হ্যাকারের_লুকোচুরি
সিজন_৩
পর্ব_৩
এতটা সতর্কতা মেনে এতবড় ফ্যাসিলিটি সরকারের নাকের নীচ দিয়ে পরিচালনা করা যার তার সামর্থ্যের বিষয় না। মাফিয়া গার্ল ঠিকই বলেছিলো, এই মিশন এতটা সহজ হবে না।
এত পাওয়ারফুল ফ্যাসিলিটি চালাতে হলে তো একদল অপারেশন কন্ট্রোল এক্সপার্টের প্রয়োজন। এছাড়া স্যাটেলাইটের সাথে কানেক্ট করার জন্য তো স্পেশাল এন্টেনার প্রয়োজন পড়বে যা শুধুমাত্র ওই স্যাটেলাইটগুলোর সাথে কানেক্ট করার কাজ করবে। একদল হ্যাকারের পক্ষে কিভাবে এমন একটা ফ্যাসিলিটি তৈরী করা সম্ভব? আর ফিজিক্যাল স্টাবলিশমেন্ট এভাবে ওপেন রেখে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করা কিভাবে সম্ভব!
রাফি – পিকাচু, তুমি কি ফ্যাসিলিটির লোকেশন ট্রেস করতে পেরেছো?
পিকাচু – ফ্যাসিলিটির একমাত্র অনলাইন কানেক্টিভিটি অনেক বেশী আনস্ট্যাবল। অনলাইন কানেকশন দিয়ে ফ্যাসিলিটির লোকেশন বের করা একপ্রকার অসম্ভব।
রাফি চিন্তায় পড়ে যায়। লোকেশন বের করার জন্য তো কোন না কোন রাস্তা বের করতেই হবে। অনেকক্ষন ভেবে রাফির মাথায় একটা পথ উঁকি দেয়।
রাফি – কানেকশন দিয়ে লোকেশন পাওয়া হয়তো টাফ কিন্তু আরো একটা উপায় আছে যা ট্রাই করা যেতে পারে। পিকাচু, তুমি কি এই তিনটি স্যাটেলাইটের ভেতর আলফা বা কন্ট্রোল স্যাটেলাইটটি খুঁজে বের করতে পারবে যেটা বাকি দুইটি স্যাটেলাইটকে কন্ট্রোল করছে? এটা তো বলা যায় এই ধরনের কম্প্লেক্স নেটওয়াকিং সিস্টেমে একটা আলফা স্যাটেলাইট থাকে যেটা অন্যান্য স্যাটেলাইটগুলোকে কন্ট্রোল করে!
পিকাচু – সেটা বের করতে হলে পিকাচুকে স্যাটেলাইগুলোর ফিজিক্যাল স্ক্যান করতে হবে কারন স্যাটেলাইটগুলো একটার বেশী অথরাইজড একসেস গ্রান্ড করবে না আর অলরেডি একটা অথরাইজড একসেস রয়েছে স্যাটেলাইটগুলোতে। স্যাটেলাইটগুলো স্ক্যান করে তিনটি স্যাটেলাইটের হার্ডওয়্যার স্ট্যাটাস বের করতে পারলে পিকাচু বলতে পারবে কোন স্যাটেলাইটি কন্ট্রোল স্যাটেলাইট।
রাফি – স্যাটেলাইটের ফিজিক্যাল স্ক্যান সম্ভব!
পিকাচু – খুবই আনকমন টেকনোলজি কিন্তু সম্ভব, অনেকটা এক্স রে দিয়ে হিউম্যান বডি স্ক্যান করার মত। Accessing facilitated satellite…….
Rerouting……….
Targeting subjected satellites……..
Scanning S1…… Scanning S2 ……. Scanning S3……
Comparing ……….
Alpha satellite identified.
