গ্রামে চলে আসাটাই বেটার হবে…
রাহুল : [স্নেহার কাছে এসে] আচ্ছা ভুল ছিলো তাই না?..? আমার রাতের ঘুম হারাম করে দিয়ে…আমার সবকিছু এলোমেলো..করে দিয়ে..এখন বলছো সব ভূল?…
স্নেহা : ?? [অবাক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে রাহুলের দিকে]
রাহুল : লুক স্নেহা! যেদিন থেকে তোমাকে দেখছিনা..আমি একটা রাত ও ঘুমাতে পারিনি…?আমার সবকিছুই এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিলো…
তুমি যেদিন ভার্সেটি আসোনি! সেদিন মার্জান থেকে জানতে পারলাম…তুমি গ্রামে চলে এসেছো.. তখন ইচ্ছে হয়েছিলো তোমাকে?…
স্নেহা : Oh my god…আমাকে দেখার জন্য এত্তো মেহেনত?
রাহুল : Shut-up ok?..this is not funny?
দেখো স্নেহা অনেক কষ্টে তোমার বাড়ীর ঠিকানা…বের করলাম..
আমি এখানে থাকতে আসিনি আমি তোমাকে নিতে এসেছি…
স্নেহা : [মনেমনে আচ্ছা তো ঐ মিস্ ইউনিভার্সকে কি করলো? ] তোমার নেহার কি খবর?
রাহুল : I don’t love neha…? এক্সুলি আমি সামিরের সাথে চ্যালেঞ্জ জিতার জন্য নেহার সাথে রিলেশন করি… নেহার জন্য আমার কোনো ফিলিংস নেই…জাষ্ট সবকিছু শো-অফ ছিলো…
স্নেহা : [মনে মনে…তাহলে সামির যেটা বলেছিলো সেটা সত্যি ছিলো..? ওয়াও স্নেহা বাজিতো পাল্টে গেলো..]
রাহুল : স্নেহা ট্রাষ্ট মি! আমি তোমাকে..?
স্নেহা : তুমি আমাকে?…
রাহুল : ??[মনে মনে] Come on rahul! আটকালে চলবে না!…
স্নেহা : [ মনেমনে বুঝেছি?] হুহ আমিও এতো সহজে হাল ছাড়ছি না…?আমাকে যেভাবে নাচিয়েছো..মিষ্টার হ্যান্ডস্যাম তার তিন ডাবল নাচাবো তোমাকে আমি…
রাহুল : স্নেহা! ?আই….
স্নেহা : হয়েছে হয়েছে…?আমাকে এতো ড্রামা দেখিয়ে লাব নেই…যেখান থেকে এসেছো সেখানে ফিরে যাও..
[ স্নেহা চলে যাচ্ছিলো..রাহুল স্নেহার হাত ধরে..]
স্নেহা : আরেহ! তুমিকি এটা শহর পেয়েছো নাকি?..?
রাহুল : আচ্ছা! আমার চোখের দিকে তাকাও Then ঐ কথাটা বলো..?
স্নেহা : [চোখ..কচলে ] আরে আমার চোখে কি যেন ঢুকেছে আমি কিছুই দেখছি না… [ ?স্নেহা রাহুলকে ধাক্ষা দিয়ে দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো]
[ Rahul gave a tedi smile ?]
রাহুল : ড্রামাকুইন! Again drama ? ড্রামা ছাড়া এতোসহজে মানবে না আমি জানতাম..
যতোই ড্রামা করো না কেনো এবার আর কাজ হবে না…??মিস্ ড্রামাকুইন!
স্নেহা রুমে গিয়ে খাটে বসে পড়ে…এত্তো আনন্দ লাগছে সে কাউকে বুঝিয়ে বলতে পারবে না…?রাহুল তার জন্য এসেছে… তারমানে রাহুল তাকে…??
স্নেহা কিছুক্ষণ পর পর জানালা দিয়ে তাকায় আর দেখে রাহুল কি করছে..
