হ্যাকারের_লুকোচুরি
.
সিজন_৩
.
পর্ব -৬
রাফি – রাডারগুলোর জন্য যেহেতু সাবমেরিনটি সমুদ্রসীমা পার করে ভেতরে আসতে পারছে না সেহেতু সন্ত্রাসীরা কোন না কোন ভাবে ডিভাইসটি সাবমেরিন পর্যন্ত পৌছে দেয়ার ব্যবস্থা করবে। পিকাচু, সাবমেরিনের আশেপাশে ৪ কিলোমিটার রেডিয়াসের ভেতর যদি কোন জলযান ঢোকে তাহলে ইনফর্ম করবে। আর হ্যাঁ মার্সেনারীদের একখানে করার ব্যবস্থা করো, we are going to get the submarine.
পিকাচু – Gathering info…… contacting soldiers and associates….. collecting gear…… Mission is a go….
রাফি ল্যাপটপ ছেড়ে ওঠে। অনেকক্ষণ ধরে তোহার কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে কিছুটা কৌতুহল নিয়ে ঘরের ভেতর এখানে সেখানে খুঁজতে থাকে। সদর দরজার কাছে এসে দেখে দরজা চাপিয়ে দেয়া, কোন লক নেই। রাফির চিন্তা বাড়ে। তোহা তো কিছু না বলে কোথাও যাওয়ার মেয়ে নয়। তাহলে কোথায় গেলো মেয়েটা। মাফিয়া গার্লের সাঙ্গপাঙ্গ আবার এই বাসা পর্যন্ত চলে আসলো না তো! !! রাফি ঘরের ভেতর ফিরে এসে আর একবার খুঁজতে খুঁজতে,
রাফি – (উচ্চস্বরে) তোহা? তোহা! !!!
বেশ কয়েকবার ডাকার পরও তোহার কোন সাড়া শব্দ পায় না রাফি। এত কষ্ট করে এতদিন ধরে লুকিয়ে রেখে এখন যদি তোহাকে অঘোরে হারাতে হয় তাহলে!!!!
রাফি – (উচ্চস্বরে) তোহা? তোহা!
তোহা – এইত্তো! নীচে আমি।
খুবই ক্ষীন আওয়াজে রাফি তোহার জবাব শুনতে পায়। আওয়াজটা সদর দরজার বাইরে থেকে আসছে। রাফি একঝটকায় দরজা খুলে শিড়ি বেয়ে নীচে নামতে থাকে। চার তলা এবং তিন তলার মাঝামাঝি নামতেই দেখতে পায় তোহাকে। তিন তলার রকিবের মা বাবা থাকেন। তোহা রকিবদের বাসার দরজার সামনে দাড়িয়ে আন্টির সাথে কথা বলছিলো। ডাকাডাকি শুনে তোহা তড়িঘড়ি করে আন্টির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে উপরে চলে আসতে থাকে। উপরে ওঠার সময় তোটা নীচের দিকে তাঁকিয়ে থাকায় রাফিকে দেখতে পায় না। রাফি সেটা বুঝতে পেরে হালকা কাশি দিয়ে তোহার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তোহা চোখ তুলে হয়তো রাফিকে প্রত্যাশা করে নি তাই একপলক উপরে তাঁকিয়ে আবারও চোখ ঘুরিয়ে নিয়ে থমকে যায়। আবারো মুচকি হেসে আঁড়চোখে রাফির আপাদমস্তক দেখতে থাকে তোহা। রাফির খেয়াল হলো তার পোশাকের দিকে, তাড়াহুড়োতে ট্রাউজার্স আর ট্যাংক টপস (স্যান্ডু গেন্জি) পড়েই নীচে নেমে এসেছিলো সে। তোহার চাহনি আর মুচকী হাসিতে যথেষ্ট বিব্রত বোধ করে রাফি। তোহা নজর না সরিয়ে রাফির সামনে এসে দাঁড়ায়,