রাফি দেখতে পায় পিকাচু আলফা স্যাটেলাইটটিকে আইডেন্টিফাই করে তার অর্বিটাল লোকেশন পয়েন্টআউট করেছে।
রাফি – পিকাচু, তুমি কি এই আলফা স্যাটেলাইটটির উপর নজর রাখতে পারবে, কখন এই স্যাটেলাইটটি ডাটা রিসিভ করছে বা এক্টিভেট হচ্ছে। স্যাটেলাইটের ডাটা রিসিভিং পাথ দিয়ে তো ট্রাক করা যেতে পারে ফ্যাসিলিটিটাকে।
পিকাচু – পৃথিবী থেকে কোটি কোটি এন্টেনা আকাশের স্যাটেলাইটগুলোকে উদ্দেশ্য করে ডাটা নিক্ষেপ করে। যদি এর ভেতর থেকে একটা স্পেসিফিক অফগ্রীড এন্টেনার ডাটা ট্রাক করতে হয় তাহলে পিকাচুকে সারা পৃথিবীর সাইবার নেটওয়ার্কের কন্ট্রোল নিতে হবে।
রাফি এবার মহা দুশ্চিন্তায় পড়ে। পিকাচু একটা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স আর এখন পিকাচু কে যদি সাইবার ওয়ার্ল্ড কন্ট্রোল একসেস দেয়া হয় তাহলে তার ফলাফল কি হতে পারে তা এখনই ধারনা করা সম্ভব না রাফির পক্ষে। আর যা ই হোক এই গ্রামের বাড়ি বসে রাফির পক্ষে এতবড় কাজ করা সম্ভব নয়।
রাফি – পিকাচু, সময় হয়েছে NSA হেডকোয়ার্টারে ফিরে যাওয়ার।
পিকাচু – পিকা পিকা।
…
সবাইকে রেখে আবার শহরে ফেরৎ যেতে চায় রাফি, কিন্তু কেউ ই রাজী হতে চায় না। রাফির মুখ দিয়ে রাফির বিদেশযাত্রার বিস্তারিত শোনার পর থেকে “না” শব্দটা একটা আইনে রুপান্তরিত হয়েছে। রাফি যতই যুক্তি প্রদান করে, রাফির মা বাবা ঠিক তার পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করতে থাকে। এতশত যুক্তিতর্কের মাঝে একমাত্র তোহাই নিশ্চুপ ছিলো। বাবা মা এর সাথে যুক্তিখন্ডন শেষে হয়তো নতুন প্রতিপক্ষ হিসেবে অপেক্ষা করছে তোহা। বাবা মা মৌখিকভাবে রাজী হলেও তাদের চেহারা দেখে কোনভাবেই মনে হয় না যে তাদের এই সম্মতি তারা মন থেকে প্রদান করেছে। এছাড়া কিছু করার ও ছিলো না তাদের, ছেলে বড় হয়েছে, চাকরী করছে, নিজের সংসার হয়েছে। এখন চাইলেও জোর খাটানো চলে না।
বাবা মা এর ঘর থেকে বেরিয়ে আসে রাফি। বাবা মা কে তো কোন একভাবে রাজী করানো গেছে, কিন্তু তোহা! রাফি নিজের রুমের দিকে এগোতে থাকে আর সেই কথাগুলো সাজাতে থাকে যেগুলো দিয়ে বাবা মা কে রাজী করিয়েছিলো সে।
রাফি নিজের রুমে ঢুকে তোহাকে খুঁজতে চোখ বোলায়। তোহা বিছানায় বসা ছিলো, রাফিকে দেখে উঠে দাঁড়ায় আর নির্লিপ্তভাষায় বলতে থাকে,
তোহা – আমি জানি তুমি কি বলতে চাও এবং এটাও জানি তুমি কি কি মনের ভেতর গুছিয়ে নিয়ে এসেছো।
বলে খানিকটা অভিমানী চেহারা করে রাফির দিকে তাকিয়ে থাকে। আচমকা তোহার আক্রমণে রাফির সাজানো শব্দবাহিনী ছন্নছাড়া হয়ে গেলো। এই মেয়েটার কাছে এতোটা প্রেডিক্টেবল কিভাবে হয়ে গেলো রাফি সেটাই বুঝতে পারে না।
রাফি – আসলে প্রয়োজনটাই এমন। যেতেই হবে।
তোহা – আমি তোমাকে বাধা দিবো না তবে একটা শর্ত রয়েছে।
তোহার সম্মতির কথা শুনে রাফি অনেকটা হাফ ছেড়ে বাঁচে কিন্তু শর্তের কথা শুনে আনন্দের বহিঃপ্রকাশ গলা পর্যন্ত এসে আটকে যায়।
রাফি – শর্ত! কি শর্ত?