স্নেহা : [মনে মনে] আহ! বেচারা হ্যান্ডস্যাম?….তুলার পালং ছেড়ে বাশের পালং পর্যন্ত এসে পড়লো…
[প্রথমদিনে রাহুলের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো মনে পড়ছে স্নেহার…ভাবতে ভাবতে স্নেহা ব্লাশিং…☺?]
হঠাৎ…জানালা দিয়ে আবার তাকাতেই দেখে..রাহুল রুম থেকে বেরিয়েছে..
[ Rahul wore a black t-shirt with blue jeans?]
স্নেহা হা করে তাকিয়ে আছে এতো ড্যাশিং ভাবে সেজেগুজে কই যাচ্ছে…?
হঠাৎ দেখলো…অরণি কিছু খাবার নিয়ে রাহুলের দিক এগিয়ে গিয়ে কি কি জানি বলছে…
স্নেহা রুম থেকে বেরিয়ে তাড়াতাড়ি এগিয়ে গেলো..দেখে রাহুল খাবার খেতে চাইছে না কিন্তু অরণি তাও জোড় করে খাওয়াতে চাচ্ছে…
স্নেহা : [চেঁচিয়ে ] আই তুই এইখানে কি করছিস!?
অরণি : ওনার জন্য খাবার এনেছি….বড় কাকী পাঠিয়েছে..?
স্নেহা : আহা! ?খাবার এনেছিস তো রুমে রেখে দিয়ে চলে যেতে পারছিস না…
এইদিকে এসে মুখটাকে..লাল লাড্ডুর মতো কেনো বানালি?..
[রাহুল তাদের কান্ড হা করে দেখে আছে?]
অরণি :??
স্নেহা : আবার কি তাকিয়ে আছিস! ?এইদিকে দে খাবার আমাকে দে তুই যা! [স্নেহা অরণির কাছ থেকে খাবারের বাটিটি টেনে নিয়ে নেই]
অরণি : [রাহুলের দিক তাকিয়ে] আচ্ছা আমি আসি হুম!?
রাহুল : ওকে ডিয়ার বাই?✋
স্নেহা : ?? হয়েছে অনেক যাহ… [অরণি স্নেহাকে মুখ ভেঙিয়ে চলে গেলো ]
রাহুল : এই তুমি ওর সাথে এইভাবে বিহেভ করছো কেনো?..
স্নেহা : আচ্ছা তোমার অনেক মায়া হচ্ছে বুঝি… ওর জন্য?
রাহুল : না নাহ! আসলে বাচ্চা একটা মেয়ে…এভাবে কথা বললে..
স্নেহা : বাচ্চা মেয়ে তাই না?তুমি চুপ করো…? এই নাও খাবার…
রাহুল : সরি! ?আমি আসলে এগুলো খাবো না…সামনে কোথাও রেষ্টুরেন্টে গিয়ে খেয়ে নিবো আমি…
[স্নেহা খিলখিলিয়ে হেসে দিলো ??]
স্নেহা : রেষ্টুরেন্টে যাবা??যাও যাও খেয়ে এসো… [হঠাৎ স্নেহা তার ভাই রাশুকে দেখতে পেলো… ] এই রাশু এইদিকে আই…
[রাশু এগিয়ে আসলো]
স্নেহা : শোন অনি গ্রামে নতুন এসেছে…তাই রেষ্টুরেন্টে গিয়ে খেতে চাচ্ছে এইখানের খাবার ওনার পছন্দ না..তুই একটু প্লিজ ওনাকে রেষ্টুরেন্টে নিয়ে যা না?
রাশু : ওমা তাই নাকি???চলেন ভাই চলেন
[রাশু রাহুলকে টেনে নিয়ে চলে গেলো রাহুল ও কিছু বুঝতে পারছে না গেলো রাশুর পিছে পিছে]
অনেক পথ হেটে রাশু রাহুলকে নিয়ে একটি টং এর দোকানে এলো…
রাশু : এই নাও ভাই তোমার রেষ্টুরেন্ট…?
রাহুল : What!? এতো পথ পেরিয়ে তুমি আমাকে এটাই আনলে…আমিতো ভেবেছি..?
রাশু : কি যেন নাম আপনার
রাহুল : রাহুল!