তোহা – (মোহমাখা স্বরে) এত তাড়া? হুউ? বউ ঘরে নেই বলে ভেবেছো পালিয়ে গেলো কিনা? (রাফির দিকে একধাপ এগিয়ে গেলো তোহা, রাফি পিছিয়ে গেলে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়) পালাই নি এখনো, কিন্তু আমার থেকে যদি ওই ল্যাপটপকে বেশী ভালোবাসতে থাকো তাহলে সত্যিই একদিন পালিয়ে যাবো।
রাফি শিড়িঘরে নিজেকে কোনঠাসা আবিস্কার করলো, তোহা যে হঠাৎ করে এভাবে আটকে দেবে এটা ধারনার বাইরে ছিল রাফির। তোহার দুষ্টুমি বাড়বে এমন সময় কারো পায়ের শব্দ পেয়ে তোহা রাফিকে ছেড়ে শিড়ি বেয়ে উঠে গেলো তোহা। রাফিও সম্মোহন ফিরে পেয়ে তোহার চলে যাওয়া দেখতে থাকে।
……
রাতে খাবার টেবিলে,
রাফি – (ইতস্তত সুরে) কাল আমাকে জরুরী কাজে বাইরে যেতে হবে, সপ্তাহখানেকের ভেতর ফিরে আসবো।
তোহা – হঠাৎ কোথায় যাচ্ছো?
রাফি – বড় একটা প্রজেক্ট এর কাজে হাত দিয়েছি। সেই কাজের জন্যই বের হতে হবে।
তোহা – কিন্তু যাবে কোথায়?
রাফি – সেটা তো বলতে পারছি না এখনই তবে কাল গেলে জানতে পারবো।
তোহা কপাল কুঁচকে রাফির দিকে তাঁকায়। রাফি তোহার চোখের দিকে তাঁকিয়েই বুঝতে পারে যে তোহা সন্দেহ করছে রাফিকে। রাফি জানে যে সে জীবন মৃত্যু মাঝখানে বসে এই মিশনের জন্য নিজেকে রাজি করিয়েছে কিন্তু তোহাকে সবকিছু বললে তোহা কিছুতেই রাফিকে যেতে দেবে না। তাই তোহা যতই সন্দেহ করুক রাফিকে যেভাবেই হোক তোহার প্রশ্নবান এড়িয়ে কাল বের হতে হবে।
তোহা – (খাবার খেতে খেতে) অফিসিয়াল মিশন নাকি আনঅফিসিয়াল?
রাফি জানে যে তোহা বুদ্ধিমতি মেয়ে, অফিশিয়াল ট্যুরের কথা বললে তোহা অবশ্যই কাগজপত্র দেখতে চাইবে। পূর্ব অভিজ্ঞতা চরম শিক্ষা দিয়েছে রাফি এবং তার পরিবারকে।
রাফি – আনঅফিশিয়াল। সিক্রেট প্রোজেক্ট বলতে পারো।
তোহা – বলতে চাইছো না যখন তখন জানতে চাইবো না তবে একটু সাবধানে কাজ করো। এই অল্প কিছুদিনের ভেতর অনেক ঝড় গিয়েছে আমাদের পরিবারের উপর দিয়ে, আশা করি বুঝতে পেরেছো।
বলে তোহা টেবিল ছেড়ে উঠে যাচ্ছিলো।
রাফি – খাওয়া শেষ করলে না?
তোহা – হয়ে গেছে।
এতটুকু বলে কিচেনের দিকে চলে গেলো তোহা। রান্নাঘরের কাজ শেরে আবার ডাইনিং এ এসে বসলো তোহা।
রাফি শেষ মুহূর্তে এসেও থমকে যায়, তোহার কাছে সবকিছু গোপন করাটা ঠিক হবে কিনা সেটা বুঝতে পারছে না রাফি। খাওয়া শেষ করতে করতে তোহাকে সব খুলে বলতে থাকে রাফি, সাবমেরিন থেকে শুরু করে ভাঙ্গা এন্টেনা পর্যন্ত, কিন্তু এই পুরো বিষয় থেকে পিকাচুকে আড়াল করে রাখলো।
তোহা কিছুটা কৌতুহলি হয়ে উঠলো। ইংরেজী মুভির হিরো জেমস বন্ড এর ফ্যান বলে কথা।
তোহা – এতবড় মিশন পরিচালনা করছে কে?