তোহা – আমাকেও তোমার সাথে নিয়ে যেতে হবে।
গলায় আটকে থাকা আনন্দটুকু আবার গিলে ফেলে রাফি। তোহা যদি সাথে যায় তাহলে একটা বড় পিছুটান থেকে যাবে।
রাফি – তোমাকে কিভাবে নিবো, এটা মোটেই নিরাপদ নয়। তাছাড়া গ্রামে মা বাবার দেখাশোনা কে করবে?
তোহা – পাল্টা যুক্তি দিয়ে লাভভ হবে না। যদি আমার অনুমতি চাও তাহলে শর্ত মানতে হবে। এর কোন বিকল্প পথ নেই।
রাফি কিছু বলতে যাবে কি তার আগেই তোহা কানে হেডফোন গুজে দিয়ে বিছানায় হেলান দিয়ে গুনগুন শুরু করে দেয়। রাফির হাতে ২য় কোন পথ ও খোলা থাকে না। রাফি বিছানার অপরপাশে গিয়ে বসে, তোহার দিকে করুন দৃষ্টিতে তাকালেও একটা জিনিস ঠিকই বুঝতে পারে সে, তোহার মন প্রান আত্মা সব ওই হেডফোনে চলতে থাকা গানে ডুবে আছে, রাফি এখন কিছু বললেও তোহার কান পর্যন্ত পৌছাবে বলে মনে হয় না। তাই হাল ছেড়ে মুখ ঘুরিয়ে শুয়ে পড়লো রাফি। রাফিকে শুয়ে পড়তে দেখে পেছন থেকে উঁকি দেয় তোহা, মুচকি একটা হাসি দিয়ে আবারো গান শোনায় মনোযোগ দেয় তোহা।
……
রাফি তৈরী হয় তোহাকে নিয়ে শহরের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার জন্য। রাফি তোহাকে সাথে নিয়ে যাচ্ছে দেখে বাবা মা এর দুশ্চিন্তা বাড়ছে না কমছে তা বোঝা গেলো না। মায়ের কাছে থাকা ফোনটা সবসময় কাছে রাখতে বলে রাফি। সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রাফি এবং তোহা বেরিয়ে পড়ে শহরের উদ্দেশ্যে। রাফি রকিবের সাথে কথা বলে একটা থাকার ব্যবস্থা করেছে, সাথে তোহা না থাকলে হয়তো এতটা আয়োজনের ও প্রয়োজন ছিলো না। শহরে পৌছে রকিবের সাথে দেখা করে রাফি। রকিবদের বাসার উপরের তলা খালি পড়ে আছে। রকিবের বড়ভাইয়ের ফ্লাট। বড়ভাই বিদেশ থাকে স্বপরিবারে তাই ফুল ফার্নিশড। রাফি এবং তোহা গিয়ে উঠে পড়ে সেখানে।
রকিব – এখানে তোরা নিশ্চিন্তে থাকতে পারিস। কোন সমস্যা হবে না। যদি কোনকিছুর দরকার পড়ে তো নিচে এসে যে কাউকে বললেই হবে।
রাফি – নেট কানেকশন লাগবে দোস্ত। হাইস্পিড।
রকিব – একটু পর লোক এসে লাগিয়ে দিয়ে যাবে। বিল আর ইনস্টলেশন চার্জ দিয়ে দিস।
রাফি – ধন্যবাদ দোস্ত।
রকিব – তুলে রাখ তোর ধন্যবাদ। ট্রিটগুলো দেয়া শুরু কর জলদি। এখন রেষ্ট নে।