রাশু : ওহ! মিষ্টার রাহুল আপনি কি জানেন না গ্রামে কোনো রেষ্টুরেন্ট থাকে না…?
রাহুল : হ্যা জানি! ভুল হয়ে গেছে? কিন্তু তোমরা আগে বললেই তো পারতে…
রাশু : হি-হি-হি আগে বললে মজা নিতাম কেমনি… আচ্ছা বাদ দেন…এইখানের খাবার ও খেয়ে দেখেন… রেষ্টুরেন্টকে ফেইল করবে…ভাই?
রাহুল : ওকে! এমনিতেও খালি পেটে আবার যাওয়ার মতো সিচুয়েশন আমার নেই…?
রাহুল আর রাশু একটা টেবিলে বসলো..খাবার অর্ডার করলো…খেতে রাহুলের তেমন খারাপ লাগছে না…বরং ভালোই লাগছিলো…পুরো রাতটাই খালি পেটে ছিলো…
রাহুল : আচ্ছা তুমি স্নেহার কি হও!
রাশু : [খেতে খেতে] ভাই!
রাহুল : [মনে মনে] ??আচ্ছা তাইওতো বলি…যেমন ভোন তেমন ভাই..দুনোটা ড্রামেবাজ…
রাহুল আর রাশু গ্রাম ঘুরে আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে গেলো…
বাড়ী এসে…রাহুল রুমে ঢুকে দেখে রুমটা অনেক পরিষ্কার হয়ে গেছে…?
পেছন থেকে,
স্নেহা : এই যে! [ রাহুল ফিরে তাকালে দেখে স্নেহা দরজার সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে..]
স্নেহা : ? খেয়েছেন রেষ্টুরেন্টে?..?
রাহুল : হুম!?দারুন ছিলো..
স্নেহা : হুম ?এইখানে এরকম দারুন রেষ্টুরেন্টই পাওয়া যায়…
[রাহুল স্নেহার একটু কাছে এসে হুট করে রুমের বাতিটা অফ করে স্নেহাকে টান দিয়ে রুমের ভেতরে ঢুকিয়ে নেই]
স্নেহা : আরেহ?..
রাহুল : অনেক মজা নিচ্ছো না আমাকে নিয়ে?..? ওকে নাও…আমিও কিন্তু তোমার পেছন ছাড়ছি না…
স্নেহা : দেখো আমি বার বার বলছি এটা তোমার শহর না গ্রাম..? কেউ দেখলে বাজে কথাবার্তা ছড়াবে…
রাহুল : So what! ছড়াক…? But I don’t care…
[স্নেহা রাহুল থেকে ছুটার জন্য টানাটানি করছে…রাহুল ইচ্ছে করে আরো শক্ত করে স্নেহাকে ধরে রাখে…?]
হঠাৎ! কারো শব্দ পেলে,
স্নেহা : দেখো প্লিজ! কেউ আসছে হয়তো ছাড়ো… ?
রাহুল একটু হেসে স্নেহাকে ছেড়ে দিলো…অমনিই স্নেহা এক দৌড়ে রুম থেকে বেড়িয়ে পড়ে…
[রাহুল রুমে বসে বসে ব্লাশিং হতে লাগলো?স্নেহার কান্ড দেখে]
রাহুল : [মনে মনে] আগে স্নেহাকে আমার মনের কথা জানিয়ে দিতে হবে যেই করেই হোক? এই ড্রামাকুইনটাও না বুঝেও সব না বোঝার ভান করে আছে…
স্নেহা রুম থেকে বেড়িয়ে… বাড়ীর পেছনের উঠোনে চলে গেলো… আশেপাশে ঘুরঘুর করে দেখছে কেউ দেখেছে কিনা… স্নেহা জোড়ে জোড়ে শাস ফেলতে লাগলো…
স্নেহা [মনে মনে] বাচলাম..বাব্বা..কেউ দেখেনি.. এই মিষ্টার হ্যান্ডস্যামটাও না..কিছু বুঝে না…হুট করে?…
[আবার ভাবতে ভাবতে হেসেদিলো? কান্ডগুলো মনে করে করে হাসছে আর ব্লাশিং হচ্ছে..স্নেহা?]
চলবে….