রাফি – কোন শক্ত প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত এটা আমার মিশন। আর প্রমাণ জোগাড় করতে পারলেই সব ডিটেলস রাশিয়ান ইন্টেলিজেন্সের হাতে তুলে দিতে পারবো।
তোহা – তাহলে তুমি সুইসাইড মিশনে যাচ্ছো?
রাফি – মানে?
তোহা – মানে প্রমান সংগ্রহ করতে গিয়ে যদি কোন বিপদে পড়ে যাও তাহলে তোমাকে সাহায্য করার মত কেউ নেই?
রাফি চুপ করে থাকে, পিকাচুর কথা এখনই জানাতে চায় না তোহাকে।
রাফি – একজন ব্যাকআপ তো থাকেই সবসময়। প্রয়োজন হলে তাকে ডাকা যাবে।
তোহা আরো প্রশ্ন করতে চাইলেও রাফি ইন্টারেষ্ট দেখাতে চাইলো না। তোহার ভেতর বাচ্চামী আছে ঠিকই তবে সে তুখোড় ইন্টেলিজেন্ট ও বটে। বাচ্চামী করতে করতে সব কথা বের করে নিয়ে আসার দারুণ ক্ষমতা আছে মেয়েটার। তাই প্রশ্নের জবাব না দিয়ে এড়িয়ে যাওয়াটাই সমীচীন মনে করলো রাফি। তোহাও তাই মিশন নিয়ে প্রশ্ন করা বাদ দিলো।
তোহা – কাল সকালেই চলে যাবে? আবারও একা ফেলে চলে যাবে?
রাফি তোহার দিকে তাঁকিয়ে দেখে মেয়েটা গাল ফুলিয়ে আছে। দেখেই গালটা টানতে ইচ্ছা করলেও এখন শক্ত থাকতে হবে রাফিকে, মায়ায় পড়ে গেলে মিশন তো দূর ঘরের বাইরে যেতেও মন চাইবে না।
তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করে স্ট্যাডি রুমে চলে আসে রাফি। পিকাচু তার কাজ করে চলেছে।
পিকাচু – রাফিউল ইসলাম, সোলজার, গিয়ার, ওয়েপন এবং ট্রান্সপোর্টেশন তৈরি। আপনার পার্মিশনের অপেক্ষায়।
রাফি – Mission is a go. Find a safe house in Russia, Gather everything there and arrange my transport tomorrow. Let’s find this submarine.
পিকাচু- পিকা পিকা।
.
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়ে রাফি। বিছানার পাশে মাথা ঘোরায় রাফি, তোহা তখনো ঘুমে টুং হয়ে আছে। মোবাইলটা খুঁজে বের করে সময় দেখতে চাইলো রাফি, ঘড়িতে তখন রাত ৩.৫০ বাজে। কোনরকম শব্দ না করে ঘর থেকে বের হয়ে স্ট্যাডিরুমে চলে যায় রাফি।
রাফি – পিকাচু, আপডেট দাও।
পিকাচু – সবকিছু প্লানমাফিক চলছে। আর ২০ মিনিটের ভেতর ট্রান্সপোর্ট বাসার সামনে চলে আসবে। ঝটপট তৈরী হতে হবে।
রাফি রাতের বেলাতেই ব্যাগ গুছিয়ে রেখেছিলো। গেষ্ট রুমের ওয়াশরুম ব্যবহার করলো রাফি যেন তোহার ঘুম না ভাঙ্গে। তৈরী হয়ে বেডরুমে যায় রাফি, কিন্তু তোহা বিছানায় নেই। রাফি চোখ ঘুরিয়ে তোহাকে খুঁজতে থাকলো,
তোহা – আমাকে বিদায় না জানিয়েই চলে যেতে চাচ্ছো?