রাফি আর কথা বাড়ায় না। বেশ ছিমছাম বাড়ি। ৫ তলা বিল্ডিং এর চতুর্থ তলার একটা ফ্লাট। সদর দরজা দিয়ে ঢুকেই বা হাতে ড্রয়িং রুম, ডান দিকে একটা গেষ্ট রুম হবে হয়তো। সোজা সামনে ডানদিকে ডায়নিং এবং কিচেন + স্টোররুম আর বাম দিকে দুইটা বেডরুম পাশাপাশি। মাস্টার বেডরুমের সাথে একটা মাঝারী আকারের স্ট্যাডিরুম। সবগুলো রুমেই বিশাল বিশাল জানালা। রাফি কোনমতে হাতমুখ ধুয়ে এসেই গা এলিয়ে দেয় বিছানায়, একটা ফ্রেশ ঘুম দরকার।
সন্ধ্যার একটু পর ঘুম ভাঙ্গে রাফির। ততক্ষণে তোহা রান্নাঘরটা নিজের আয়ত্বে নিয়ে নিয়েছে। মাঝে রকিব এসে হালকাপাতলা সদাই দিয়ে গেছে আর ইন্টারনেটের লাইনও টেনে দিয়ে গেছে সার্ভিস প্রোভাইডার। তোহা মোটামুটি তার নিজের কম্পিউটার দিয়ে সিস্টেম আর নেটওয়ার্ক স্পিড ডায়গনসিস করে নিয়েছে। রাফি বিছানা ছেড়ে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নেয়। বাইরে বের হয়ে তোহার তৈরী বিকেলের নাস্তা খেয়ে বসে পড়ে ল্যাপটপ নিয়ে স্ট্যাডিরুমে। নেটওয়ার্কে কানেক্ট করে পিকাচুর সাথে লিংক তৈরী করে রাফি।
পিকাচু – খারাপ সংবাদ আছে। নিউক্লিয়ার অথরাইজেশন কনফার্ম হয়েছে।
অর্থাৎ নিউক্লিয়ার এক্টিভেশন ডিভাইসে অথরাইজড এক্টিভেশন কোড ইনপুট হয়েছে যেটা কিছুদিন আগে চুরি হয়েছিলো। রাফি থ হয়ে যায়। নিউক্লিয়ার এক্টিভেশন কোড ইনপুট করায় ডিভাইসটি অথরাইজড এ্যাটাকের জন্য সম্পূর্ণরূপে তৈরী। এখন শুধু স্যাটেলাইট এবং সাবমেরিনের সাথে কানেক্ট হবার অপেক্ষা। এরপর আর কোনভাবেই আটকানো যাবে না নিউক্লিয়ার হামলা। রাফি অথরাইজেশন টাইমআউট চেক করে দেখে মাত্র ৮ মিনিট আগে এক্টিভেশন কোড ডিভাইসে ইনপুট হয়েছে।
নিউক্লিয়ার এক্টিভেশন ডিভাইসে কোড ইনপুট করার জন্য একটা সিকিউর নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটির প্রয়োজন ছিলো যা অতি সন্তর্পণে লুকিয়ে ফেলেছে হ্যাকারগোষ্টি।
রাফি – তাহলে এখন যে কোন মুহূর্তে ভেসে উঠবে সাবমেরিনটি, নিজের কাছে থাকা নিউক্লিয়ার বোমাগুলোকে এক্টিভ করতে। পিকাচু, সাইবার নেটওয়ার্কের সকল চ্যানেলের একসেস নিয়ে নাও ঠিক যেভাবে প্লান করা হয়েছিলো। কিন্তু ফ্যাসিলিটি ডিটেক্ট করার পর সাইবার নেটওয়ার্ক সিস্টেমকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে।
পিকাচু – পিকা পিকা। Gaining full access……
Rediscover all online channels……..