আওয়াজটা বেডরুমের বাইরে থেকে আসছিলো তাই রাফি মাথাটা ঘুরিয়ে বেডরুমের বাইরে তাঁকালো। তোহা চোখ ডলতে ডলতে হাতে কিছু একটা নিয়ে দাড়িয়ে আছে।
তোহা – আমি থাকতে ব্রেকফাস্ট না করে ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না।
রাফি – এত সকালে তুমি উঠতে গেলে কেন! আমি খেয়ে নিতাম কিছু একটা কোথাও থেকে।
তোহা – ঘরে একটা জলজ্যান্ত বউ থাকতে যদি বাইরে গিয়ে নাস্তা করতে হয় তো বউ হয়ে কি লাভ, (চোখ মুছতে মুছতে রান্নাঘরে যেতে) সব রেডি করাই আছে, যাষ্ট ২ মিনিট।
তোহা ঝটপট কিছু নাস্তা বানিয়ে দিলো রাফির সামনে। মেয়েটার হাতে জাদু আছে বলা যায়, ঘুম থেকে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছে না অথচো নাস্তা তৈরী করে ফেললো এত দ্রুত। রাফি খাবার টেবিলে বসে পড়ে, তোহা সব সাজিয়ে দেয় রাফির সামনে আর পাশের চেয়ারে বসে পড়ে। রাফি খাবার গালে তুলতে যাবে এমন সময় চোখ যায় তোহার দিকে। মেয়েটা টেবিলের উপর কনুই দিয়ে হাতের উপর মাথার ভর ছেড়ে দিয়ে ঘুমে ঢলে পরছে। হাতের উপর ভর দেয়ায় তোহার গালটা নিজে থেকেই খুলে যায়। এতবড় মেয়ে তারপরও দেখতে এখনো বাচ্চা। রাফি আলতো করে তোহার কাধে হাত রাখে। রাফির স্পর্শে তোহার ঘুম ভেঙ্গে যায়,
তোহা – (আড়মোড়া দিতে দিতে) কিছু লাগবে তোমার?
রাফি – তোমার ঘুম এলে তুমি শুয়ে পড়, এভাবে ঝিমুতে হবে না।
তোহা – কই ঝিমাচ্ছি! আমি তো ঘুমাচ্ছিলাম।
রাফি মুচকি একটা হাসি দিয়ে খেতে শুরু করে আর তোহা পাশে বসে ঝিমাতে (ঘুমাতে) থাকে।
খাওয়া শেষ হলে রাফি উঠে দাঁড়ায় আর হাতমুখ ধুয়ে আসে, হয়তো পানির আওয়াজে তোহার ঝিমুনি (!) কেটে যায়, টেবিল থেকে উঠে চলে যায় তোয়ালে আনতে। রাফির হাতমুখ ধোয়া শেষে রাফির দিকে তোয়ালে বাড়িয়ে দেয় তোহা। রাফি হাত মুখ মুছতে থাকে।
তোহা – কবে ফিরবে?
রাফি – বলতে পারছি না, তবে যত দ্রুত সম্ভব হয় ফিরবো।
তোহা – তোমার এমন হুটহাট উধাও হওয়ায় মা বাবার অনেক বেশী টেনশন করে, তাদেরকে এত চিন্তায় না রাখলেও তো পারো।
রাফি – এই শেষ। আর হবে না।
তোহা – প্রমিস?