Identifying communication satellites….
রাফি তার ছোট্ট ল্যাপটপ স্ক্রীনে পিকাচুর পুরো কার্যক্রম দেখতে পায়। একে একে সকল সাইইবার চ্যানেলের একসেস নিয়ে নিচ্ছে পিকাচু।
পিকাচু – All network identification complete.
পিকাচুর হাতে অনলাইন কানেক্টিভিটির সকল নেটওয়ার্ক ও সাইবার লিংক এর কন্ট্রোল রয়েছে যা মোবাইল নেটওয়ার্ক থেকে শুরু করে স্পেস শাটল কন্ট্রোল আপলিংক পর্যন্ত সবকিছুই।
রাফি – পিকাচু, সার্ভেইল্যান্স স্যাটেলাইটগুলো দিয়ে সেইসব জায়গায় নজরদারি বাড়াও যেসব জায়গায় এই স্যাটেলাইট তিনটির অর্বিটাল পাথ রেকর্ড করা আছে। আর আলফা স্যাটেলাইটের উপর নজর রাখো যে কখন সে ডাটা রিসিভ ও ট্রান্সমিট করছে।
পিকাচু – Deploying surveillance satellites…
রাফি প্লান আটতে থাকে কিভাবে ধরা যাবে এই সুচতুর চক্রটিকে।
স্ট্যাডিরুমের দরজার কাছে এসে দাঁড়ায় তোহা,
তোহা – এইযে, শুনছেন? আপনি পুরো নেটওয়ার্ক অকুপাই করে রেখেছেন, আমি নেট ব্রাউজ করতে পারছি না একদমই।
রাফি – আজকের দিনটা ছেড়ে দাও, খুবই প্রেশারের ভেতর আছি।
তোহা দরজা ছেড়ে ভেতরে প্রবেশ করে, রাফি দরজা বরাবর মুখ করে বসায় তোহা ঘুরে রাফির পেছনে এসে দাঁড়ায়। স্ক্রীনে তখন সার্ভেইল্যান্স স্যাটেলাইটের স্ক্যানিং শো করছিলো।
তোহা – মহাসমুদ্রে কি খুঁজছেন নাবিক?
রাফি – ডুবে যাওয়া নৌকা খুঁজছি, যদি ভেসে ওঠে তাহলে আর ডুবতে দেবো না। এখন কাজ করতে দাও। কাজ শেষ করে আসছি।
তোহা রুম ছেড়ে চলে যায়, টিভির ভলিউম শুনে রাফি বুঝতে পারে যে মেয়েটা গাল ফুলিয়েছে।
রাফি – পিকাচু, যে কোন ধরনের এক্টিভিটি হলে এলার্ম দিয়ো।
এই বলে রাফি তোহার দিকে উঠে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই পিকাচু এলার্ট অন করে দেয়। রাফি রুম থেকে বের হতে গিয়েও বের হয় না।
রাফি – পিকাচু, কি ধরতে পেলে?
পিকাচু – স্যাটেলাইটটি ডাটা রিসিভ করছে।
রাফি – পিকাচু, ডাটা ব্রেকার পালস ব্যবহার করো আর খুঁজে বের করো অফ দ্যা গ্রীড ফ্যাসিলিটিটা।
Initiating Data breaker pulse…….
পিকাচু যে প্রযুক্তি ব্যবহার করছে তা অনেক এডভান্স লেভেলের প্রযুক্তি। পিকাচুর হাতে সাইবার নেটওয়ার্কের সকল চ্যানেলের একসেস থাকার কারনে নেটওয়ার্ক পালস ব্যবহার করে অফ দ্যা গ্রীড স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটগুলো বেছে বেছে আইসোলেট করতে পারবে। এটা অনেকটা রাতের বেলা আকাশ থেকে একটা শহরের উপর এমনভাবে নজরদারি রাখা মত যেখান থেকে প্রতিটা বাড়িতে জ্বলা আলো পর্যবেক্ষণ করা যায়। এরপর ওই পুরো শহরের ইলেক্ট্রিসিটি অফ এবং অন বা পালস ব্যবহার করে পর্যবেক্ষণ করা। যে সব বাড়িতে জেনারেটর বা আই পি এস বা যে কোন ধরনের সেল্ফ সাসটেইনিং পাওয়ার সোর্স রয়েছে, বিদ্যুৎ চলে গেলেও সেইসব বাড়ির আলো নিভে যাবে না।
আর এইভাবে পুরো শহরের কোন কোন বাড়িতে সেল্ফ সাসটেইনিং পাওয়ার সোর্স রয়েছে তা আইডেন্টিফাই করা সম্ভব। এই একই পদ্ধতি ব্যবহার করছে পিকাচু। এখানে শহরের জায়গায় সমস্ত পৃথিবী আর ইলেক্ট্রিসিটির বদলে সারা পৃথিবীজুড়ে জালের মত ছড়িয়ে থাকা সাইবার নেটওয়ার্ক। পিকাচু কয়েকশো সার্ভেইল্যান্স স্যাটেলাইট দিয়ে পৃথিবীর সমস্ত ডেটা ট্রান্সমিটিং চ্যানেলের উপর নজরদারি চালাচ্ছে যেন পালসের মাধ্যমে আলাদা করা অফ দ্যা গ্রীড ফ্যাসিলিটিগুলো আইডেন্টিফাই করতে পারে। পিকাচু ডেটা ব্রেকার পালসগুলো সাইবার নেটওয়ার্কে সব চ্যানেলে একসাথে ব্যবহার করবে তাও ন্যানোসেকেন্ডে, যেন হাইস্পিড ইন্টারনেট ইউজারও এই সামান্য পালস অনুভব করতে না পারে। যেহেতু রাফির খুঁজে চলা ফ্যাসিলিটি এখন ডেটা ট্রান্সমিট করছে সেহেতু এখনই পদ্ধতিটি ব্যবহার করে ওই ফ্যাসিলিটিকে লোকেট করা সম্ভব।
পিকাচু পুরো পৃথিবীর নেটওয়ার্ক চ্যানেলকে ১৪ টি ভাগে বিভক্ত করে আর এক এক বারে এক একটা ভাগে ডাটা ব্রেকার পালস ব্যবহার করতে থাকে। কয়েকবার করে ডাটা ব্রেকার পালস ব্যবহার করে প্রতিটা ভাগ থেকে অফ দ্যা গ্রীড ফ্যাসিলিটিগুলো আইডেন্টিফাই করতে থাকে। ১৪ টি ভাগের সবগুলোতে পদ্ধতিটি ব্যবহার করে পিকাচু বেশকিছু ফ্যাসিলিটি আইডেন্টিফাই করেছে যার সবগুলোই অফ দ্যা গ্রীড নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন স্থাপন করে থাকে এবং এই পুরো কাজটি শেষ করতে মাত্র ৪২ সেকেন্ড সময় নেয় পিকাচু।
পিকাচু – 145 off grid satellite facilities identified. Running diagnosis ………