রাফি – প্রমিস।
রাফি কিছুক্ষন রেষ্ট নিতে চাইলো কিন্তু ওইদিকে পিকাচু নোটিফিকেশন দিলো রাফির ট্রান্সপোর্ট বাসার নীচে অপেক্ষা করছে। রাফি তাই আর সময় নষ্ট না করে বেরিয়ে পড়ে। বাসার নীচে একটা উবার কার অপেক্ষা করছিলো। তোহা বাসার বারান্দা দিয়ে উঁকি দিয়ে রাফির চলে যাওয়া দেখতে থাকে। রাফি গাড়ির দরজায় হাত দিয়ে থমকে যায়, উপরের বারান্দার দিকে তাঁকায়। তোহার দিকে তাঁকিয়ে কিছুক্ষণ স্থির হয়ে যায়। নিজের কর্মকান্ডের উপর নিজেই কিছুটা বিরক্ত হয়ে যায় রাফি। রাফি কোন বিনিময় ছাড়াই একের পর এক বিপদ নিজের কাঁধে তুলে নিচ্ছে। দেশের কথা ভেবে, দেশের সুরক্ষার কথা ভেবে রাফি বিনা স্বার্থে নিজের জীবন বাজী রেখেই চলেছে। কিন্তু আর কত? বারান্দায় দাড়িয়ে থাকা তোহার মুখের দিকে তাঁকিয়ে আজ হঠাৎ করে উপলব্ধিগুলো মাথাচারা দেয়ে উঠলো। মনে মনে প্রতিজ্ঞা ও করে বসলো যে এবারই শেষ। পরিবারকে বিপদের মুখে ফেলে আর কোথাও কোন কাজ করতে যাবে না রাফি। ডান হাতটা ঠোঁটে ছুঁইয়ে তোহার দিকে নাড়ায় রাফি। তোহা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে রাফির দিকে। রাফির চোখটা ঘোলাটে হয়ে আসলো। রাফি বুঝতে পেরে দ্রুত গাড়ির দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে গেল। চোখ মুছতে মুছতে ড্রাইভারকে রওনা দেয়ার নির্দেশ দিল রাফি। পিকাচু ডেষ্টিনেশন সেট করে দেয়ায় ড্রাইভার গন্তব্যের দিকে রওনা দিল। রাফি গাড়ির ভেতর থেকে ঘাড়টা ঘুরিয়ে আর একবার দেখতে চাইলো তোহার মুখটা, কিন্তু মায়ায় জড়িয়ে যাওয়ার ভয়ে আর তাকানোর সাহস করলো না রাফি। তোহা যে বড্ড মায়াবী।
গাড়ি দ্রুতগতিতে ছুটে চলতে থাকে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে কিন্তু গন্তব্য এখনো রাফির অজানা।
রাফি – পিকাচু, কোথায় যাচ্ছি আমরা?
পিকাচু – আমাদের আসল গন্তব্যে লীগ্যালভাবে পৌছানো সম্ভব নয়। তাই আমাদেরকে ভেংগে ভেংগে আমাদের গন্তব্যে পৌছাতে হবে। এখন আমাদের প্রথম ডেষ্টিনেশন সী পোর্ট। সেখান থেকে কার্গো শীপে করে ইন্টারন্যাশনাল সী বর্ডারে গিয়ে পৌছালে সেখান থেকে ২য় লক্ষ্যে পৌছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রাফির কিছুটা ইতস্তত বোধ করলো এর আগেও রাশিয়া থেকে পিকাচুর মাধ্যমে রাফি দেশে এসেছিলো। কোন সমস্যা না থাকলে পিকাচু অন্য পথ বেছে নিত না।
অবশেষে সী পোর্টে এসে পৌছালো রাফি। পিকাচু একটা কন্টেইনার ঠিক করে রেখেছিলো, কাস্টমস হাউজের ঘুষখোর অফিসার এবং পিকাচুর ডিজিটাল একসেস পাওয়ার দিয়ে রাফি একপ্রকার অদৃশ্যভাবে একটা সিংগাপুরের কন্টেইনারবাহী জাহা্জ এম. ভি. রোদান এ চড়ে বসলো। জাহাজে থাকা একজন রাফিকে তার কন্টেইনারে পৌছে দিল। কন্টেইনার খোলার সাথে সাথে চোখ কপালে উঠে যায় রাফির। এটা কোন কন্টেইনারের দরজা নয়, এটা বিলাশবহুল একটা স্টিল রুমের প্রবেশ দ্বার। রাফি ভেতরে ঢুকে অবাক হয়ে গেল। একটা বড়সড় এবং বিলাশবহুল রিক্রিয়েশনাল ভেইকেল (R.V) এর কন্টেইনার ভার্শন। রাফি পৌছানোর আগেই ভাড়াটে গুন্ডারা যারা মিশনে রাফিকে সাহায্য করবে তারা অাগেই এসে বসে আছে।
কন্টেইনারের ভেতর ইন্টারকম এ পিকাচু সবার সাথে রাফিকে পরিচয় করিয়ে দিলো।
পিকাচু – (বিদেশী ভাষায়) এটেনশন, এই হলো আলফা লিডার রাফি এবং (ইংরেজীতে) রাফি এই হলো তোমার টিম।
ভেতর থেকে একজন একজোড়া এয়ারবট (স্যাটেলাইট কানেক্টেড ওয়্যারলেস ইয়ারফোন।) নিয়ে এলো রাফির জন্য যেটা সরাসরি পিকাচুর সাথে সংযুক্ত থাকবে, টিমের এক একজন এক এক ভাষাভাষী হওয়ায় পিকাচু নিজেই বহুভাষাবিদের দায়িত্বটা কাধে তুলে নিয়েছে। টিমের প্রত্যেকে যে যে ভাষাতেই কথা বলুক না কেন পিকাচু এই ইয়ারবটের মাধ্যমে প্রত্যেককে যার যার রাষ্ট্রভাষাতে নিজেদের মাঝে হওয়া সকল কনভার্সেশন প্রচার করবে তাও এক ন্যানোসেকেন্ডের কয়েকশো ভাগের এক ভাগ সময়ের ভেতর।
রাফি এয়ারবট কানে পড়ে নেয়ার পর যে যার মত পরিচয় দিতে শুরু করলো আর রাফিকে পিকাচু বাংলা ভাষায় সব কনভার্সন কনভার্ট করে দিলো।
সবার সাথে পরিচিত হলেও রাফির পক্ষে এক মুহূর্তে তাদের নাম মনে রাখা সম্ভব হলো না, তাই কনভার্সেশনের সময় কেউ নাম না বললেও পিকাচু প্রতিবার রাফিকে নাম জানিয়ে দেয় যেন রাফি কমান্ড দিতে পারে। এর মধ্যে একজন এসে রাফির সাথে কথা বলা শুরু করলো । পিকাচু জানালো সোলজারের নাম রিদওয়ানস্কি। সংক্ষেপ RQ.
RQ – (পিকাচুর বঙ্গানুবাদে) তাহলে তুমিই হচ্ছো আমাদের আলফা লিডার?
রাফি – তেমনটাই মনে হচ্ছে।
RQ – টিম লিডার সিংগাপুর থেকে আমাদের সাথে জয়েন করবে।
রাফি – টিম লিডার?
RQ – আমার দেখা অন্যতম সাহসী মেয়ে যে তার বুদ্ধিমত্তা দিয়ে একদূর এসেছে।
রাফি – মেয়ে?
RQ – হ্যাঁ, মেয়ে। ওহ, সে তোমার দেশীয়।
রাফি অবাক হয়ে যায়। বাংলাদেশী একটা মেয়ে এই পুরো টিমকে কমেন্ড করবে? ভেবেই গর্ববোধ করে রাফি। যাক এই যাত্রায় নিজ ভাষায় কথা বলার জন্য কাউকে পেলাম।
রাফি ভেতরে গিয়ে শুয়ে পড়ে। জাহাজটি রওনা দেয় সিংগাপুরের উদ্দেশ্যে।
……………………………….
এদিকে সিংগাপুরে মোবাইল কথপোকথন।
যান্ত্রিক ভয়েস – টিম লিডার, your one and only mission is to save Alpha Leader at any cost till the order.
টিম লিডার – I’m on it.
যান্ত্রিক ভয়েস – You know what you have to do next.
টিম লিডার – very clearly. (একটা মেয়েলী ভয়ংকর হাসি)