পিকাচু স্যাটেলাইটটির অর্বিটাল পাথ এবং এ্যালাইনমেন্ট এনালাইসিস করে ১ টি ফ্যাসিলিটি আইডেন্টিফাই করে। এটি রাশিয়ার একটি পরিত্যাক্ত শহরে অবস্থিত। স্যাটেলাইট ইমেজ সেখানে একটি বিশাল ভাংগা স্যাটেলাইট এন্টেনা শো করছে যা দেখতে ভাংগাচোরা পরিত্যাক্ত মনে হলেও পিকাচু ৯৪% কনফার্ম যে ওই এন্টেনা থেকেই ডাটা ট্রান্সমিট হচ্ছে।
রাফি চিন্তায় বসে যায়। নিউক্লিয়ার ডিভাইস এক্টিভ হয়ে গিয়েছে, এতদিন পর স্যাটেলাইটে আবারও ট্রান্সমিশন শুরু হওয়া মানে পানির নীচ দিয়ে সাবমেরিনটির ভেসে ওঠার সময় হয়েছে।
রাফি – পিকাচু, একটা স্যাটেলাইট দিয়ে ফ্যাসিলিটির উপর কড়া নজরদারি রাখো আর অর্বিটাল পাথ এর সোজাসুজি সাগরের উপর নজরদারি বাড়াও। যে কোন সময়ে সাবমেরিনটি ভেসে উঠবে।
পিকাচু – সাবমেরিন ভেসে ওঠার সম্ভাবনা নেগেটিভ, কারন আলফা স্যাটেলাইটটি অন্য দুইটা স্যাটেলাইটে কোন ডেটা ট্রান্সমিট করছে না। যদি কমিউনিকেশন স্টাবলিশ করার জন্য কোন কমান্ড দেয়া হতো তাহলে তিনটি স্যাটেলাইটই নিজেদের ভেতর ডেটা ট্রান্সমিট করতো। যেহেতু আলফা স্যাটেলাইট এখনো অন্য দুইটি স্যাটেলাইটে ডাটা ট্রান্সমিট করে নি তার মানে ফ্যাসিলিটি থেকে ডাটা ট্রান্সমিশন হয়েছে শুধুমাত্র এক্টিভিটি স্ট্যাটাস চেক করার জন্য।
রাফি একটা ছোট একটা হিসাব কষে ফেলে। নিশ্চই এক্টিভেশন ডিভাইসটি ফ্যাসিলিটির বাইরে কোন সিকিউর কানেক্টিভিটিতে এক্টিভ করা হয়েছে, তা না হলে এতক্ষণে নিউক্লিয়ার ডিভাইসের পাশাপাশি নিউক্লিয়ার বোমাগুলোকে এক্টিভ করার কমান্ড ওই ফ্যাসিলিটি থেকে স্যাটেলাইটে ট্রান্সমিট করা হতো যা পরবর্তীতে সাবমেরিনের সাথে কানেক্ট হওয়ার সাথে সাথে পৌছে যেতো।
রাফি – পিকাচু, ফ্যাসিলিটির উপর নজর রাখা স্যাটেলাইটের এক্সরে ফিচার একটিভ করো, চেক করো ফ্যাসিলিটিতে কতজন আছে।
পিকাচু – running X-ray vision……
রাফি ভাংগা স্যাটেলাইট এন্টেনার আশপাশের এক্সরে ভিশন দেখতে থাকে। কিন্তু স্যাটেলাইট এন্টেনার আশেপাশে কোন আন্ডারগ্রাউন্ড চেম্বার দেখতে পায় না রাফি। আরো কয়েক লেয়ারে এক্সরে স্ক্যান করলো পিকাচু। কিন্তু কোন চেম্বার পাওয়া গেলো না।
রাফি – এটা কিভাবে সম্ভব! স্যাটেলাইট এন্টেনাটি ট্রান্সমিট করছে অথচো তার আশে পাশে কোন কন্ট্রোলরুম থাকবে না! কন্ট্রোলরুম না থাকলে কে ট্রান্সমিট করছে ডেটাগুলো!!!!
বিঃদ্রঃ দেখা যাচ্ছে অনেক পাঠক/পাঠিকা গ্রুপে জয়েন করেন নি তাই পেজেই দিতে বাধ্য হলাম। ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য।